ঢাকা বৃহষ্পতিবার, ৬ নভেম্বর, ২০২৫

পটুয়াখালী উপকুল উন্নয়ন বাধ সংস্কারে অনিয়ম


সাঈদ ইব্রাহিম (পটুয়াখালী) photo সাঈদ ইব্রাহিম (পটুয়াখালী)
প্রকাশিত: ১৪-৮-২০২৩ বিকাল ৫:০
পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৩৮ নাম্বার পোল্ডারটি বঙ্গোপসাগর ও নদী বেষ্টিত উপকুল রক্ষা বাঁধ উন্নয়ন প্রকল্প সবুজ বনায়নে ঢেকে গেছে বালুর বেরীবাঁধ। 
প্রকল্পটি শেষ না হতেই বৃষ্টিতে ধুয়ে নামছে উপকূল রক্ষার নামে যেনতেন করা বাধটি।
 
পলিমাটি দিয়ে বেড কেটে নিষিদ্ধ বোমা ড্রেজার ব্যবহার করে বালু উত্তোলন করে উপকুল রক্ষা বেরীবাঁধ নির্মান প্রকল্প প্রায় চুড়ান্ত পর্যায়ে। নির্মিত বেরীবাঁধে বনায়ন ও ঘাষ রোপনে ঢেকে গেছে বালু ব্যবহারের চিত্র। প্রকল্প শেষ না হতেই চলমান বৃষ্টিতে সেই বাঁধ ধুয়ে নামতে শুরু করেছে। সরেজমিনে এমন অভিযোগে সত্যতাও পাওয়া গেলেও দায়িত্বরতরা এসব অভিযোগ এরিয়ে যাচ্ছেন। মেঘা প্রকল্পে এমন অনিয়ম-দুর্নীতির স্বচিএ গনমাধ্যমে তুলে ধরলেও কাজের ধরন বদলায়নি। বরং বালু দিয়ে‘ই গোটা বেরীবাঁধ সংস্কার হয়েছে। বাঁধের স্লোব থেকে বালু উত্তোলনে সৃষ্ট খানাখন্দ ভরাটের শর্ত থাকলেও তার বাস্তবায়ন ঘটেনি। যেনতেন কাজ হলেও শতভাগ বিল দেয়া হয়েছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে। সুত্র বলছে-চুক্তি ভিত্তিক তদারকি কর্মকর্তা নিয়োগের কারনে এমন অনিয়ম হয়েছে। বঙ্গোপসাগর ঘেষা উপকুল রক্ষা বেরীবাঁধ সংস্কারে এমন অভিযোগ উঠেছে। 
 
সংশ্লিষ্ট সুত্র বলছে-পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৩৮ নাম্বার পোল্ডারটি বঙ্গোপসাগর ও নদী বেষ্টিত। এই পোল্ডারে আওতায় বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন উপকুলটি লতাচাপলি ও ধুলাশ্বর ইউনিয়ন পরিষদ এবং কুয়াকাটা পৌরসভার অর্ন্তগত পর্যটন নগরী। দুইটি ইউনিয়ন একটি পৌরসভায় অন্তত অর্ধ লক্ষাধিকের বসবাস। ষাঠের দশকে নির্মিত এ বাঁধটিতে পরবর্তীতে কোন সংস্কার হয়নি বলে দাবি, ওখানকার আধিবাসীদের। বঙ্গোপসাগরের ভয়াল জলচ্ছাস এবং প্রকৃতিক দুর্যোগ থেকে উপকুলের যানমাল রক্ষা কবজ দৈর্ঘ্যতম এই বাঁধটি। এছাড়াও উপকুল জনপদে বেরীবাঁধটি সড়ক হিসেবে ব্যবহৃত। ফলে বেরীবাঁধটি সংস্কার যোগ্য হয়ে ওঠে। পরবর্তীতে কুয়াকাটা পর্যটন নগরি হলে বাঁধটির ব্যবহার ও গুরুত্ব বাড়ে। ৩৮ কিলোমিটার বেরীবাঁধের মধ্য বঙ্গোপসাগর লাগোয়া খাজুরা সৈকত পয়েন্ট থেকে গঙ্গামতি, কাউয়াচর সৈকত পয়েন্ট পর্যন্ত প্রায় ২৮ কিলোমিটার‘ই অধিক ঝুঁকিপূর্ন। 
 
