পদোন্নতির জন্য রিট করাই হলো কাল
এনামুল বাছির ফেঁসেছেন কিছু কর্মকর্তার রোষানলে !

পদোন্নতির জন্য হাইকোর্টে করা রিটের কারণেই দুর্নীতি দমন কমিশনের কতিপয় কর্মকর্তার রোষানলে পরে আজ কারাভোগ করছেন দুদকের সাবেক কর্মকর্তা খোন্দকার এনামুল বাছির বলে দাবি করেছেন তার আইনজীবী ফারুক আলমগীর চৌধুরী। প্রতিবেদককে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন পদোন্নতি বঞ্চিত কর্মকর্তা বাছির নিয়ম মেনেই কতৃপক্ষের কাছে নিজের পদোন্নতির জন্য আবেদন করেন। কিন্তু তিনিসহ অন্যকোন কর্মকর্তার পদোন্নতি দিচ্ছিলেন না তৎকালীন কমিশন প্রধান। ফলে অনেকটা বাধ্য হয়েই ২০১৯ সালের ১৪ জানুয়ারি হাইকোর্টের স্মরণাপন্ন হন খোন্দকার এনামুল বাছির। এ কারণে ক্ষেপে যান কমিশনের কিছু অসাধু কর্মকর্তা।
সেই ক্ষোভ থেকেই এই মামলার উৎপত্তি জানিয়ে আইনজীবী ফারুক আলমগীর চৌধুরী বলেন, এই মামলা মিথ্যা, বানোয়াট এবং হয়রানিমূলক। পূর্ব শত্রুতার জেরে পরিকল্পিতভাবে খোন্দকার এনামুল বাছিরকে ফাঁসানো হয়েছে। কারণ বাদীপক্ষ আদালতে অপরাধ প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছেন। মনগড়া কল্পকাহিনীর মাধ্যমে একটি দায়সারা তদন্তের মাধ্যমে পূর্ব পরিকল্পিত একটি সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন করেছেন মাত্র।
পূর্ব পরিকল্পিত সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যায় আইনজীবী ফারুক আলমগীর জানান, দুদকের তৎকালীন কমিশন প্রধান ডেপুটেশনে উর্ধতন কর্মকর্তা নিয়োগ দিতেন। যারা নিয়োগ পেতেন তাদের অনেকেই আগে কখনো দুর্নীতি দমন কমিশনে কাজ করতেন না। দুদকে মামলাগুলো গতি পেতো না। তদন্ত কর্মকর্তারা একটা প্রতিবেদন জমা দিতেন, সেই প্রতিবেদন মোতাবেক সিদ্ধান্ত সবসময় নেয়া হতো না। ফলে অসঙ্গতি এবং প্রতিষ্ঠানের সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছিলো। এছাড়া পদোন্নতির জন্য মৌখিক এবং লিখিত আবেদনে সাড়া না দিয়ে প্রোমোশনের জন্য পরীক্ষা দেয়ার আদেশ জারি করেন। সেই পরীক্ষাতেও খোন্দকার এনামুল বাছির প্রথম হন। তারপরও এনামুল বাছিরকে প্রোমোশন না দিলে ১৪ জানুয়ারি ২০১৯ এ হাইকোর্টে রিট করেন। হাইকোর্ট দুদকের কমিশনকে একটি পদ (ডিজি) বাকি রেখে অন্যান্য পদে নিয়োগ কিংবা পদোন্নতির আদেশ দেন। এই আদেশকে ব্যক্তিগত পরাজয় হিসেবে দেখে পরবর্তী মামলার প্রস্তুতি নেন তৎকালীন কমিশন প্রধান। তিনি তার কাজে সাহায্যের জন্য কমিশনেরই কিছু কর্মকর্তার সাথে যোগসাজস করে এ মিথ্যা এবং বানোয়াট ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলাটির অবতারণা করেন।
মিথ্যা, বানোয়াট ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলার ব্যাখ্যায় আইনজীবী ফারুক আলম চৌধুরী প্রতিবেদককে বলেন, ডিআইজি মিজানের অবৈধ সম্পদের তদন্তের জন্য দুদকে প্রথম ২৫ অক্টোবর ২০১৮ তারিখে দায়িত্ব পান দুদক কর্মকর্তা ফরিদ পাটোয়ারী। সেই ফরিদ পাটোয়ারীর তদন্তের বিরুদ্ধে অনাস্থার আবেদন করেন ডিআইজি মিজান। (ফরিদ পাটোয়ারী নদী রক্ষা কমিশনে কাজ শেষে বর্তমানে পদোন্নতি পেয়ে দুদকেই কর্মরত আছেন)। ডিআইজি মিজানের সেই আবেদন বিবেচনায় নিয়ে খোন্দকার এনামুল বাছিরকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়। তদন্ত এবং অনুসন্ধ্যানের পর মামলার সুপারিশ ২৫ মে ২০১৯ তারিখে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিনুল ইসলামের কাছে জমা দেন। এরপর হুট করে ২০১৯ সালের জুন মাসের ৯ তারিখে এটিএন নিউজ একটি ভুয়া প্রতিবেদন দেখায়। এই প্রতিবেদনকে ভুয়া বলছি এ কারণে যে, প্রতিবেদক কিভাবে, কখন, কোথায় এই রেকর্ড করেছেন, কিংবা কিভাবে হস্তগত হয়েছেন সে সংক্রান্ত ক্লিয়ারেন্সের জন্য আদালত একাধিকবার তলব করলেও তিনি আদালতে উপস্থিত হন নাই বলে উল্লেখ করেন আইনজীবী।
আইনজীবী ফারুক আলম চৌধুরী দাবি করে বলেন, এর আগে ২৮ বছরের কর্মজীবনে অন্তত ৫ বার সততার পুরস্কার পেয়েছেন খোন্দকার এনামুল বাছির। পুরস্কার হিসেবে রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে স্বর্নপদকও পেয়েছেন। এমন সততার পুরস্কার হিসেবে খোন্দকার এনামুল বাছিরকে আত্মপক্ষ সমর্থনেরও সুযোগ দেয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন আইনজীবী ফারুক আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, অভিযোগ শোনার পর প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতির কাছে নিরাময় চেয়ে আবেদন এবং ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করতে চাইলে দুদক থেকে তাকে মৌখিকভাবে এ বিষয়ে কিছু না করার জন্য বলা হয় এবং নিশ্চিত করা হয় যে, বিষয়টি স্বহৃদয়দার সাথে দেখা হচ্ছে। এসবের মধ্যেই মামলার এজাহার জমা দেয় দুদক। সেই এজাহার তদন্তের জন্য পুলিশ প্রধানের সামনে খোন্দকার এনামুল বাছির হাজির হন ১৫ জুলাই ২০১৯ তারিখ এবং দুদকে উপস্থিত হওয়ার জন্য তারিখ নির্ধারিত ছিলো ১৭ জুলাই ২০১৯। কিন্তু ১৬ জুলাই ২০১৯ তারিখেই আদালতে ফৌজদারী মামলা দায়ের করেন দুদক।
আরও অসঙ্গতির প্রমাণ তুলে ধরে প্্রতিবেদককে আইনজীবী বলেন, যে প্রতিবেদনের কারণ উল্লেখ করে মামলা দায়ের করা হয়েছে, সেই প্রতিবেদনকে সাক্ষী হিসেবে উল্লেখ করা হয় নি। বরং রহস্য তৈরি করা হয়েছে। এজাহারে ‘অভিযোগের পূর্ব সুত্র দুদক থেকে প্রদত্ত আদেশের সাথে আমাকে একটি পেন ড্রাইভ সরবরাহ করা হয়- দুদকের তদন্তকারী কর্মকর্তার এমন বক্তব্য উল্লেখ থাকলেও, রহস্যজনকভাবে চার্জশীটে সেই প্রসঙ্গের কোন উল্লেখ নাই। তবে মামলায় এটিএন নিউজে প্রতিবেদন প্রকাশ হয় ৯ জুলাই ২০১৯, চার্জশীটে সিডি জমা দেখানো হয় ২২ আগস্ট ২০১৯ এবং এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশস মনিটরিং সেল))এর প্রতিবেদন জমা প্রদানের তারিখ উল্লেখ আছে ৩ জুন ২০১৯। সুতরাং এটি আসলে দায়সারা গোছের তদন্ত শেষে পূর্ব পরিকল্পিত সিদ্ধান্তই বাস্তবায়ন করেছে দুদকের কতিপয় কর্মকতা এবং কর্মচারী।
এ বিষয়ে অবসরপ্্রাপ্ত সিনিয়র জেলা জজ ও দুদকের সাবেক মহাপরিচালক মঈদুল ইসলাম বলেন, এটা সত্য যে, অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মতো দুদকেও কর্মকর্তাদের মধ্যে গ্রুপিং ছিলো। বাছির সেসময় সিনিয়র মোস্ট পরিচালক হিসেবে মহাপরিচালক পদে পদোন্নতি চেয়েছিলেন কিন্তু দুদক দেয়নি। সেজন্য সে রিট করেছিল। তাতে তার বিরুদ্ধে দুদকের বিরাগভাজন হবার কারণ থাকতে পারে। একই সাথে তার জুনিয়র পরিচালকরাও অনেকেই মহাপরিচালক পদে পদোন্নতি প্রত্যাশী ছিলেন, বাছির সরে গেলে তাদের অনেকের সুযোগ সৃষ্টি হতো, তারাও ক্ষুব্ধ হয়ে থাকতে পারেন। তবে এটা সত্য যে কেউই ভূলের উর্ধে নয়, আইনেরও উর্ধে নয়। এই সত্যকে কেউ অস্বীকার করতে পারবে না।
এমএসএম / এমএসএম

