ইবাদতের জন্য স্বাস্থ্যসচেতনতা জরুরি

শরীরের সুস্থতা ও সক্ষমতা এমন এক নেয়ামত যা বিশেষভাবে কদর করতে বলা হয়েছে হাদিসে। হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘পাঁচটি জিনিসকে পাঁচটি জিনিস আসার আগে গনিমতের অমূল্য সম্পদ হিসেবে মূল্যায়ন করো :
১. জীবনকে মৃত্যু আসার আগে। ২. সুস্থতাকে অসুস্থ হওয়ার আগে। ৩. অবসর সময়কে ব্যস্ততা আসার আগে। ৪. যৌবনকে বার্ধক্য আসার আগে এবং ৫. সচ্ছলতাকে দরিদ্র আসার আগে।’ (মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা : ৮/১২৭; সহিহুল জামে : ১০৭৭)
মানুষের শরীর ও অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সৃষ্টিকর্তার পক্ষ থেকে আমানত। প্রত্যেকটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গের হক ও অধিকার রয়েছে। এসব হক ও অধিকার আদায় করা বান্দার জন্য জরুরি। হজরত ওয়াহাব ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘নিশ্চয় তোমার ওপর তোমার শরীরের হক আছে’ (বুখারি : ৫৭০৩; তিরমিজি : ২৩৫০)।
শরীরকে সুস্থ-সবল রাখা, অতিরিক্ত কষ্ট না দেওয়া, প্রয়োজনে বিশ্রাম দেওয়া, পরিমিত খাবার খাওয়া, অসুস্থ হলে চিকিৎসা করা এসব শরীরের হক। মানুষ যখন শরীরের প্রতি যত্নবান হবে তখন ইবাদত-বন্দেগি করা অনেক সহজ হবে। ইবাদতের জন্য কায়িক ও শারীরিক শক্তি-সামর্থ্য প্রয়োজন। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘দুর্বল মুমিনের তুলনায় সবল মুমিন অধিক কল্যাণকর এবং আল্লাহর কাছে অধিক প্রিয়। তবে উভয়ের মধ্যেই কল্যাণ রয়েছে। আর যা তোমাকে উপকৃত করবে, সেটিই কামনা করো।’ (মুসলিম : ২৬৬৪)
নবীজি (সা.) নিয়মিত হাঁটতেন, মাঝেমধ্যে দৌড় প্রতিযোগিতা করতেন, সাহাবাদের সঙ্গে কুস্তি লড়তেন। হাদিসের কিতাবে এ রকম অসংখ্য ঘটনা বর্ণিত হয়েছে। এমনকি মাঝেমধ্যে পূর্ণিমার রাতে প্রিয়তম স্ত্রীদের সঙ্গেও দৌড় প্রতিযোগিতা করতেন। নবীজির হাঁটার ভেতরও সবসময় স্বতঃস্ফূর্ততা বিরাজ করত। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেছেন, ‘আমি নবীজির চেয়ে দ্রুতগতিতে কাউকে হাঁটতে দেখিনি।’ (তিরমিজি : ৩৬৪৮)
মানুষের শরীরে খাবারে বড় একটা প্রভাব রয়েছে। তাই সাবধানে ও সতর্কতার সঙ্গে পরিমিত খাবার গ্রহণ করা। অতিরিক্ত খাবার যেমন শরীরের জন্য ক্ষতিকর, তেমনি একেবারে কম খাওয়াও শরীরের জন্য ক্ষতিকর। হাদিসে এসেছে, নবীজি খুব পরিমিত আহার করতেন এবং সাহাবাদের পেটের এক ভাগ খাদ্য, এক ভাগ পানীয়, আর এক ভাগ শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য ফাঁকা রাখতে বলতেন। (বুখারি : ৫০৮১; তিরমিজি : ১৩৮১)
অপরিচ্ছন্নতা ও এলোমেলো পরিবেশ শরীরে রোগব্যাধি ছড়ায়। আর ধীরে ধীরে এর প্রভাব মন ও মস্তিষ্ককে আচ্ছন্ন করে ফেলে। তাই মহানবী (সা.) এ বিষয়ে বিশেষ সতর্ক করেছেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘পাঁচটি বিষয় মানুষের স্বভাবজাত
১. খতনা করা, ২. নাভির নিচের অবাঞ্ছিত লোম পরিষ্কার করা, ৩. গোঁফ কাটা, ৪. নখ কাটা, ৫. বগলের লোম উপড়ে ফেলা’ (বুখারি : হাদিস ৫৮৮৯)। শরীরের সুস্থতা ও সক্ষমতা ধরে রাখা এবং এর উন্নতিসাধন আল্লাহর ইবাদত পালনের স্বার্থেই জরুরি। এ ব্যাপারে অবহেলা কাম্য নয়।
Aminur / Aminur

ইবাদতের জন্য স্বাস্থ্যসচেতনতা জরুরি

জান্নাতে প্রবেশের সহজতর আমল

অমুসলিমদের কি মসজিদে প্রবেশ নিষেধ?

মেহমানকে সম্মান দিলে নিজের সম্মান

জীবনের অনিশ্চয়তা কাটবে যেভাবে

আল্লাহর রহমত পায় যারা

পাপের সূচনা হয় যেভাবে

ঈমান ও কুফর নির্ণয় হয় নামাজে

ইসলামী বইমেলার সময় বাড়ল

নারীদের জ্ঞানচর্চায় ইসলামের তাগিদ

হৃদয়-হৃদ্যতার সেতুবন্ধ হাদিয়া

অবৈধ প্রেম-ভালোবাসা থেকে মুক্তির উপায়
