ঢাকা রবিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৫

বিটিসিএল এর হিন্দু কর্মচারীকে চাঁদার দাবিতে বিশেষ অঙ্গ কেটে ভারতে পাঠানোর হুমকি


আব্দুল লতিফ রানা photo আব্দুল লতিফ রানা
প্রকাশিত: ৫-১২-২০২৫ রাত ১০:৪৬

বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানী লিমিটেড (বিটিসিএল) এর ফ্যাসিস্ট সরকারের অন্যতম সহযোগি নেতা মগবাজার টোলিফোন ভবনে ওয়ার্কচার্জড কর্মচারী ভিপি হানিফের বিরুদ্ধে, জমি, স্থাপনা ও কোয়ার্টার সমূহভাড়া ও দিয়ে সরকারের লাখ লাখ টাকা রাজস্ব আত্মসাত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে । শুধু তাই নয়, এখন তিনি বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি করছেন। যদি কেউ চাঁদাদিতে অস্বীকার করেন, তাকে নানা ধরণে নির্যাতন করা এবং একজন হিন্দু সম্প্রদায়ের কর্মচারীর পুরুষাঙ্গ কেটে ভারতে পাঠিয়ে দেওয়ার হুমকির গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এই মহা-দূর্নীতিবাজের অন্যতম সহযোগি ডিভিশন গুলশান, ঢাকার ওয়ার্কচার পদে কর্মরত মোর্শেদ আলম মুন্সি ও গুলশান (মগবাজার ফোন্স-২) ঢাকার অধীনে বিলোপয্যে পদে কর্মরত কর্মচারী আব্দুস সোবহান মিয়া অন্যতম বলে জানা গেছে। এই দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে শুধু সরকারি কোয়ার্টার দখল করে ভাড়া দিয়েই ক্ষ্যন্ত হননি, প্রকাশ্যে বিটিসিএল এর বিভিন্ন কর্মচারীদের নামে বরাদ্দকৃত কোয়ার্টার বুঝিয়ে না দিয়ে লাখ টাকা চাঁদা আদায় করারও গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুধু তাই নয়, একজন হিন্দু কর্মচারীর কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। উক্ত চাঁদার টাকা না পেয়ে তাকে মালাউনের বাঁচ্চা বলে গালি দিয়ে লাথি মেরে ভারতে পাঠিয়ে দেওয়া ছাড়াও তার বিশেষ অঙ্গ কেটে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। এঘটনায় বিটিসিএল সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে ভুক্তভোগি টিটু চন্দ্র দাস নামের কনিষ্ট লাইনম্যান লিখত অভিযোগ করেছেন। 
জানা গেছে, অবৈধভাবে ভিপি মো. হানিফ মগজবাজার টেলিফোন ভবনে ওয়ার্কচার্জ কর্মচারী হলেও বিটিসিএল এর সম্পত্তি, স্থাপনা ও কোয়ার্টার সমূহ ভাড়া দিয়ে সরকারের লাখ লাখ টাকার রাজস্ব আত্মসাত করার গুরুত্বর অভিযোগ উঠেছে। এই কর্মচারী ভিপি মো. হানিফ ও আব্দুস সোবহান মিয়া ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের সময় শ্রুমিকলীগের ও আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে থেকে প্রভাব খাটিয়ে বিটিসিএল-এ একক আধিপত্য কায়েম করে। শুধু তাই নয়, গত ২০১৩ সালে ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে মহানগর উত্তরের ৩৬ নস্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কমিশনার প্রার্থীর তৈমুর রেজা খোকনের পক্ষে ঘুড়ি মার্কায় নির্বাচনী প্রচারনা চালিয়েছেন। আবার যুদ্ধাপরাধী মামলার বিচারে শাহবাগীদের আন্দোলন চলাকালিন বিএনপি নেতা সাকা চৌধুরীর ফাঁসির দাবিতে তিনি একাত্ত্বতা ঘোষনা করেই ক্ষ্যান্ত হননি, রাজধানীর মগবাজারস্থ বিটিসিএল এর কোলোনীতে মোমবাতি প্রজ্জলন করে আনন্দ উল্লাস প্রকাশ করে ছিলেন বলে প্রত্যাক্ষদর্শীরা অভিযোগ করেছেন। 
অথচ এই বোল পাল্টানো নেতা এখন বিএনপি নেতাদের সঙ্গে ছবি তুলে ফেসবুকে প্রচার চালিয়ে নিজেকে বিএনপির নেতা পরিচয়ে বিটিসিএল এর ক্ষমতার তান্ডব চালিয়ে আসছেন। তিনি সরকারি কোয়ার্টার দখল করে তার ভাড়া ১৮ লক্ষাধিক টাকা সরকারী কোষাগারে জমা দেয়নি। শুধু তাই নয়, মগবাজার বিটিসিএল এর কলোনিতে অবৈধভাবে কয়েকশত সেমিপাকা, কাঁচা ঘর রয়েছে। আর সেই সব ঘরগুলো কর্মচারীদের মাঝে কেনা-বেচা ও ভাড়া দেওয়া হয়। দুর্র্নীতিবাজ ভিপি মো. হানিফ এবং সোবহান মিয়াসহ বহিরাগতদের সিন্ডিকেটের সদস্যরা অবৈধ উপায়ে ভাগ বন্টন করে নিচ্ছেন। 
এছাড়া, যে সকল কোয়ার্টার কর্মচারীদের নামে বরাদ্দ না দিয়ে দুর্নীতিবাজ অভিযুক্ত কর্মচারী সাবেক ভিপি হানিফ ও সোবহান প্রতিমাসে টাকা আত্মসাত করছেন। আর সে সব কোয়ার্টার বা বাসাগুলো হচ্ছে, ই-৪/৭,এফ-১/১০,এফ-৪/১০,এফ-৪/১১,এফ-১/১,এফ-১/১১/এফ-৩/৩,জি-৭/১,জি-৭/২,জি-৭/৫, জি-৭/৬,জি-৭/৮,জি-৭/৯, জি-৭/১১, জি-৮/১,জি-৮/৪, জি-৮/৬, জি-৮/৭,জি-৮/৮, জি-৮/১২, জিচ-৮/১৫, জি-৮/১৬,জি-৯/৩, টি-১২/এর. এইচ-১/১-২, এইচ-১/৩-৪, এইচ-১৫-৬, এইচ -১/৯-১০। আবার এইচ-১/১১-১২, এইচ-১/১৩-১৪, গত ফ্যাসিস্ট সরকার পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে ভিপি মো. হানিফ বহিরাগতদের অবৈধভাবে ভাড়া দিয়ে প্রতিমাসে ১৫ হাজার টাকা করে ৩২টি বাসা থেকে ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা আদয় করে পকেটস্থ করছেন।
