দুদকের একজন সৎ, দক্ষ এবং অভিজ্ঞ কর্মকর্তা ছিলেন বাছির: সাহাবুদ্দিন চুপ্পু

খোন্দকার এনামুল বাছির দুর্নীতি দমন কমিশনের একজন সৎ, দক্ষ এবং অভিজ্ঞ কর্মকর্তা ছিলেন বলে জানিয়েছেন দুদকের সাবেক কমিশনার সাহাবুদ্দিন চুপ্পু। ২০১১ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
তিনি বলেন, দুদকে আমি আমার কর্মকালীন সময়ে খোন্দকার বাছিরের বিরুদ্ধে কখনো ঘুষ, দুর্নীতি কিংবা অনিয়মের কোনো অভিযোগ পাইনি। তিনি অত্যন্ত সততা এবং নিয়মানুবর্তিতার সাথে কাজ সম্পাদন করতেন। তার একটি সন্তান বুদ্ধি প্রতিবন্ধী তদুপরি তিনি কখনো অফিস থেকে কোনো বাড়তি সুবিধা নেয়ার চেষ্টাও করেননি, নেনও নি। অথচ অত্যন্ত মেধাবী সৎ এবং দক্ষ এই কর্মকর্তাকে কারাগারে দিন কাটাতে হচ্ছে এটা বেদনাদায়ক। তাঁর স্ত্রী এবং সন্তানতো বটেই এটি মেনে নেয়া আমার জন্যও কষ্টকর।
দুদকে অভ্যন্তরীণ কোন্দল বা রেষারেষি কখনো ছিলো কি না জানতে চাইলে দুদকের সাবেক কমিশনার সাহাবুদ্দিন চুপ্পু বলেন, কিছুটা তো আছেই। দুদক তো আর বাংলাদেশের বাইরে নয়, এখানে যারা কাজ করেন তারা আমাদের মতোই সাধারণ মানুষ। সুতরাং আমাদের প্রত্যেকের যেমন রাগ আছে, ক্ষোভ আছে, হিংসা আছে, জোট আছে-এখানকার কর্মকর্তাদের মধ্যেও তা আছে। তবে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের চেয়ে দুদকে এই ক্ষোভ, রেষারেষি, হিংসা, প্রতিহিংসাগুলো খুব কম প্রতীয়মান হয়। নেই, এ কথা বলার সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, দুদকে কর্মরত কর্মকর্তাদের দক্ষতা বাড়াতে তদন্ত ও অনুসন্ধান বিষয়ক আরও প্রশিক্ষণ দরকার। দক্ষতা বাড়াতে প্রশিক্ষণের কোনো বিকল্প নেই। তবে অভ্যন্তরীণ কোন্দলের বিষয়টি বেশি দেখা গেছে ২০১৭ সাল থেকে। সেসময় অনেক কর্মকর্তাকে ডেপুটেশনে নিয়ে আসা হয়েছিলো, যুক্ত করা হয়েছে, যাদের অনেকেই দুদকের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে ওয়াকিফহাল নন। অথচ বছরের পর বছর কাজ করা বাছিরদের মতো অনেকেই সেখানে পদোন্নতি না পেয়েও কাজ করে যাচ্ছিলেন। পদবঞ্চিতদের জন্য এটা ক্ষোভের একটা বড় কারণ হতে পারে। আর খোন্দকার এনামুল বাছির যেহেতু একজন সৎ কর্মকর্তা ছিলেন, তার কারণে কিছু অসৎ কর্মকর্তার রোষানলেও পরে যেতে পারেন, এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়।
এদিকে, বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানা যায়, দায়িত্বে থাকার সময়, দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত বহু রাঘব বোয়ালকে ছেড়ে দিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। তাদের দায়মুক্তি আড়াল করতে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছেন কিছু নিরীহ ও দুর্বল ব্যক্তিকে। সব মিলিয়ে ২ শতাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে দুর্নীতির অভিযোগ থেকে অব্যাহতি (দায়মুক্তি) দেন তিনি।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর মতে, ২০২০ সালের ১ অক্টোবর থেকে ২০২০ সালের ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত কথিত ‘নথিভুক্তি’ কিংবা ‘অনুসন্ধান পরিসমাপ্তি’র আড়ালে হয়েছে কোটি কোটি টাকার লেনদেন। দুর্নীতিকে আড়াল করতেই একদিকে ধামরাই বালিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের অবসরপ্রাপ্ত এমএলএসএস মো. দীন ইসলাম ভুইয়াকে (প্রধান কার্যালয়ের নথি নং-০০.০১.২৬০০.৬১৩.০১.০২০.১৯) ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
