বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ভাবনায় এবারের ঈদ

মুসলমানদের দুটি প্রধান ধর্মীয় উৎসবের একটি হলো পবিত্র ঈদুল ফিতর। দীর্ঘ ১ মাস সিয়াম পালন শেষে প্রতিটি মুসলমানের জীবনে খুশির বার্তা নিয়ে আগমন হয় এই ঈদ উৎসবের। করোনা মহামারীর ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এবারের রমজানেও খোলা ছিল দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। সে হিসেবে এবারের ঈদ একটু ভিন্ন আমোজ নিয়ে আসছে দেশের বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের মাঝে। ঈদ নিয়ে তারুণ্যের ভাবনায় ও অনুভূতি জানাচ্ছেন নোয়াখালী বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী-- মোঃ ফাহাদ হোসেন।
এবারের ঈদ আমাদেরকে অনুপ্রেরণা দিবে সামনে এগিয়ে যাওয়ার
প্রতিবছর দুইটি ঈদ পরিবার, আত্মীয়-স্বজন,বন্ধুবান্ধবদের সাথে কথায়,আড্ডায়,গল্পে ভালো সময় কাটানোর সুযোগ করে দেয়।ধনী,গরীব ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে ঈদের আনন্দে মেতে উঠে সবাই। দীর্ঘ একমাস সিয়াম সাধনার মধ্যেই চলতে থাকে ঈদের প্রস্তুতি। ঈদের দিন খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে ফজরের নামাজ পড়া, গোসল সেরে নতুন পোশাক পড়ে মিষ্টিমুখ করে বাবা-মায়ের আশীর্বাদ নিয়ে ঈদগাহে যাওয়া,নামাজ পড়ে কুশল বিনিময় করা ।
আত্নীয়-স্বজনদের বাড়িতে গিয়ে কুশল বিনিময় করা, বিভিন্ন ধরনের খাবার খাওয়া। বন্ধুবান্ধব সবাই মিলে আড্ডা দেওয়া, একসাথে কোথাও ঘুরতে যাওয়া। সব মিলিয়ে আনন্দঘন মূহুর্তে প্রিয়জনদের সাথে কাটে সময়টা। আশা করি এইবারের ঈদ আমাদেরকে গতবছরের করোনা ভাইরাসের ট্রাজেডি ভুলিয়ে নতুন উদ্যামে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে প্রেরণা জোগাবে।
সবাই মাস্ক ব্যবহার করি,সুস্থ থাকি।সবার ঈদ ভালো কাটুক।
নুরুল আবছার
শিক্ষার্থী, ব্যবসা শিক্ষা অনুষদ
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
“ঈদ আত্ম ভাবনায় সীমাবদ্ধ নয়”
অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের চেতনায় ঈদ উৎসবের আনন্দটুকু ছড়িয়ে পড়ে সর্বময়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ঈদ-ছুটিতে সকলে একসাথে বাড়ি ফেরা, সিনিয়র-জুনিয়র বন্ধু-বান্ধব ঈদ শুভেচ্ছা ও সালামি বিনিময়, একে অন্যের বাড়িতে ঝটিকা সফরের দাওয়াত কিংবা ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে বন্ধুদের একসাথে আনন্দে মেতে ওঠা ঈদের সর্বময়ী ছড়িয়ে পড়াকে প্রতিনিধিত্ব করে।
তবে আমার মন কে যে জিনিসটি এবার সবচেয়ে বেশি আন্দোলিত করেছে, তা হলো ঈদ আত্ম-ভাবনায় সীমাবদ্ধ নয়। ঈদ আজ তার সমহীমায় আনন্দের ভাগাভাগিতে উদ্ভাসিত। ঈদের আগে সাদাকাতুল ফিতর এবং যাকাত আমাদের পরিবারের কর্তাব্যক্তিরা সমাজের নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়ে থাকেন নিসাব অনুযায়ী। তবে আজকের দিনে এসে তরুণেরাও ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি তে দারুণ ভাবে অংশ নিয়েছে।