অপর এক সূত্র জানায়, রাজধানীর মগবাজার বিটিসিএল কলোনীর সরকারী কোয়ার্টার নম্বর- এফ-৫, জবর দখল করে গত ২০০৮ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত অবৈধভাবে বসবাস করায় বিটিসিএল কর্তৃপক্ষ ১৮ লাখ, ৪১ হাজার, ৫৭৯ টাকা পাওনা ধার্য্য করেন। যার প্রমাণ হচ্ছে, গত ০৯/০৯/২০২১ তারিখ স্বারক পত্র নং ১৪.৩৩.-------৬৮৭.২১.১০ এর মাধ্যমে মো. আবুল হোসেন উপ মহা-ব্যবস্থাপক (ইমারাত রক্ষণবেক্ষণ-১)বিটিসিএল, মহবাজার, ওয়াকচার্জড মো. হানিফ এর প্রেরণ করেন। উক্ত পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ২০০৮ সালের ১ ফেব্রুয়ারি হতে ২০২১ সালের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বাড়ীভাড়া, গ্যাসবিল, ওয়াসা, পয়ঃনিষ্কাশন, পৌরকর বাবদ মোট ১৮ লাখ ৪১ হাজার ৫৭৯ টাকা তার কাছে আদায় যোগ্য। যা সোনালী ব্যাংকের মগবাজার শাখায় উপ মহ ব্যবস্থাপকন (ইমরাত রক্ষনাবেক্ষণ-১) বিটিসিএল মগবাজার, ঢাকার চলতি হিসাব নম্বরে পরিশোধ করে রশিদের ফটোকপি দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু এখনো সেই টাকা জমা দেওয়া হয়নি বলে জানা গেছে। 
গত ২০২২ সালে উক্ত বাসা পুনরায় তারই নামে পুনরায় বরাদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু সরকারের ধার্য্যকৃত বাসা ভাড়ার টাকা পরিশোধ করা হয়নি বলে নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে। তিনি তার অফিস হতে কোয়াটারটিও বুঝে না নিয়ে সরকারী কোয়ার্টার দীর্ঘ ১৮ বছর পরিবার নিয়ে বসবাস করেছেন।
অভিযোগে জানা গেছে, টিটু চন্দ্র দাস নামের বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানী লিমিটেড (বিটিসিএল) এর কনিষ্ট লাইনম্যান, গত ২০২৫ সালের ১৫ অক্টোবর গুলশান টেলিফোন এক্সচেঞ্চ অফিসে যান। সেখানে ওয়ার্কচাজ পদে কর্মরত মোর্শেদ আলম মুন্সি ও আব্দুস সোবহান মিয়া তার নিকট ১২ তম গ্রেডে অর্গানোগ্রাম সৃজিত শূন্যপদে বারীধারা ইউনিটে পদায়নের জন্য ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। তার এই চাঁদার টাকার একটি অংশ উপরের নেতাদের এবং বিটিসিএল এর কর্মকর্তাদের দিবেন বলে তাকে জানানো হয়। এতে তিনি রাজী না হলে তাকে বলা হয়, অন্যদের কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা করে নেই। তুই হিন্দু বিধায় তোর আরো ২০ হাজার টাকা বেশী দিতে হবে। একপর্যায়ে তারা তাকে মালাউনের বাচ্চা বলে গালি দেন। আর টাকা না দিলে তাকে লাথি মেরে ভারত পাঠিয়ে দেওয়া হবে। আর তা না হয়, তোর আগা কেটে দিব” বলে তাকে হুমকি দেন। আর এ ঘটনা কাউকে জানালে মগবাজার বিটিসিএল এর বাসা থেকে সন্ত্রাসীদের হাতে তুলে দেওয়ারো তাকে হুমকি দেওয়া হয়।
সংশিষ্ট সূত্র জানায়, বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানী লিমিটেড (বিটিসিএল) এর দুর্নীতিবাজ কতিপয় কর্মকর্তার যোগসাজসে তিনি গত ৫-১১-২০২৫ তারিখে তথ্য গোপন করে করাইল (বিটিসিএল) এর কলোনী নম্বর ডি-৩/সি নম্বর বাসাটি তার নামে বরাদ্ধ করানো হয়েছে। যার প্রমাণ গত ৫ নভেম্বর বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানী লিমিটেড (বিটিসিএল) এর স্বারক নম্বর ১৪.৩৩.০০০০.০০০.----১৯৬.৯৯----০০০১.২৫. ৯৭ এর অফিস আদেশ ২৬ নম্বর ক্রমিক এ প্রমাণিত। 
উক্ত বরাদ্দ পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে বরাদ্দের আগে তিনি নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় বসবাস করেছেন। যদি তাই হয়, তাহলে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানী লিমিটেড (বিটিসিএল) কর্তৃক আগের মগবাজারের কলোনীর বাসা নম্বর এফ-এর বরাদ্দ এবং ১৮ লক্ষাধিক সরকারের রাজস্ব আত্মসাত এর কি হবে ? উক্ত টাকা কি কখনো আদায় করে সরকারির কোষাগার জমা হবে ? বিটিসিএল এর  সাধারণ কর্মচারীদের প্রশ্ন। 
এ ব্যাপারে মো. আবুল হোসেন উপ মহাব্যবস্থাপক (ইমারাত রক্ষণবেক্ষণ-১)বিটিসিএল, মহবাজার এর সেল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তৎকালীণ দায়িত্বরত উ মহাব্যবস্থাপক (ইমারত রক্ষণারেক্ষন-১) বিটিসিএল, মগবাজার এর মো. আবুল হোসেন সকালের সময়কে জানান, ওনার কাছে গত ২০০৮ সালের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩১/০৮/২০২১ সাল পর্যন্ত বাড়ী ভাড়া, গ্যাস বিল, ওয়াসা, পয়ঃনিষ্কাশন, পৌরকর এর বিল বাবদ উল্লেখিত টাকা আদায়যোগ্য যা সোনালী ব্যাংকের মগবাজার শাখায় উপমহাব্যবস্থাপক (ইমারত রক্ষণাবেক্ষণ-১)পরিশোধ করে জমা রশিদের ফটোকপি সংশ্লিষ্ট শাখায় জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়েছিল। কিন্তু আমি যতদিন ছিলাম, ততদিন সেই অর্থ পরিশোধ করেনি। এখন আমি অবসরে আছি। তাই তিনি পরিশোধ করেছেন কি না তা তিনি বলতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন।

