ঢাকা মঙ্গলবার, ১ জুলাই, ২০২৫

চড়ুইভাতি আর অর্থনীতি পরিবারের ভালোবাসার গল্প


ফাহাদ হোসেন, নোবিপ্রবি  photo ফাহাদ হোসেন, নোবিপ্রবি
প্রকাশিত: ৩০-৮-২০২২ রাত ৮:৪৫
সবুজ ক্যাম্পাসের আলো-বাতাস, মানুষ, কংক্রিটের ভবনের প্রতিটি ইট-পাথর কিংবা প্রতিটি ঘাস-লতাপাতার সঙ্গেই যেন গড়ে উঠেছে নিবিড় সখ্য। ক্যাম্পাস জীবনের সিটি, পরীক্ষা, ক্লাস, প্যারা  সবকিছুই আত্মার সঙ্গে মিশে গেছে। তাই তো জীবনের রোমাঞ্চকর এ ক্ষণিক সময়টুকু দীর্ঘায়িত করতে নানা আয়োজনের প্রয়াস।একটি দিনের মুছলো স্মৃতি, ঘুচল চড়ুইভাতি,/পোড়াকাঠের ছাই পড়ে রয়, নামে আঁধার বাতি' চড়ুইভাতির অপার্থিব সৌন্দর্যের বর্ণনা পাই রবীন্দ্রনাথের চড়ুইভাতির কবিতার মাধ্যমে। নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি ১৫ তম ও ১৬ তম  ব্যাচের শিক্ষার্থীদের নিয়ে ক্যাম্পাস জীবনকে একটু স্মৃতিময় করে তুলতে ৩০ ই আগষ্ট ( মঙ্গলবার)  আয়োজিত হয়ে গেলো চড়ুইভাতি। 
 
দীর্ঘদিন ধরে অর্থনীতি পরিবারের দুই ব্যাচের চড়ুইভাতি আয়োজনের  জন্য বার বার  তারিখ ঠিক করা হয়েছে। কিন্তু ঠিক জুতসই হচ্ছিল না। ক্লাস, পরীক্ষার চাপ থেকে কিঞ্চিৎ মুক্তি পেতে কেউ কেউ বাড়ি ছুটছিল। তাই ব্যাটে বলে হয়ে উঠছিলও না। তবে সেটা সম্ভবপর হয়েছে  সেমিষ্টার পরীক্ষার শেষে  এসে।
 
চড়ুইভাতি আয়োজনটি হয়েছিল নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে নীলদিঘির নীল জলরাশির পাড়ে। বিস্তীর্ণ দিঘিরপাড়। নিরিবিলি স্থান। শরতের  কড়া রোদ। সঙ্গে রয়েছে দিঘির পাড়ের শীতল  হাওয়া। একপাশে কয়েকজন মিলে হাঁড়িপাতিল বসিয়ে  রান্না করছেন। অদূরে সেলফি তুলছেন কেউ। কেউবা আড্ডায় ব্যস্ত। কেউবা আবার গল্প করছে শান্ত নীলদিঘির পাড়ে। 
 
সকালবেলা থেকেই শুরু হয়েছিল আমাদের চড়ুইভাতির  রান্নার যুদ্ধ। এ সময়ে সবাই হয় বাবুর্চি, নয় সহযোগীর ভূমিকায়। অনেক নাম! ধরে ধরে বলতে গেলে বিশাল এক তালিকা বনে যাবে। 
রান্না শেষ হতে হতে বেলা একটা । সবাই অনেক ক্ষুধার্ত। 
 
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও প্রক্টর অধ্যাপক ড. নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর সহ অর্থনীতি বিভাগের সম্মানিত শিক্ষকগণ চড়ুইভাতি আয়োজনে এলেন আমাদের নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে। অর্থনীতি পরিবারের ১১০ জন সদস্যের একসাথে   জম্পেশ খাওয়া স্মৃতি হয়ে থাকবে আজীবন। সম্মানিত শিক্ষকবৃন্দ আমাদের   রান্না ও আয়োজনের প্রশংসা করলেন। 
 
পড়ন্ত বিকালে নীলদিঘির পাড়ে অর্থনীতি পরিবারের ১৫ ও ১৬ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে   শুরু হলো সাংস্কৃতিক  ও আড্ডা পর্ব। 
বিকালের স্নিগ্ধ বাতাস। পুকুরপাড়ে বসে গলা ছেড়ে গান গাওয়ার মজাই আলাদা। একটু পর পর নতুন গানে জমে উঠতে থাকলো অর্থনীতি পরিবারের আয়োজিত চড়ুইভাতির সাংস্কৃতিক পর্ব। 
 
সূয্যি মামা পশ্চিম আকাশে লাল আভা ধারণ করে জানান দেন দিন শেষ এবার শেষ করো। সারাদিনের পরিশ্রমে সূয্যি মামা ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়লেও ক্লান্তির কোনো ছাপ ছিল না আমাদের চোখে-মুখে। 'মাঠের সীমাহীনতা ও বাতাসে সামিয়ানার চঞ্চলতা একদম তুচ্ছ হয়ে পড়েছে একঝাঁক তরুণের উচ্ছ্বলতার কাছে।
 
 
লেখক 
মোঃ ফাহাদ হোসেন 
শিক্ষার্থী, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। 

এমএসএম / এমএসএম