নৃত্যশিল্পী মুনমুন আহমেদ-এর উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার গল্প

প্রখ্যাত নৃত্যশিল্পী মুনমুন আহমেদ। অসাধারণ নান্দনিক চিন্তাভাবনা ও দারুণসব নৃত্য-শৈলীর মাধ্যমে মানুষের মনে খুব দ্রুতই স্থান করে নিয়েছেন । মুনমুন একাধারে দক্ষ পারফর্মার, কোরিওগ্রাফার, নৃত্য নির্দেশক এবং শিক্ষক। অবশ্য মাঝে মধ্যে তাকে অভিনয়েও দেখা যায়। এবার জানাচ্ছি নৃত্যশিল্পী মুনমুন আহমেদের উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার গল্প। সম্প্রতি জনপ্রিয় এই নৃত্যশিল্পী উদ্যোক্তা হওয়ার গল্প বলেছেন দৈনিক সকালের সময়ের সঙ্গে। লিখেছেন বাবুল হৃদয়
গল্পের শুরুতেই বললেন মুনমুন’স কিচেন শুরু করেছিলাম ২০১৯ সালের নভেম্বরে । আমার সঙ্গে আমার বন্ধু নৃত্যশিল্পী তামান্নাসহ আরো ৩/৪জন মিলে প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তুলেছিলাম। একটি মহৎ উদ্দেশ্য ছিল, বিদেশী খাবারের ভিড়ে যে বাঙ্গালী খাবারকে রুচীশীল ভোজন রশিকদের কাছে পরিচয় করিয়ে দেওয়া, ভাল খাবার মানুষের কাছে নিয়ে যাওয়া। এখানে আমরা কিচেন প্রথম শুরু করেছিলাম থালি দিয়ে। একটি থালির মধ্যে আমরা নানান খাবার সাজিয়ে দিতাম। সবাই পছন্দ করতো। বেস চলছিলও। কিন্তু করোনা আসার কারণে ২০২০ সালে ব্যবসা থমকে গেল।
প্রতিষ্ঠানটি চালিয়ে নিতে বেশ কষ্ঠ হয়ে গেল। আমরা নারী উদ্যোক্তা হয়ে সরকারি বেসরকারী কোনো প্রনোদনা বা সহযোগীতা পাইনি। তবুও থামিনি অনেক কষ্ঠ করে চালিয়ে যাচ্ছি। ভেবে ছিলাম বিক্রি করেদেবো, পরে ভাবলাম হাড়ি-পাতিল বিক্রি করে আর কতো টাকা পাবো? বিষয়টি জেনে আমার আরেক বন্ধু মাসুম রেজা এগিয়ে এলো। সে বলল যে আপনার নামে যে প্রতিষ্ঠানটি শুরু করা হয়েছে আমরা সবাই চেষ্টা করে এটাকে ধরে রাখবো। এই তো চালিয়ে রাখতে শুরু করলাম, এরই মাঝে বাধ সাজলো মেট্রোরেল। আমাদের কিচেন ঘেঁসে মেট্রোরেল-এর পিলার ও কাজের জন্য দেয়াল তৈরি করে দিল, আর এতে করে এই পথে লোক যাতায়াত বন্ধ হয়ে গেল। পরিবেশটা খুবই খারাপ হয়ে গেল। এরপর্ও আমরা টিকে থাকার চেষ্ঠা করছি। অনেক কর্মচারি ছিল কমিয়ে এনে এখন ৪/৫ জন দিনে চলছে মুনমুন কিচেন।
একো ঝুকির মাঝেও আশা ছাড়নেনি তিনি। মুনমুন আহমেদ বলেন, আশা করছি মেট্রোরেল এর পিলার গুলো উঠেগেলে, রাস্তাটা সচল হয়েগেলে আমরা আবারো ঘুর দাড়াবো। তিনি বলেন, এটা কারওয়ান বাজারের মেইন প্লেজ, আগে এখান দিয়ে একটা প্রজাপাত গুহা ছিল । সবাই এখান দিয়ে যাতায়াত করতো। বসুন্ধরা মার্কেটের পেছন দিয়ে ঢোকার ঠিক মুখে ৩৬ কারওয়ার বাজার আমাদের ঠিকানা। এখানে অনেক জন্মদিনের পার্টি বলেন, টিনেজদের আড্ডা বলেন এখানে সবই হতো। আমি আশা করছি আবারো পুরোদমে রেস্টুরেন্টটা চলবে। আমরা সুন্দর ভাবে আবারো এগিয়ে যাবে।
মুনমুন’স কিচেনের যাত্রার পেছনের গল্প বলতে গিয়ে মুনমুন আহমেদ বলেন, আমাকে অনেকেই বলেন, আমি নৃত্যশিল্পী হয়ে এই ব্যবসায় কেন এসেছি? আমি আমার মতো করে নৃত্যনিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলাম, হঠাৎ করেই আমার এক নাচের ছাত্রীর বাবা বললেন, আমরা এমন একটা নতুন কিছু করতে যাচ্ছি, একটি সুন্দর লোকেশন পেয়ে গেছি। ভাবলাম কি করবো, আমাদের মাঝ থেকে একজন ছিল অসম্ভব বাঙ্গালীয়ানা খাবার পছন্দ করতো। ভালো খাদ্য রশিক । তিনি বললেন, খাবারের দোকানের কথা। তিনি ভারত থেকে সেফ নিয়ে আসলেন এভাবে ব্যবসায় জড়িয়ে যাওয়া।
