ঢাকা শনিবার, ২ আগস্ট, ২০২৫

ফাহিমা সুলতানা পারভীন

আমার রাইয়ান, আমার উদ্যোক্তা হওয়ার অনুপ্রেরণা


তানভীর সানি  photo তানভীর সানি
প্রকাশিত: ৩-৬-২০২৩ বিকাল ৫:৫৪

সংগ্রামী, আশাবাদী, সফল উদ্যোক্তা ও স্বার্থক একজন মা ফাহিমা সুলতানা পারভীন। রাইয়ান'স ভ‍্যারাইটিস কালেকশন এর স্বত্ত্বাধিকারী। রাইয়ান নামটি তার স্পেশাল সন্তানের নামে নামকরণ। সন্তানের জন্যই তার উদ্যোক্তা হওয়া। উদ্যোক্তা হিসেবে আত্মপ্রকাশের পেছনের গল্প বলেছেন ফাহিমা সুলতানা পারভীন। 

আমার উদ্যোক্তা হওয়র গল্প বলতে হলে শুরু করতে হবে ১০ বছর পিছনে গিয়ে। বিয়ের পরপর সন্তান চাইনি। সন্তান নিতে চেয়েছি মাস্টার'স পাশ করার পর। কারণ আমার বাবা চাইতেন, তার সাত সন্তানকে শিক্ষিত করতে। সন্তান নিলে হয়তো বাবার ইচ্ছে পূরণ হতো না।   প্রথম আলট্রাসনোগ্রাফি করার পর চিকিৎসক বলেছিলেন- ‘টুইন বেবি’। খবর শুনে পরিবারের সবাই ভীষণ খুশি। সে সময়ে আমার স্বামী আমার জন্য ফুল উপহার নিয়ে আসে। আমার মাসহ পরিবারের অনেকেই কাঁথা বানাতে থাকে। এই খুশি বেশিদিন স্থায়ী হলো না, দুঃখে পরিণত হলো, যখন আড়াই মাসে আমার একটি বেবি মিসিং হলো। এই সময়ে আমার মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়লো। তখন পরিবারের সবাই আমার যত্ন নেওয়া বাড়িয়ে দিলো। বিশেষ করে আমার স্বামী সবসময় আমার পাশে থেকেছে। চিকিৎসক সম্পূর্ণ বেডরেস্ট দিয়েছিল। সারাক্ষণ শুয়ে থাকা। সেইসাথে বিভিন্ন চিন্তা হতে থাকলো। ৬ মাস যেতেই আবার সমস্যা হলো। হাসাপাতালে ভর্তি হয়ে জানতে পারলাম বাচ্চার ওজন ৯৫০ গ্রাম। ডাক্তার বললেন এতো কম ওজনে বাচ্চাকে বাঁচানো সম্ভব নয়। তাই চলে যাই অন্য হাসপাতালে যেখানে এনআইসিও ভালো। বাচ্চাকে এনআইসিও তে রাখতেই হতো। ১৫ দিন ভর্তি থাকি। ওখানে এতটাই কষ্ট করেছি যা কখনো বোঝাতে পারবো না। বাচ্চার ওজন একটু বাড়ে। কিন্তু সিজার করতে হয়। ১ হাজার ৩৫০ গ্রাম ওজন নিয়ে জন্ম নেয় রাইয়ান। চোখ ফোটেনি। ফুসফুস তৈরি হয়নি। লাইফসাপোর্টে রেখে দিতে হয় ১৪ দিন। এতদিন বিছানায় শুয়ে থাকার কারণে মনে হচ্ছিল আমার চলাফেরার শক্তি হারিয়ে গিয়েছে। মনে হচ্ছিল আমি একজন পঙ্গু হয়ে সন্তান জন্ম দিয়েছি। প্রতিটা দিন ছিলো দুবির্ষহ। ২ মাস রাইয়ানকে রাখা হয় ইনকিউবেটরে। ছেলেকে দেখলে আমার কষ্টগুলো ভুলে যেতাম। জন্মের পর থেকেই কষ্ট করছে। সপ্তাহে ৫ বার রক্ত পরিক্ষা করতে হতো। রক্ত নেয়ার মতো রগ পাওয়া যেত না। বারবার সুঁই ফোটানো আমি আর সহ্য করতে পারি না । আমার স্বামী তখন এ কাজগুলো করত। এরপর ২ মাস পর রাইয়ানকে বাসায় নিয়ে আসা হয়। তখন ওজন ১ হাজার ৭৫০ গ্রাম। এটিও বিপদের শঙ্কার মধ্যে ছিল। কিভাবে যত্ন নিতে হয়, কিছুই জানি না। মায়েদের মনে হয় কিছুই জানতে হয় না। পরিবেশ পরিস্থিতি সব জানিয়ে দেয়। সিজারের ব্যাথা ছেলের যত্নের কাছে কিছুই না। এরই মধ্যে বাবাকে হারিয়ে ফেলি সারাজীবনের জন্য। রাইয়ান বয়স অনুযায়ী উন্নত না হওয়ায় মায়ের পরামর্শে সাভার সিআরপিতে যাই। সেখানে রাইয়ানের কন্ডিশন দেখে চিকিৎসক হতাশার কথা শোনান। তার উন্নতির সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। যেহেতু নয় মাসেও তার ঘাড় শক্ত হয়নি, এখনো এক মাসের বাচ্চার মত। এ কথা শুনে যে কোন মায়ের কি অবস্থা হতে পারে অনুমান করতে পারেন! চিকিৎসক আমাকে কন্ডিশন দেয় দুটি কাজ করলে তার অবস্থার কিছুটা উন্নতি হতে পারে। ধৈর্য্য ধরতে হবে এবং লং টাইম থেরাপি দিতে হবে। সেই থেকে শুরু আজও চালিয়ে যাচ্ছি। শুধু থেরাপিস্টের উপর নির্ভরশীল ছিলাম না। কাজ শিখে নিজেও যত্ন করে থেরাপি দেই সন্তানের। এ জন্য কত মাস, কত বছর ঠিকমত ঘুমাইনি, তার হিসাব নেই। আমার চেষ্টা, আল্লাহর অশেষ রহমত ব‍্যর্থ হয়নি। জীবন থেকে নিজেকে অনেক বছর হারিয়ে ফেললেও আমি সন্তানের উন্নতির ব‍্যাপারে স্বার্থক। চলবে- 

