ঢাকা সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ঝিনাইদহে ধর্ষণে বাধা দেয়ায় এক সপ্তাহের ব্যবধানে নারীসহ ৩ জনকে হত্যা


শামীমুল ইসলাম শামীম, ঝিনাইদহ photo শামীমুল ইসলাম শামীম, ঝিনাইদহ
প্রকাশিত: ১৩-২-২০২২ দুপুর ৪:৩৩

ঝিনাইদহে ৭ দিনের ব্যবধানে খুন হয় এক নারীসহ তিনজন। এ ঘটনায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে পুলিশ। ধর্ষণে বাধা দেয়ায় পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যার ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে বেরিয়ে এসেছে বিকৃত যৌনাচার থেকে এক সপ্তাহে তিনজনকে হত্যার ভয়ঙ্কর তথ্য। কাজটি করেছেন ইয়াদ আলী মোল্যা (৪৫) নামে এক মাদকাসক্ত ব্যক্তি। ইয়াদ আলী নড়াইল সদর উপজেলার ডুমুরতলা গ্রামের মৃত চাঁন মোল্লার ছেলে। তিনি ৪-৫ মাস আগে ঝিনাইদহে এসেছেন বলে ধারণা করছে পুলিশ। তিনি পুলিশের কাছে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন- চাঁদপুর জেলার কচুয়া থানার নুরপুর গ্রামের মৃত সিদ্দিক পাটোয়ারীর ছেলে ইলিয়াস পাটোয়ারী, সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ থানার রহিমপুর গ্রামের আব্দুল জব্বারের ছেলে সালাউদ্দিন এবং ঝিনাইদহের পোড়াহাটি গ্রামের আনা মিয়ার স্ত্রী বিবি জান। বিকৃত যৌনাচারে বাধা দেয়ায় ৫ ফেব্ররুয়ারি রাতে স্কুলের বারান্দায় ঘুমিয়ে থাকা ইলিয়াস পাটোয়ারীকে টিউবওয়েলের হাতল দিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যা করা হয়। একইভাবে হত্যা করা হয় লাউদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বারান্দায় ঘুমিয়ে থাকা অজ্ঞাত পরিচয়ের এক ব্যক্তিকে। তাকেও লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যায় ইয়াদ।

পুলিশ জানিয়েছে, ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পোড়াহাটি গ্রামে গত ১০ ফেব্ররুয়ারি বিবিজান বেগম নামে ৪৫ বছরের এক নারীকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন ইয়াদ। ধর্ষণে বাধা দিলে ওই নারীকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যার পর পালানোর চেষ্টা করেন তিনি। এ সময় স্থানীয়রা তাকে আটক করে র‌্যাবের হাতে তুলে দেয়।

এ ঘটনায় নিহতের ছেলে আবু জাফর থানায় মামলা করলে র্যাব ইয়াদ আলীকে পুলিশের কাছে পাঠায়। তদন্তে নেমে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদে পেয়ে যায় আরও দুটি হত্যার তথ্য।

ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবুল বাশার জানান, ‘বিবিজান বেগম নামের ওই নারীকে হত্যার পর আঘাতের ধরন দেখে আমাদের সন্দেহ হয়।’

ইয়াদ আলীর বরাত দিয়ে তিনি বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে ঝিনাইদহের বিভিন্ন এলাকায় ঘোরাফেরা করছিলেন ইয়াদ মোল্লা। রাতে এসব এলাকার স্কুল ও নির্জন জায়গা বেছে নিতেন ঘুমানোর জন্য। প্রায় ১৫ দিন ধরে জেলা সদরের লাউদিয়া এলাকায় রাত্রিযাপন করছিলেন ইয়াদ মোল্লা। এরই এক পর্যায়ে লাউদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে রাত্রিযাপন শুরু করেন সালাউদ্দিন নামের মানসিক ভারসাম্যহীন এক ব্যক্তি। এসময় সালাউদ্দিনকে সমকামিতায় লিপ্ত হওয়ার জন্য চেষ্টা করেন ইয়াদ মোল্লা। তবে অনেক চেষ্টা করেও তাকে সমকামিতায় রাজি করাতে পারেননি। এক রাতে ঘুমানোর এক পর্যায়ে দেখেন তার কম্বল জড়িয়ে ঘুমিয়ে আছেন সালাউদ্দিন। তাকে এ অবস্থায় দেখে পার্শ্ববর্তী মাঠে থাকা একটি মেহগনি ডাল নিয়ে এসে ঘুমন্ত সালাউদ্দিনকে পিটিয়ে হত্যা করেন ইয়াদ মোল্লা। পরে মরদেহ স্কুলের সিঁড়ির নিচে রেখে তেঁতুলতলা এলাকায় থাকা শুরু করেন।

