নদীর পাড় কেটে বালু উত্তোলন; হুমকিতে কোচপল্লী ও বসতবাড়ি
নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্তর্তী খরস্রোতা চেল্লাখালী নদীর জিরো পয়েন্ট এলাকার খলচান্দা গ্রাম থেকে নদীর দুইতীর ভেঙে গভীর গর্ত করে বালু উত্তোলন করছে কতিপয় বালু ব্যবসায়ী। অপরিকল্পিতভাবে ক্ষতবিক্ষত করে নদীতীর ভেঙে ফেলায় হুমকিতে পড়ছে পার্শ্ববর্তী কোচ আধিবাসী পল্লী, খলচান্দা ও বুরুঙ্গা গ্রামের বেশ কয়েকটি বাড়িঘর সহ সরকারের কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত বুরুঙ্গা সেতু।। তাই গ্রামবাসী জরুরী ভিত্তিতে এর প্রতিকারের দাবি জানিয়েছেন।
সরেজমিন দেখা গেছে, সরকার রাজস্ব আদায়ের লক্ষে চলতি ১৪৩০ বাংলা সনের জন্য নালিতাবাড়ী উপজেলার পাহাড়ি কন্যা চেল্লাখালী নদীর বালুমহাল ইজারা দেয়। একইসঙ্গে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই নদীর বালু উত্তোলনের স্থান চিহ্নিত করে নিষিদ্ধ জিরো পয়েন্ট এলাকার সীমানা নির্ধারণ করে লাল নিশান টাঙিয়ে দেওয়া হয়। এতে বাংলাদেশ-ভারত আন্তর্জাতিক সীমানার জিরো পয়েন্ট ও নোম্যান্স ল্যান্ড এলাকা নির্ধারিত হয়। এদিকে, জিরো পয়েন্ট এলাকা থেকে নদীতীর ভেঙে গভীর গর্ত করে বালু উত্তোলনে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা মানছে না স্থানীয় বালু ব্যবসায়ীরা। তারা নিষিদ্ধ এলাকার ভিতর থেকে লম্বা পাইপের সাহায্যে বালু উত্তোলন করছে। ৫০ গজ দক্ষিণে ভাটির দিকে পুর্ব ও পশ্চিম দুই তীরে শ্যালো ইঞ্জিন চালিত ২০টি মিনি ড্রেজার মেশিন বসিয়ে দেদার বালু উত্তোলন করছে ব্যবসায়ীরা। অপরিকল্পিতভাবে এসব বালু উত্তোলন করায় ধ্বসে পড়ছে নদীর দুই পাড়ের তীর, পাড় সংলগ্ন দুই পাড়ের পাহাড় ও গাছপালা। এতে হুমকীতে পড়েছে পূর্ব পাড়ের খলচান্দা কোচপল্লী ও পশ্চিম পাড়ের বুরুঙ্গা গ্রামের বেশ কয়েকটি বাড়িঘর।
স্থানীয় বাসিন্দা পরিমল কোচ জানান, এভাবে নদীতীর ভেঙ্গে বালু উত্তোলন ও পরিবহনের কারনে পাহাড়ঘেঁষা খলচান্দা কোচপাড়া গ্রামের বাড়িঘর হুমকীতে পড়েছে। গ্রামে যাওয়ার একমাত্র রাস্তাটিও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এই একমাত্র রাস্তাটিও বর্ষাকালে পানি জমে আর শুষ্ক মৌসুমে বালুর কারনে চলাচল করতে পারেন না গ্রামবাসীরা। এছাড়া ড্রেজার মেশিনের বিকট শব্দে শব্দ দুষণে এই গ্রামের বসবাস করতে আমাদের বেশ সমস্যা হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বালু ব্যবসায়ী জানান, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চেল্লাখালী নদীর উত্তরের শেষ প্রান্তে লাল নিশান টানিয়ে আমাদের সীমানা বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাই আমরা লাল নিশানের ভেতর থেকেই নিয়ম মেনে বালু উত্তোলন করছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খৃষ্টফার হিমেল রিছিল বলেন, বালু উত্তোলনে সীমানা নির্ধারণ করে লাল পতাকা দেওয়া হয়েছে। সীমানা আইন ভঙ্গ করে বালু উত্তোলনের বিষয়টি নজরে আসায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) ঘটনাস্থলে গিয়ে বালু তোলা বন্ধ করে দিয়েছেন। এরপরও যদি কেউ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বালু উত্তোলনের চেষ্টা করেন, তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এমএসএম / এমএসএম