আফজান চুমকী
সফল নারী উদ্যোক্তা আফজান চুমকী
আফজান’স বাস্কেটের স্বত্বাধিকারি আফজান চুমকী। প্রচেষ্টা এবং ধৈর্য্যরে কারনে একজন সফল নারী উদ্যোক্তা বলে মনে করেন তিনি। সততা ও মনোযোগ সাথে কাজ করতে পছন্দ করেন। দৈনিক সকালের সময় সফল এই নারী উদ্যেক্তার সাক্ষাতকার তুলে ধরছেন তানভীর সানি।
সকালের সময়ঃ উদ্যেক্তা জীবনের শুরু কিভাবে?
আফজান চুমকীঃ শুরুটা ২০১৭ সাল থেকে। তেমন কোন প্ল্যান ছাড়াই। কিছু একটা করার তাগিদেই শুরু করা। যৌথভাবে। তখন অনলাইন এর অবস্থা এখানকার মতোন ছিল না। তবে নিজেদের উপর আস্থা ছিল যে যেকোনো উপায়ে একটা জায়গা তৈরি করবো। শুরু করার চিন্তা মাথাতে আসতেই সবার আগে মাথায় আসে দেশীয় পণ্যের কথা। শাড়ি পরতে আমি খুবই পছন্দ করতাম ছোট বেলা থেকেই। তাই শাড়ি দিয়েই ছিল আমাদের যাত্রা। ঐতিহ্যের জামদানি শাড়ি নিয়ে। অনেকটা চ্যালেঞ্জ নিয়েই বলা যায় শুরুটা কারণ তখন ইন্ডিয়ান এবং পাকিস্তানী থ্রিপিস, শাড়িতে সয়লাব ছিল দেশে।
সকালের সময়ঃ শুরুর চ্যালেঞ্জগুলো কি কি ছিল? সেগুলো কিভাবে মোকাবেলা করলেন?
আফজান চুমকীঃ জামদানি শাড়ি তো তাই একটু বাজেট মোটামুটি দিয়েই শুরু করতে হয়েছিল। কিন্তু সমস্যা ছিলো অরিজিনাল ঢাকাই জামদানি শাড়ি নিয়ে। বাজারে তখন ইন্ডিয়ান মেশিন জামদানি দিয়ে ছেয়ে ছিল। আগে ভরসা আনাতে হয়েছে মানুষ কে। তারপর যুক্ত করা হয় মণিপুরী শাড়ি ও ওড়না, শাল । একটু একটু করে এগিয়ে চলে উদ্যোগ আমাদের। এবং রিপিট কাস্টমার পেতে থাকি।
সকালের সময়ঃ আপনার পণ্যের বিশেষত্ব কি?
আফজান চুমকীঃ যেহেতু আমি নিজে প্রোডাক্ট উৎপাদন করি না সংগ্রহ করি তাই এই পণ্য গুলোও মার্কেটে অ্যাভেলেবল তাই আমি সব সময়ই চেষ্টা করেছি একটু ডিফরেন্ট টাইপের কালার, ডিজাইন এর জামদানি শাড়ি বা মণিপুরী শাড়ি রাখার। একই তাঁতের শাড়ি শুরু থেকে এখন পর্যন্ত তাই কোয়ালিটি তে আমি নিশ্চিন্তিত এবং আস্থার সাথে আমি কাস্টমার কে দিতে পারছি আর কোয়ালিটি ঠিক আছে বলেই উনারা বারবার করে নিচ্ছেন এবং অন্যদের কেও নিতে বলছেন মানে রেফারেন্স কাস্টমার ও পাচ্ছি। আর একটা বিষয়ে আমি খুব সচেতন প্রাইসিং এর ব্যাপারে। যেহেতু এখন কম্পিটিশন অনেক বেশি তাই বুঝে শুনে দাম নির্ধারণ করছি বা করা উচিত সবার। বছর খানেক হয় আমি কুশি কাটার পণ্য অ্যাড করেছি আমার বাস্কেটে। এই পণ্য টা সম্পূর্ণ ভাবে আমার মতো করে করিয়ে নিচ্ছি। রেসপন্স ও পাচ্ছি বেশ । আর একটা বিষয় আমার উদ্যোগে কাজে লেগেছে তা হলো পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং টা। আমার পার্সোনাল প্রোফাইলেই রয়েছে আমার অনেক ক্রেতা।
সকালের সময়ঃ আপনার প্রতিষ্ঠানে কি কি পণ্য পাওয়া যায়?
আফজান চুমকীঃ গতবছর থেকে আমি একক উদ্যোগ চালাচ্ছি। একটু একটু করে কাস্টমারদের ডিমান্ড অনুযায়ী কিছু পণ্য যুক্ত করেছি বা করছি। এখন আমার উদ্যোগে আছে - জামদানি শাড়ি, মণিপুরী শাড়ি, শাল ও ওড়না। এছাড়াও ভেজিটেবল ডাই বাটিক থ্রিপিস ও শাড়ি, নরমাল বাটিক শাড়ি, থ্রিপিস এবং বেডশীট। প্যাঁচ ওয়ার্ক ব্লাউজ পিস, কটি, ওড়না ও হিজাব । কুশি কাটার কাজ করা পণ্য - হ্যান্ডব্যাগ, প্লেট ম্যাট, কুশন কভার, মাফলার, শাল এবং কাস্টমাইজ যেকোনো পণ্য।
সকালের সময়ঃ আপনার ক্রেতা কোন শ্রেণির?
আফজান চুমকীঃ মধ্যবিত্তই বেশি। তবে জামদানি শাড়ির ক্রেতা সাধারণত উচ্চবিত্ত শ্রেণীর বেশি। কারণ এক্সপেনসিভ আইটেম হওয়ার জন্য শখ করে মধ্যবিত্ত রা হয় তো একটা বা দুইটা শাড়ি কেনে।
সকালের সময়ঃ ভবিষ্যত পরিকল্পনা সম্পর্কে?
আফজান চুমকীঃ উদ্যোগটাকে একটা স্থায়ী রূপ দেওয়া। মানে একটা আউটলেট দেওয়া।
সকালের সময়ঃ সরকারের কাছে কি প্রত্যাশা?
আফজান চুমকীঃ সরকার উদ্যোক্তাদের নিয়ে অনেক কাজ করছেন। বিভিন্ন ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করছেন। অনুদান দিচ্ছেন। আশা করি আরও অনেক সুযোগ - সুবিধা তৈরী করে দিবেন। কিন্তু সাথে একটা অনুরোধ থাকবে যেনো অনুদানগুলো যাচাই বাছাই করে আসল উদ্যোক্তাদের কাছে পৌঁছায়। যারা আসলে কিছু করতে চাই! তাদের কাছে।
Sunny / Sunny