ভুয়া লাইসেন্সে হুন্ডি ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন লেলিন মুন্সি

গণপূর্তের ইএম কারখানা বিভাগে নির্বাহী প্রকৌশলী মো: ইউসুফের দুর্নীতির রাজত্ব

দুর্নীতিতে পিছিয়ে নেই এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলীগন

‘এনবিআর’এ স্বৈরাচার সরকারের পালিয়ে থাকা চক্রের চক্রান্ত

প্রাণ ধ্বংসকারী কোম্পানি প্রাণ

বিসিএসআইআরের ৬ কোটি টাকার যন্ত্রপাতি কেনায় ভাগ বাটোয়ারা

কোতোয়ালীতে অপহৃত ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার

রেজিস্ট্রি অফিসের প্রভাবশালী নকলনবিশের কাণ্ডঃ মন্ত্রীদের প্রভাবে চাঁদাবাজি ও নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ

বিসিক এর নীরিক্ষা কর্মকর্তা সাবধান আলী হতে সাবধান!

কেরানীগঞ্জ উপজেলার রাজাবাড়ী রোডে অবৈধ এলপিজি বটলিং প্লান্ট এর সন্ধান

গডফাদার মুরাদ জং-এর বোন পরিচয়ে দলিল দাতা-গ্রহীতাদের জিম্মি করার অভিযোগ

গাজীপুরের কাশিমপুরে সরকারি খাস জমি ভূমিদস্যুদের দখলে
