ভেড়ার মাংসে মিলবে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট
ভেড়ার উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি ও গুনগত মান উন্নয়নের লক্ষ্যে ভেড়ার মাংসে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধকরণে সফলতা পেয়েছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) একজন গবেষক। দুই দশক ধরে পশুপুষ্টি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আল মামুন গবেষণা করে এ সাফল্য পেয়েছেন। গবেষণায় ভেড়ার রক্তে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৃদ্ধি পেয়েছে ৭ শতাংশ এবং ৫ থেকে ৭ শতাংশ পর্যন্ত মাংস উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে।
রবিবার (২২ মে) দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পশুপালন অনুষদের সম্মেলন কক্ষে ‘অধিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ ভেড়ার মাংস’ শীর্ষক কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে এসব তথ্য তুলে ধরেন গবেষক ড. আল মামুন।
গবেষক ড. আল মামুন বলেন, ভেড়ার খাদ্যতালিকায় ঔষুধিগুণ সম্পন্ন প্লানটেইন ঘাস ও রসুনের পাতার ব্যবহার করে ভেড়ার উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ঔষুধি ঘাসের উপাদান মাংসের স্বাদ ও গন্ধের পরিবর্তন এনেছে। প্লানটেইন ও রসুন পাতায় থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ভেড়ার বৃদ্ধি, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, রুমেন হিস্টোলজি, সিরাম অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং মাংসের গুনগত মানের উপর যথেষ্ট প্রভাব ফেলেছে।
গবেষক আরও জানান , ভেড়ার খাবারে অধিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ প্লানটেইন ঘাস ও রসুনের পাতা এ দুটি উপাদান ব্যবহার করে এ ফলাফল পেয়েছেন। এই উপাদান ব্যবহার করে ভেড়ার ২০ থেকে ২৬ শতাংশ শারীরিক বৃদ্ধি, ৫ থেকে ৭ শতাংশ মাংস উৎপাদন বৃদ্ধি এবং রক্তের ৭ শতাংশ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়াও এর ফলে শরীরের অভ্যন্তরীণ চর্বি এবং পেলভিক চর্বি যথাক্রমে ২৪ শতাংশ এবং ৫৬ শতাংশ কমে গিয়েছে। উপাদান দুটি ব্যবহারের ফলে ভেড়ার মাংসে ১৫ শতাংশ কোলেস্টরল কমিয়ে দিয়েছে এবং ৩০ শতাংশ ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড বাড়িয়ে দিয়েছে। এই ঘাসসমূহ ব্যবহারে ভেড়া থেকে ১১ থেকে ১৪ শতাংশ কম মিথেন নির্গত হয় যা পরিবেশে খুব গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে।
কর্মশালা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্বে পশুপুষ্টি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. রাখী চৌধুরী। প্রধান অতিথি ছিলেন বাকৃবির ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে এম জাকির হোসেন।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. খান মো. সাইফুল ইসলাম। অনুষ্ঠানের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিলেন ডিন কাউন্সিলের আহবায়ক অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া।
গবেষক জানান, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। এছাড়াও হৃদরোগ, চোখের বিভিন্ন রোগ ও স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কাজ করে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, ত্বকের সৌন্দর্র্য্য বজায় রাখতে সহায়তা করে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।
অধ্যাপক ড. আল মামুন ২০০৪ সালে জাপানের ইয়াতো ইউনিভার্সিটিতে প্লানটেইন ঘাসের উপর গবেষণা শুরু করেন। গবেষণায় সাফল্যের জন্য তিনি সেখানে প্রেসিডেন্ট ও ডিন আওয়ার্ডে ভূষিত হন।
এমএসএম / এমএসএম