ঢাকা শুক্রবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৫

অধরায় গৃহায়ণের প্রশাসক


নিজস্ব প্রতিবেদক photo নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৭-১১-২০২৫ রাত ৮:১৬

# ৭৬জন নিয়োগ, স্বজনপ্রীতি ও নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ
# কর্মচারির মেয়েকে নিয়োগ দেন বিশেষ সুবিধায়
# রয়েছে নিজস্ব দালল সিন্ডিকেট
# সন্ধ্যার পর নিজের অফিসে বসে আড্ডার আসর

নিয়োগ বাণিজ্য, টেন্ডারবিহীন বন্ধুকে ঠিকাদারি কাজ, ঘুষ না পেয়ে বদলি, দায়মুক্তি একক কৃর্তত্বে এসব কাজ করে বির্তকের জন্ম দিয়েছেন জাতীয় গৃহায়ণের সদস্য (প্রশাসন ও অর্থ) আলমগীর হুছাইন। তার রয়েছে একটি চক্র দালাল। অফিস শেষে সন্ধ্যার পরে তাদের নিয়ে অফিস রুমে আড্ডায় মাতেন তিনি। এসব দালাল চক্র নিয়োগ তদবির, প্লট ও ফ্ল্যাটের দায়মুক্তিসহ নানান কাজ করা চুক্তিতে। অনিয়ম-দুর্নীতির অর্থ কালেক্টর করান অফিস সহায়ক নজরুল ও ড্রাইভার মো. মাসুদ দিয়ে। এমন অভিযোগ করেছেন গৃহায়ণে কর্মকর্তা ও কর্মচারিরা। 

বিভিন্ন সময়ে নানা কারণে সাময়িক অব্যহতি পাওয়া কর্মচারি বা মিথ্যা অভিযোগে কর্মচারি সামায়িক চাকরিচ্যুত করা হলেও তদন্ত সাপেক্ষে সঠিক প্রতিবেদন দেওয়ার নিয়ম থাকলেও টাকা ছাড়া এসব কাজ করেন না তিনি। তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোনো কর্মকর্তা ও কর্মচারি গেলেই তাদের সঙ্গে অসত আচরণ করেন। তার এসব অনিয়মের জাগৃকে এখন সবার মুখেমুখে। নিজের খেয়ালখুশি মতো ক্ষমতার ব্যবহার করে জাতীয় গৃহায়ণে বির্তকিত করায় অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারিরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। 

অভিযোগ আছে, কৌশলে সাবেক প্রশাসক আতিউর রহমানকে সড়িয়ে একসঙ্গে দুই দায়িত্ব গ্রহণ পালন করছেন তিনি। ঢাকা অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের সহকারি পরিচালক ছিলেন একরামুল কবীর। এই দায়িত্ব বহাল থাকতে তার কাছে ঘুষ দাবি করা হয়। কিন্তু দিতে টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে মাত্র সাত মাসের মাথায় তাকে সিলেট বদলি করা হয়। 

অভিযোগ আছে, স্টেশনারি বিভিন্ন মালামাল সাপ্লাই দেন নরসিংদী এক ঠিকাদার। প্রশাসকের এলাকার কাছের বন্ধু হওয়ায় নিয়ম লঙ্ঘন করে টেন্ডার ছাড়াই স্টেশনারি ও বিশ্ব বসতি দিবসের কাজ দেন তিনি।  কর্মকর্তারা জানান, গৃহায়ণ (কনকচাঁপা) ২৫৩টি রেডি ফ্ল্যাটের কাজের দায়মুক্তিসহ নানা কাজের অনুমতি দেন তিনি। আওয়ামী লীগ সরকারে থাকতে এই প্রকল্পের বেশিরভাগ ফ্ল্যাট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে লটারি ছাড়া স্বজনপ্রীতি মাধ্যমে। যাদেরকে অগ্রাধিকার দিয়ে প্রকল্প তৈরি করা হয় সেসব এলোটিদের অধিকাংশ ফ্ল্যাট পাননি। এই প্রকল্পের ফ্ল্যাটপ্রাপ্তদের দায়মুক্তিসহ নানা কাজের জন্য আসতে প্রশাসকের কাছে। যারাই কাজের জন্য আসেন সবাইকে মোটা অংকের টাকা গুনতে হয়। আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান লিখিলের ঘনিষ্টবন্ধু হওয়ায় এই প্রকল্পের ফ্ল্যাটপ্রাপ্তদের দায়মুক্তিসহ বিভিন্ন কাজে করে দেন তিনি।  

