পটুয়াখালী সদর উপজেলা গৃহহীন ও ভূমিহীন মুক্ত ঘোষনা

আগামী কাল পটুয়াখালীর সদর উপজেলা গৃহহীন ও ভূমিহীন মুক্ত ঘোষনা হতে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পটুয়াখালী সদর উপজেলার পাশাপাশি মির্জাগঞ্জ, দুমকি, রাঙ্গাবালী ও গলাচিপা এই ৫টি উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত উপজেলা হিসেবে ঘোষনা করবেন। পটুয়াখালী সদর উপজেলার যেসকল মানুষদের ঘর ও জমি কোনটি নেই এমন ১২৫২ জনকে খুঁজে বের করে গত দুই বছরে দুটি প্রকল্পে দেয়া হয়েছে এসব ঘড়।
ঘড় পেয়ে জরিনা বেগম বলেন, ‘শেখ হাসিনার ঘর পাইয়া মোরা এহন পাকা দালানে থাহি। কোনোদিন ভাবি নাই এই রহম ঘরে থাকতে পারমু। শেখ হাসিনার জন্য মোরা দোয়া হরি আল্লায় যেন হেরে অনেক ভালো রাহে।
মেয়ে বড় হয় গেছে। একটা ভাঙ্গা ঘড়ে থাকতে খুব কষ্ট হয়। মাঝে মাঝে ভয় লাগে। কিন্তু আমাদের টাকা নেই। তাই কিছু করার নেই। তিন হাজার সাড়ে তিন হাজার টাকা ভাড়া দেয়ার পরে সারা মাসের বাজার করার টাকা থাকে না। এটাই আমাদের নিয়তি মেনে নিয়েছি। এমন কষ্টের কথা বলেন হেতালিয়া বাঁধঘাট এলাকায় ঘর পাওয়া কল্পনা রানি। তিনি বলেন, আমরা কাঠপট্টি এলাকায় একটি ভাঙ্গা ঘরে ভাড়া থাকতাম। আমি দুই একটি বাসায় পানি টেনে দিয়ে আসতাম তাতে মাসে হাজার খানেক টাকা পেতাম। আমার স্বামী স্বপ্নীল কর্মকার একটি সোনার দোকানে কাজ করে। ঘর না থাকালে কি কষ্ট সেটা যার নেই সেই জানে। এখন সেই কষ্টটা নেই। এখন আমার স্বামী যে কাজ করে তার পাশে আমি কয়েকটি ছাগল পালন করি। অনেক ভালো আছি সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছায় আর প্রধানমন্ত্রীর কারনে।
এক সময় মোরা দেওইতে ভিজতাম, রৌদে হুগাইতাম। জীবনে মোরা দালানে থাকতে পারমু হেই কল্পনাও করতে পারি নাই। শেখ হাসিনা মোগো দালান বানাইয়া দেছে, এহন মোরা ব্যামালা সুখে আছি। ঘরের মধ্যে গুরাগারা লইয়া শান্তিতে ঘুমাইতে পারি।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া আশ্রয়নের উপহারের ঘর পেয়ে আনন্দে আত্মহারা হয়ে কুলসুম বেগম এ কথা বলেন,
ঘর পেয়ে পেয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন শিবানী রানি। তিনি বলেন, আমার স্বামী সজীব চন্দ্র ঢালি জর্দা কোম্পানিতে চাকরি করে। অল্প কিছু টাকা বেতন পায়। আর সেই বেতনেই চলে আমাদের চার জনের সংসার। আমরা চরপাড়া একটি ঘড়ে দেড় হাজার টাকা মাটি ভাড়া দিয়ে থাকতাম। এরপর সেই ভাড়া বাড়তে বাড়তে ৩ হাজার টাকা হয়ে যায়। তার উপর জলের বিল বিদ্যুৎ বিল তো আছেই। একটু ভালো খেতে পারতাম না। রোগ ব্যাধী হলে ডাক্তার দেখাতাম না। ফার্মেসি থেকে এক থেকে দেড় শ' টাকার ঔষধ কিনে খেতাম। সেই ঔষধ কেনার টাকার জন্য মানুষের কাছে হাত পাততে হতো। কিন্তু এখন প্রধানমন্ত্রীর দয়ায় লাউকাঠিতে একটি ঘর পেয়েছি। এখন শাক সবজি চাষ করতে পারি। মুরগী পালন করি। এখন আগের থেকে অনেক ভালো আছি। এখন শুধু বিদ্যুৎ বিল দিতে হয়। এখন জলের বিল দেয়া লাগে না। খরচ অনেক কমে গেছে।
চরপাড়ার আমির হোসেন বলেন অনেকেই এখন শেখ হাসিনার দেওয়া উপহারের ঘর পেয়ে স্বপ্নে বিভোর। জীবনে কোনোদিন কল্পনাও করতে পারেনি যে, বিদ্যুতের আলোয় ঝলমলে পাকা ঘরে থাকতে পারবে। যেখানে থাকবে বিশুদ্ধ পানি। থাকবে পাকা রাস্তা। ছেলেমেয়েরা বই খাতা হাতে স্কুলে যাবে।
৮ বছরের রুমা পড়ালেখার সুযোগ পেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে এই শিশু বলেন, ‘মোরা এহন দালানে থাহি। মোরা লেহাপরি করি, স্কুলে যাই মোগো এহন খুব ভালো লাগছে।উপহারের ঘড় পেয়ে পিয়ারা বেগম বলেন, ‘কোন হানে থাকমু কোন হানে ঘুমামু হেইয়া কইতে পারি নাই। কোন দিন ঘরে থাকতে পারমু হেইয়া বুঝি নাই। এহন দালানে থাহি। গুরাগারা লইয়া শেখ হাসিনার লইগ্যা ঘরে ঘুমাইতে পারি। আল্লাহ তুমি শেখ হাসিনারে বাঁচাইয়া রাইখ্যো।’
