এনামুল বাছিরকে ষড়যন্ত্র করে আসামি করা হয়েছে: আইনজীবী

ষড়যন্ত্রমূলকভাবে দুর্নীতি দমন কমিশনের সাবেক কর্মকর্তা খন্দকার এনামুল বাছিরকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আসামি করা হয়েছে বলে আদালতকে জানিয়েছেন আইনজীবী ফারুক আলমগীর চৌধুরী। বৃহস্পতিবার সকালে বিচারপতি মোঃ রইস উদ্দিনের একক বেঞ্চে দুদকের সাবেক কর্মকর্তা খন্দকার এনামুল বাছিরের জামিনের আবেদন শুনানিতে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় এনামুল বাছিরের আইনজীবী বলেন, এনামুল বাছির একজন সৎ এবং দক্ষ কর্মকর্তা ছিলেন। তিনি তার কর্মকালীন সময়ে দুদকের অনেক মৃত মামলাকেও সজীব করে তুলেছিলেন। বড় বড় আমলা, বড় বড় অর্থপাচারকারী, অর্থ আত্মসাৎকারী বড় বড় রাঘব বোয়ালদের বিরুদ্ধে তিনি প্রসিকিউশন রিপোর্ট দিয়েছেন এবং শাস্তির ব্যবস্থা করেছেন। যেখানে দুদকের মামলায় সাক্ষী আদালতে উপস্থিত হতো না, সেখানে খন্দকার এনামুল বাছির তার দায়ের করা মামলায় সাক্ষী হাজির করতেন। তার কর্ম সফলতার কারণে বহুবার তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পুরস্কৃতও হয়েছেন বলে শুনানিতে উল্লেখ করেন আইনজীবী ফারুক আলমগীর চৌধুরী। তিনি একজন সৎ পরিচালক ছিলেন, তার এই সৎ কাজের ফলে কিছু মুষ্ঠিমেয় মহল ক্ষতিগ্রস্ত মহলেও সামগ্রিক অর্থে দেশের কল্যানে সততার সাথে তিনি কাজ করেছেন। ফলে এই অসাধু চক্রটিই দীর্ঘদিন তার ক্ষতিগ্রস্ত করার চক্রান্তে লিপ্ত ছিলো। এই রায়টি সেই ষড়যন্ত্রেরই অংশ বলে শুনানিতে উল্লেখ করেন তিনি।
আইনজীবী বলেন, একটি গণমাধ্যমের প্রতিবেদনকে ভিত্তি করে এ মামলার সুত্রপাত হয়। মামলায় মোট ১৬ জন সাক্ষীকে বিচারিক আদালত গ্রহণ করেন। কোন সাক্ষীই খন্দকার এনামুল বাছিরের বিরুদ্ধে ঘুষ নেয়া এবং দেয়ার কথা উল্লেখ করেন নাই।
উচ্চ আদালতের আইনজীবী ফারুক আলমগীর চৌধুরী বলেন, যে প্রতিবেদক ঘুষ দেয়া-নেয়ার প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন তাকে বার বার তলব করা স্বত্ত্বেও তিনি আদালতে উপস্থিত হননি এবং সাক্ষী দেননি।দুদকের জব্দ তালিকায় ঘুষের টাকার কোনো উল্লেখ নাই, ফোন কিংবা সিম, কোন কিছুই জব্দ করেনি দুদক। ডিআইজি মিজানের ড্রাইভার এসএম এনামুল হক এবং বডিগার্ডের সাক্ষীকে বিশ্বাস করে এ সাজা দিয়েছে বলে শুনানিতে আদালতকে জানান খন্দকার এনামুল বাছিরের আইনজীবী।
খন্দকার এনামুল বাছিরকে মোট পাঁচ বছরের সাজা দেওয়া হয়, সাজাটি একান্ত বেআইনি এবং বেদনাদায়ক। এ ধরনের শাস্তি কোন সাক্ষী-প্রমাণের উপর নির্ভরশীল ছিলো না, পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি এবং অন ল- এ ধরনের শাস্তি দেয়ার কোন ভিত্তিই ছিলো না। আমার মক্কেল সম্পুর্ণ নির্দোষ জানিয়ে আইনজীবী ফারুক আলমগীর চৌধুরী জানান, আদালত খন্দকার এনামুল বাছিরের জামিনের উপর শুনানি গ্রহণ করেন এবং পরবর্তী শুনানির জন্য ১৫ নভেম্বর তারিখ নির্ধারণ করেন আদালত।
এদিকে, দুর্নীতি দমন কমিশনে ‘চাকরি হইতে বহিষ্কার করা প্রসঙ্গে’ খন্দকার এনামুল বাছিরের পক্ষে একটি আবেদন জমা দেন স্ত্রী রুমানা শাহীন শেফা। আবেদনে আলোচ্য সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা ডিআইজি মিজানের আর্থিক অনিয়মের বিষয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খখভাবে তদন্ত সাপেক্ষে প্রসিকিউসন রিপোর্টের ভিত্তিতেই মামলাটি নিষ্পত্তি করা হয়। আবেদনে বলা হয়, দুদকের প্রধান কার্যালয়ের কতেক অসাধু কর্মকর্তার সাথে সাবেক ডিআইজি মিজানের সখ্যতা ছিলো। তারাই আবেদনকারীর ভাবমূর্তিকে হেয় প্রতিপন্ন করতে অসৎ উদ্দেশ্যে গণমাধ্যমে একটি বানোয়াট ও মিথ্যা সংবাদ প্রচার করেন। সাবেক ডিআইজি দুদকে ঘুষ লেনদেনের কোনো অভিযোগও করেননি। এ বিষয়ে আনীত মোকদ্দমায় সেই গণমাধ্যম হতে কোন সাক্ষীও আদালতে হাজির হয় নাই। উক্ত টাকা কোথায় কিভাবে কার কাছে আছে তার তথ্য প্রমাণাদি এখন অব্দি আদালতে উপস্থাপন হয় নাই। আবেদনে বলা হয়, শুধুমাত্র বানোয়াট একটি খবরের উপর ভিত্তি করে আবেদনকারীকে অভিযুক্ত করাকে ষড়যন্ত্র দাবি করা হয়েছে। একই সাথে চাকরি থেকে বরখাস্ত করাকে বেআইনি দাবি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র জেলা জজ ও দুদকের সাবেক মহাপরিচালক মঈদুল ইসলাম বলেন, দুই দফায় আমার অধীনে কাজ করেছেন খন্দকার এনামুল বাছির। উভয় সময়ই আমি তাকে অত্যন্ত সৎ, পরিশ্রমী এবং দক্ষ কর্মকর্তা হিসেবে পেয়েছি।ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে সাবেক ডিআইজি মিজানকে দণ্ডবিধির ১৬১ ধারায় ও দুদকের সাবেক কর্মকর্তা বাছিরকে দণ্ডবিধির ১৬৫(এ) ধারায় তিন বছর করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। অপরদিকে মানি লন্ডারিং আইনের চার ধারায় বাছিরকে পাঁচ বছর কারাদণ্ড ও ৮০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। বাছিরের দুটি দণ্ড একসঙ্গে চলবে বলে তাকে পাঁচ বছর দণ্ড ভোগ করতে হবে। তবে দুর্নীতি দমন প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় উভয়ে দোষী সাব্যস্ত হলেও একই ধরনের অভিযোগে দণ্ডিত হওয়ায় এ ধারায় কাউকেই সাজা দেওয়া হয়নি।
৪০ লাখ টাকার ঘুষ কেলেঙ্কারির অভিযোগে ২০১৯ সালের ১৬ জুলাই দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ দুদকের পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্লাহ বাদী হয়ে মামলাটি করেছিলেন। ২০২০ সালের ১৯ জানুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন দুদকের একই কর্মকর্তা।
গত বছর ৯ ফেব্রুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করেন ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কেএম ইমরুল কায়েশ। এরপর তিনি মামলাটি বিশেষ জজ আদালত-৪ এ বদলির আদেশ দেন। ২০২১ সালের ১৮ মার্চ আসামিদের অব্যাহতির আবেদন নাকচ করে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।
২০১৯ সালের ৯ জুন একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে প্রচারিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে পরিচালিত দুর্নীতির অনুসন্ধান থেকে দায়মুক্তি পেতে দুদক পরিচালক বাছিরকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ দিয়েছিলেন ডিআইজি মিজান। ঘুষ লেনদেন সংক্রান্ত কথোপকথন রেকর্ড করে ওই চ্যানেলকে দিয়েছিলেন মিজান। ডিআইজি মিজানও এ বিষয়ে নিজেই গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেন। অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলা থেকে বাঁচতে ওই অর্থ ঘুষ দেন বলে ডিআইজি মিজান দাবি করেন।
এ প্রতিবেদন প্রচারিত হওয়ার পর দুদক সংস্থার সচিব মুহাম্মদ দিলোয়ার বখতকে প্রধান করে তিন সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটি ২০১৯ সালের ১০ জুন প্রতিবেদন জমা দেয়। প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে পরিচালক বাছিরকে দুদকের তথ্য অবৈধভাবে পাচার, চাকরির শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও সর্বোপরি অসদাচরণের অভিযোগে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে কমিশন।এরপর ২০১৯ সালের ১৬ জুলাই দুদক পরিচালক ও অনুসন্ধান টিমের দলনেতা শেখ মো. ফানাফিল্লাহ মানি লন্ডারিং আইনে সংস্থার ঢাকা-১ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করেন। একই বছর ২২ জুলাই এনামুল বাছিরকে গ্রেফতার করে দুদকের একটি দল। সেই থেকে তিনি কারাগারে।
এমএসএম / এমএসএম

