সালিশে ধামা-চাপার চেষ্টা
স্ত্রীর সাথে আপত্তিকর অবস্থায় আ’লীগ নেতাকে পেয়ে মারধর করলেন স্বামী
স্ত্রীর সাথে আপত্তিকর অবস্থায় এক আওয়ামী লীগ নেতাকে হাতেনাতে ধরে গাছের সাথে বেঁধে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করেছেন ওই নারীর স্বামী। ঘটনাটি ঘটেছে আক্কেলপুর উপজেলার সোনামুখী ইউনিয়নের আশ্রয়ণ প্রকল্পে। সালিশ বৈঠক করে ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেন ইউপি চেয়ারম্যান ডিএম রাহেল ইমাম। গতকাল বৃহস্পতিবার (৩ জুন) দুপুর ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, ওই আওয়ামী লীগ নেতার নাম মোতালেব হোসেন। তিনি রামশালা গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে। মোতালেব হোসেন উপজেলার সোনামুখী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন। তার দলীয় পদবী নিশ্চিত করেছেন সোনামুখী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা। ওই ঘটনায় গৃহবধূ বিচার চেয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মোতালেব হোসেন ওই গৃহবধূর স্বামীর বন্ধু। সেই সুবাদে দীর্ঘদিন থেকে মোতালেব ওই গৃহবধূর বাড়িতে আসা-যাওয়া করতেন। ঘটনার দিন (বৃহস্পতিবার) মোতালেবের আশ্রয়ণ প্রকল্পের সামনে থাকা গভীর নলকূপের হালখাতা ছিল। দুপুর ১২টার দিকে মোতালেব ওই গৃহবধূর স্বামীকে নলকূপের ঘরে রেখে গৃহবধূর বাড়িতে আসেন। এরপর মোতালেব ঘরে ঢুকে টিভি দেখছিলেন। কিছুক্ষণ পরে গৃহবধূর স্বামী ঘরে ঢুকে মোতালেব ও তার স্ত্রীকে আপত্তিকর অবস্থায় ধরে চিৎকার দেন। পরবর্তীতে মোতালেবকে গাছের সাথে বেঁধে বেধড়ক পেটান। খবর পেয়ে ইউপি চেয়ারম্যান ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। সেখানে তিনি সালিশ বৈঠক বসান। ওই সময় পুলিশও বিষয়টি জেনে ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়। বৈঠক চলাকালীন কৌশলে মোতালেব পালিয়ে যান। কিছু সময় পর চেয়ারম্যানও ঘটনাস্থল থেকে চলে যান।
গৃহবধূর স্বামী বলেন, ওই দিন মোতালেবের গভীর নলকূপে হালখাতা চলছিল। দুপুর ১২টার দিকে মোতালেব আমাকে ক্যাশে বসিয়ে রেখে আমার বাড়িতে যায়। তখন আমার সন্দেহ হয়। আমি কিছু সময় পর বাড়ি গিয়ে ঘরে ঢুকে দেখি মোতালেব ও আমার স্ত্রী আপত্তিকর অবস্থায় রয়েছে। পরে ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বার ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। কিন্তু তারা এ ঘটনা কোনো বিচার না করে মোতালেবকে কৌশলে সালিশ বৈঠক থেকে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেন। আমি এর বিচার চাই।
এদিকে গৃহবধূ বলেন, মোতালেব আগে থেকে আমাদের বাড়িতে আসা-যাওয়া করত। আমার স্বামী তাকে ধরে মেরেছে। আমার দুর্নাম ওঠার পর স্বামী আর আমাকে নিতে চায় না। আবার বিচারও পেলাম না। এখন মরা ছাড়া আমার কোনো উপায় দেখছি না। তবুও বিচার চেয়ে থানায় অভিযোগ দিয়েছি।
অভিযুক্ত মোতালেব হোসেন বলেন, আমি আশ্রয়ণ প্রকল্পের পাশে গভীর নলকূপের ব্যবসা করি। ঘটনার দিন আমি ওই গৃহবধূর বাড়িতে গিয়েছিলাম পানি খেতে। হাঠাৎ করে ওই গৃহবধূর স্বামী ঘরে ঢুকেই আমার গেঞ্জি টেনে ধরে মারপিট শুরু করে। পরে ঘর থেকে বের করে গাছের সাথে বেঁধে পেটানো হয় বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সোনামুখী ইউপি চেয়ারম্যান ডিএম রাহেল ইমাম বলেন, ঘটনার দিন মেয়েটির সাথে মোতালেবের কিছু হয়নি। তার স্বামী সন্দেহের বশে মোতালেবকে আটকে পিটিয়েছে। ওই গৃহবধূই স্বীকার করছে মোতালেব তার কোনো ক্ষতি করেনি। তার পরেও সালিশ বৈঠকের আয়োজন করেছিলাম। কিন্তু কেউ তা মানেনি।
আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় আইনি পক্রিয়া চলমান রয়েছে।
এমএসএম / জামান