ঢাকা সোমবার, ৪ আগস্ট, ২০২৫

মসলার উন্নত জাত ও প্রযুক্তি সম্প্রসারণ প্রকল্প 

বাড়বে দামি মসলা উৎপাদন


সাদিক হাসান পলাশ photo সাদিক হাসান পলাশ
প্রকাশিত: ২৮-৬-২০২২ বিকাল ৬:৩৪
  •   দেশে মসলার বাজার ৩০ হাজার কোটি টাকা
  •   মসলার আবাদ বাড়বে ৫ শতাংশ

কৃষিপ্রধান বাংলাদেশে প্রায় সব রকম ফসলের চাষ হচ্ছে। সেই সাথে বাড়ছে মসলা চাষ। ব্যক্তি উদ্যোগে মসলার উৎপাদন যেমন বাড়ছে, সরকারও মসলার চাষ বৃদ্ধিতে কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের প্রয়োজনীয় মসলার প্রায় পুরোটায় আমদানি করে ব্যবহার করতে হয়। তাই বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় কমিয়ে মসলায় স্বনির্ভরতা অর্জনের জন্য নানা পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার।

বাংলাদেশে ৩০ হাজার কোটি টাকা মূল্যের বিভিন্ন মসলার বাজার বিদ্যমান। মসলার উন্নত জাত ও প্রযুক্তি সম্প্রসারণে নেয়া কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে ১১৯ কোটি ৫০ লাখ টাকার একটি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে আগামী পাঁচ বছর পর সুফল ভোগ করা সম্ভব হবে বলে পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানি সম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগ সূত্রে জানা গেছে। মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায় (একনেক) তা অনুমোদন করা হয়েছে।

প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে দেশে মসলার আবাদ ৫ শতাংশ বাড়বে। মসলার উৎপাদন বাড়বে দুই লাখ ৩৬ হাজার মেট্রিক টন। ফলে মসলার আমদানিনির্ভরতা কমবে।

পরিকল্পনা কমিশন জানায়, মসলার উন্নত জাত ও প্রযুক্তি সম্প্রসারণ প্রকল্পটি জুলাই ২০২২ থেকে জুন ২০২৭ মেয়াদে বাস্তবায়ন করা হবে। দেশের ১১০টি উপজেলা ও ২৫টি হর্টিকালচার সেন্টারে এটা বাস্তবায়ন করা হবে। আধুনিক-টেকসই প্রযুক্তি ও উৎপাদন ব্যবস্থাপনা সম্প্রসারণের মাধ্যমে মসলাজাতীয় ফসলের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি ও বহুমুখীকরণ, মসলা ফসল সংগ্রহোত্তর প্রযুক্তি সম্প্রসারণের মাধ্যমে উৎপাদনোত্তর অপচয় হ্রাস এবং শস্য নিবিড়তা ২ থেকে ৫ শতাংশ বৃদ্ধি করা হবে। মসলা প্রক্রিয়াজাতকরণ ও মূল্য সংযোজনের মাধ্যমে কৃষকের আয় বৃদ্ধি এবং প্রতিকূল পরিবেশে অভিযোজন ক্ষমতাসম্পন্ন জাত প্রচলন করা হবে।

প্রকল্পের মূল কার্যক্রম : প্রকল্পের মাধ্যমে দুই হাজার ৮৬৫টি মসলা প্রদর্শনী এবং চারা-কলম উৎপাদন ও আমদানি, ৩০২টি বিভিন্ন ধরনের কৃষি যন্ত্রপাতি কেনা, চার হাজার ২০০ রানিং মিটার সীমানা প্রাচীর ও ১৮৫টি পলি শেড-গার্ড শেড-লেবার শেড ও নার্সারি শেড নির্মাণ করা হবে। দুই হাজার ৬৫০ ব্যাচ কৃষক প্রশিক্ষণ, ৪৫ ব্যাচ এসএএও- সমমানের কর্মকর্তা প্রশিক্ষণ, ২৯ ব্যাচ কর্মকর্তা প্রশিক্ষণ ও ২ ব্যাচ বৈদেশিক প্রশিক্ষণ এবং ১৩৫ ব্যাচ কৃষক উদ্বুদ্ধকরণ ভ্রমণ এবং এক হাজার ৬৫০টি কৃষক মাঠ দিবস আয়োজন করা হবে।

