ঢাকা শুক্রবার, ১০ অক্টোবর, ২০২৫

অনুমোদনহীন ও ভেজাল ঘিয়ে সয়লাব আনোয়ারার হাট-বাজার


আনোয়ারা প্রতিনিধি  photo আনোয়ারা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ৩০-৩-২০২২ দুপুর ১:২০

আসন্ন পবিত্র রমজান উপলক্ষে ডালডা আর পাম অয়েলের সঙ্গে সামান্য পরিমাণে ঘি, ফ্লেভার আর রং মিশিয়ে তৈরি হচ্ছে গাওয়া ঘি। আর এসব ঘি বাহারি নাম দিয়ে কৌটাজাত করা হচ্ছে। এরপর বিএসটিআই‍য়ের নকল সিল বসিয়ে অবাধে বাজারজাত করা হচ্ছে আনোয়ারা উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে। রমজান উপলক্ষে ঘিয়ের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীর তৈরি এসব ভেজাল ঘিয়ে এখন সয়লাব হয়ে পড়েছে হাট-বাজার।

স্থানীয় সূত্র জানায়, বর্তমানে আনোয়ারা উপজেলার বৈরাগ, চাতরী, পরৈকোড়া, বারখাইন, আনোয়ারা ও জুইদন্ডী ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে ১০টিরও অধিক নিম্নমানের ঘি তৈরির কারখানা স্থাপিত হয়েছে। এসব কারখানা এক জায়গায় বেশি দিন চালানো হয় না। প্রশাসনের নজর এড়াতে কিছুদিন না যেতে স্থান পরিবর্তন করে অন্য জায়গায় চালানো হয় ব্যবসা। অনেক কারখানায় দিনের বেলা বাহির থেকে তালা ঝুলিয়ে ভেতরে শ্রমিকেরা পণ্য উৎপাদন করে। কোনো কোনো কারখানা দিনের বেলা বন্ধ থাকে, শুধু রাতের বেলা বেশি শ্রমিক লাগিয়ে কাজ চালায়। এসব কারখানার চকচকে মোড়কজাত পণ্য দেখে সাধারণ মানুষের বোঝার কোনো সাধ্য নেই কোনটা আসল কোনটা না নকল।

বেশিরভাগ মোড়কে বিএসটিআই’র লোগো (মনোগ্রাম) ও পণ্যের গুণগানসমৃদ্ধ স্টিকার ছাপিয়ে প্রতারণা করা হচ্ছে ক্রেতাদের। বিএসটিআই সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম অফিস থেকে প্রায় ৪০টি ঘি তৈরির কারখানার অনুমোদন রয়েছে। আনোয়ারায় যেসব কারখানা চলছে বেশিরভাগই অনুমোদনহীন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঘি উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত একজন সাবেক ব্যবসায়ী জানান, শুধু বাঘাবাড়ি ঘিয়ের সুনামকে পুঁজি করে আনোয়ারায় চারটি নকল ঘি কারখানা চলছে। এ ছাড়া আসল ব্র্যান্ডগুলোর কাছাকাছি নামে অন্য কারখানাগুলো তাদের পণ্য বাজারজাত করছে। এসব ঘিয়ের লেবেল, কৌটা, সুগন্ধ দেখে সাধারণ মানুষের আসল–নকল পার্থক্য বোঝা কঠিন। অন্যদিকে খোলা ঘিয়ের বাজারে একক আধিপত্য নকল ঘি উৎপাদকদের। আসল ঘি দুধ থেকে তৈরি হলেও ভেজাল ঘি তৈরি হয় অস্বাস্থ্যকর ছাকা (ছানা বা ক্রিমের বর্জ্য), ভেজাল পাম অয়েল ও ঘিয়ের সুগন্ধি মিশিয়ে।

