লৌহজংয়ে পদ্মার চরে গড়ে উঠেছে মিনি কক্সবাজার

মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে পদ্মা নদীর তীরঘেঁষে বালুর চরে গড়ে উঠেছে ‘পদ্মা বিলাস রিসোর্ট’। এর পাশে যেনে মিনি কক্সবাজার। গেলে মনে হবে আপনার সামনে এক টুকরো কক্সবাজার। সারি সারি বাহারি রংয়ের ছাতার তলায় হেলানো চেয়ার সাজানো। দূরে তাকালে সমুদ্রের বেলাভূমির দৃশ্য। পদ্মার উত্তাল ঢেউ আপনার দিকে বারবার এগিয়ে আসবে। চারদিকে বালু চিকচিক স্থলভূমি। সামনে রুপোর মতো চকচকে পানি। এটা পদ্মা, আমাদের প্রিয় পদ্মা নদী। এখানে এলে আপনি সত্যিই মুগ্ধ হবেন পদ্মা নদীর অপরূপ জলরাশি দেখে।
কী নেই এখানে, বিশাল জলরাশিতে হেলেদুলে ভেসে বেড়ানো জেলেদের নৌকা আর পদ্মার তীরে হেঁটে বেড়ানো; সব মিরিয়ে কিছুক্ষণের জন্য আপনার মনে হবে আপনি লৌহজংয়ের পদ্মার পাড়ে নয়, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে আছেন। মূলত এ কারণেই অনেকে পদ্মা বিলাস রিসোর্টকে বলে থাকেন ‘মিনি কক্সবাজার’। আবার অনেক ট্যুরিস্ট এখন থেকে ঘুরে গিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকে লিখেছেন, গরিবের কক্সবাজার থেকে ঘুরে আসলাম।
বেশ কয়েক বছর আগে পদ্মা নদীর চরে গড়ে ওঠে ‘পদ্মা রিসোর্ট’ নামে একটি রেস্টুরেন্ট। সেটি গত বছর পদ্মা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। সেই পদ্মা রিসোর্টের কাছেই এখন নতুন করে গড়ে উঠেছে ‘পদ্মা বিলাস রিসোর্ট’ নামে এই রেস্টুরেন্ট। উপজেলার ঘোড়দৌড় বাজার ভূমি অফিসের উল্টো পাশে পদ্মা সেতুর পূর্ব-উত্তর প্রান্তঘেঁষে বয়ে যাওয়া পদ্মা নদীর কোলে গড়ে ওঠা নতুন এই রিসোর্টটি চালু করার ফলে আবার পর্যটক আসতে শুরু করেছে। এদের বেশিরভাগই আসছে লৌহজং, টঙ্গিবাড়ী, শ্রীনগর, মুন্সীগঞ্জ থেকে। লৌহজংয়ের পদ্মার পাড়ে গড়ে ওঠা মিনি কক্সবাজার খ্যাত স্থানটি এখনো ব্যাপকভাবে পরিচিত না হওয়ার কারণে ভ্রমণপিপাসু অনেক মানুষই বঞ্চিত হচ্ছেন পদ্মা বিলাস রিসোর্টের সৌন্দর্য উপভোগ করা থেকে।
এখান থেকে পুরো দৃশ্যমান পদ্মা সেতুটি খুব কাছাকাছি দেখতে পাবেন। এছাড়া ঠিক পড়ন্ত বিকেলে যখন ক্লান্ত সূর্যটা হেলে পড়ে পশ্চিমা দিগন্তে, ঘড়ির কাঁটায় ৫টা, সন্ধ্যে নামার আগে সূর্যের মায়াবী রশ্মি যেন পদ্মার জলে মিশে যায়। পদ্মার জলে চোখ ফেরালে যেন আরেকটা সূর্য বিদায়ের দৃশ্য দৃশ্যমান। নদীর বুকে খেলা করে জোয়ার-ভাটার স্রোত। ঠিক ওই মুহূর্তে জোয়ার থাকুক আর ভাটা থাকুক, সূর্যাস্তের চিকচিকে আলো নিবিড় সখ্যতা গড়ে তোলে ঢেউয়ের সঙ্গে- এমন মনোমুগ্ধকর নয়নাভিরাম সৌন্দর্যের সৃষ্টি করে। সূর্যাস্তের দারুণ দৃশ্যের মাঝে হারিয়ে যান অনেকে।
