ঢাকা রবিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২৫

শিক্ষকদের দ্বন্দ্বে দুই বছরেও প্রকাশিত হয়নি সেমিস্টার পরীক্ষার ফল


মো. আরাফাত রহমান, জাককানইবি photo মো. আরাফাত রহমান, জাককানইবি
প্রকাশিত: ২-১১-২০২১ দুপুর ১১:৩০

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের স্নাতক চার বছরে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনো দ্বিতীয় বর্ষেই অধ্যয়নরত আছেন উক্ত বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এ সঙ্কটের মূল কারণ হিসেবে উঠে এসেছে শিক্ষকদের মধ্যে অন্তঃকলহ।

দুই বছরেও হয়নি এক সেমিস্টারের ফলাফল। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বিলম্ব করেই শুরু হয়েছিল শিক্ষাবর্ষটির দ্বিতীয় বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টার পরীক্ষা, যা শেষ হয় একই বছরের অক্টোবর মাসে। পরীক্ষা শেষের তিন মাসের মধ্যে ফলাফল প্রকাশের বাধ্যবাধকাতা থাকলেও সেই নিয়মের তোয়াক্কাই করেনি বিভাগটি। বিভাগটির ৫টি শিক্ষাবর্ষের কোনো ব্যাচের সঙ্গেই মানা হয়নি এই নিয়ম। বছরের পর বছর আটকে থাকে বিভাগটির বিভিন্ন শিক্ষাবর্ষের ফলাফল। বিভাগটিতে সেশনজটের চিত্র ভয়াবহ। বর্তমানে দ্বিতীয় বর্ষে রয়েছে তিনটি শিক্ষাবর্ষের ১১১ জন শিক্ষার্থী। ফলাফল প্রকাশের বিড়ম্বনায় শিক্ষার্থীরা বারবার বিভাগটির প্রধান ড. আশরাফ আলী সিদ্দিকী এবং উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএইচএম মোস্তাফিজুর রহমানের কাছে গেলেও কোনো সমাধান পায়নি।

বিভাগটিতে শিক্ষকদের দুটি অংশের কোন্দলই সংকট বৃদ্ধি করছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বিভাগটির শিক্ষক নকিবুল হাসান খান ও আশরাফ সিদ্দিকীর দ্বন্দ্বেই বিভাগটিতে সংকট বাড়ছে। শিক্ষার্থীদের দিয়ে একে অন্যের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ দেয়া থেকে শুরু করে সকল কাজেই শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করার অভিযোগ রয়েছে এই দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে। তবে বিভাগে আতঙ্কের নাম নকিবুল হাসান খান। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তাদের দিয়ে অন্য শিক্ষকদের ফোন করিয়ে থাকেন তিনি। শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে জানতে চান ফোনের অপর প্রান্তে থাকা শিক্ষক কী বলেছেন। এমনকি শিক্ষার্থীদের দিয়ে অন্য শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্রও লিখিয়েছেন এই শিক্ষক।

একই অভিযোগ রয়েছে বিভাগটির বর্তমান বিভাগ প্রধানের বিরুদ্ধেও। ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের তিন সেমিস্টার পরীক্ষায় একটি ল্যাব কোর্সের পরীক্ষা ছয় মাস পর নিয়েছিলেন নকিবুল হাসান। সেটিও আন্দোলনের মুখে পড়ে। পরীক্ষার খাতার মূল্যায়ন সময়মতো না করা, বিভাগের সভায় অংশ না নেওয়ার মতো অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

বিভাগটিতে শিক্ষক দ্বন্দ্ব এতটায় কঠিন যার চিত্র উঠে আসে ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের পরীক্ষা কমিটির দিকে তাকালে। যেখানে বিভাগটির একটি শিক্ষাবর্ষের  পরীক্ষা কমিটির সভাপতি করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের খোদ উপাচার্যকে। সে সময় বিভাগটির প্রধান ড. আশরাফ সিদ্দিকী ছুটিতে থাকায় ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এফ কে সায়মা তানজিয়া। ভারপ্রাপ্তের দায়িত্ব পালন অবস্থায় পরিবর্তন করেন পরীক্ষা কমিটির সভাপতির নাম। যেখানে ড. আশরাফ সিদ্দিকীর পরিবর্তে প্রধান করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য। 

এই নিয়ে জানতে চাইলে বিভাগটির শিক্ষক এফ কে সায়মা তানজিয়া বলেন, আমি কিছু করিনি। ভিসি স্যারই সব করেছেন। আর অভ্যন্তরীণ কোন্দলে শিক্ষার্থীদের ক্ষতির বিষয়টি নিয়ে কথা তুলতেই উত্তপ্ত হয়ে যান এই শিক্ষাক। বলেন, আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয় পাবলিক করার কি আছে? ফোন রাখেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যাই এটা।

