ঢাকা সোমবার, ৪ আগস্ট, ২০২৫

‘ডিজিটাল শুমারি’র ফলাফল ২৯ দিনেই


সাদিক হাসান পলাশ photo সাদিক হাসান পলাশ
প্রকাশিত: ২-৮-২০২২ বিকাল ৫:৩৮

‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সময়ে একটি আলোচিত বিষয়। এর মূল লক্ষ্য, একুশ শতকে বাংলাদেশকে একটি তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলা এবং ২০২১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালনের বছরে বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তর করা...

স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম জনসংখ্যা গণনা হয় ১৯৭৪ সালে। এরপর ১৯৮১ সালে জনশুমারি অনুষ্ঠিত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ১০ বছর পর ১৯৯১, ২০০১ ও ২০১১ সালে অনুষ্ঠিত হয় পঞ্চম শুমারি। এসব শুমারিতে ফল পেতে কমপক্ষে ছয় থেকে সাত মাস সময় লেগেছে। কারণ দেশের প্রতিটা ঘরে ঘরে তথ্য সংগ্রহ করার পর হাতে কলমে এগুলো হিসাব করা হতো। ফলে দীর্ঘসময় ধরে শুমারির ফলের জন্য অপেক্ষা করতে হতো।

‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সময়ে একটি আলোচিত বিষয়। এর মূল লক্ষ্য, একুশ শতকে বাংলাদেশকে একটি তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলা এবং ২০২১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালনের বছরে বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তর করা। এসকল বিষয়ে বাংলাদেশ অর্জন করেছে তার বড় প্রমাণ জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২ এর প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশ। মাত্র ২৯ দিনেই শুমারির ফলাফল প্রকাশ করা হয়।

বিবিএস জানায়, ১৯৭৪ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত স্বাধীন বাংলাদেশে মোট চারটি শুমারি অনুষ্ঠিত হয়। এসময় জনশুমারির নাম ছিল আদমশুমারি। চারটি শুমারির ফল পেতে ৬ থেকে ৭ মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে। কারণ সারা দেশের ডাটা এক সঙ্গে সংগ্রহ করে ফল প্রকাশ করা অনেক কঠিন কাজ ছিল। তবে ২০১১ সালে কিছুটা সময় কম লেগেছিল তবুও ১১৭ দিন বা প্রায় চার মাস। ২০১১ সালের শুমারি ১৫ থেকে ১৯ মার্চ ৫ দিন অনুষ্ঠিত হয় দেশব্যাপী।

স্বাধীন বাংলাদেশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর নির্দেশনায় ১৯৭৪ সালে প্রথম আদমশুমারি ও গৃহগণনা পরিচালিত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৮১, ১৯৯১, ২০০১ এবং ২০১১ সালে যথাক্রমে দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ এবং পঞ্চম আদমশুমারি ও গৃহগণনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরিসংখ্যান আইন, ২০১৩ অনুযায়ী ‘আদমশুমারি’-কে ‘জনশুমারি’ হিসেবে অভিহিত করা হয়। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সম্পূর্ণ ডিজিটাল পদ্ধতিতে দশ বছর পর্যাবৃত্তি অনুসরণপূর্বক ষষ্ঠ ‘জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২’ বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) মাধ্যমে ১৫ থেকে ২১ জুন পর্যন্ত দেশব্যাপী পরিচালিত হয়েছে।