 

Sunny / Sunny

হোটেল ও রেস্টুরেন্ট শিল্পের সফল জাদুকর সুকান্ত সৈকত

শুরু হয়ে গেল রাঁধুনী নিবেদিত মাংসের সেরা রেসিপি ২০২৫ সিজন ৪ রান্নার প্রতিযোগিতা

অপরাজিতায় কবিতার শাড়ি 

ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতকে শক্তিশালী করতে এসএমই ফাউন্ডেশন ও অক্সফ্যাম একসাথে কাজ করবে

ঈদ ফ্যাশন ফিক্সেশন এর উদ্বোধন

ভর্তার স্বাদ ও সাতকাহন 

মাসরুমের গুরুত্ব ও মাশরুমের উৎপাদন কৌশল শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালা

আমার মমতাময়ী মা 

শেষ হলো আইডিয়া পিচিং কম্পিটিশন ক্রিয়েভেঞ্চার ৩.০

ছোট উদ্যোক্তা থেকে বড় উদ্যোক্তা হওয়ার প্লার্টফর্ম সম্পূর্ণা বাংলাদেশ

টিকটকে যে নারীরা অনুপ্রেরণা যোগায়

চল্লিশেই সফল ব্যবসায়ী- নিয়াজ মোর্শেদ এলিট

ইপি-উদ্যোক্তা প্ল্যাটফর্ম এর বিভিন্ন জেলায় পুষ্পস্তাবক অর্পণ -