আমি লাইসেন্সধারী মাস্তান, তোমরা লাইসেন্সবিহীন মাস্তান
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক পড়ুয়া একাধিক ছাত্রীদের উত্যক্ত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে ম্যানেজমেন্ট এন্ড ফাইন্যান্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আবু জাফর আহমেদ মুকুলের বিরুদ্ধে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রিবিজনেস ম্যানেজমেন্ট অনুষদের বেশকিছু ছাত্রী তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এছাড়াও শিক্ষার্থীরা জানান, অভিযুক্ত শিক্ষক নিজেকে ক্লাসে লাইসেন্সধারী মাস্তান এবং শিক্ষার্থীদের লাইসেন্সবিহীন মাস্তান বলে অভিহিত করেন।
অভিযোগপত্রে এক ছাত্রী বলেন, তিনি (আবু জাফর আহমেদ মুকুল) বিভিন্ন সময়ে আমাকে তার সাথে একাকী দেখা করতে বলেন। আমি তাকে এড়িয়ে চললে সে আমার বাসার সামনে এসে আমাকে তার সাথে রেস্টুরেন্টে যেতে বলে। আমি ফোন রিসিভ না করলেও তিনি আমাকে ফোন দিতেই থাকেন। আমাকে বিভিন্ন জায়গায় তার সাথে একা ঘুরতে যেতে বলেন।
এছাড়া ক্লাসের বাইরে প্রায় সময় ছাত্রীদের কল, মেসেজ দিয়ে উত্যক্ত করা এবং বিভিন্ন সময় কফি শপে ডাকা ও ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দেয়া, এমনকি গভীর রাতে কল দেয়ার প্রমাণ মিলেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ২য় ও ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থীরা জানান, মনগড়া সিলেবাসে এবং সিলেবাসের বাইরে পরীক্ষা নেন তিনি। তার বিরুদ্ধে কেউ যাতে মুখ খুলতে না পারে এজন্য প্রতি সেমিস্টারে তার ক্লাস আছে বলে তার থেকে 'নিস্তার' নেই উল্লেখ করে হুমকি দেন শিক্ষার্থীদের।
এমনকি তিনি ক্লাসে মেয়ে শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে হয়রানি এবং অনিয়মের প্রতিবাদ করায় এক শিক্ষার্থীকে "পাগল" এবং "অটিস্টিক" বলে সম্বোধন করেন বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। বিশ্ববিদ্যালয় এবং উপাচার্যকে হেয় করার অভিযোগও উঠে এসেছে একই অভিযোগপত্রে। উপাচার্যের নির্দেশের পরও পরীক্ষা না নেওয়া এবং পরবর্তীতে উপাচার্যের কল রিসিভ করেননি বলে দাম্ভিকতা প্রদর্শন করার অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা আরো বলেন, তিনি নিজ স্বার্থে অনুষদের শিক্ষার্থীদের ডীন ও শিক্ষকদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে চাপ দেন এবং এর প্রতিদান হিসেবে সাজেশন নামে আন্দোলনকারীদের প্রশ্নপত্র বিতরন করেন। অস্পষ্ট নম্বর বণ্টন এবং পছন্দের শিক্ষার্থীকে বেশি সুবিধা প্রদানের অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।
পাশাপাশি শ্রেণীকক্ষে শিক্ষার্থীদের সাথে খারাপ ব্যবহার, হুমকি প্রদান, প্রশ্নপত্র ফাস, সিলেবাসের বাইরে থেকে পরীক্ষায় প্রশ্ন করার অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
অভিযোগ অস্বীকার করে শিক্ষক আবু জাফর আহমেদ মুকুল সাংবাদিকদের বলেন, এসব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। এরকম কিছু আসলে কিছু ঘটেনি। শিক্ষার্থীরা আমাকে প্রতিপক্ষ ভেবে আমার বিরুদ্ধে এইসব অভিযোগ করে থাকতে পারে।
এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার শেখ রেজাউল করিম বলেন, আমরা অভিযোগপত্র পেয়েছি, উপাচার্য স্যারের সাথে কথা হয়েছে। অতি শিঘ্রই তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। ওই শিক্ষক দোষী হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে ।
এমএসএম / এমএসএম