ঢাকা বৃহষ্পতিবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৫

ফার্মাসিস্ট : স্বাস্থ্যসেবার রোল মডেল


গবি প্রতিনিধি photo গবি প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২৪-৯-২০২৩ দুপুর ১:৭
একটি দেশের স্বাস্থ্যসেবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে ফার্মাসিস্টরা। কিন্তু দিনশেষে নেই তাদের যোগ্য কর্মসংসস্থান। ফার্মাসিস্টদের একটি বিশেষ দিন 'বিশ্ব ফার্মাসিস্ট দিবস।' ২০১৪ সালে বাংলাদেশে প্রথম এই দিবসটি পালন করে সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়। সেই সময় এ প্রতিষ্ঠান থেকে ফার্মেসি সম্পন্ন করা শিক্ষার্থীরা এই যুগের ফার্মাসিস্টদের অবস্থান নিয়ে কি ভাবছেন তা তুলে ধরছেন ইভা আক্তার
 
'ফার্মাসিস্টের ব্যাপ্তি বিশাল, প্রয়োজন সর্বোচ্চ পর্যায়ে কাজে লাগানো' 
 
স্বাস্থ্যসেবার মূল বিষয় হলো "রোগ-ঔষধ তত্ত্ব " অর্থাৎ রোগ হলে ঔষধ গ্রহণ করতে হবে। রোগ নির্ণয়ের পর রোগী যে ঔষধ গ্রহণ করবেন তা একজন ফার্মাসিস্টের ফর্মুলা অনুযায়ী তৈরি। আর এই ঔষধ গ্রহণের মাত্রা, এর কার্যকারিতা, সঠিক ব্যবহার ও পার্শ্বপতিক্রিয়া নির্ধারণ করবেন একজন ফার্মাসিস্ট। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) পরামর্শ অনুযায়ী, সুচিকিৎসা পেতে হলে চিকিৎসক, ফার্মাসিস্ট, নার্স ও টেকনোলজিস্টের সমন্বয় প্রয়োজন। কিন্তু, দেশের হাসপাতালগুলোতে ফার্মেসী ডিগ্রীধারীর জন্য 'হসপিটাল ফার্মেসি' কার্যক্রম পরিচালনার তেমন কোন সুযোগ নাই। দেশে পর্যায়ক্রমে সব সরকারি, বেসরকারি ও কমিউনিটি হাসপাতালে ফার্মেসী ডিগ্রীধারীর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধান জরুরী। এছাড়া, ঔষধ শিল্পে রপ্তানির প্রতিটি ক্ষেত্রে এদের ভূমিকা অনস্বীকার্য । সৌন্দর্যশিল্পের বিভিন্ন পণ্য উৎপাদনেও তাঁদের গবেষণা মূল ভুমিকা রাখে। ফলে ভোক্তাদের হাতে পৌঁছে যায় নিরাপদ পণ্য। তাই ফার্মাসিস্টদের জ্ঞান ও দক্ষতা সর্বোচ্চ পর্যায়ে কাজে লাগানো এখন সময়ের দাবী।
 
শাহরিয়ার আরিফিন
নির্বাহী পরিচালক 
রিমার্ক এইস বি লিমিটেড
সাবেক শিক্ষার্থী, ফার্মেসি বিভাগ 
গণ বিশ্ববিদ্যালয়। 
 
'আগামীদিনের স্বাস্থ্যসেবার ফার্মাসিস্টের নেতৃত্বের সুযোগ দিতে হবে'
 
