ফারজানা বাতেন
অপরাজিতায় কবিতার শাড়ি
শাড়ি বাঙালি নারীর পছন্দের পোশাক। দেশে বা দেশের বাইরে, যেখানেই যাবেন, দেখবেন বাঙালি নারী শাড়িতেই সুন্দর। তাই শাড়ির রঙে নকশায় পরিবর্তন কম আসেনি। প্রিন্টে কে কত বৈচিত্র আনতে পারেন, তা নিয়েই চলে প্রতিযোগিতা। অপরাজিতার স্বত্ত্বাধিকারী ফারজানা বাতেন। শাড়িতে কবিতার ছাপ নিয়ে কাজ করছেন। ছোটবেলা থেকেই বই পড়ার অভ্যাস এবং সৌখিন আবৃত্তি শিল্পী হওয়ার সুবাদে রবীন্দ্রনাথের কবিতা তাঁর প্রিয়। ব্যবসা শুরু করার পর প্রিয় কবির কবিতাই প্রকাশ করছেন শাড়ির জমিনে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তো অনেকেরই প্রিয় কবি। তাই হয়তো ফারজানা বাতেন এর নকশায় রবীন্দ্রনাথের কবিতার শাড়ি পছন্দ করছেন অনেকেই। গেল ২ বছর ধরে তিনি কবিতার শাড়ি বাজারে আনছেন। বিক্রি ভালো হচ্ছে। ভোক্তাদের রিভিউ ভালো পাচ্ছেন, তাই কাজে উৎসাহ বাড়ছে। ফলে তিনি পরিকল্পনা করছেন রবীন্দ্রনাথের কবিতার পাশাপাশি জীবনানন্দ দাশ, কাজী নজরুল ইসলাম, শামসুর রাহমানসহ আধুনিক কবিদের বিখ্যাত সব কবিতার প্রকাশ তিনি করবেন শাড়িতে।
ধানমন্ডির রাপা প্লাজায় ফারজানা বাতেন এর একটি শো-রুম আছে- অপরাজিতা। অপরাজিতা থেকে শাড়ি যায় দেশের বিভিন্ন জেলায় এবং দেশের বাইরেও। কবিতার শাড়ির বিশেষ নকশা সৌখিন ক্রেতাদের পছন্দ হওয়ার কারণে দেশ-বিদেশ থেকে আসে ফরমায়েশ। ক্রেতাদের চাহিদার কথা বিবেচনা করে দেশের বাইরে কবিতার শাড়ি নিয়ে কাজ করার স্বপ্ন দেখছেন তিনি। ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী মূল্য কম রেখে ব্যবসা করার চেষ্টা করছেন। ফারজানা বাতেন ২০০৩ সাল থেকে কাজ করছেন দেশীয় পণ্য নিয়ে। ২০১৯ এ রাওয়া ক্লাবে প্রথম মেলায় অংশ নেন। সে মেলায় ফারজানা বাতেন এর নকশা করা শাড়ি অনেকেই পছন্দ করেন। তাঁর তৈরি জামা বেশ প্রশংসিত হয় । এতে কাজের প্রতি তাঁর আগ্রহ আরও বেড়ে যায়
এরপর তিনি কাজের মান এবং একনিষঠতার জন্য “বাংলাদেশ এসএমই ফোরাম“ থেকে “সম্ভাবনাময়ী উদ্যোক্তা হিসেবে একটি পুরস্কার পেয়েছেন। এ বিষয়ে ফারজানা বাতেন বলেন-'ব্যবসা শুরু করার পর প্রথম দিকে বুঝে উঠতে পারিনি তাই লাভ বেশী করতে পারিনি। কিন্তু আমি হাল ছেড়ে দেইনি ।ইনশাল্লাহ একদিন ভালো কিছু হবেই । মনের এমন জোড় থেকে এগিয়ে এসেছেন।'
ফারজানা বাতেন এর ছোট বেলা কেটেছে ঢাকার মোহাম্মদপুরে। ছোটবেলা থেকেই রান্নার প্রতি অনেক শখ ছিল তাঁর। পাশাপাশি নতুন নতুন ডিজাইনের ড্রেস বানিয়ে পরার শখ ছিল। পড়াশুনায় অনেক ভালো ছিলেন। তাই স্বপ্ন দেখতেন বড় হয়ে চিকিৎসক অথবা শিক্ষক হওয়ার। অল্প বয়সে বিয়ে হওয়ার কারণে এসব ইচ্ছা পূরণ হয়নি। কিন্ত “এমবিএ “করেছেন। পারিবারিক কারনে চাকরি করতে পারেননি।
তিনি বলেন- মনের মধ্যে একটি সুপ্ত বাসনা ছিলো- নিজে কিছু করব ।আমার দুই মেয়ে। ওদের স্কুলে দিয়ে ওই সময় বিভিন্ন কোর্স করেছি। রান্নার শেফ কোর্স করেছি “ফুড কেডেট “ থেকে। ওখানেই শিক্ষক হিসেবে কাজ করেছি। “ফুড কেডেট“এর কর্নধার নাফিজ ইসলাম ননলিপির তত্বাবধানে “ফুড কেডেট “ থেকে জয়িতার একটা প্রজেক্ট হয় জাতীয় সংসদ ভবনে মেয়েদের দিয়ে একটি ক্যাফের উদ্ভোধন হয় এবং সেসব মেয়েদের প্রশিক্ষন দেই আমরা। ২০১৭ তে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী সেটা উদ্ভাধন করেন। এটি আমার জন্য অনেক বড় একটি পাওয়া। “উইমেনস এমপাওয়ারমেন্ট অর্গানাইজেশন “ এর সদস্য তিনি। আরও বেশী করে দেশীয় পণ্য নিয়ে কাজ করার ইচ্ছা আছে তাঁর।
Sunny / Sunny