এছাড়া খুব ভোরে পদ্মার এই চরে বসে আপনি দেখতে পাবেন সারারাত পদ্মা নদীতে জেলেদের শিকার করা মাছ। পদ্মা নদীর সেই নামকরা ইলিশসহ অনেক প্রজাতির মাছই আপনি কিনতে পারবেন এখান থেকে এবং শিমুলিয়া ঘাট থেকে একদম টাটকা। এখানে দর্শনের উপযুক্ত সময় হচ্ছে ডিসেম্বর থেকে জুন মাস পর্যন্ত। তখন দেখা যাবে পদ্মা নদীর শান্ত রূপ। একটা সন্ধ্যায় পদ্মা নদীতে সূর্যাস্ত দেখলে পরবর্তী ১০০টি সন্ধ্যার কথা মনে থাকবে আপনার। ট্রলার অথবা খেয়া নৌকা নিয়ে পদ্মার বুকে ভেসে বেড়াতে পারবেন। আপনি দুপুরে পদ্মার জলে গোসলও করতে পারেন। যারা সাঁতার জানেন না তাদের জন্য এখানে বিনামূল্যে লাইফ জ্যাকেটের ব্যবস্থা আছে। তবে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে।
কিভাবে যাবেন : ঢাকা থেকে লৌহজং ঘোড়দৌড় বাজার ভূমি অফিসের ঘাটে আসার সবচেয়ে সুবিধাজনক উপায়টি হচ্ছে বাবুবাজার ও গুলিস্তানের সুন্দরবন স্কয়ার মার্কেটের সামনে থেকে গাংচিল পরিবহন বাস সরাসরি লৌহজংয়ের উদ্দেশে ছেড়ে আসে। এই পরিবহনে এসে ঘোড়দৌড় বাজার ভূমি অফিসের সামনে বাস থেকে নামলেই দেখতে পাবেন এই রিসোর্ট। এই রিসোর্টে পারাপার ট্রলার ভাড়াসহ প্রবেশ মূল্য ৫০ টাকা। এই ৫০ টাকায় আপনি পুরো রিসোর্ট ঘুরে দেখতে পারবেন। এছাড়া লাইফ জ্যাকেট, নদীর পাড়ে বিভিন্ন রংয়ের ছাতাযুক্ত হেলানো চেয়ার সম্পুর্ণ বিনামূল্যে ব্যবহার করতে পারবেন।
ঢাকা থেকে ৮০ টাকা ভাড়া আর দেড় থেকে দুই ঘণ্টা সময়ের বিনিময়ে আপনি পৌঁছে যাবেন মিনি কক্সবাজারে। ফেরার সময় একই বাসে আবার ঢাকা চলে যাবেন। এছাড়াও আপনি মাওয়া শিমুলিয়া এসে অটোরিকসায় করে এখানে আসতে পারবেন। শিমুলিয়া মাওয়া ঘাট থেকে অটো ভাড়া ২০ টাকা।
ট্যুরিস্টদের থাকার জন্য এই রিসোর্টের আশপাশে কোনো হোটেল, রিসোর্ট, বোর্ডিং এখনো তৈরি করা হয়নি। স্থানীয় কোনো বাসিন্দার বাড়ি ম্যানেজ করতে না পারলে দিনে এসে দিনেই ফিরে যাওয়া ভালো।
কোথায় খাবেন : বেশিরভাগ মানুষেরই ইচ্ছা থাকে পদ্মার তীরে বসে পদ্মার সেই নামকরা ইলিশ খাওয়ার। এই রিসোর্টে খাবারের ব্যবস্থা আছে। পদ্মার ইলিশ ভাজা, বেগুন ভাজা, বিভিন্ন আইটেমের ভর্তা, ডাল, ভাতসহ প্যাকেজ ৩৫০ টাকা এবং মোরগ চিকেন, ভাত, ডাল, ভর্তা, ভাতসহ ২৫০ টাকা। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের মালাই চা, দুধ চা, আলু বোখরা চা, মাল্টা চা পাবেন প্রতি কাপ ৫০ টাকায়। এছাড়া ফুচকা ও চটপটি প্রতি প্লেট ৮০ টাকা। বড় সাইজের আস্ত ইলিশ খেতে চাইলে আগেই অর্ডার দিতে হবে। এছাড়া নদীর সব ধরনের মাছ পাওয়া যায়।
এমএসএম / জামান

ফেসবুক ছিল বিনোদনের জায়গা, এখন আয়ের মূল উৎস

তোমাদের মৃত্যুর দায় আমরা এড়াতে পারি না

সুফি ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, ভাবাদর্শ প্রতিষ্ঠার ১ যুগ পার করল সুফি স্পিরিচুয়াল ফাউন্ডেশন

ব্যতিক্রমী ধারার আলো নেভার পথে

টেকসই কৃষির জন্য চাই জৈব বালাইনাশক

ঈদযাত্রা হোক দুর্ঘটনামুক্ত

রমজানে ভ্রমণে যে বিষয় মেনে চলা জরুরি

সুস্থ থাকার জন্য কেমন পানির ফিল্টার নির্বাচন করবেন

সাপের ক্ষিদে মেটাতে পাখিশূন্য দ্বীপ

একদিনের ট্যুরেই ঘুরে আসুন চীনামাটির পাহাড়ে

আধ্যাত্মিকর যাত্রা পথে সুফি মেডিটেশন এর গুরুত্ব

খাজা ওসমান ফারুকীর কুরআন দর্শন