পাউবো ও সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে-বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন উপকুল জুড়ে র্দীঘ ৩৮ কিলোমিটার বেরীবাঁধ উন্নয়নের কাজ পায় চায়না সিকো নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। ২০১৭ সালে জুলাই মাসে এ কাজ শুরু করে সিকো। কিন্তু সিকো সরাসরি কাজটি না করে দালাল চক্রের মাধ্যমে স্থানীয় ব্যক্তিদের বাঁধ উন্নয়নে নিয়োগ করেন। ৩৮ কিলোমিটারের বাঁধকে কয়েকটি ভাগে সাব চুক্তিতে দেন সিকো। প্রাক্কলনে বাঁধে ৩০ ভাগ বালু, ৬০ ভাগ পলি মাটি এবং ২০ ভাগ কাদামাটি ব্যবহার বাধ্যতা মুলক। এছাড়াও কুয়াকাটা জিরো পয়েন্ট থেকে পশ্চিমপাশে লেম্বুরচর পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার বিশেষ পদ্ধতিতে ব্লোক স্থাপনের কথা উল্লেখ রয়েছে এবং বাঁধের মুল ভুখন্ড থেকে বাঁধের উচ্চতা প্রায় ৭.৫ মিটার এবং একই পরিমাপ বজায় রেখে স্লোব এবং বাঁধের উপরিভাগে (টপ) ৬ মিটার প্রশস্ততা রাখার কথা রয়েছে প্রাক্কলনে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৩৮ কোটি টাকা। অথচ প্রাক্কলনের ৫০% নিয়ম মানা হয়নি।
 
সরেজমিনে দেখা গেছে-পুরোনো বাঁধের স্লোব থেকে দেশীয় বোমা ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করে বাঁধ সংস্কার হয়েছে। মাটি দিয়ে বেড তৈরী করে বালু ভরাটের পর মাটির আস্তর দিয়ে ঢেকে গাছ ও ঘাষ রোপন করা হয়েছে। বাঁধের স্লোব থেকে ১৫ মিটার দুরত্ব রেখে মাটি কাটার নিয়ম থাকলেও স্লোব লাগোয়া জমি থেকে বালু উত্তোলন করা হয়েছে। এসব দৃশ্য এখনো বিদ্যমান। সরেজমিনকালে সিকো প্রতিষ্ঠানের কোন জনবল দেখা যায়নি। বাঁধ সংস্কারে সিকোর নিয়োগকৃত “আইয়ুব আলী খান, বড় জামাল, ছোট জামাল, সুমন মিয়া, মহাসীন, মোস্তাক মেম্বর, মুছা, শামীম ও হাসানসহ এক ডজন সাব ঠিকাদার মাঠে পাওয়া গেছে। সংস্কার কাজে অনিয়ম প্রসঙ্গে এসকল ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন-ব্যবহৃত বালুতে তারা মাটি মিশ্রন করছেন, বালু অঞ্চল হওয়ায় মাটির সংকট, তাই সঠিক নিয়ম সম্ভবন নয়। বাঁধের স্লোব থেকে ১৫ মিটার দুরত্ব রেখে মাটি/বালু উত্তোলনের বিষয়ে তারা বলেন-ঝুকিপূর্ন এসব খানাখন্দ ভরাট করে দেয়া হবে। সাব চুক্তিতে ঠিকাদারের পক্ষে সাফাই করে প্রকল্পের চুক্তি ভিত্তিক কন্সট্রাকশন সুপারভিশন ইঞ্জিনিয়ার একেএম মজিবুর রহমান, উপ-সহকারী প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম, উপ-সহকারী প্রকৌশলী লাকিদুল ইসলামসহ অনেকের বক্তব্য ছিল-ব্যবহৃত বালু অপসারন হবে এবং সৃষ্ট খানাখন্দ ঠিকাদার ভরাট করবে। অথচ এরই কিছুর হয়নি। চুক্তির মেয়াদ শেষ হতেই এসব কর্মকর্তা দায়িত্ব থেকে বিদায় নিয়েছে বলে জানা গেছে। 
 