বিশেষ করে পাবনার বাঘাবাড়ি, ঘোষ, ডানোফা, রেসিপি, সূর্য ঘি, কর্ণফুলী, এসপি, থ্রি স্টার, রূপসা ঘি,বাবু ঘি সহ নানা ব্রান্ডের ঘি। পাইকারি বাজার হয়ে এসব ঘি চলে যাচ্ছে পুরো চট্টগ্রামে।আর তা কিনে প্রতারিত হচ্ছেন সাধারণ ক্রেতারা।অনেক বাবুর্চি কমিশনের বিনিময়ে এসব কারখানার ঘি বাজারজাতে সহযোগিতা করছে। বাবুর্চি ও দোকানিদের দেয়া হয় কেজিপ্রতি ১৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত কমিশন।এব্যাপারে বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা জানান, ভেজার ঘি খাওয়ার পরে মানুষের শরীরে জন্ডিস, বদ হজম ও গ্যাস্ট্রিক, আলসারের মতো কঠিন রোগ সৃষ্টি হচ্ছে। তাছাড়া এসব ঘি গর্ভবতী মা ও শিশুদের জন্য মারাত্মক বিপজ্জনক।ভেজাল ঘি তৈরি করেন এমন একজন কারিগর বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে বিভিন্ন বাসাবাড়ি ভাড়া নিয়ে ছোট্ট কারাখানা বসিয়ে ভেজাল ঘি বানানো হয়। সাধারণত প্রতিটি কৌটায় ৯০০ গ্রাম ঘি থাকে। এ পরিমাণ ঘি তৈরিতে ৬০০ গ্রাম পাম ওয়েল, ২০০ গ্রাম ডালডা ও ১০০ গ্রাম খাঁটি ঘি দেওয়া হয়। এ মিশ্রণে সামান্য পরিমাণে রং ব্যবহার করা হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিক্রেতা জানান, ভালো মানের প্রতি কেজি ঘিয়ের দাম দেড় হাজার থেকে এক হাজার ৮০০ টাকা। তবে ভেজাল ঘি কেজিপ্রতি ৭৫০-৮৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এসব ভেজাল ঘি পাইকারি দরে খুচরা বিক্রেতারা ৪০০-৫০০ টাকায় কেনেন। বেশি লাভ হওয়ায় ভালো মানের ঘিয়ের চেয়ে খারাপ ঘি বিক্রিতেই বেশি উৎসাহ ব্যবসায়ীদের।

বাজারে বিক্রির জন্য রাখা ঘিয়ের কৌটায় দেখা গেছে, প্রতিটি কৌটায় ‘১০০ ভাগ খাঁটি ঘি’ বাক্যটি লেখা। সঙ্গে ঘিয়ের নামসংবলিত কাগজে বিএসটিআইয়ের নকল সিল মুদ্রণ করে রাখা হয়েছে।তবে সে কাগজের কোনো কোনোটিতে উৎপাদন ও মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ লেখা নেই। চারজন খুচরা বিক্রেতা জানান, পবিত্র রমজান উপলক্ষে বিভিন্ন হোটেল-রেস্তোরাঁয় খিচুড়ি ও আখনিসহ নানা ধরনের বাহারি ইফতারসামগ্রী তৈরি হচ্ছে। এসব তৈরিতে অধিকাংশ হোটেলমালিক ভেজাল ঘি কেনেন।

বাজারে কিনতে আসা একজন ঘি ক্রেতা জানান, ‘সবই বিএসটিআইয়ের সিল মারা থাকে। কোনটা আসল আর কোনটা নক তা বুঝতাম কেমনে,দেশটাই ভাই ভেজালে ভরে গেছে!এ ব্যাপারে আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট  শেখ জুবায়ের আহমেদ বলেন,আনোয়ারায় যত ধরনের ভেজাল ঘিয়ের কারখানার খবর পাবো আমরা ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করে ব্যবস্থা নিব।

আনোয়ারা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট  তানভীর হাসান চৌধুরী বলেন,আমরা ক্রমান্বয়ে বিএসটিআই এর সহযোগিতায় অভিযান করবো। আমাদের কারখানায় অভিযানের পক্ষে।

এমএসএম / জামান

৩১ দফা বাস্তবায়ন হলে দেশে আর ফ্যাসিবাদ জন্ম হবে না: শওকত হোসেন সরকার

পাটগ্রামে বিশ্ব দৃষ্টি দিবস পালন

টাঙ্গাইলে জেলা তথ্য অফিসের আয়োজনে টাইফয়েড টিকাদান বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত

নিরাপদ পানি, স্যানিটেশন, হাইজিন শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

কুষ্টিয়ায় সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম কালভীর উপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান

বাউফলে জেলা প্রশাসকের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

পটুয়াখালীতে বাজারের ইজারা নিয়ে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে সন্ত্রাসী হামলায় ৫ পুলিশসহ আহত ৬, গ্রেপ্তার ৩

নওগাঁয় মামলা তদন্তে অনিয়মের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন

টিএইচই র‌্যাঙ্কিংয়ে আবারও শীর্ষে গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

‎আনোয়ারায় মোবাইল কোর্ট অভিযান,তিন মামলায় ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা

ঠাকুরগাঁওয়ে টাইফয়েড টিকা দান ক্যাম্পেইন ও সাংবাদিক ওরিয়েন্টেশন

রাজশাহী সড়ক-জনপথে কর্মচারীদের জনসংযোগ

শাহজাদপুরে বিশ্ব দৃষ্টি দিবস উদযাপন