এমএসএম / এমএসএম

বিটিসিএল এর হিন্দু কর্মচারীকে চাঁদার দাবিতে বিশেষ অঙ্গ কেটে ভারতে পাঠানোর হুমকি

এনা পরিবহনের মালিক এনায়েত উল্লাহর বিরুদ্ধে ১০৭ কোটি টাকার মানিলন্ডারিং মামলা সিআইডি’র

অধরায় গৃহায়ণের প্রশাসক

অনিশ্চয়তায় নির্বাচন

পায়রা বন্দর সংযোগ সড়ক প্রকল্পে উন্নয়ন কাজে স্থবিরতা

দুর্নীতির টাকায় কোটিপতি চসিকের মোরশেদ

রকিবুল হাসান রনি ও তার পরিবারের ভয়ঙ্কর প্রতারণার জাল

পাপ্পীর কানাডা ও আমেরিকার ভিসা বাতিলের আবেদন

আপিল বিভাগের নিদের্শনা অমান্য করে জনবল নিয়োগ

ঘুষ কেলেংকারীতে ১৫ দিন খালি চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের চেয়ার

ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের এমডির বিচার চেয়ে ফের দুদকে আবেদন

উৎপাদন বেড়েছে, খরচ কমেছে, নতুন প্রকল্পে আশার আলো

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সকল সেক্টরে ইতিবাচক পরিবর্তন করবে : জননেতা অধ্যাপক মামুন মাহমুদ