পাহাড়ে অভিযান! প্রাণহানির আগে কেন নয়?
আইনকে বলা হয় অন্ধ কারন আইনের প্রয়োগ যাতে সঠিক হয় ব্যক্তি বিশেষের ক্ষেত্রে মুখ দেখে আলাদা সহজ বিচার পদ্ধতি বা কারো উপর অবিচার না করাই হচ্ছে এর মুল লক্ষ্য। কিন্তু বাস্তবতার দিকে তাকালে মনে হবে অন্যায় বা অপকর্ম যাতে না দেখে সেজন্যই আইনকে অন্ধ বলা হয়। আমরা যদি একটু প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের দিকে নজর দেই তাহলে খুব সহজেই চিত্রটি চোখে পড়বে। কিন্তু সাধারণের চোখে পড়লেও তাতে কি এসে যায় যারা আইনকে পরিচালিত করেন বা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারেন তারা কি বিষয়গুলো দেখেননা? না কি না দেখার ভান ধরে থাকেন নাকি তারা আইনকে প্রতিবন্ধী বানাতে চান তা বুঝাই মুশকিল।
যদি প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখার গুরুত্বপুর্ণ বিষয় পাহাড়ের দিকে নজর দেওয়া যায় তাহলে সহজেই উপলদ্ধি করা যায় আইন প্রয়োকরীরা কতটা দায়িত্ব পালন করছে। দিনের আলোতে বা রাতের আধাঁরে মহা সমারোহে পাহাড় ধ্বংসের খেলায় মেতে ওঠেছে একশেণির প্রভাবশালী মহল। মাঝে মাঝে পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসন অভিযান করলেও সামান্য জরিমানা আদায় করেই ক্ষান্ত হয়ে যান। এতে করে পাহাড় দস্যুরা ওই কাটা পাহাড়ের অংশকে তাদের মালিকানা বলে মনে করেন। প্রকৃতপক্ষে পাহাড় কাটা রোধে ১০ বছরের জেল দেওয়ার আইন থাকলেও বাংলাদেশে এই আইনে কেউ সাজা ভোগ করেছে এমন নজির নেই।
এই বিষয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল জানান আইনের ফাঁকে অনেক পাহাড় সন্ত্রাসীরা পার পেয়ে যায় । বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সামন্য জরিমানাতেই অভিযোগের সমাপ্তি ঘটে। এসব পাহাড় দস্যুদের সাথে অনেক সরকারি কর্মকর্তারও যোগসাজস রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন পাহাড় কর্তনকারীর সাথে সহায়তাকারীদেরও দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির আওতায় আনা গেলে পাহাড় কাটা কিছুটা হলেও রোধ করা সম্ভব হবে। কিন্তু দুঃখের বিষয় পরিবেশ আইনে জরিমানা ছাড়াও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পরিবেশ আদালতে মামলা করা যায়। পাহাড় কাটার অভিযোগ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ডের বিধান থাকলেও এমন শাস্তি কেউ পেয়েছে বলে আমার জানা নেই।
এখন প্রশ্ন হলো পাহাড় কাটছেন কারা পরিবেশ অধিদপ্তর সুত্রে জানা যায় মিরসরাই এবং সীতাকুন্ড উপজেলার অন্তত ১ লাখ ৬০ হাজার বর্গফুট পাহাড়ি এলাকা ধ্বংস করেছে কেএসআরএম, বিএসআরএম, পিএইচপি ফ্লোট গ্লাস ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, গোল্ডেন ইস্পাত, ইলিয়াস ব্রাদার্স (এমইবি ব্রিক্স) এবং আবুল খায়ের গ্রুপ। এই ছয়টি প্রতিষ্ঠানকে ২০১৭ এবং ২০১৮ সালের বিভিন্ন সময়ে জরিমানা করা হলেও, তাদের পাহাড় কাটা বন্ধ হয়নি।
এছাড়া চট্টগ্রাম শহরের দেবপাহাড়, বায়েজীদে ছিন্নমুল, লিংক রোড, লালখানবাজার মতিঝর্ণা, বাটালি পাহাড়, খুলশী, ফয়েস লেক, সীতাকুণ্ডের সলিমপুরে প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় নির্বিচারে পাহাড় কেটে গড়ে তোলা হয়েছে আবাসিক এলাকা। আবার সরকারি এসব সম্পদ প্লট করে দখল বিক্রি করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে চক্রটি। এসব অপকর্মের শাস্তি না হওয়ায় দিনকে দিন তারা আরো বেপরোয়া হয়ে পাহাড় ধ্বংসের খেলায় মেতে ওঠেছে।
পাহাড় কাটা বা ধ্বংস করার খেলা আমাদের নতুন কোন বিষয় নয় যুগযুগ ধরেই এটি চলছে। মনে হয় এটি একটি নিয়মিত প্রক্রিয়া। আইনে এর বৈধতা আছে তাই মানুষ অল্প ভাড়ায় বাসা নিয়ে সেখানে বসবাসের দিকে ঝুকছে। আর দখলকারীরা ভালমন্দ বিবেচনা না করে কোনমতে একটি ঘর তৈরি করে ভাড়ায় লাগাচ্ছে। এসবে সরকারি দায়িত্বশীলদের কখনো কঠিন পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি যতক্ষণনা প্রাণহানির ঘটনা না ঘটে। আবার লাশের মিছিল দেখে কিছুদিন একটু সরব হলেও ধীরে ধীরে তারা আবার ঝিমিয়ে পড়ে।
সর্বশেষ গত শুক্রবার (১৭ জুন) দিবাগত রাতে পাহাড় ধসে ৪ জন নিহত হওয়ার পর নড়েচরে বসেছে জেলা প্রশাসন, শুরু করেছে উচ্ছেদ অভিযান কিন্তু এর আগেওতো একই পথে শতশত লোকের প্রানহানি ঘটেছে সেখান থেকে কেন শিক্ষা নেওয়া হয়নি?
