শিক্ষক সংকট, ভোগান্তি ও সাফল্যের গল্প, গোপালগঞ্জের প্রাথমিক শিক্ষার বাস্তব চিত্র
বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার প্রথম ধাপ—প্রাথমিক শিক্ষা। স্বাধীনতার পর থেকে এ খাতের উন্নয়ন নানা সূচকে এগোলেও মাঠপর্যায়ে এখনও রয়ে গেছে শিক্ষক-স্বল্পতা, অবকাঠামো সংকট এবং প্রশাসনিক জটিলতার মতো দীর্ঘদিনের সমস্যাগুলো। তবুও সীমাবদ্ধতার ভেতর নিরলস পরিশ্রমে গোপালগঞ্জের নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষক সমাজ তুলে ধরছেন সাফল্যের নীরব বিপ্লব।
শিক্ষা খাতের সংকট—সংখ্যার চেয়েও বড় বাস্তবতা
গোপালগঞ্জ জেলা শিক্ষা অফিসার মোসা. জ্যোৎস্না খাতুন জানান, জেলার বহু বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট এখনো মারাত্মক। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ৮৬২টির বিপরীতে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে ১৮৭টি। সহকারী শিক্ষকের ৪২৮৪টি পদের মধ্যে শূন্য রয়েছে ১২২টি। অনেক প্রতিষ্ঠানেই একজন শিক্ষককে একাধিক শ্রেণির পাঠদান করতে বাধ্য হতে হচ্ছে—যা মানসম্মত শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য বড় বাধা।
তিনি আরও জানান, জেলার ১০-১২টি স্কুল জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে এবং মেরামতের জন্য তালিকা ইতোমধ্যে পাঠানো হয়েছে। এদিকে নিয়োগ প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রতা বিদ্যালয়গুলোতে সংকটকে আরও ঘনীভূত করছে।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার সোনাসুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শেখ মুজিবুর রহমান বলেন, বর্ষা মৌসুমে হাঁটুসমান কাদা পানি কিংবা নৌকা—এ দুটিই শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের দৈনন্দিন ঝুঁকি। ফলে উপস্থিতি কমে যায়, ব্যাহত হয় পাঠদান।
এছাড়া কিছু এলাকায় “বিনামূল্যে শিক্ষার” সরকারি নির্দেশনার পরও পরীক্ষার নামে ফি আদায়ের অভিযোগে অভিভাবকদের ক্ষোভ বাড়ছে।
চ্যালেঞ্জের মধ্যেও অর্জনের উজ্জ্বল রেখা
সব সংকট সত্ত্বেও সরকারি উদ্যোগে বিনামূল্যে বই বিতরণ, উপবৃত্তি, অবকাঠামো উন্নয়নসহ নানা কর্মসূচি প্রাথমিক শিক্ষার ভিত্তিকে শক্ত করেছে। এর ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে ভর্তির হারে ও শিক্ষার্থীদের ধারাবাহিক অগ্রগতিতে।
জেলার কয়েকটি বিদ্যালয় নিজস্ব উদ্যোগে পাঠদানের মান বৃদ্ধি করে স্থানীয় পর্যায়ে দারুণ সুনাম অর্জন করেছে। অতীতে একাধিকবার কিছু স্কুল জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ বিদ্যালয়ের স্বীকৃতি পেয়ে আলোচনায় এসেছে।
শিক্ষক সমাজের নীরব বিপ্লব—সাফল্যের মূল চালিকাশক্তি
গোপালগঞ্জের প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থার শক্তি এখানকার শিক্ষকরা—যারা সীমাবদ্ধতার ভেতরেও শিশুদের হাতে অক্ষরজ্ঞান তুলে দিতে কাজ করছেন প্রতিদিন।
অভিভাবকদের মতে, জেলার বহু শিক্ষক সৃজনশীলতা ও নিষ্ঠার মাধ্যমে শিক্ষার মান উন্নয়নে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। ২০২৪ সালে গোপালগঞ্জ থেকে জাতীয় ও জেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছেন দুইজন—টুঙ্গীপাড়ার কেড়াইলকোপা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হোসনে আরা পারভীন এবং কাশিয়ানীর ২৪ নং হরিদাসপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. খিজির আহমেদ। তাদের এই সম্মান শিক্ষক সমাজে উৎসাহের নতুন দিগন্ত তৈরি করেছে।
গোপালগঞ্জের প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা যেমন সংকটে জর্জরিত, তেমনি সম্ভাবনারও এক উজ্জ্বল ক্ষেত্র। অবকাঠামো ও জনবল সংকট দূর হলে এবং নিয়োগ প্রক্রিয়া দ্রুততর হলে জেলার প্রাথমিক শিক্ষা আরও শক্ত ভিতের ওপর দাঁড়াবে—এমনটাই প্রত্যাশা শিক্ষক ও অভিভাবকদের।
আর মাঠপর্যায়ে শিক্ষকদের নিরলস পরিশ্রমই এই যাত্রার মূল শক্তি হয়ে থাকবে—নীরব বিপ্লবের অটুট পথচলায়।
এমএসএম / এমএসএম
নওগাঁয় মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ পৌরবাসী
মান্দায় নারী উন্নয়ন ফোরামের নামে ১০ লাখ টাকা ‘গায়েব’
নেত্রকোণা-১ খেলাফত মজলিশের এমপি প্রার্থী গোলাম রব্বানী বিশাল মোটর সাইকেল নিয়ে নির্বাচনী শোডাউন
সিংড়ার চলনবিলে নৌকায় কাটছেন আমন ধান
মধুখালীতে ভেজাল কীটনাশক কারখানায় অভিযান ১ লক্ষ টাকা জরিমানা ও ১ বছরের কারাদন্ড
রোগী বাড়ছে মেহেরপুর হাসপাতালে, কিন্তু অধিকাংশ ওষুধ নেই
মান্দায় বিজয় ও শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভা
বড়লেখায় র্যাবের অভিযানে সাড়ে সাতাশ লক্ষ টাকার ইয়াবা জব্দ; গ্রেফতার যুবক
শ্রীমঙ্গলে ঝোপ কাটতে গিয়ে ধরা পড়ল ১২ ফুটের অজগর
সন্দ্বীপে জলবায়ু উদ্বাস্তু ব্যবস্থাপনা ও পুনর্বাসন শক্তিশালীকরণে সেমিনার অনুষ্ঠিত
চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে এনডিএফের ইসিজি মেশিন প্রদান
মনপুরায় এতিমের হক আত্মসাৎ করার অভিযোগ আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক এর বিরুদ্ধে