মাহফুজা আক্তার
ধৈর্য্য ধারণ করে চেষ্টা চালিয়ে গেলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়
মাহফুজা আক্তারের বেড়ে উঠা চাঁদপুর জেলার বিষ্ণুপুর গ্রামে। একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যাবস্থাপনা বিভাগে বিএ অনার্স সম্পন্ন করেছেন মাহফুজা। ছোটবেলা থেকেই তাঁর নিজের কিছু করার ইচ্ছে ছিল। তাই ২০১১ সালে মাধ্যমিকের গণ্ডি পেড়িয়ে নিজের জমানো টাকা দিয়েই ব্যবসা শুরু করেন। ব্যবসা সম্পর্কে কোনো ধারণা না থাকায় তেমন কিছু করতে পারেননি। পরবর্তীতে পড়াশোনা শেষ করার আগেই ২০১৩ সালে চাকরি পেলেও অফিসের অতশত নিয়ম মানতে না পেরে চাকরিটি ছেড়ে দেন। চাকরি ছেড়ে মন দেন আবারও ব্যাবসায়। পড়াশোনা ও ব্যবসা দুটোই চালিয়ে নিয়েছেন মাহফুজা। শুরুতে মাত্র ১২ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে অফলাইনে ব্যবসা শুরু করেন। এরপরে 'দেশি নকশি ঘর' নামে পেইজ খুলে অনলাইনে জামদানী, মনিপুরী, বাটিক ও রাজশাহী সিল্কের মুসলিম হাতের কাজের শাড়ি ও ড্রেসের ব্যবসা শুরু করেন। শুরুর মাত্র ৪ মাসের ব্যাবধানে বিক্রি করেন প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার টাকার শাড়ি ও থ্রি পিস। অনলাইনে এ ব্যাবসার মাধ্যমে জামদানি, মনিপুরী, বাটিক রাজশাহী সিল্কের কাজ করা শাড়ি ও ড্রেস বিক্রি করে প্রতি মাসে আয় করেন প্রায় ১ লাখ টাকা। মাহফুজা ইতোমধ্যেই 'দেশি নকশি ঘর' এর মাধ্যমে ১৫ টি দেশে শাড়ি পাঠিয়েছেন।
মাহফুজা আক্তার বলেন, অনেক পরিশ্রম ও কাঠখড় পুরানোর পর বর্তমানে একজন সফল নারী উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে কিছুটা হলেও পরিচয় দিতে পারি। এ সাফল্যের পেছনের গল্প টা খুব কঠিনই ছিল। শুরুর দিকে ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী শাড়ি, থ্রি পিস দিতে পারতাম না। ক্রেতার চাহিদা পূরণে দিনের পর দিন তাঁত পল্লীতে গিয়ে অনেক ঘুরেছি। এ জন্য অনেক কাঠ খড় পোড়াতে হয়েছে। মাত্র ১২ হাজার টাকা পুজি নিয়ে শুরু করে দুই বছর পর এখন মূলধন দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫ লাখ টাকা। মাহফজা আক্তার আরও বলেন, বর্তমানে 'দেশি নকশি ঘর' এ বেশ কিছু নারীরাও কাজ করছে। চেষ্টা করছি ঘরের কোণে বসে থাকা নারীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার। পরিচিত এক মামার অনুপ্রেরণা ও পরিচিতদের সহায়তায় অফলাইন পরে অনলাইনে ব্যাবসার যাত্রা শুরু করি। বিশ্বাস করি, ধৈর্য্য ধারণ করে চেষ্টা চালিয়ে গেলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। ব্যবসার মাধ্যমে পেয়েছি মানুষের ভালোবাসা, পেয়েছি বিশ্বাস আর সম্মান। এতেই নিজেকে সফল বলে মনে করি। ভবিষ্যতে আমার 'দেশি নকশি ঘর' প্রতিষ্ঠানকে আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার স্বপ্ন দেখি। এছাড়া নিজ দেশের পণ্যকে বিশ্বের বাজারে তুলে ধরার মাধ্যমে সারা বিশ্বে দেশি পণ্যের সুনাম ছড়িয়ে দিতে চাই।
Sunny / Sunny