প্রকল্পের বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানি ও পল্লি প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য (সচিব) শরিফা খান বলেন, আমরা বেশ কয়েকটি সংশোধনী দিয়েছিলাম। সেগুলো ঠিক করে প্রকল্পের ব্যয় কমিয়ে আনা হয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, মসলার অভ্যন্তরীণ ও বৈশ্বিক চাহিদা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং এর বাজারমূল্য অন্যান্য ফসলের তুলনায় বেশি। দেশে প্রায় ৫০ ধরনের মসলা ব্যবহার করা হলেও মাত্র সাত ধরনের মসলা জাতীয় ফসল দেশে উৎপাদিত হয়। ফলে অভ্যন্তরীণ চাহিদার অধিকাংশই আমদানির মাধ্যমে পূরণ করা হয়ে থাকে। আমদানিনির্ভরতা কমাতে স্থানীয়ভাবে মসলার উৎপাদন বাড়ানো প্রয়োজন। বাংলাদেশ মসলা গবেষণা কেন্দ্র এ পর্যন্ত ২২টি মসলা জাতীয় ফসলের ৪৭টি জাত উদ্ভাবন করেছে। এছাড়া, মৃত্তিকা ও পানি ব্যবস্থাপনা, পোকামাকড় ও রোগবালাই ব্যবস্থাপনা, পোস্ট-হারভেন্ট প্রযুক্তিসহ ৬৬টি উন্নত প্রযুক্তি উদ্ভাবিত হয়েছে। এসব জাত ও প্রযুক্তি মাঠ পর্যায়ে সম্প্রসারণের মাধ্যমে দেশে মসলার উৎপাদন ও কৃষকের আয় বৃদ্ধি এবং আমদানি নির্ভরতা ক্রমান্বয়ে কমিয়ে আনার লক্ষ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

প্রকল্পের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, বিশ্ব বাজারে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে মসলা উচ্চমূল্য এবং কম আয়তনিক জাতীয় পণ্য। উদ্ভিদের কুঁড়ি, ফল, বীজ, বাকল, রাইজম এবং কন্দ যা খাদ্যের রং, সুগন্ধি, সুম্বাদু এবং প্রক্রিয়াজাতকরণে ব্যবহৃত হয়- সেগুলোই মশলা। সারা বিশ্বে ১০৯ প্রকার মসলাজাতীয় ফসল জন্মে, তার মধ্যে ৭টি গুরুত্বপূর্ণ প্রধান মসলাই বাংলাদেশে জন্মে। দেশে প্রায় ৫০ ধরনের মসলা ব্যবহার হয়ে থাকে। দীর্ঘদিন এসব মসলার চাহিদার বেশির ভাগটাই পূরণ করা হতো আমদানির মাধ্যমে। বেশ কিছু জাতের দামি মসলা এখনো বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। আবার অবৈধ পথেও ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আসছে নানা ধরনের মসলা। এক্ষেত্রে আমদানির ওপর নির্ভরতা কমানোর আরও সুযোগ থাকলেও যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে তা কাজে লাগানো যাচ্ছে না। দেশে মসলার বাজার প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকার। এ ক্ষেত্রে আমদানিনির্ভরতা কমাতে স্থানীয়ভাবে মসলার উৎপাদন বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