নিজেদের ঈদ সালামি, ঈদ শপিং কিংবা টিফিনের জমানো টাকার একটি অংশ দিয়ে তারা আজ সম্মিলিতভাবে অসংখ্য ছোট ছোট সংগঠনের মাধ্যমে ঈদে প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী নিম্ন আয়ের মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়ে মানবিক দিক থেকে বড় কাজটি করছে। করোনাভাইরাস মহামারী উত্তর এই বিপর্যস্ত অর্থনৈতিক অবস্থা ও দ্রব্যমূল্যের নাভিশ্বাস ঊর্ধ্বগতির সময়ে তরুণ সমাজের এই ঈদ আত্ম ভাবনায় সীমাবদ্ধ না রাখার আন্তরিক চেষ্টা আমাদের দারুণভাবে আশাবাদী করে একটি সুখী-সমৃদ্ধ শালী আগামীর বাংলাদেশ গড়তে। আপনাকে আজ বিলিয়ে দেয়ার আসমানী তাগিদ ছড়িয়ে পড়ুক প্রতিটি তরুণ প্রাণে।
মোঃ মেহেদী হাসান
শিক্ষার্থী,
ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগ,
শেষ বর্ষ (২০১৭-১৮ সেশন),
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
বড়বেলার ইদ মানে নতুন এক বাস্তবতাকে চেনা
ইদ বলতে আমরা যেটা বুঝি ইদের আনন্দ,হাসি-খুশী ভাগাভাগি ছেলেবেলা থেকে বড়বেলায় এসে অনেকটায় পরিবর্তন হয়ে যায়।
এই যেমন,ছেলেবেলায়,আমরা ইদের এক দুদিন আগে শহর থেকে গ্রামে দাদু বাড়ি যেতাম ইদ করতে। আমাদের সব কাজিনরা ইদের আগে একসাথে হতাম। ইদের আগের দিন সন্ধ্যা হলেই সবাই মিলে একসাথে গল্পের আসর জমানো হতো। কখনও ভূতের গল্প,কখনও চোর পুলিশ খেলা,আবার কখনও বা সাউন্ড-বক্স ভাড়া করে নিয়ে এসে গান বাজানো,পারিবারিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন ইত্যাদি নানা উৎসবমুখর পরিবেশে ইদের আগের দিন কাটানো হতো।তখন ইদের দিন থেকে ইদের আগের দিনই বেশি মজার ছিলো আমার কাছে ।
ছেলেবেলায় আমার কাছে ইদ মানে,সে এক বিশেষ সুন্দর মুহুর্ত। যে সুন্দর মুহুর্তের গল্পগুলো দু-এক কথায় বলে কখনও শেষ করা যাবে না,সেই সুন্দর মুহুর্তগুলো আজীবন আমার কাছে স্পেশাল হয়ে থাকবে।কিন্তু যখন বড় হই,তখন ইদের আনন্দ ভাগাভাগিটা ঠিক অন্যরকম ভাবে হয়। বড়বেলার ইদ মানে নতুন এক বাস্তবতাকে চেনা । বাস্তবতার বিভিন্ন বিষয়ের সাথে নিজেকে সুন্দরভাবে খাপ খাইয়ে নেওয়া।এখন ইদ আসলে,চিন্তা করি,পরিবারের বাবা-মা ভাইবোন এদেরকে কোনভাবে উপকার করা যায় কিনা।
মায়ের কোন জিনিসটা বেশি প্রয়োজন,বাবা-র সংসার চালাতে কোন সমস্যা হচ্ছে কিনা ইত্যাদি। নিজের টিউশনির টাকা থেকে হাতখরচ বাদে টুকটাক যতটুকুই থাকে,যখন ঐটুকু দিয়ে পরিবারের মানুষগুলোর কিছুটা হলেও উপকারে আসতে পারি,তখন তাদের যে একটা সুন্দর হাসি আমি দেখতে পায়,আমার কাছে মনে হয়, এর থেকে বড় ইদ বা আনন্দ আর কিছুই হতে পারে না। বড়বেলার ইদে হয়তো ছোটবেলার মতো শৈশবের সুন্দর মুহুর্ত কাটানো সম্ভব হয়ে উঠে না,কিন্তু পরিবারের মানুষদের সাথে থেকে,তাদের সুসময়ে দুঃসময়ে পাশে থেকে একটু সাহস দিতে পারলে,এই আনন্দ শৈশবের সব আনন্দকে পেছনে ফেলে দিবে।
সর্বোপরি,ছেলেবেলা হোক বা বড়বেলা,ইদ হোক প্রতিটি পরিবারের জন্য হোক উৎসব,আনন্দ ও হাসি-কান্না ভাগাভাগি করার দিন।
