প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানালেন আমানপুরের বিধবা ছফুরা বেওয়া ও প্রতিবন্ধী জলিল
‘আশ্রয়ণের অধিকার, শেখ হাসিনার উপহার' স্লোগানকে সামনে রেখে এবং মুজিববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে আগামী ২০ জুন সারাদেশের গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারের মাঝে ২ শতাংশ করে জমি ও ২ কক্ষবিশিষ্ট একটি করে পাকা বাড়ি উপহার পাচ্ছেন ৫৩ হাজার ৩৪০টি পরিবার।
আক্কেলপুরের রায়কালী ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রাম আমানপুর। এ গ্রামের ৬৮ বছর বয়সী বিধবা ছফুরা। ১৩ বছর আগে স্বামী হারিয়ে মানুষের বাড়িতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। দুই ছেলে ও দুই মেয়ের বিয়ের পর অনেকটা একা হয়ে পড়েন বৃদ্ধা ছফুরা বেওয়া। মানুষের আশ্রিত জায়গাতে মাটির বাড়ি করে একরকম মানবেতর জীবনযাপন করছিলেন। একখণ্ড জমি এবং পাকা বাড়ি তার কাছে স্বপ্নের মতো। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে একটি দৃষ্টিনন্দিত বাড়ি ও ২ শতাংশ জমির মালিকানা পেয়ে তার চোখ অশ্রুসজল। তবে এই অশ্রু বেদনার আশ্রু নয়, এ আশ্রু আনন্দঅশ্রু। কৃতজ্ঞচিত্তে তিনি দৈনিক সকালের সময়কে জানান, ‘শেখের বেটি হামাক একখান ঘর দিছে বাপু। হামি সারাজীবন তার জন্যি দোয়া করি। আল্লাহ যেন তাক দীর্ঘজীবী করে।’
শারীরিক প্রতিবন্ধী আব্দুল জলিল (৫২)। স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে তার দুই পা প্যারালাইজড হয়ে যায়। দীর্ঘ ১০ বছর যাবৎ হুইলচেয়ারে চলাফেরা করেন তিনি। এক সময় পারিবারিক অবস্থা ভালো ছিল। কিন্তু স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার পর চিকিৎসা করাতে গিয়ে সহায়-সম্বল সব বিক্রি করে মানবেতর জীবনযাপন করছিলেন আব্দুল জলিল। তার স্ত্রী গার্মেন্টসে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। কিন্তু তিনিও অসুস্থ হয়ে পড়ার পর তারা ঢাকা ছেড়ে এলাকায় চলে আসেন এবং মানুষের বাড়িতে আশ্রিত হয়ে জীবন নির্বাহ করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার পেয়ে আবেগাপ্লুত জলিল বলেন, আজ আমি আবার নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছি। আমার একটি আশ্রয় হয়েছে। সামাজিকভাবে আমার একটি অবস্থান তৈরি হয়েছে। আমাকে আর কেউ অবাঞ্ছিত বা উঠুলী বলে গালি দিতে পারবে না। আমিও আজ একজন ভূমি মালিক। আমারও নিজের মতো করে বাচাঁর অধিকার আছে। সামাজিকভাবে আমিও মর্যাদার অধিকারী।
উপজেলার রায়কালী ইউনিয়নের আমানপুর গ্রামের মনোরম পরিবেশে এমন ১০টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের ঠাই হয়েছে। অধিকাংশ পরিবারই শ্রমিক এবং দিনমজুর হিসেবে জীবিকা নির্বাহ করে। এই সকল পরিবারের প্রত্যেক সদস্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতার পাশাপাশি উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম হাবিবুল হাসানকে ধন্যবাদ জানান।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম হাবিবুল হাসান জানান, মুজিববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে এ উপজেলার ১০টি পরিবারকে ২ শতাংশ করে খাসজমি ও দ্বি কক্ষবিশিষ্ট সুদৃশ্য একটি বাড়ি বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। উপকারভোগী বাছাই এবং গৃহ নির্মাণকাজে সংশ্লিষ্ট কমিটির সদস্যবৃন্দ এবং জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতা নিয়ে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর ভিশন পূরণে উপজেলা প্রশাসন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
এমএসএম / জামান