এর আগে ২০১৭ সালে চট্টগ্রাম, রাঙামাটি ও বান্দরবানে পাহাড় ধসে ১৩২ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। আর উদ্ধার করতে গিয়ে প্রাণ দিয়েছেন চার সেনা সদস্য।
২০১৫ সালে লালখান বাজার ও বায়েজিদ এলাকায় দেয়াল চাপায় এবং পাহাড় ধসে মা-মেয়েসহ ছয় জনের করুণ মৃত্যু ঘটে। ২০১৪ সালের নগরীর বিভিন্ন এলাকায় পাহাড় ধসে ৩ জনের মৃত্যু হয়। ২০১৩ সালের জানুয়ারি মাসে খুলশী থানাধীন ইস্পাহানি মোড় এলাকায় পাহাড় ধসে এক গৃহবধূ মারা যান। একই বছর ২৯ জুলাই নগরীর লালখান বাজার এলাকার ট্যাংকির পাহাড় এলাকায় পাহাড় ধসে মা-মেয়ের করুণ মৃত্যু ঘটে। ২০১২ সালের ২৬ জুন নগরীর চার স্থানে পাহাড় ধসে ১৮ জনের প্রাণহানি ঘটে। ২০১১ সালে চট্রগ্রাম নগরীর টাইগারপাসের বড় বাটালি হিল এলাকায় পাহাড় ধসে মাটি চাপায় একই পরিবারের ৫ জন সহ ১৫ জন মারা যান। ২০০৮ সালের ১৮ আগষ্ট লালখান বাজার মতিঝর্ণা এলাকার ট্যাঙ্কির পাহাড় ধসে ১১ জনের মৃত্যু হয়। ২০০৭ সালের ১১ জুন নগরীর কুসুমবাগ, কাইচ্যাঘোনা, সেনানিবাসের লেডিস ক্লাব সংলগ্ন লেবু বাগান, বায়েজিদ বোস্তামি, মতিঝর্ণা পাড়সহ সাতটি স্থানে পাহাড় ধসে মাটি চাপায় নিহত হন ১২৭ জন।
এসব দুর্ঘটনার পর ঝুঁকিপুর্ণ পাহাড়ে বসবাসকারিদের তালিকা করেছিল জেলা প্রশাসন। তালিকা অনুযায়ী স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার কথা থাকলেও রহস্যজনক কারনে তা আর হয়ে ওঠেনি বা পাহাড় দস্যুদেও বিরুদ্ধে নেওয়া হয়নি কোন ব্যবস্থা। তাহলে কি ধরা যায়না কর্তৃপক্ষের প্রশ্রয়েই ওরা বসবাস করছে ?? তাহলে কি দরকার এই উচ্ছেদ অভিযানের যদি স্থায়ী কোন সমাধান করা না যায়!!
এমএসএম / এমএসএম
থামছেই না ছড়াও, দখল করে ভবন নির্মাণ কাজ
বাঁশখালীতে রিক্সা চালক শ্রমিক কল্যাণ ইউনিয়ন নির্বাহী কমিটির বার্ষিক সাধারণ সভা
নোয়াখালীতে যৌন-প্রজনন স্বাস্থ্য ও লিঙ্গ ভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধ সভা
চাঁপাইনবাবগঞ্জ -২ এ,ধানের শীষের কান্ডারী ইঞ্জি: মাসুদ'কে চায় সাধারণ মানুষ ও বিএনপি'র নেতাকর্মীরা
পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীতে শ্রমিক দলের আহ্বায়ক জুয়েলের বিরুদ্ধে কমিটি বাণিজ্যের অভিযোগ
কাউনিয়ায় মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টায় পিতা পুলিশের হাতে
বাঁশখালীতে জমি বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত, গ্রেপ্তার-৩
নন্দীগ্রামে সিএনজি চালককে অপহরণ ও মুক্তিপণ নিয়ে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ
সুবর্ণচরে আশার আলো সমাজ কল্যাণ সংগঠনের বৃক্ষরোপন কর্মসূচি
সহকারী এটর্নি জেনারেল হলেন পেকুয়ার কেএম সাইফুল ইসলাম
৭ই নভেম্বর উদযাপন ও খন্দকার নাসিরের মনোনয়ন এর দাবিতে মধুখালী বিএনপির জরুরী সভা
ভোলা-১ আসনে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করবে বিজেপি, নির্বাচনি প্রচার ও র্যালী অনুষ্ঠিত