প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামে আসছেন রোববার, উদ্বোধন হবে ৩০ প্রকল্প
দীর্ঘ ১০ বছর পর নগরীর পলোগ্রাউন্ড মাঠে আওয়ামী লীগের সমাবেশে যোগ দিতে রোববার (৪ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামে আসছেন, দেশের প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। দলের একাধিক প্রেসিডিয়াম মেম্বার ও সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপিসহ অনেক সিনিয়র নেতৃবৃন্দ মঞ্চে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। চট্টগ্রামের এই সফরে এসে ৩০টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও চারটি প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এছাড়াও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেয়ার কথা রয়েছে তাঁর। আর এজন্য সমস্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে সংশ্লিষ্টরা। সুত্র জানায় পলোগ্রাউন্ড মাঠে আয়োজিত সমাবেশ সফল করার লক্ষে সমস্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। নৌকার আদলে ৮৮ ফুট লম্বা ও ৪৪ ফুট চওড়া মঞ্চ স্থাপন করা হয়েছে। গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরির লোকজন বসার জন্য করা হয়েছে আলাদা ব্যবস্থা। অনাকাংখিত পরিস্থিতি এড়াতে নেওয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা।
নজরদারিতে রয়েছে জনসাধারণের গতিবিধি। দলীয় প্রধানের আগমনে স্মরণকালের সর্ববৃহৎ জনসভা করার লক্ষ্যে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে, চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর জেলা ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ। একই ভাবে প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন, যুবলীগ, কৃষক লীগ, জাতীয় শ্রমিকলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগ, মৎসজীবী লীগ এবং বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলাসহ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
এব্যপারে নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আলহাজ্ব আ.জ.ম. নাছির উদ্দীন বলেন, সমাবেশ সফল করার লক্ষে প্রয়োজনীয় সবধরণের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। জাতির জনকের কণ্যা ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামে যে উন্নয়ন করেছে, অতীতের কোন সরকারই তা করেনি। তাই চট্টগ্রামবাসী তাঁর এসব কাজের প্রতিদান দিবে। নেতাকর্মীদের মাঝেও উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। নগরজুড়ে চালাচ্ছে ব্যাপক প্রচার প্রচারণা। নান্দনিক রূপে সেজেছে চট্টগ্রাম। মিছিলে মিছিলে লোকে লোকারণ্য হয়ে যাবে চট্টগ্রাম শহর। সকাল ১০ টার মধ্যেই পরিপুর্ণ হয়ে যাবে পলোগ্রাউন্ড ময়দান। এটি হবে স্মরণকালের সেরা মহাসমাবেশ। নিরাপত্তা নিশ্চিতে সবধরণের প্রস্তুতি নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আবার আমাদের নেতাকর্মীদেরও বলা হয়েছে সতর্ক থাকার জন্য ।
সন্দেহজনক কিছু চোখে পরলেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবগত করার জন্য। দলীয় নেতা কর্মীরা যাতে পরস্পর ভাতৃপ্রতিম সম্পর্ক বজায় রাখে সেব্যপারেও বলা হয়েছে। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রাম বহু আন্দোলন সংগ্রামের
সুতিকাগার। অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে বীর চট্টলার মানুষ বারবার গণজোয়ার সৃষ্টি করেছে। আবারো বিএনপি জামাতের অপপ্রচার, অগ্নি সংযোগ, নাশকতার রাজনীতির বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার উন্নয়নের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি করবে চট্টগ্রামের মানুষ। ৪ তারিখের জনসভাকে গণসমুদ্রে রূপান্তরিত করার লক্ষ্যে আমরা সকলের সাথে কথা বলেছি,