কুয়াকাটা পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র আব্দুল বারেক মোল্লা বলেন-স্থানীয় ভাবে বালু দিয়ে বাঁধ উন্নয়ন করেছেন, যা ঝুঁকিপূর্ন। আমরা দেখি বালু অথচ সিআইপির লোকজন বলছে মাটি। এর থেকে পূরনো বাঁধটি শক্ত ছিল। সিকোর কাজে তদারকি না হওয়া এমন অনিয়ম হয়েছে। কুয়াকাটা পৌর মেয়র আনোয়ার হাওলাদার বলেন-প্রকল্পের শুরু দিকে অনিয়ম করলে সিইআইপির প্রধান কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ করেছিলাম, কিন্তু তাতে কোন ফল হয়নি। 
 
কলাপাড়া পাউবোর র্নিবাহী প্রকৌশলী খালেদ বিন ওয়ালিদ বলেন-প্রকল্পটি পিডি অফিস কর্তৃক নিযুক্ত কনসালটেন্ট তদারকি করছেন। তবে শর্তানুযায়ী ত্রুুটি পূর্ন কাজ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ঠিক করে দেবেন। 
বাঁধ উন্নয় প্রকল্পের (সেআইপি) এর সুপারভিশন ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ্ দৈনিক সকালের সময়কে বলেন- যেখানে বালু ধরা, সেখানে বালু দিচ্ছে, যেখানে মাটি ধরা সেখানে মাটি দিচ্ছে। বৃষ্টির দিনে একটু ধুয়ে নামছে, এটা ঠিক করা হবে। বাঁধের স্লোব পাশের খানাখন্দ গুলোও ঠিক করা হবে। আমি নতুন দায়িত্ব নিয়েছি, বিষয় গুলো দেখবো।
 
বাধের পাশে বসবাসকারীরা দৈনিক সকালের সময়কে বলেন, উপকুল রক্ষা বাঁধের কাজ এতটাই নিন্ম মানের হয়েছে,যে সুপার সইক্লোন সিডরের মত কোন ঘূর্ণিঝড় বা বড় কোন জলচ্ছাস আসলে এই উপকূল রক্ষা বাধ নিমিষেই সাগরের সাথে মিশে যাবে। আর আমরা কোথায় যে ভেসে যাবো তার কোন ইয়াত্তা থাকবেনা। তাই এই বাধের ব্যাপারে এক্ষনই পদক্ষেপ নেয়ার আহ্ববান জানিয়েছেন তারা।

এমএসএম / এমএসএম

থামছেই না ছড়াও, দখল করে ভবন নির্মাণ কাজ

বাঁশখালীতে রিক্সা চালক শ্রমিক কল্যাণ ইউনিয়ন নির্বাহী কমিটির বার্ষিক সাধারণ সভা

নোয়াখালীতে যৌন-প্রজনন স্বাস্থ্য ও লিঙ্গ ভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধ সভা

চাঁপাইনবাবগঞ্জ -২ এ,ধানের শীষের কান্ডারী ইঞ্জি: মাসুদ'কে চায় সাধারণ মানুষ ও বিএনপি'র নেতাকর্মীরা

পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীতে শ্রমিক দলের আহ্বায়ক জুয়েলের বিরুদ্ধে কমিটি বাণিজ্যের অভিযোগ

কাউনিয়ায় মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টায় পিতা পুলিশের হাতে

বাঁশখালীতে জমি বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত, গ্রেপ্তার-৩

নন্দীগ্রামে সিএনজি চালককে অপহরণ ও মুক্তিপণ নিয়ে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ

সুবর্ণচরে আশার আলো সমাজ কল্যাণ সংগঠনের বৃক্ষরোপন কর্মসূচি

সহকারী এটর্নি জেনারেল হলেন পেকুয়ার কেএম সাইফুল ইসলাম

৭ই নভেম্বর উদযাপন ও খন্দকার নাসিরের মনোনয়ন এর দাবিতে মধুখালী বিএনপির জরুরী সভা

ভোলা-১ আসনে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করবে বিজেপি, নির্বাচনি প্রচার ও র‍্যালী অনুষ্ঠিত

বগুড়ায় চালককে হত্যা করে অটোরিক্সা ছিনতাই