এভাবেই হতদরিদ্র শত শত পরিবারের ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে দিয়েছেন শেখ হাসিনার উপহারের আশ্রয়ন প্রকল্পের দেওয়া উপহারের ঘরে। তারা সবাই এখন মাথা গোজার ঠাঁই পেয়েছেন।
আগামী বুধবার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ঘর বিতরণের কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনের পর ঘরের চাবি, দলিল ও নামজারিসহ সকল কাগজপত্র বুঝিয়ে দেওয়া হবে ঘর পাওয়া পরিবারের হাতে।
সরেজমিন ঘুড়ে দেখা যায়, ভূমিহীন ও গৃহহীনদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে দেয়া মুজিব বর্ষের এসকল ঘরের আশেপাশেই অনেকে করছেন চাষাবাদ ও পশু পাখি পালন। সমাজসেবা অধিদপ্তর ও মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর থেকে এসব ঘরের মানুষদের মধ্যে প্রশিক্ষণ দেয়ায় অনেকই হয়ে উঠছেন সাবলম্বী। কেউ ঘরে বসেই করছেন সেলাইয়ের কাজ। আবার বুনছেন মাছ ধরার জাল।
পরিবার পরিকল্পনা থেকে প্রত্যহ পরামর্শ দেয়ায় এখানের নারীরা অনেকেই হচ্ছেন স্বাস্থ্য সচেতন। আবার খোলামেলা জায়গা থাকায় শিশুদের খেলাধুলা মেতে থাকতেও দেখা গিয়েছে।
পটুয়াখালী সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এডভোকেট গোলাম সরোয়ার দৈনিক সকালের সময়কে জানান, শহর গ্রাম এমনকি বিভিন্ন এলাকার ওয়ার্ড পর্যন্ত চেয়ারম্যান মেম্বার থেকে শুরু করে বিভিন্ন পর্যায়ে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের খুঁজে বের করা হয়েছে। যেটা সত্যিই কষ্টসাধ্য ব্যাপার। তিনি আরো জানান, তাদের কাছে ঘরের জন্য আবেদন করতে যারা এসেছেন এদের সত্যিকার ঘর বা জমি আছে কিনা সেটি খুব নিখুঁত ভাবে খোঁজ নিয়ে তার পরে তাদেরকে এই জমি ও ঘরের মালিকানা দেয়া হয়েছে।
পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক মোঃ শরিফুল ইসলাম দৈনিক সকালের সময়কে জানান, আগামী ২২ তারিখ পটুয়াখালী জেলার পাঁচটি উপজেলাকে ভূমিহীন গৃহহীন মুক্ত ঘোষনা করতে যাচ্ছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। এসব ঘরে বসবাসরত সকল মানুষ নাগরিক সুবিধার মধ্যে তাদেরকে ঘরের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রশিক্ষণের আওতায় নিয়ে আসা হবে। তাছাড়া তাদের কর্মসংস্থানের জন্য বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি নেয়া হচ্ছে। তাদের ঘরের বিদ্যুতের লাইন নেয়ার কাজ চলমান আছে। বিশুদ্ধ পানির ব্যাবস্থা করা হয়েছে। সব থেকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে এখানে বসবাসরত শিশুদের স্কুলে যাওয়ার বিষয়টি। যেখানে বেশি ঘর রয়েছে সেখানে স্কুল করার জন্য চেষ্টা চলছে। বিশেষ করে রাঙ্গাবালী ও গলাচিপার উপজেলায় প্রাইমারি স্কুল দেয়ার জন্য প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
এমএসএম / এমএসএম

নিরাপদ সড়কের দাবিতে চৌগাছায় শিক্ষার্থী অভিভাবকদের মানববন্ধন

নাচোলে বিনামূল্যে প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে রাসায়নিক সার ও বীজ বিতরণ

কাপ্তাই ১০ আরই ব্যাটালিয়ন কতৃক সহায়তা প্রদান

পটুয়াখালীর বাউফলে কেটে কেটে আ.লীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন

বাঁশখালীতে কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে আমন ধানের বীজ ও সার বিতরণী উদ্বোধন

বাকেরগঞ্জ গৃহবধূ আসমার হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন

মাদারীপুরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিবকে কুপিয়ে জখম

গোপালগঞ্জে পলিথিন বিরোধী ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান

টাঙ্গাইলে অর্ধকোটি টাকার লুন্ঠিত ৭৫ ড্রাম তেল'সহ ২ ডা/কা'ত গ্রেফতার

দাউদকান্দিতে মাইথারকান্দি খালের আবর্জনা অপসারণ উদ্বোধন

সীতাকুণ্ডে সরকারী জায়গা দখলকৃত শিপইয়ার্ড উচ্ছেদ করলো প্রশাসন

বারি’র “জাতীয় পরিবেশ পদক” অর্জন