পুলিশ আরও জানায়, সেখানেও সমকামিতা ও রাতে স্কুলের বারান্দায় থাকতে বাধা দেওয়া নিয়ে বিতণ্ডার এক পর্যায়ে ‘গত ৫ জানুয়ারি রাতে এমকে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বারান্দায় ঘুমন্ত অবস্থায় ইলিয়াস পাটোয়ারিকে টিউবওয়েলের হাতল দিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যা করেন ইয়াদ। এবারও তিনি স্থান পরিবর্তন করে সদর উপজেলার পোড়াহাটি ইউনিয়নে থাকা শুরু করেন। সেখানে থাকা অবস্থায় বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্ররুয়ারি) ধর্ষণে বাধা দেওয়ায় বিবি জান নামের এক নারীকে পিটিয়ে আহত করেন। তিনি ছাগলের জন্য গাছের পাতা কাটতে বের হয়েছিলেন।

ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থল থেকে ইয়াদ মোল্লাকে আটক করে র‌্যাব-৬ ঝিনাইদহ ক্যাম্পের টহল দল। সেসময় বিবস্ত্র ও মুখ বাধা অবস্থায় গুরুতর আহত বিবি জানকে উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুরে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। এ সময় স্থানীয়রা তাকে আটক করে র্যাবের হাতে তুলে দেয়।
এ ঘটনায় নিহতের ছেলে আবু জাফর থানায় মামলা করলে র্যাব ইয়াদ আলীকে পুলিশের কাছে পাঠায়। তদন্তে নেমে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদে পেয়ে যায় আরও দুটি হত্যার তথ্য।

ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবুল বাশার বলেন, ‘বিবিজান বেগম নামের ওই নারীকে হত্যার পর আঘাতের ধরন দেখে আমাদের সন্দেহ হয়।’ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরো বলেন, ‘তদন্ত করে ও হত্যার বর্ণনা দেখে নিশ্চিত হয়েছি, বিকৃত যৌনাচার ও ধর্ষণে বাধা দেয়ার কারণে ইয়াদ আলী এই তিনটি হত্যা করেন।’

তিনি জানান, ৬ ফেব্ররুয়ারি তেঁতুলতলা এমকে মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৯ ফেব্ররুয়ারি লাউদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং সর্বশেষ ১০ ফেব্ররুয়ারি পোড়াহাটি এলাকায় পরপর তিনজনকে হত্যা করেন ইয়াদ মোল্লা। তিনি হত্যার দায় স্বীকার করেছেন। তার দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ঘটনাস্থল থেকে সরঞ্জামাদি জব্দ করা হয়। তার বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

ঝিনাইদহ সদর থানার অফির্সাচ ইনচার্জ (ওসি) শেখ মো. সোহেল রানা বলেন, ইয়াদ আলীর এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানতে পারছি সে  একজন মাদকাসক্ত। ঝিনাইদহে তিন ঘটনার মধ্যে দুটিতে হত্যা ও একটিতে অপমৃত্যুর মামলা হয়েছিল। এখন তিনটিই হত্যা মামলা হিসেবে গণ্য হবে। আমরা জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে যাচ্ছে। ইয়াদ আলী আরও কোনো হত্যার সঙ্গে জড়িত আছে কিনা তা বের করার চেষ্টা করা হচেছ। খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি, তিনি মাদক সেবন করতেন। আমাদের তদন্ত অব্যাহত আছে।’

শাফিন / জামান

নড়াইলে গণঅধিকার পরিষদ কর্তৃক লায়ন নুর ইসলামকে সংবর্ধনা

চেয়ারম্যান থেকে সাধারণ সম্পাদক জনআস্থার প্রতীক সাইফুল আলম মৃধা

জয়পুরহাটে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির উদ্যোগে ইউডিআরটি প্রশিক্ষণ এর উদ্বোধন

রাণীশংকৈলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চুরির ঘটনা ঘটেই চলেছে

নড়াইলে গণঅধিকার পরিষদের উদ্যোগে তুলারামপুর ব্রিজের সৌন্দর্যবর্ধন উদ্বোধন

রাণীনগরে রাইডো ব্রেইন ব্যাটল কুইজ প্রতিযোগিতার উদ্বোধন

অভয়নগরে ৫২তম গ্রীষ্মকালীন জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতার উদ্বোধন, অব্যবস্থাপনার অভিযোগ

নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে দালালের দৌরাত্ম, অভিযানে ৭ দালালের কারাদন্ড

শিবচরে পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু

সাতকানিয়া কেরানীহাটের মাছ বাবুল গ্রেফতার

কোটালীপাড়ায় শরীরে আগুন দিয়ে প্রবাসীর স্ত্রীর আত্মহত্যা

আশুলিয়ায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে ইয়াবা ও গাঁজাসহ ৫ জন মাদক ব্যবসায়ী আটক

সিংড়ায় যুবদল নেতার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক দোকান দখলের অভিযোগ