ব্যবসার বর্তমান অবস্থা নিয়ে মুনমুন আহমেদ বলেন, এখনো ভালোনা মেট্রোরেল -এর কাজ শেষ হলে, এর দেয়াল খুলে দিলে আশা করছি সার্ভাইব করতে পারবো।চারদিকে নারী উদ্যোক্তার জয়জয়কার, সম্ভাবনার জায়াটিকে কিভাবে দেখছেন-
মুনমুন বলেন. নারীদের জয়জয়কার নতুন বরবো না, একটু পেছনে তাকালেই দেখবেন আগেও নারীরা কাচ করেছে। আমি আমার মাকে দেখেছি, উনি একজন বড় উদ্যোক্তা ছিলেন। অনেক নারীদরে নিয়ে তিনি কাজ করতেন । বিছানার কভার ছোটদের পোশাক ডিজাইন করে আড়ংয়ে সাপ্লাই করতেন। এর বাইরও বিভিন্ন বড় বড় প্রতিষ্ঠানের নানা কাজ করতে দেখেছি। অনেক আগে থেকেই দেখেছি মহিলারা ঘরে বসেই বড়বড় কাজ করতেন। এখন যেটা হয়েছে মেয়েরা শিক্ষিত হয়েছে, তারা ঘর থেকে বের হতে পারছে। এই কারণে তারা একটা কিছু করছে তারা সাবলম্বী হচ্ছে। নারীদের কাজে এখনো অনেক বাদা বিপত্তিত্ আছে। তার পরও নারীরা অনেক বেশি স্ট্রং এরা অনেক সচেতন, নারীরা নিজেরা আত্নবিশ্বাসী, তারা নিজেদেরকে সফল করার চেষ্টা করছে। সে কারণে আমি মনেকরি নারীরা আরোও এগিয়ে যাবে। আমরাও সে লক্ষে এগিয়ে যাচ্ছি।
মুনমুন আহমেদ বলেন, রাস্তার পরিবেশ ভালো হলে, রাস্তা খুলে দিলে. কিচেন নিয়ে নতুন উদ্যোমে আবারো এগিয়ে যাবো । আগে শুধু ধালি ছিল, এখন থালির সঙ্গে চায়নিজ খাবরের ব্যবস্থা রয়েছে। হায়দারা বাদের বিরিয়ানির পাশাপশি ইন্ডিয়ান যত ধরনে খাবার আছে। এছাড়া রয়েছে চুস কর্ণার । আমরা চাই বাঙ্গালী খাবারের পাশাপাশি ইন্ডিয়ান খাবারের পশরা সাজাতে।
খাবারের দাম নিয়ে এই উদ্যোক্তা বলেন, এসব খাবার খুবই রিজেনেভল প্রইজ আমরা রেখেছি। অল্পদামে মানুষকে সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। দাম জেনে এখান থেকে কেউ যেনো ফিরে না যায়।
নারীদের এগয়ে মুনমুন আহমেদের পরামর্শ- আসলে যেকোন ব্যাবসা নারী হোক আর পুরুশ হোক তাতে সৎ ভাবে কাজ করতে হবে। নারীরা বিভিন্ন ব্যবসায় এগিয়ে আসছে, তারা নানা প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে সৎ ও সঠিক ভাবে এগিয়ে গেলে সফলতা আসবেই। পরিবার, পরিবেশ. রাষ্ট্রীয় সহযোগিতা পেলে নারীরা অনেক দূর এগিয়ে যাবে। তারা বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
BH / BH

ব্যতিক্রমী ধারার আলো নেভার পথে

টেকসই কৃষির জন্য চাই জৈব বালাইনাশক

ঈদযাত্রা হোক দুর্ঘটনামুক্ত

রমজানে ভ্রমণে যে বিষয় মেনে চলা জরুরি

সুস্থ থাকার জন্য কেমন পানির ফিল্টার নির্বাচন করবেন

সাপের ক্ষিদে মেটাতে পাখিশূন্য দ্বীপ

একদিনের ট্যুরেই ঘুরে আসুন চীনামাটির পাহাড়ে

আধ্যাত্মিকর যাত্রা পথে সুফি মেডিটেশন এর গুরুত্ব

খাজা ওসমান ফারুকীর কুরআন দর্শন

খাজা ওসমান ফারুকীর সুফি তত্ত্বের নিদর্শন

'আরএনএস রাজিম একজন সফল ফ্রিল্যান্সার ও উদ্যোক্তার গল্প'

প্রাক্তনের খোঁজ নেওয়ার দিন আজ