আমরা তাদের স্বতস্ফুর্ত সাড়া পেয়েছি।
নিরাপত্তার বিষয়ে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় বলেন, প্রধানমন্ত্রীর জনসভা উপলক্ষে আমরা যথেষ্ট সতর্ক অবস্থানে রয়েছি। শুধু পলোগ্রাউন্ড মাঠ নয়, নিরাপত্তার খাতিরে পুরো নগর জুড়ে সাড়ে ৭ হাজার পুলিশ সদস্য নিয়োজিত থাকবে।
এরমধ্যে পলোগ্রাউন্ড মাঠসহ পুরো চট্টগ্রাম মহানগরে আমাদের ৬ হাজার সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে। নিরাপত্তার বিষয়টি আরো জোরদার করতে বাইরে আরো দেড় হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হবে।’
তিনি বলেন, এটা চট্টগ্রামের জন্য বড় উৎসব। নিরাপত্তার জন্য আমাদের সবধরণের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এসএসএফ) পুরো আয়োজনটাই তদারকি করছে। তাদের পরামর্শ মোতাবেক পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে পুলিশ থাকবে। পাশাপাশি সিসি ক্যামেরা ও ড্রোন থাকবে। মোটকথা পুরো শহর জুড়ে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা থাকবে। ওইদিন যারা মিছিলে আসবেন, গাড়ি কোথায় রাখবেন সেটাও বলে দেয়া হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘আমরা সবদিকে নজর রেখেছি। খোঁজ খবর রাখছি। তাই অপ্রীতিকর কোন ঘটনা ঘটার শংকা নেই। প্রচার প্রচারণার বিষয়ে চট্টগ্রাম মহহানগর শাখা ছাত্রলীগের স্টিয়ারিং কমিটির সাবেক সদস্য নগর যুবলীগের সভাপতি প্রার্থী দেবাশীষ পাল দেবু বলেন, প্রচারণা ব্যাপক চালিয়েছি তবে নিজের নয়, দলের এবং দলীয় সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড নিয়ে। নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা দেখেছি। সমাবেশে প্রচুর লোক সমাগমের আশা করছি। নিজের প্রায় ১০/১২ হাজার নেতাকর্মী নিয়ে সমাবেশস্থলে উপস্থিত থাকবেন বলেও
জানান তিনি।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান জানিয়েছেন, চট্টগ্রামে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমাবেশ ছাড়াও ৩০টি উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন করবেন এবং ৪টি প্রকল্পের ভিত্তি স্থাপন করবেন। উল্লেখযোগ্য প্রকল্পগুলো হচ্ছে, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে উদ্বোধনের অপেক্ষায় ফটিকছড়ি ও হাটহাজারী উপজেলায় হালদা নদী ও ধুরং খালের তীর সংরক্ষণ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প, সন্দ্বীপ উপজেলার ৭২ নং পোল্ডারের ভাঙনপ্রবণ এলাকায় স্লোপ প্রতিরক্ষা কাজের মাধ্যমে পুনর্বাসন (১ম সংশোধিত) প্রকল্প ও বাঁশখালী উপজেলার ৬৪/১এ, ৬৪/১বি এবং ৬৪/১সি পোল্ডারের সমন্বয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অংশের স্থায়ী পুনর্বাসন প্রকল্প (২য় সংশোধিত) প্রকল্প।
সরকারি মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ের লালদীঘি মাঠে নির্মিত ৬ দফা মঞ্চসহ চট্টগ্রামের ১৮টি স্কুল–কলেজ ভবনের উদ্বোধন করবেন। কারিগরী ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অধীনে সীতাকুণ্ড টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ, ফটিকছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ এবং রাউজান টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ। কোতোয়ালী থানাধীন দারুল উলুম আলীয়া মাদ্রাসার একটি ৬ তলা ভবন এবং সীতাকুণ্ড টেকনিক্যাল স্কুলে একটি ৫ তলা ভবন ও একটি ৪ তলা প্রশাসনিক ভবন, ওয়ার্কশপ, পলোগ্রাউন্ড বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি ভবন সমপ্রসারণ এবং খুলশী থানাধীন সিএমপি উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি ভবনের সমপ্রসারণ কাজ, একতলা সার্ভিস এরিয়া ও বৃষ্টির পানি সংরক্ষণসহ ভবন নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী।