ভুয়া লাইসেন্সে হুন্ডি ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন লেলিন মুন্সি

গণপূর্তের ইএম কারখানা বিভাগে নির্বাহী প্রকৌশলী মো: ইউসুফের দুর্নীতির রাজত্ব

দুর্নীতিতে পিছিয়ে নেই এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলীগন

‘এনবিআর’এ স্বৈরাচার সরকারের পালিয়ে থাকা চক্রের চক্রান্ত

প্রাণ ধ্বংসকারী কোম্পানি প্রাণ

বিসিএসআইআরের ৬ কোটি টাকার যন্ত্রপাতি কেনায় ভাগ বাটোয়ারা

কোতোয়ালীতে অপহৃত ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার

রেজিস্ট্রি অফিসের প্রভাবশালী নকলনবিশের কাণ্ডঃ মন্ত্রীদের প্রভাবে চাঁদাবাজি ও নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ

বিসিক এর নীরিক্ষা কর্মকর্তা সাবধান আলী হতে সাবধান!

কেরানীগঞ্জ উপজেলার রাজাবাড়ী রোডে অবৈধ এলপিজি বটলিং প্লান্ট এর সন্ধান

গডফাদার মুরাদ জং-এর বোন পরিচয়ে দলিল দাতা-গ্রহীতাদের জিম্মি করার অভিযোগ

গাজীপুরের কাশিমপুরে সরকারি খাস জমি ভূমিদস্যুদের দখলে
