ফাহমিদা আক্তার রিম্পী
ঘুরে বেড়ানো তাঁর নেশা ও পেশা
নিজের ঘুরে বেড়ানোর অভ্যাসকে পেশায় রূপান্তর করেছেন ফাহমিদা আক্তার রিম্পী। খাবারের প্রতি আকর্ষণ রিম্পীর পেশায় যুক্ত করেছে বাড়তি আনন্দ। বর্তমানে তিনি দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়ান আর নানা দেশের নানা পদের খাবারের স্বাদ চেখে দেখে তার রিভিউ দিয়ে ভিডিও তৈরি করেন। খাবারের ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করে ভার্চুয়াল মাধ্যমে এখন ব্যপক জনপ্রিয় রিম্পী। সাম্প্রতিক সময়ে সৃষ্টি নতুন পেশা ফুড ব্লগার হিসেবে এখন তাঁকে চেনে অনেকেই। কিভাবে হয়েছিল শুরু? উত্তরে রিম্পী বলেন- ২০১৩ সালে, প্রথম যখন আমরা নেপাল যাই, তখন গুগলে তথ্য সংগ্রহ করে করে আমরা ঘুরেছি। এরপর আমরা থাইল্যান্ড যাই ২০১৭ সালে। তখন কিছু ট্রাভেল ভিডিও দেখে আমরা অনেক তথ্য পাই। যেসব তথ্য আমাদের ঘুরে বেড়াতে সহযোগিতা করে। তখনও দেশীয় ভাষার তেমন ব্লগ আমাদের চোখে পরেনি। ২০১৯ সালে আমরা বিদেশ ভ্রমণে মালায়শিয়া যাই। সে ট্যুর খুব সুন্দরভাবে আমরা প্ল্যান করতে পারি অন্যদের ভিডিও কনটেন্ট দেখে। তখন বাংলা ভাষায় এবং বাংলাদেশীদের তৈরি কিছু ভিডিও ব্লগ আমার চোখে পড়ে। সেসব ব্লগ ভিডিও দেখে মালায়শিয়য় থাকা অবস্থাতেই আমরা পরিকল্পনা করি এবার দেশে ফিরে একটি ভিডিও চ্যানেল ওপেন করব। আমরাও আমাদের ঘুরে বেড়ানোর সব তথ্য শেয়ার করব অন্যদের সাথে। আমাদের ঘুরে বেড়ানোর তথ্য থেকে মানুষ যেন উপকার পায়, সেটাই ছিল উদ্দেশ্য। অবশেষে ২০১৯ সালের শেষের দিকে দিকে আমরা আমাদের প্রথম চ্যানেল রিম্পী অরুন ব্লগ (Rimpi Arun Vlog) ওপেন করি। মানুষ ঘরে বসে পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গা সম্পর্কে, ঘুরে বেড়ানোর খরচ সম্পর্কে ধারণা পায়, সেভাবে ভিডিও ব্লগ তৈরি করার চেষ্টা করি আমরা। ভ্রমণের সময় বেশিরভাগ মানুষের চিন্তা থাকে কোথায় খাবে? কি খাবে? সে কারণে আমরা খাবারের তথ্য নিয়ে ভিডিও নির্মান বিষয়ে গুরুত্ব দেই। ফলে আমাদের তৈরি ভিডিও থেকে মানুষ যেমন একটি স্থান সম্পর্কে ধারণা পায়, তেমনি ধারণা পায় সেখানকার খাবার ও খাবারের দামের বিষয়ে। নিজের গড়ে তোলা প্রথম ভিডিও ব্লগের জনপ্রিয়তা দেখে ২০২০ সালের মার্চ মাসে লাইফস্টাইল অব রিম্পী (lifestyle of rimpi) নামে আরেও একটি চ্যানেল ওপেন করেন। দুটো চ্যানেলে তিনি এ পর্যন্ত তৈরি করেছেন প্রায় ২ হাজার এর মতো ভিডিও ব্লগ।
কনটেন্ট নির্মানের সময় তিনি সহজ ভাষায় কথা বলার চেষ্টা করেন । প্রতিটি কনটেন্টে প্রয়োজনীয় তথ্য সংযুক্ত করেন। সে কারণেই হয়তো রিম্পীর তৈরি কনটেন্ট পছন্দ করেন দর্শক। যে কোন বয়সের মানুষ যেন কনটেন্ট দেখে আনন্দ পায়, প্রৌজনীয় তথ্য বুঝতে পারে, সে চেষ্টা সব সময় করেন। রিম্পীর কথায়- 'সবার জন্যই যেন ভালো লাগার মত কিছু না কিছু তথ্য থাকে, এই বিষয়টা গুরুত্ব দেই। ভালো ভিডিও ও অডিও কোয়ালিটি যেন হয়, সেদিকে খেয়াল রাখি।' রিম্পীর জন্ম ঢাকায়। বাবা আলী আকবর ভূঁইয়া। মা রোকেয়া সুল্তানা মোক্তা।স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে বিবিএ, এমবিএ করেছেন রিম্পী। ছোট একটি সংসার আছে রিম্পীর। তাঁর স্বামী জাহাঙ্গীর হোসেন অরুণ, একটি বেসরকারী টেলিভিশনের আইটি ডিপার্টমেন্টের প্রধান। ছেলে প্রিয় সাউথ পয়েন্টে স্কুলে ক্লাস টুয়ে পড়ছে। এ সংসার তিনি সামলান আনন্দের সাথে। ভিডিও ব্লগ তৈরি করে তিনি যে জনপ্রিয়তা পেয়েছেন, এ জনপ্রিয়তাকে নিজের দায়িত্ব বেড়ে যাওয়া মনে করেন তিনি। কনটেন্ট তৈরি করার পরিকল্পনা তিনি যেমন করেছেন হঠাৎ করে প্রয়োজনের তাগিদে। এ বিষয়ে তাঁর ভবিষ্যৎ কোন ভাবনাও নেই। যদি ভালো লাগে, যদি প্রয়োজন মনে করেন, তাহলে কনটেন্ট নির্মাণ করবেন। 'চলার পথে যে বিষয়গুলার উপর ভিডিও বানাতে ইচ্ছা করবে, তাই বানাবো। আমি ভিডিও বানানোর পরিকল্পনা করে ব্লগার হইনি। আমি ঘুরতে, খেতে পছন্দ করি। এসবের কিছু কিছু ভিডিওতে তুলে ধরি।' নির্মাণ করা ভিডুওর মতোই সহজ ভাষায় বললেন রিম্পী।
Sunny / Sunny