কোতোয়ালী থানাধীন গুল-এ জার বেগম সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ তলা ভবন, কাপাসগোলা সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ তলা ভবন, চট্টগ্রাম সরকারি কলেজে ১০ তলা একাডেমিক ভবন, কুসুমকুমারী সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ তলা ভবন, পূর্ব বাকলিয়া সিটি কর্পোরেশন উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ তলা ভবন, মীরসরাই উপজেলার করেরহাট কে.এম. উচ্চ বিদ্যালয়ের ৪ তলা ভবন, পাঁচলাইশ থানাধীন বন গবেষণাগার উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ তলা ভবন, বোয়ালমারী উপজেলাধীন হাজী মোহাম্মদ জানে আলম উচ্চ বিদ্যালয়ের ৪ তলা ভবন, পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ৪ তলা ভবন, সন্দ্বীপের সন্তোষপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৪ তলা ভবন এবং ডবলমুরিং থানাধীন সরকারি সিটি কলেজে ১০ তলা একাডেমিক ভবনের নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করা হবে। এছাড়াও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হবে আধুনিক জাতিসংঘ পার্ক এবং মেরিন একাডেমির আধুনিকীকরণসহ ৪টি প্রকল্পের।
উদ্বোধন করা হবে নৌ–পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীনে ‘দুইটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন (প্রতিটি ৫০০০ বিএইচপি/ ৭০ টন বোলার্ড পুল) টাগবোট সংগ্রহ’ শীর্ষক প্রকল্প ও ‘চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন ইয়ার্ড এবং টার্মিনালের জন্য প্রয়োজনীয় ইক্যুইপমেন্ট সংগ্রহ’ শীর্ষক প্রকল্প।
প্রধানমন্ত্রী সেদিন একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধনের পাশাপাশি–আনোয়ারায় বাংলাদেশ মেরিন একাডেমির আধুনিকীকরণ, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীনে পাঁচলাইশ আবাসিক এলাকায় আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন জাতিসংঘ সবুজ উদ্যান স্থাপন প্রকল্প, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীনে চট্টগ্রামের মীরসরাই ও সন্দ্বীপ অংশে জেটিসহ আনুষাঙ্গিক স্থাপনাদি নির্মাণ, চট্টগ্রামস্থ বিপিসি ভবন নির্মাণ কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করবেন।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ২৮ মার্চ এই মাঠে সর্বশেষ আওয়ামী লীগের জনসভায় ভাষণ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দীর্ঘ ১০ বছর পর একই মাঠে আবার ভাষণ
প্রীতি / প্রীতি
থামছেই না ছড়াও, দখল করে ভবন নির্মাণ কাজ
বাঁশখালীতে রিক্সা চালক শ্রমিক কল্যাণ ইউনিয়ন নির্বাহী কমিটির বার্ষিক সাধারণ সভা
নোয়াখালীতে যৌন-প্রজনন স্বাস্থ্য ও লিঙ্গ ভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধ সভা
চাঁপাইনবাবগঞ্জ -২ এ,ধানের শীষের কান্ডারী ইঞ্জি: মাসুদ'কে চায় সাধারণ মানুষ ও বিএনপি'র নেতাকর্মীরা
পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীতে শ্রমিক দলের আহ্বায়ক জুয়েলের বিরুদ্ধে কমিটি বাণিজ্যের অভিযোগ
কাউনিয়ায় মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টায় পিতা পুলিশের হাতে
বাঁশখালীতে জমি বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত, গ্রেপ্তার-৩
নন্দীগ্রামে সিএনজি চালককে অপহরণ ও মুক্তিপণ নিয়ে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ
সুবর্ণচরে আশার আলো সমাজ কল্যাণ সংগঠনের বৃক্ষরোপন কর্মসূচি
সহকারী এটর্নি জেনারেল হলেন পেকুয়ার কেএম সাইফুল ইসলাম
৭ই নভেম্বর উদযাপন ও খন্দকার নাসিরের মনোনয়ন এর দাবিতে মধুখালী বিএনপির জরুরী সভা
ভোলা-১ আসনে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করবে বিজেপি, নির্বাচনি প্রচার ও র্যালী অনুষ্ঠিত