এসব কাজ নিজের কজ্বায় রাখতে দালল চক্র গড়ে তুলেছেন। তারা হলেন, তার আছে নিজস্ব দালাল চক্র। তারা হলেন, মাইন উদ্দিন, নিলয়, জয়নাল, খাইরুল। সন্ধ্যার পরই তাদের নিয়ে নিজের রুমে আড্ডায় বসেন। অফিস টাইম শেষ হলে অন্যান্য কর্মকর্তারা চলে গেলেও তিনি তার ২ থেকে ৩ঘন্টা পরে বের তিনি। প্রায় প্রতিদিনই তার আড্ডার আসর বাসান। একভাবে বেশির কাজ চুক্তিতে করেন। 

অভিযোগ আছে, মিরপুর-১০ ব্লক বি মেইন রোড সংলগ্ন বাণিঝ্যিক প্লট। বাণিঝ্যিক প্লটের বিলম্ব ফি ২১শতাংশ আদায়ের নিময় থাকলেও নিয়মবহির্ভূতভাবে ১৬শতাংশ ফি আদায় দেখান। রুপনগর গভ: হাউজিং এস্টেট বথমুখী সমবায়ের নামে জমির জন্য আবেদন করে। কিন্তু চাহিদার চেয়ে ৪.৮শতাংশ জমি বেশি বরাদ্দ তিনি। যারমূল্য ৫কোটি টাকা বেশি।

নিয়োগ: জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের সহকারি স্থপতি, সহকারি পরিচালক, সহকারি প্রকৌশলী (সিভিল) উপ-সহকারি প্রকৌশলী (সিভিল), উপ-সহকারী প্রকৌশলী (ই/এম), প্রশাসনিক কর্মকর্তা (এস্টেট এবং বিভাগীয় হিসাবরক্ষক (১১তম গ্রেড) মোট৭ ক্যাটাগরির ১৬টি শূণ্য পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে সহকারী স্থপতি (৯ম গ্রেড)১ জন, সহকারী পরিচালক (৯ম গ্রেড) ২জন, সহকারি প্রকৌশলী (সিভিল) (৯ম গ্রেড) ৪ জন, উপ-সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) (১০ম গ্রেড) ৬জন, উপ-সহকারী প্রকৌশলী (ই/এম) (১০ম গ্রেড) ১জন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা (এস্টেট) (১০ম গ্রেড) ১জন, বিভাগীয় হিসাবরক্ষক (১১ম গ্রেড) ১জন। জাতীয় গৃহায়ণের উচ্চমান সহকারি লতিফা আক্তাররের মেয়েকে সহকারি স্থপতি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ আছে মিষ্টি খাওয়ার নামে প্রায় ৭লাখ দেওয়ার চুক্তি হয় তাদের মাছে। সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত ১৬ জনের মধ্যে অর্ধৈকই তার সুপারিশে বিশেষ সুবিধায় নিয়োগ প্রাপ্ত। 