অন্যদিকে সোনা ও হীরা চোরাচালানের মাধ্যমে শত শত কোটি টাকা সম্পদ অর্জন এবং ভারতে অর্থ পাচারের অভিযোগ সংশ্লিষ্ট দিলীপ কুমার আগরওয়ালাকেও দায়মুক্তি (ঢাকার নথি নং-০০.০১.০০০০.৫০২.০১.১৭২.১৭) দেয়া হয়।
দায়মুক্তি দেয়া হয়েছে (ঢাকার নথি নং-০০.০১.০০০০.৫০২.০১.০১৪.১৯) টেন্ডার-জালিয়াতির মাধ্যমে চীনা কোম্পানিকে আড়াইশ কোটি টাকার কার্যাদেশ প্রদানের সঙ্গে জড়িতদেরকেও।
বিলুপ্ত ফার্মার্স ব্যাংকের (বর্তমানে পদ্মা ব্যাংক) চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিস সরাফত, ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. এহসান খসরুসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে ছিল ‘কতিপয় অন্যায় ও অনিয়ম’ সংক্রান্ত অভিযোগ। রেকর্ডপত্রে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রকৃত বিষয়বস্তু গোপন করা হয় নথিতে। তাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছিল। দুদকের তফসিলভুক্ত অপরাধ বিধায় তাদের বিষয়ে অনুসন্ধান করে দুদক। পরে তাদের দায়মুক্তি দেয়া হয়।
দুদকের ‘নথিভুক্তি’র ফরোয়ার্ডিংয়ে উল্লেখ করা হয়, ‘দাখিলকৃত প্রতিবেদনের আলোকে বর্ণিত অভিযোগ অনুসন্ধানে প্রমাণিত না হওয়ায় দুর্নীতি দমন কমিশন কর্তৃক তা পরিসমাপ্ত করা হয়েছে’- এভাবেই ‘পরিসমাপ্ত’ (দায়মুক্তি প্রদান) দেয়া হয় বহু রাঘব বোয়ালদের।
‘অনুসন্ধান-বাণিজ্য’র আওতায় রাঘব বোয়ালদের ছেড়ে দেয়ার বিষয়ে ‘হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পীস ফর বাংলাদেশ-এইচআরপিবি)র প্রেসিডেন্ট অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ বলেন, দুদক সম্পর্কে প্রায়শই অনৈতিক লেনদেনের অভিযোগ ওঠে। দুদক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের একাধিক মামলাও বিচারাধীন।
এই ঘটনাগুলোর কারণে মানুষের কাছে দুদকের বিশ্বাসযোগ্যতা ও গ্রহণযোগ্যতা হ্রাস পেয়েছে। যদি আর্থিক লেনদেনের বিনিময়ে দুর্নীতিবাজদের ছেড়ে দেয়া হয়ে থাকে তাহলে বর্তমান কমিশনের উচিত অভিযোগগুলোর বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়া। কমিশন চাইলেই সেই সুযোগ নিতে পারেন। একইভাবে দুদকের অভ্যন্তরীণ কোনো কোন্দলের শিকার হয়ে যদি কোনো কর্মকর্তার প্রতি অন্যায় করা হয়ে থাকে, সেটিও চাইলে বর্তমান কমিশন বিশেষ বিবেচনা করতে পারেন। দুর্নীতি অনুসন্ধান করতে গিয়ে দুদক কর্মকর্তারাই যখন দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে যান তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন আইনজীবী মনজিল মোর্শেদ।
এমএসএম / এমএসএম

বিআরটিএ-এর দালালি করে কয়েক কোটি টাকার মালিক

চট্টগ্রাম দিয়ে কখনই দেশ ছেড়ে বিদেশে যেতে চাইনি : রায়হান কবির

দেড় হাজার টাকা বেতনের সেই কর্মচারী এখন শতকোটি টাকার মালিক

ক্রীড়া পরিদপ্তরে ভয়াবহ লুটপাট

ভিন্ন মতের শিকার: জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যানের দীর্ঘ প্রশাসনিক দুর্ভোগ

রেলের “র” এর ষড়যন্তকারীরা আবারো সক্রিয়

ন্যাশনাল মেরিটাইম ইনস্টিটিউটের দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত

দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত বিআরটিএ’র ৪ কর্মকর্তার সাজা মওকুফে তৎপরতা

নির্বাচন সামনে রেখে সীমান্তে বেড়েছে অবৈধ অস্ত্রের চালান

ক্রীড়া পরিদপ্তরে ভয়াবহ লুটপাট!

৯২৬ টন পণ্যের হদিস নেই কাস্টমসে

গণপূর্তের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল হালিমের পাহাড় সমান দুর্নীতির তদন্ত হচ্ছে না কেন?