প্রকল্পের ফোকাল পারসন ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মো. রাসেল আহমেদ বলেন, এ প্রকল্পের মাধ্যমে মসলার আবাদ ৫ শতাংশ বাড়বে। এতে ২ লাখ ৩৬ হাজার টন মসলার উৎপাদন বাড়বে। মানুষের মসলার ক্যালরির চাহিদা পূরণ হবে। মসলার আমদানি নির্ভরতাও কিছুটা কমবে। কৃষি যন্ত্রপাতি কৃষক গ্রুপের মধ্যে বিতরণ করা হবে।

মসলা গবেষণা কেন্দ্রের তথ্য মতে, এ পর্যন্ত ২২টি মসলাজাতীয় ফসলের ওপর সর্বমোট ৪৭টি জাত উদ্ভাবিত হয়েছে। তাছাড়া উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে উৎপাদন প্রযুক্তি, মৃত্তিকা ও পানি ব্যবস্থাপনা, পোকামাকড় ও রোগবালাই ব্যবস্থাপনা, পোস্ট-হারভেস্ট প্রযুক্তিসহ আরও ৬৬টি উন্নত প্রযুক্তি উদ্ভাবিত হয়েছে। এসব জাত ও প্রযুক্তি মাঠ পর্যায়ে সম্প্রসারণ হলে একদিকে বাড়বে উৎপাদন অন্যদিকে কমবে সংগ্রহোত্তর ক্ষতির পরিমাণ। একইসঙ্গে মসলার আয়ুর্বেদিক, খাদ্য এবং শিল্পে ব্যবহার বৃদ্ধি পাবে বহুগুণ।

প্রকল্পে পরামর্শক নিয়োগের জন্য ১৬ লাখ এবং কনসালট্যান্ট ফার্ম নিয়োগ বাবদ ৪০ লাখ টাকার সংস্থান রাখা হয়েছে। প্রস্তাবিত ডিপিপিতে (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা) মাঠ পর্যায়ের সম্প্রসারণ কর্মীর জন্য ১৯০টি মোটরবাইক কেনা বাবদ ২ কোটি ২০ লাখ এবং এগুলোর নিবন্ধন ফি বাবদ ৩৩ লাখ টাকার সংস্থান রাখা হয়েছে।

সাদিক পলাশ / সাদিক পলাশ

রেজিস্ট্রি অফিসের প্রভাবশালী নকলনবিশের কাণ্ডঃ মন্ত্রীদের প্রভাবে চাঁদাবাজি ও নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ

বিসিক এর নীরিক্ষা কর্মকর্তা সাবধান আলী হতে সাবধান!

কেরানীগঞ্জ উপজেলার রাজাবাড়ী রোডে অবৈধ এলপিজি বটলিং প্লান্ট এর সন্ধান

গডফাদার মুরাদ জং-এর বোন পরিচয়ে দলিল দাতা-গ্রহীতাদের জিম্মি করার অভিযোগ

গাজীপুরের কাশিমপুরে সরকারি খাস জমি ভূমিদস্যুদের দখলে

বগুড়ায় সাবেক অফিস সহকারীর বিরুদ্ধে 'ফ্যাসিস্ট সিন্ডিকেটের' মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের আইন যেন শুধু খাতা কলমে

প্রকৌশলী কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ

গোয়েন্দা প্রধানসহ লুটপাটের অভিযোগে চার কর্মকর্তা ক্লোজড

নির্বাহী প্রকৌশলী জহির রায়হানের বিরুদ্ধে ঠিকাদারদের মানববন্ধনে শাস্তি ও অপসারণ দাবী

সীমাহীন দুর্নীতি,অর্থ আত্মসাত ও সরকারি চাকুরির শৃংখলা ভংগের অভিযোগে এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী রনজিত দে সাময়িক বরখাস্ত

সরকার বিরোধী কর্মকান্ডে শ্রমিকদের উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ

রাজউকের ইমারত পরিদর্শক জয়নাল আবেদিন এর বিরুদ্ধে ঘুষ-দুর্নীতির বিস্তর অভিযোগ