কোভিড-১৯ মহামারীতে বিশ্বব্যাপী চিকিৎসা ব্যবস্থা এক অভূতপূর্ব চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছিল। যা বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার দুর্বলতাও প্রকাশ করে দিয়েছে। এতে, ফার্মেসি সহ অন্যান্য স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত পেশাগুলির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পুনঃপ্রতিষ্ঠা হয়েছে। ভবিষ্যতের ফার্মাসিস্টগণকে পরিবর্তনশীল চিকিৎসার চাহিদা মোকাবিলার উপযোগী করে গড়ে তুলতে যুগোপযোগী ফার্মেসি শিক্ষার ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। দ্রুত মানিয়ে নেওয়ার সক্ষমতা, টেলিফার্মাসির দক্ষতা ও ডিজিটাল স্বাস্থ্য সেবার মিশ্রণ ঘটাতে হবে পাশাপাশি পাবলিক হেলথ অ্যাডভোকেসি আন্তঃবিভাগীয় সহযোগিতা এবং নৈতিক বিবেচনাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। এই মৌলিক বিষয়গুলোকে আয়ত্ত করতে পারলে ভবিষতে ফার্মেসী শিক্ষা এমন ফার্মাসিস্ট তৈরি করবে যারা নিজেদেরকে আগামীদিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায়, স্বাস্থসেবার ব্যবস্থায় নেতৃত্ব দিতে পারবে।
 
ড. পীযুষ কুমার পাল 
সহকারি অধ্যাপক, ফার্মেসি বিভাগ 
গণ বিশ্ববিদ্যালয়।
(শিক্ষা ছুটিতে )
বর্তমানে,
পোস্টডক্টরাল রিসার্চ ফেলো 
ড্রাগ ডেলিভারি সিস্টেম এক্সসিলেন্স সেন্টার 
ফ্যাকাল্টি অফ ফার্মাসিউটিক্যাল সাইন্সেস 
প্রিন্স অফ শংখলা বিশ্ববিদ্যালয় , থাইল্যান্ড।
 
'স্বাস্থ্যসেবায় ফার্মাসিস্টদের দু:খ উপযুক্ত খাতের স্বল্পতা'
 
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ফার্মাসিস্টদের খুব বেশি সুবিধা নেই। দেশের ফার্মাসিস্টরা বলতে গেলে অভিভাবকহীন। অন্যান্য প্রফেশনে যেমন গাইড করার মতো লোক থাকে আমাদের ফার্মেসিস্টদের গাইড করার তেমন লোক থাকে না। মোটামুটি বলা যায় যে, ২০০০-২০০৫ সাল পর্যন্ত এর একটা চাহিদা ছিল। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন কর্তৃক অনুমোদন সাপেক্ষে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে এর সুদূরপ্রসারী যুগ শুরু হয়। সে সময়ে শুধুমাত্র তিনটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ফার্মেসি পড়ানোর অনুমোদন ছিল। গণ বিশ্ববিদ্যালয়, এশিয়া প্যাসিফিক ও ইউএসটিসি। এখন এমন কোন বিশ্ববিদ্যালয় নেই যেখানে ফার্মেসি পড়ানো হয় না। এমন ও অনেক বিশ্ববিদ্যালয় আছে যাদের ল্যাবের সুবিধা নেই, ইন্টার্নি করার সুযোগ-সুবিধা নেই। তারপরেও তারা পড়িয়ে যাচ্ছে যার জন্য দিনশেষে বের হচ্ছে হাজার ফার্মাসিস্ট কিন্তু নেই তাদের কোন কর্মসংস্থান। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ফার্মেসি পাশ করার পরে কাজ করবে ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিতে, পিএমবি তে অথবা ফ্যাক্টরিতে। বিদেশের মতো বাংলাদেশেও হসপিটাল ফার্মেসি বা কমিউনিটি ফার্মেসি চালু হওয়া জরুরি। স্বাস্থ্যখাতে ফার্মাসিস্টদের যে ভূমিকা সেটা দুঃখজনক হলেও সত্যি যে ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি ছাড়া হসপিটাল বা অন্য ক্ষেত্রে ফার্মাসিস্টদের কোনো ভূমিকা নাই।
 
সেখ মোঃ আলমগীর কবির 
সিনিয়র ম্যানেজার, 
সাপ্লাই চেইন এন্ড হসপিটাল ম্যানেজমেন্ট
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র
সাবেক শিক্ষার্থী, ফার্মেসি বিভাগ
গণ বিশ্ববিদ্যালয়।

এমএসএম / এমএসএম