চট্টগ্রাম বন্দর-কাস্টমসে লোভের বশে রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার
চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য আমদানির পর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যাচাই বাছাই সাপেক্ষে শুল্কায়ন শেষে সেসব পণ্য জেটি থেকে বের হওয়ার নিয়ম থাকলেও দায়িত্বরত কতিপয় অসৎ কর্মকর্তা ও অতি লোভী ব্যবসায়ীদের অনিয়মের ফলে রাজস্ব ছাড়াই এসব পণ্য বের হয়ে চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। এর ফলে একদিকে যেমন চোরাকারবারীরা উৎসাহিত হয়ে অবৈধ ব্যবসার দিকে ঝুকছে অন্যদিকে সরকার হারাচ্ছে মোটা অংকের রাজস্ব। সম্প্রতি শুল্কায়ন ছাড়া গোপনে বের হওয়া বিলাসবহুল গাড়ি ও মদের চালান বের হওয়ায় এই নিয়ে সচেতন মহলে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা।
অনেকেই ধারণা করছে শুল্কায়ন ছাড়া সংরক্ষিত বন্দর জেটি থেকে পণ্য বের হওয়া নিছক অবহেলা নয় বন্দর-কাস্টমসের কতিপয় অসৎ কর্মকর্তার যোগসাজসে এধরণের অপরাধ হয়ে থাকে। চোর সবসময়ই চাইবে চুরি করবে কিন্তু সেই চোরকে ধরার জন্য তো নির্ধারিত লোক আছে তারা কি করছিলেন তখন এমন প্রশ্ন সকলেরই। কোন ব্যবসায়ী বা সিএন্ডএফ করলে যেমন শাস্তি পাবে তেমনি, এই চক্রের সাথে বন্দর কাস্টমসের কারা জড়িত আছে তা খুজে বের করে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির ব্যবস্থা করা উচিৎ।
এব্যপারে বিজিএিমইএ’র সহ-সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন বন্দর জেটির অভ্যন্তর থেকে শুল্কায়ন ছাড়া কোন পণ্য বের হওয়ার সুযোগ নেই কিন্তু তারপরও বের হচ্ছে তাহলে কেন বের হচ্ছে কিভাবে বের হচ্ছে এর দায় বন্দর কর্তৃপক্ষ ও শুল্ক বিভাগের। সেখানে সবাই যে খারাপ তা নয় আবার সবাই দুধের ধোয়া তুলসি পাতা নয়। হয়তোবা ২/১ জন অসৎ কর্মকর্তা আছেন যাদের দ্বারা রাষ্ট্রের এমন ক্ষতি হয়ে থাকে। তাই আমি বলব দেশের স্বার্থে এক্ষনি এদের খুজে বের করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে। অন্যথায় এরা দেশের আরো বড় ক্ষতি করবে।
৪ জুলাই ঢাকার বারিধারার একটি বাড়ির গ্যারেজ থেকে লুকানো অবস্থায় ২৪ কোটি টাকা মুল্যের একটি রোলস রয়েস ব্র্যান্ডের গাড়ি আটক ও জব্দ করে শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। শুল্কায়ন ছাড়াই গোপনে সরিয়ে নিয়ে ঢাকায় লুকিয়ে রাখা অবস্থায় গাড়িটি আটক করেছে শুল্ক গোয়েন্দারা।৬ জুলাই শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের যুগ্ম পরিচালক শামসুল আরেফিন খান সাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ সব তথ্য জানানো হয়।
যুগ্ম পরিচালক শামসুল আরেফিন খান জানান, গত এপ্রিল মাসে চট্টগ্রাম ইপিজেডের হংকং ও বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত জেড অ্যান্ড জেড ইনটিমেটস লিমিটেড নামে প্রতিষ্ঠান শুল্কমুক্ত সুবিধায় রোলস রয়েস গাড়িটি আমদানি করে। গত এপ্রিলে গাড়িটি আমদানির পর চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ (ইপিজেড) এলাকায় নেওয়া হয়। এরপর শুল্কায়নের জন্য কাগজপত্র দাখিল করা হয় কাস্টম হাউসে। তবে শুল্কায়নের আগেই গত ১৭ মে গাড়িটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের ঢাকার বারিধারায় বাসায় সরিয়ে নেওয়া হয়।
শুল্ক গোয়েন্দা কর্তৃপক্ষ জানায়, আমদানিকারক যে বিধিতে শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়িটি আমদানি করেছেন, তাতে তারা ২ হাজার সিলিন্ডার ক্যাপাসিটির গাড়ি আমদানি করে এই সুবিধা পাবেন। কিন্তু আমদানিকৃত গাড়িটি সিলিন্ডার ক্যাপাসিটি ৬ হাজার ৭৫০। ফলে এই গাড়িতে ২৪ কোটি টাকা শুল্ককর দিতে হবে। এছাড়াও আমদানিকারক শুল্কায়ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন না করেই গাড়িটি গ্যারেজে লুকিয়ে রেখে শুল্ক আইনের লংঘন করেছেন। ফলে গাড়িটির আমদানি চোরাচালান অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।