প্রকল্প পরিচালক দিলদার হোসেন বলেন, বিগত শুমারির তথ্য পেতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতো হতো। তবে সবার সহযোগীতায় আমরা মাত্র ২৯ দিনেই জনশুমারির ফলাফল প্রকাশ করেতে পেরেছি। বর্তমান সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ বির্নিমাণ করেছে তারই ছোঁয়া লেগেছে জনশুমারিতে। যে কারণে এত দ্রুত ফলাফল প্রকাশ করতে পেরেছি। দেশের প্রথম ডিজিটাল জনশুমারিতে ডিজিটাল ডিভাইস ট্যাবলেট ব্যবহার করে কম্পিউটার অ্যাসিসটেড পার্সনাল ইন্টারভিউইং (ক্যাপি) পদ্ধতিতে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। সহজে ও সুনির্দিষ্টভাবে শুমারির গণনা এলাকা চিহ্নিতকরণ এবং কোনো খানা গণনা থেকে বাদ না পড়া বা একাধিকবার গণনা না হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সিস্টেম ও জিও কোড সমন্বয় করে ডিজিটাল ম্যাপ প্রস্তুত ও শুমারিতে ব্যবহার করা হয়েছে। ডিজিটাল ম্যাপ ব্যবহার করে গণনাকারীগণ (প্রায় ৩ লাখ ৭০ হাজার) নির্ধারিত গণনা এলাকার প্রতিটি বাসগৃহ, খানা ও ব্যক্তির তথ্য সংগ্রহ করেছেন।

তিনি আরও বলেন, ডিজিটাল এ শুমারি বাস্তবায়নে সারা দেশে একযোগে তথ্য সংগ্রহের কাজে ব্যবহার হয়েছে ৩ লাখ ৯৫ হাজার ট্যাবলেট। মাঠ পর্যায়ে তথ্য সংগ্রহে ব্যবহৃত ট্যাবলেটসমূহ মোবাইল ডিভাইস ম্যানেজমেন্ট ফটওয়্যার ব্যবহার করে কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। এছাড়া মাঠপর্যায় থেকে সংগৃহীত তথ্য সংরক্ষণ এবং নিরাপত্তা নিশ্চিতে বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্ক, গাজীপুর, কালিয়াকৈর এ স্থাপিত বাংলাদেশ ডেটা সেন্টার কোম্পানি লিমিটেডের (বিডিসিসিএল) টায়ার আইভি সিকিউরিটি সমৃদ্ধ ডেটা-সেন্টার ব্যবহার করা হয়েছে।

বিবিএস জানায়, মাঠপর্যায় থেকে বিডিসিসিএল হয়ে বিবিএস সার্ভারে আসার পূর্ব পর্যন্ত সংগৃহীত সকল তথ্য-উপাত্ত গোপন অবস্থায় ছিল যার মাধ্যমে ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা শতভাগ নিশ্চিত করা হয়েছে। এছাড়াও একটি ওয়েবভিত্তিক ইন্টিগ্রেটেড সেনসাস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম প্রস্তুত করা হয়েছে, যার মাধ্যমে শুমারির যাবতীয় কার্যক্রম ব্যবস্থাপনা করা হয়েছে। তাছাড়া এর মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ের তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রম সব সময় মনিটর করা হয়েছে। মাঠপর্যায়ের তথ্যসংগ্রহ কার্যক্রম রিয়েল টাইম মনিটরিংয়ের পাশাপাশি তথ্যের গতিবিধি সরাসরি পর্যবেক্ষণের লক্ষ্যে নেটওয়ার্ক অপারেশন সেন্টার  স্থাপন করা হয়েছিল, যা তথ্যের গুণগত মান নিশ্চিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। সর্বোপরি, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারের ফলে তথ্য প্রক্রিয়াকরণ সহজতর হয়েছে এবং স্বল্পতম সময়ে তথা মূল শুমারি সম্পাদনের মাত্র এক মাসের সময়ে শুমারির প্রতিবেদন প্রকাশ সম্ভব হয়েছে।

পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন বলেন, শুমারির নামই জিডিটাল শুমারি। ক্যাপি সিস্টেমের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। আমাদের বিবিএস নক রুমে সরাসরি তথ্য চলে এসেছে। আগে এটা হাতে করা হতো। প্রতিদিনের ডাটা প্রতিদিন পেয়েছি। এই প্রক্রিয়ায় শুমারি করার কারণে দ্রুত রেজাল্ট পেয়েছি।

