ঢাকা বৃহষ্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪

ফুলছড়ির প্রাণকেন্দ্র বালাশিতে ভ্রমণ পিপাসুদের ভিড়


মজিবর রহমান, গাইবান্ধা photo মজিবর রহমান, গাইবান্ধা
প্রকাশিত: ৩-১২-২০২১ দুপুর ২:৩৬

বাংলাদেশে করোনার থাবা অনেকটাই কমে আসায় দেশের সব পর্যটন কেন্দ্র খুলে দিয়েছে সরকার।পর্যটন কেন্দ্র চালু হওয়ায় হাজার হাজার পর্যটক বাংলাদেশের অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্রের মতো  উত্তরের জেলা গাইবান্ধার বৃহত্তম বালাশি ঘাটে ভিড় জমাচ্ছেন।বালাশির মতো ভ্রমণ পিপাসু পর্যটকদের একটু সতেজতা দিতে অথৈই পানি? হ্যান্ডশেক করে ডাকছে। তাই বালাশি ঘাটে ব্রহ্মপুত্র নদের সৌন্দর্য উপভোগ করতে ভিড় জমাচ্ছেন পর্যটকরা। ব্রহ্মপুত্র নদীর পাড় বালাশি এখন একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র।  করোনাকে ভুলে পর্যটকরা এখানে নির্মল ছায়া খুঁজছেন। এ যেন অন্য জগতে।

গাইবান্ধা  জেলা আমাদের দেশের অপার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি।গাইবান্ধা জেলার কয়েকটি উপজেলায়  ফুলছড়ি বৃহত্তম বালাশি ঘাট একটি বড় অংশ রয়েছে।  ব্রহ্মপুত্র নদের বুক চিরে ভাসছে সমুদ্রের মতো বিস্তীর্ণ জল। নদী দিয়ে হাজার হাজার নৌকা চলাচল করছে। নদীর গভীর জলে অবারিত ঢেউ খেলা করছে। নদীর পানির ঢেউ একে অপরের সাথে আছড়ে পড়ছে।এখানে-সেখানে ভেসে যাচ্ছে ছোট-বড় অনেক নৌকা-ডিঙ্গি।অনেক পর্যটক আবার মাঝারি আকারের নৌকায় করে চরে আসছেন, আবার অনেকে স্পিড বোটে করে নদীর পানির স্তর দেখতে আসছেন।  দূরে সবুজ লাইনের মতো গ্রাম পানিতে ভাসছে।জলে ভাসছে বুক

আছে কাসিয়া-ভুট্টা বাগান। দূর থেকে দেখলে মনে হয় কাসিয়া গাছগুলো চরের অপরূপ সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে। ওপারে যখন একটু একটু করে সূর্য অস্ত যাচ্ছে।  ঠিক তখনই নদীর বুকে ব্রম্মপুত্রের ঝলমলে রুপালি রুপ নিচ্ছে ।সবকিছু বদলে যেতে শুরু করে। নদীর পানিতে ছিল লাল-সবুজের মিশ্রণ।মেঘদলও শেষ বিকেলের ছবি এঁকেছে। রঙিন মেঘ নেমে আসে ব্রম্মপুত্রের  জলে।ভেসে যায় টুকরো, টুকরো কচুরিপানা কখনো ডুবে না।  প্রতিবারই ব্রহ্মপুত্র নদে এমন মায়া মেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, করোনা সংক্রমণ কমে যাওয়ায় প্রতিদিনই বিপুল সংখ্যক মানুষ বালাশিতে ভিড় করছেন।বর্তমানে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অনেক দেশী-বিদেশী পর্যটক স্বাস্থ্যবিধি মেনে বালাশিতে ছুটে আসছেন।কেউ কেউ ব্রহ্মপুত্র নদীর তীরে ঘোরাঘুরি করে সময় কাটাচ্ছেন।কেউ আবার ভাসছে অথৈ জলে।অনেকে আবার নদীর মাঝখানে নৌকা থেকে পানিতে ঝাঁপ দিচ্ছেন, কিছুটা শান্তির আশায়। কেউ কেউ মনের আনন্দে সাঁতার কাটছে। অনেকেই নৌকায় ভ্রমণ করেছেন। ভ্রমণ পিপাসুরাও নৌকা যোগে  যাতায়াত করছেন। হারডাঙ্গা ও কোচখালি  অংশে পর্যটকদের আনাগোনা সবচেয়ে বেশি। 

আজকাল মহাদেশীয় তাক বেয়ে মানুষের জোয়ার বইছে।বালাসি তুফান ও একাত্তরের বিজয় এর নিয়মিত নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা।পর্যটকদের তুলনায় নৌকা কম হওয়ায় পর্যটকদের প্রায়ই বেশি ভাড়া দিতে হয়।

বালাশিতে বেড়াতে আসা সিনিয়র সাংবাদিক শাহ আলম যাদু বলেন, বালাশি ঘাটের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পরিবার নিয়ে এসেছি।  ব্রহ্মপুত্র নদ কত সুন্দর তা নিজ চোখে না দেখলে বিশ্বাসই হবে না। বালাসী ঘাট এর  প্রাণকেন্দ্রে সুদর্শন বিশাল বাস টার্মিনাল,গভীর পানির মতো মনোমুগ্ধকর পরিবেশ। আমি হাজার হাজার পর্যটকের সাথে একটি গভীর শ্বাস নিতে এসেছি। তবে ভ্রমণ সুবিধা বাড়ানো গেলে এটি একটি আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন স্পট হয়ে উঠতে পারে। এখানে দিনে দিনে পর্যটকের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। আমি পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা ও সহযোগিতার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ করছি।

স্থানীয় সাংবাদিক তাজুল ইসলাম জানান,ব্রহ্মপুত্র নদের বুকে সূর্যও ক্লান্ত হয়ে পড়ে তাই দিগন্তের সুদূরে সূর্য অস্ত যেতে সন্ধ্যা হয়ে যায়। সন্ধ্যা হলেই পায়ে হেঁটে আসে পর্যটকদের নৌকা। সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে পানিতে ভাসমান জেলের নৌকাগুলোতে প্রদীপগুলো জ্বলে উঠল।যেন অন্ধকার মানে এখানেই শেষ নয়,নতুন কিছুর প্রস্তুতি।ব্রহ্মপুত্র নদের বালাসী ঘাটে পর্যটকদের জন্য সরকারকে সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে হবে।

জামান / জামান