বিনা শুল্কায়নে পণ্য খালাসের ব্যপারে চট্টগ্রাম কাস্টমস ক্লিয়ারিং এন্ড ফরোয়ার্ডিং (সিএন্ডএফ) এজেন্ট এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী মাহমুদ ইমাম বিলু বলেন শুল্কায়ন ছাড়া পণ্য খালাসের সাথে কোননা কোন অপশক্তিতো জড়িৎ আছে। সম্প্রতি কিছু পণ্য বাইরে আটক হওয়ার পর শুল্ক গোয়েন্দরাও বেশ কিছু বিদেশি মদ আটক করেছে। আর এসব অপকর্ম শুধু যে আজকেই হয়েছে তা নয়। এর আগেও অনেক ধরা পড়েছে তদন্ত কমিটি হয়েছে কিন্তু সেই অপরাধের সাথে কারা জড়িৎ তাদের কি বিচার হয়েছে তা আমরা জানিনা কেন ? পুর্বের অপরাধের বিচার যদি ঠিকঠাক মতো হয়ে যেত তাহলে আজকের এই দিনটা হয়তো আমাদের দেখতে হতোনা। দেশ ও জাতির স্বার্থে আমাদের দাবি এই চক্রের সাথে যারাই জড়িৎ তাদের খুজে বের করে কঠিন শাস্তি নিশ্চিত করা যাতে ভবিষ্যতে এমন রাষ্ট্র বিরোধী কাজ করতে কেউ সাহস না করে। প্রয়োজনে র্যাবের মাধ্যমে তদন্ত করে শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।
গত ২৩ জুলাই বন্দর থেকে খালাস হওয়া দুই কন্টেননার বিদেশি মদ নারায়ণগঞ্জ থেকে আটক করে র্যাপিড একশন ব্যাটলিয়ানের (র্যাব) একটি টিম। সুতা ও মেশিনারিজ ঘোষণায় আনা দুটি কন্টেইনার থেকে বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ জব্দ করা হয়েছে, সেই কন্টেইনার দুটি স্ক্যানিং ছাড়াই চট্টগ্রাম বন্দর থেকে খালাস করা হয়েছিল বলে ২৪ জুলাই গণমাধ্যমকে জানায় র্যাব।
ওইদিন নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থেকে মোট ৩৬ হাজার ৮১৬ বোতল মদ উদ্ধার করে র্যাব। যার সরকার নির্ধারিত মূল্য ৩১ কোটি ৫৮ লাখ টাকা, ভ্যাটসহ এর দাম পড়ে ৩৬ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। ৪০ ফুট দৈর্ঘ্যের কন্টেইনার দুটি চট্টগ্রাম বন্দরের এক নম্বর গেইট দিয়ে বের করা হয়েছিল। মার্চ ও মে মাসেও এরা তিনটি চালান এনেছিল। আগের চালানগুলোতে তারা গড়ে ১৪ হাজার করে বোতল এনেছিল।
তারা জানায় ঢাকার কিছু হোটেল, বার ও ক্লাব এসব মদের ক্রেতা। গার্মেন্টস পণ্যের মিথ্যা ঘোষণায় এই মদ আমদানির পেছনে রয়েছে মুন্সীগঞ্জকেন্দ্রিক একটি চক্র, যাদের নেটওয়ার্ক দুবাই পর্যন্ত বিস্তৃত। চলতি বছরেই তারা আরও তিনটি চালানে মিথ্যা ঘোষণায় প্রায় ৪৮ হাজার বোতল বিদেশি মদ এনেছে। অবশ্য পরে আরো বিপুল পরিমান বিদেশি মদ আটক করেছে শুল্ক গোয়েন্দা।
এব্যপারে কথা বলতে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুককে কল ও বার্তা দিয়েও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
এব্যপারে জানতে চাইলে চট্টগ্রামের কাস্টম কমিশনার মো. ফখরুল আলম বলেন শুল্কায়ন ছাড়া কোন পণ্য জেটি থেকে বের হওয়ার সুযোগ নেই। তবে সম্প্রতি যেগুলো আটক হয়েছে সেগুলোর সাথে যেসব ব্যবসায়ী জড়িত তা আমরা জানতে পেরেছি, আটকও হয়েছে কেউ বাকীদের আটকের চেষ্টা করছে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী। আমরাও তদন্ত করছি, কারা জড়িৎ খুব শীঘ্রই বের করতে পারব বলে আশা করছি। তবে কাস্টমস কর্মকর্তাদের পাসওয়ার্ড হ্যাক করে বাইরের কম্পিউটার থেকে এই কাজগুলো করা হয়েছে। যদি আমাদের কেউ এই চক্রের সাথে জড়িৎ থাকে তবে তাদেরকে আমরা কিছুতেই ছাড় দিবনা।
এমএসএম / এমএসএম
থামছেই না ছড়াও, দখল করে ভবন নির্মাণ কাজ
বাঁশখালীতে রিক্সা চালক শ্রমিক কল্যাণ ইউনিয়ন নির্বাহী কমিটির বার্ষিক সাধারণ সভা
নোয়াখালীতে যৌন-প্রজনন স্বাস্থ্য ও লিঙ্গ ভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধ সভা
চাঁপাইনবাবগঞ্জ -২ এ,ধানের শীষের কান্ডারী ইঞ্জি: মাসুদ'কে চায় সাধারণ মানুষ ও বিএনপি'র নেতাকর্মীরা
পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীতে শ্রমিক দলের আহ্বায়ক জুয়েলের বিরুদ্ধে কমিটি বাণিজ্যের অভিযোগ
কাউনিয়ায় মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টায় পিতা পুলিশের হাতে
বাঁশখালীতে জমি বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত, গ্রেপ্তার-৩
নন্দীগ্রামে সিএনজি চালককে অপহরণ ও মুক্তিপণ নিয়ে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ
সুবর্ণচরে আশার আলো সমাজ কল্যাণ সংগঠনের বৃক্ষরোপন কর্মসূচি
সহকারী এটর্নি জেনারেল হলেন পেকুয়ার কেএম সাইফুল ইসলাম
৭ই নভেম্বর উদযাপন ও খন্দকার নাসিরের মনোনয়ন এর দাবিতে মধুখালী বিএনপির জরুরী সভা
ভোলা-১ আসনে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করবে বিজেপি, নির্বাচনি প্রচার ও র্যালী অনুষ্ঠিত