পরিকল্পনামন্ত্রী এ এ মান্নান বলেন, প্রযুক্তির কল্যাণে দ্রুত জনশুমারির ফলাফল দিতে পেরেছি। আগে বাড়ি বাড়ি কাগজে কলমে তথ্য সংগ্রহ করা হতো। এতে অনেক বানান ভুল থাকতো। এবার লেখার কিছু ছিল না। এবারের জনশুমারি বিশুদ্ধতায় ভরা।

তিনি আরও বলেন, বিবিএস সচিব, প্রকল্প পরিচালককে সঙ্গে নিয়ে চমৎকার একটা টিম তৈরি কাজ করেছে। একজন গণনাকারী কাউকে গণনা করার সঙ্গে সঙ্গে রেজাল্ট আমাদের হাতে এসেছে। কিছু সময় নিয়েছি এটাকে আরও বিশুদ্ধ করতে। সচিব ও আমরা সব সময় মনিটর করেছি প্রতিটা বিষয়। কয়টা জেলায় জেলায় কারা কাজ করছে না করছে সব দেখেছি সব সময়। সবাই দক্ষ ছিল, প্রযুক্তির ব্যবহারও দারুণ ছিল। মাঠের সহায়তা ভালো পেয়েছি। সবাই মনোযোগ সহকারে কাজটি করেছে।

তিনি আরও বলেন, ডিজিটাল প্লাটফর্ম গড়েছি। এটাকে ব্যবহার করে সামনে যাতে দ্রুত শুমারির রেজাল্ট দিতে পারি সেই বিষয়ে কাজ করা হবে। যাতে করে এত টাকা ব্যয় না করে প্রতি সপ্তাহে দেশের মানুষের তথ্য পেতে পারি। আমরা দেশিয় ট্যাবে শুমারি করেছি। এটা আমাদের বড় অর্জন। সামনে জনশুমারির তথ্য আরও দ্রুত পাবো প্রতি মুহূর্তে জানতে খোঁচা মারলে যন্ত্র বলে দেশের মানুষ কত।

সাদিক পলাশ / সাদিক পলাশ

রেজিস্ট্রি অফিসের প্রভাবশালী নকলনবিশের কাণ্ডঃ মন্ত্রীদের প্রভাবে চাঁদাবাজি ও নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ

বিসিক এর নীরিক্ষা কর্মকর্তা সাবধান আলী হতে সাবধান!

কেরানীগঞ্জ উপজেলার রাজাবাড়ী রোডে অবৈধ এলপিজি বটলিং প্লান্ট এর সন্ধান

গডফাদার মুরাদ জং-এর বোন পরিচয়ে দলিল দাতা-গ্রহীতাদের জিম্মি করার অভিযোগ

গাজীপুরের কাশিমপুরে সরকারি খাস জমি ভূমিদস্যুদের দখলে

বগুড়ায় সাবেক অফিস সহকারীর বিরুদ্ধে 'ফ্যাসিস্ট সিন্ডিকেটের' মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের আইন যেন শুধু খাতা কলমে

প্রকৌশলী কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ

গোয়েন্দা প্রধানসহ লুটপাটের অভিযোগে চার কর্মকর্তা ক্লোজড

নির্বাহী প্রকৌশলী জহির রায়হানের বিরুদ্ধে ঠিকাদারদের মানববন্ধনে শাস্তি ও অপসারণ দাবী

সীমাহীন দুর্নীতি,অর্থ আত্মসাত ও সরকারি চাকুরির শৃংখলা ভংগের অভিযোগে এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী রনজিত দে সাময়িক বরখাস্ত

সরকার বিরোধী কর্মকান্ডে শ্রমিকদের উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ

রাজউকের ইমারত পরিদর্শক জয়নাল আবেদিন এর বিরুদ্ধে ঘুষ-দুর্নীতির বিস্তর অভিযোগ