শাহরিয়ার ইসলাম শাকিল
সেশনঃ ২০১৭-১৮
মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ'
বছর ঘুরলেই আসে ঈদ,আসে সংযমের মাস।কিন্তু শৈশবে কাটানো সোনালি ঈদ যেন আসে না।আমরা যত বড় হতে থাকি, ঈদের আনন্দ তত ফিকেঁ হতে থাকে।তবে এটা সত্য,আমরা যতই আধুনিক হই কিংবা ইফতারে ছোলা, মুড়ি, শরবতের পরিবর্তে মিল্কশেক কিংবা পিজ্জা খাই,ঈদের দিনটা সবাই পুরনো আমেজে কাটাতেই পছন্দ করি।তাইতো যে যেখানে থাকি ছুটে আসি পরিবারের সাথে ঈদ উদযাপনের জন্য।
প্রত্যেকের চোখে মুখে প্রশান্তির ছায়া আর চাহনিতে স্রষ্টার প্রতি আনুগত্য ফুটে ওঠে এই দিনে।প্রত্যেক মানুষ ভেদাভেদ ভুলে কোলাকুলি করে, গরীবদের দান করে,আত্মীয় স্বজন একত্রিত হয়ে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন দৃঢ হয়।একটি আত্মশুদ্ধির মাস তারপর কাঙখিত ঈদ আমাদের ঈমানের যে দৃঢ়তা এনে দেয় এবং চরিত্রের যে সুন্দর দিকগুলো তুলে ধরে তা যেন আজীবন আমাদের আচরণে ফুটে ওঠে এই কামনা করি।
ইসরাত জাহান টুম্পা
সেশনঃ২০১৮-১৯
গনিত বিভাগ
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়।
সব বয়সী মানুষদের কাছেই ঈদ হয়ে ওঠে এক উৎসবের কেন্দ্রবিন্দু
ঈদ মানে খুশি, ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে সুখ আর সম্প্রীতির ভাগাভাগি। করোনা মহামারীর ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সরকারের নেয়া পদক্ষেপের ফলে এবারের ঈদটা শিক্ষার্থীদের জন্য ছিলো অন্যরকম অভিজ্ঞতার। রমজানে দীর্ঘ সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অবস্থান করা, এরপর ঈদের আগ মুহুর্তে পরিবারের সাথে ঈদ উৎসবে অংশ নিতে দলবেঁধে বাড়ি যাত্রা, এবং সর্বশেষ ঈদ উৎসবে মেতে ওঠা ভিন্নরকম এক ঈদ আনন্দের চিত্রই দেখায় আমাদের। তারপরও বয়সের সাথে সাথেই এই ঈদ উৎসবের ভিন্নতা আসে জীবনে। আনন্দের ভিন্নতা থাকলেও সব বয়সী মানুষদের কাছেই ঈদ হয়ে ওঠে এক উৎসবের কেন্দ্রবিন্দু। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার জন্য এই ঈদ বয়ে আনুক সুখ ও সমৃদ্ধি। আমাদের আশেপাশের অসহায় মানুষগুলোর সাথেও হোক ঈদ আনন্দের ভাগাভাগি। তাদের প্রতি একটু মানবতা আর সহানুভূতির দৃষ্টি দিলেই ঈদ হয়ে উঠতে পারে সবার জন্য সমান আনন্দের। ঈদ মোবারক।
এমএসএম / এমএসএম

সুফি ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, ভাবাদর্শ প্রতিষ্ঠার ১ যুগ পার করল সুফি স্পিরিচুয়াল ফাউন্ডেশন

ব্যতিক্রমী ধারার আলো নেভার পথে

টেকসই কৃষির জন্য চাই জৈব বালাইনাশক

ঈদযাত্রা হোক দুর্ঘটনামুক্ত

রমজানে ভ্রমণে যে বিষয় মেনে চলা জরুরি

সুস্থ থাকার জন্য কেমন পানির ফিল্টার নির্বাচন করবেন

সাপের ক্ষিদে মেটাতে পাখিশূন্য দ্বীপ

একদিনের ট্যুরেই ঘুরে আসুন চীনামাটির পাহাড়ে

আধ্যাত্মিকর যাত্রা পথে সুফি মেডিটেশন এর গুরুত্ব

খাজা ওসমান ফারুকীর কুরআন দর্শন

খাজা ওসমান ফারুকীর সুফি তত্ত্বের নিদর্শন

'আরএনএস রাজিম একজন সফল ফ্রিল্যান্সার ও উদ্যোক্তার গল্প'
