সুরাইয়া রহমান বকুল
লাভের অর্ধেক অংশ বিলিয়ে দেন গরীব দুঃস্থদের মাঝে
সুরাইয়া রহমান বকুল এর উদ্যোক্তা জীবনের শুরু ২০২০ থেকে। কোভিড কালীন সময় পুরো বিশ্ববাসী যখন অস্থিরতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে সবার মতো তিনিও যথারীতি গৃহবন্দী জীবন পার করছিলেন। সুরাইয়া রহমান বকুল ভাবলেন এরকম পরিস্থিতিতে তাদের কোনো সমস্যা হচ্ছে না। কিন্তু, যারা দুঃস্থ-গরীব অসহায় অবস্থায় দিনাতিপাত করছে। কিছু একটা করার প্রচেষ্টা তাঁর মনের ভিতর তখন চলছিলো। আগে থেকেই কুশিকাজ ও সবধরনের হাতের কাজ করতে পছন্দ করতেন। এসব কাজ নিয়েই অনলাইনে প্রতিষ্ঠা করেন Suraiya's Gallery নামে ফেসবুক পেইজ।
সুরাইয়া রহমান বকুল বলেন, শুরুর দিকে বিনিয়োগ, পারিপার্শ্বিক অবস্থা নিয়ে অনেক সমস্যা ছিল। অল্প পুঁজি নিয়ে আমি কাজ শুরু করেছিলাম। কিন্তু ধীরে ধীরে আমি সেই অল্প পুঁজি থেকেই আমার বিজনেসটা বাড়িয়েছি। এছাড়া স্বামী, সংসার, আত্মীয়স্বজন, বন্ধু -বান্ধব কী মনে করবে এসব নিয়ে খুব টেনশন ছিল। কিন্তু এই পরিস্থিতিও আমি মোকাবিলা করে এগিয়ে আসতে পেরেছি। এক্ষেত্রে পরিবার আমাকে খুব সাপোর্ট দিয়েছে। আমার মনের শক্তি প্রবল ছিল তাই আজ আমি আমার এই অবস্থানে এগিয়ে আসতে পেরেছি। তিনি আরও বলেন, প্রথম দিকে আমি খুব একটা অর্ডার পেতাম না। কিন্তু আমি হাল ছাড়িনি। ধৈর্য ধরে সামনে এগিয়েছি। ধীরে ধীরে অনলাইনে, অফলাইনে সব জায়গাতেই আমার অর্ডার বেড়েছে। আমি আমার সেলের অর্ধেক টাকা গরীব- দুঃস্থদের জন্য খরচ করি। এতে মনে অনেক প্রশান্তি আসে এবং আরো দ্বিগুণ উৎসাহে কাজ করতে পারি। পণ্যের বিশেষত্ব নিয়ে সুরাইয়া রহমান বকুল বলেন, আমার কাজগুলো নিখুঁত বুননকৌশল, আকর্ষণীয় ডিজাইনের ও ইউনিক। এছাড়া কাস্টমারের পছন্দ অনুযায়ীও কালার, সাইজ, ডিজাইনের করে থাকি। আর ক্রেতার সাথে আমার সম্পর্ক হলো ভরসা ও বিশ্বাসের। ক্রেতার মন বুঝে ক্রেতা কী চায়,তার পছন্দকে সম্মান দিয়ে কাজ করি। তাই সম্মানিত ক্রেতারা আমার কাছ থেকে একটা ভালো সম্পর্কের আশ্বাস নিয়ে পণ্য ক্রয় করে।
বর্তমানে তাঁর প্রতিষ্ঠানে সবধরনের কুশিপণ্য এবং হাতের কাজের রেডি কুর্তি, কামিজ, থ্রিপিস ও হোমডেকোর সামগ্রী ইত্যাদি পাওয়া যাবে। এছাড়াও কুশিকাজের টেবিল রানার ও প্লেট ম্যাট সেট, প্লেস ম্যাট/ডয়লি, সেন্টার টেবিল ম্যাট, টিস্যু বক্সের কভার, বেবি নেক, বেবি নেক বসানো জামা, বেবি হেয়ার ব্যানড, বেবি ড্রেস, শীতের জন্য মাফলার, হাতমোজা, পামোজা, বেবি টুপি, বড়দের শীতের টুপি, শীতের শাল, সব বয়সের নামাজী টুপি, জামা ও ব্লাউজের হাতা ও গলা ইত্যাদি পণ্য আছে। সুরাইয়া রহমান বকুল জানান, সব শ্রেণির কাস্টমার রয়েছে তার প্রতিষ্ঠানটিতে। ৫০ টাকা থেকে শুরু করে কয়েক হাজার টাকা মূল্যের পণ্য Suraiya's Gallery তে পাওয়া যায়। অক্লান্ত পরিশ্রম, দৃঢ় মনোবল আর সঠিকভাবে সময়কে ব্যবহার করে সামনে এগিয়ে যাচ্ছেন সুরাইয়া রহমান বকুল। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে তিনি বলেন, আমাদের দেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আমাদের দেশীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য বহনকারী পণ্য আমার পেইজের কুশিপণ্য ও হাতের কাজের পণ্য আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া। আর আমার ইচ্ছে আছে আমার উদ্যোগের মাধ্যমে ভবিষ্যতে গরীব ও দুঃস্থ নারীদের কাজ শিখিয়ে তাদের স্বাবলম্বী করে তোলা।
Sunny / Sunny