একইভাবে আরও ৬০জনকে অফিসসহকারি পদে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। ১৩তম গ্রেড হতে ২০তম গ্রেডের ১১টি শূন্য পদে সহকারি কাম কম্পিউটার অপারেটর, ড্রাফটসম্যান, অফিস সহকারি, কাম ডাটা এন্ট্রি অপারেটর, অডিটর, হিসাব সহকারি, ভার্টিকেল ট্রান্সপোর্ট এটেনডেন্ট, জুনিয়র অডিটর, ড্রাইভার, চেইনম্যান, এম. এল. এস. এস. ও গার্ড নিয়োগ হচ্ছে। এদের এমসিকিউ পরিক্ষা শেষে ভাইভা চলছে। এবং আলমগীর ভাইভা বোর্ডে তার পরিচিতদের সুবিধা করে দেন। অভিযোগ আছে এই নিয়োগ ঘিরে রমরমা বাণিজ্য করেছেন তিনি।
এছাড়া জাতীয় গৃহায়ণ থেকে বেশ কয়েকজনে বদলি করা হয়েছে ঢাকার বাইরে। তাদের স্থানে যারা ঢাকায় পোস্টিং নিয়েছেন তাদের অধিকাংশই লেনদেরন মাধ্যমে ঢাকায় পোস্টিং পেয়েছেন। এসব অনিয়স দুর্নীতি বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। জাতীয় গৃহায়ণের কর্মকর্তা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, জাতীয় গৃহায়ণের চেয়ারম্যান নিয়োগ দিয়ে থাকে জনপ্রশাসন। কিন্তু বর্তমান চেয়াম্যানকে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় চলতি দাযিত্ব পালন করার জন্য নিয়োগ দিয়েছে। তাই বর্তমান চেয়ারম্যানের আমলে এতো লোক নিয়োগ হতো পারে না। 

জাতীয় গৃহায়ণের সদস্য (প্রশাসন ও অর্থ) আলমগীর হুছাইন বলেন, আমি নিয়োগের ভাইভা র্বোডে আছি এখন সব কথা বলতে পারছি না। আপনার প্রশ্নগুলো লিখে পাঠান। পরবর্তীতে নিয়োগ বাণিঝ্যসহ বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে জানতে চেয়ে প্রশ্ন লিখে পাঠালে তিনি বলেন, এসব অভিযোগ সর্ম্পূর্ণ মিথ্যা, কাল্পনিক কথা। জাতীয় গৃহায়ণের উচ্চমান সহকারি লতিফা আক্তারের কাছে তার মেয়ের নিয়োগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার মেয়েকে চাকরিতে যোগদান করিয়েছি শুধু আমি হেরে যাব বলে। তা না হলে চাকির করানোর কোনো ইচ্ছে ছিল নাই। 

জাতীয় গৃহায়ণের চেয়াম্যান ফেরদৌসী বেগম বলেন, সব নিয়ম মেনে কাজ নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। এসব নিয়োগে অনিয়মের কোনো সুযোগ নেই। অফিস সহকারিসহ শূণ্য ১১টিপদে ১৩তম গ্রেড হতে ২০তম গ্রেডে ৬০জনকে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া ৯ম থেকে ১১তম গ্রেডে আরও ১৬জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে

এমএসএম / এমএসএম

অধরায় গৃহায়ণের প্রশাসক

অনিশ্চয়তায় নির্বাচন

পায়রা বন্দর সংযোগ সড়ক প্রকল্পে উন্নয়ন কাজে স্থবিরতা

দুর্নীতির টাকায় কোটিপতি চসিকের মোরশেদ

রকিবুল হাসান রনি ও তার পরিবারের ভয়ঙ্কর প্রতারণার জাল

পাপ্পীর কানাডা ও আমেরিকার ভিসা বাতিলের আবেদন

আপিল বিভাগের নিদের্শনা অমান্য করে জনবল নিয়োগ

ঘুষ কেলেংকারীতে ১৫ দিন খালি চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের চেয়ার

ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের এমডির বিচার চেয়ে ফের দুদকে আবেদন

উৎপাদন বেড়েছে, খরচ কমেছে, নতুন প্রকল্পে আশার আলো

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সকল সেক্টরে ইতিবাচক পরিবর্তন করবে : জননেতা অধ্যাপক মামুন মাহমুদ

কারা অধিদপ্তরে সক্রিয় বদলী বাণিজ্য সিন্ডিকেট, মূলহোতা রিয়াল

দুদকের ফাঁদে ফেঁসে গেলেন এম এ কাশেম