২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ফলাফল প্রকাশেও অসহযোগিতার অভিযোগ রয়েছে নকিবুল হাসান খানের বিরুদ্ধে। এমনকি উপাচার্য দায়িত্ব নিয়েও কাজ করাতে পারেননি তাকে দিয়ে। কমিটিতে নকিবুল ইসলামের অসহযোগিতার কথাও স্বীকার করেছেন আরেক শিক্ষক এস বিপুলেন্দু বসাক। তিনি বলেন, আমি আমার জায়গায় সবটা দিয়ে চেষ্টা করি। সকলের সহযোগিতা পেলেই কেবল সম্ভব এই সমস্যার সমাধান। কেউ একজন অসহযোগিতা করলেই আটকে যায় সকল কাজ।

একাধিক অভিযোগের বিষয়ে এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক মো. নকিবুল হাসান খানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে কল এবং ক্ষুদেবার্তা দিয়েও কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।

বিভাগটির প্রধান ড. আশরাফ আলী সিদ্দিকী বলেন, আমরা চেষ্টা করছি। আমার একার দায় না। আমাকে কেউ সহযোগিতা করে না। মিটিং ডাকলে নকিব সাহেব, তানজিয়া ম্যাডাম আসেন না। আমি বলার পরও ইচ্ছে করে আসে না। সভায় আসবে না বলেও জানিয়ে দিয়েছেন নকিব সাহেব। এসব বিষয়ে কথা উঠলে নকিবুল ইসলাম পরে অস্বীকার করেন বলে এসব কথার কল রেকর্ড সংরক্ষিত করে রেখেছেন বলেও জানান বিভাগীয় প্রধান।

তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমি ছুটিতে থাকা অবস্থায় ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করার সময় আমাকে বাদ দিয়ে উপাচার্য স্যারকে পরীক্ষা কমিটির সভাপতি করেছেন। এটা কোন কথা? একটা বিভাগের একটা ব্যাচের পরীক্ষা কমিটির সভাপতি হতে হয় ভিসি স্যারকে? বাকিটা আপনারা বুঝে নিন।’ফলাফল প্রকাশে বিলম্ব হবার কারণ নিয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুল হালিম বলেন, ‘বিভাগটির অভ্যন্তরীন সমস্যার কারণে বিলম্ব হয়েছে। আমাদের এখানে কিছু করার নেই। আমাদের থেকে যা সমস্যা ছিলো তা অনেক আগেই সমাধান হয়ে গেছে।

তবে বিভাগটির ফলাফল প্রকাশ নিয়ে কথা বলতে অপারগতা জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধাপক ড. এএইচএম মোস্তাফিজুর রহমান। তবে দ্রুতই সমস্যার সমাধান হবে বলে জানান উপাচার্য।

এমএসএম / জামান

'ফিজিক্যালি চ্যালেঞ্জড' শিক্ষার্থীদের বৃত্তি ও উপহার সামগ্রী দিল জবি শিবির

মতামতবিহীন মতবিনিময় সভায় পবিপ্রবিতে ইউজিসি চেয়ারম্যান: সাংবাদিকদের প্রশ্নে বাধা

‘সি আর আবরার, আর নেই দরকার’ স্লোগানে শিক্ষকদের পতাকা মিছিল

শাবিপ্রবিতে আন্তর্জাতিক সম্মেলনে গোবিপ্রবি উপাচার্যের প্রবন্ধ উপস্থাপন

২০ বছরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়: অর্জন, সংকট ও নতুন স্বপ্নে একুশে পদার্পণ

রাকসুর ভিপি-এজিএস শিবিরের, জিএস আধিপত্য বিরোধী ঐক্যের

ভুলত্রুটি ছাড়াই ফল প্রস্তুত হয়েছে, বাড়ানো হয়েছে পরীক্ষকদের সম্মানী

২০২ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সবাই ফেল

এইচএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশ, পাসের হার ৫৮.৮৩ শতাংশ

অপেক্ষার অবসান ১২ লাখ শিক্ষার্থীর, সকাল ১০টায় এইচএসসির ফল

পিআরসহ ৫ দফা দাবিতে ঝিনাইদহে জামায়াতের মানববন্ধন

গোবিপ্রবিতে কর্মকর্তাদের ডিজিটাল অফিস ম্যানেজমেন্ট প্রশিক্ষণ শুরু

চাকসুর প্রচারণা শেষ, ভোট আগামীকাল