ঢাকা বৃহষ্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪

নিজে কিছু করবার তাগিদ থেকেই মমতাজ সুলতানার উদ্যোক্তা জীবন


তানভীর সানি  photo তানভীর সানি
প্রকাশিত: ১১-১১-২০২৩ দুপুর ৩:৪১

ছোটবেলায় ভুল চিকিৎসায় বাবার মৃত্যুর পর চিকিৎসক হতে চেয়েছিলেন মমতাজ সুলতানা। এরপর কৈশোরে এসে নিজে কিছু করার ইচ্ছে জন্ম হয়। তখন তিঁনি কবিতা লিখতে শুরু করেন। দেয়াল পত্রিকা, স্কুল ম্যাগাজিন, সাংগঠনিক পত্রিকায় নিয়মিত তাঁর লেখা বের হতো। কলেজে থাকতে মমতাজ সুলাতানার একুশে বইমেলায় ২০০৫-২০০৭ সালে কবিতার বই বের হয়, নাম ছিলো ‘চোখের জলে লিখা’। মমতাজের লেখালেখি করতে পছন্দ, সেইসাথে ছবি আঁকতেও ছোটবেলা থেকে পছন্দ করেন। চারুকলায় পড়ার ইচ্ছে ছিলো, কিন্তু হয়ে উঠেনি। চাকরির বাধ্যবাধকতা তাঁকে টানতো না, সবসময়েই ভাবতেন নিজে একটা ব্যবসা করবো। যেখানে পুরোটাই থাকবে ব্যক্তি স্বাধীনতা। অবসর সময়ে নানান কিছু শিখতেন। নিজে কিছু করবো অন্যদেরও সাহায্য করবো -এই তাগিদটা মমতাজ সুলতানার সবসময় ছিলো। 


নিজে কিছু করবার তাগিদ থেকেই মমতাজ সুলতানার উদ্যোক্তা জীবনের পথচলা ২০১৬ সাল থেকে। এরপর ২০১৯ সালে অনলাইনে প্রতিষ্ঠা করেন Tajnurhir অর্থ পৃথিবী জয়ী আলোকিত মুকুট। শুরুর ১ মাসের মধ্যেই প্রথম অর্ডার আসে এরপর আর থেমে থাকতে হয়নি। ধীরে ধীরে অনলাইন-অফলাইন সব জায়গা থেকেই অর্ডার আসতে থাকে তাঁর প্রতিষ্ঠানটিতে। শুরুতে তাঁর প্রতিষ্ঠানে শাড়ি, কামিজ, ব্লাউজ পিস, বেবিদের ফতুয়ার অর্ডার আসতো। তবে বাবা-ছেলের ম্যাচিং করা টি-শার্ট বেশ জনপ্রিয়তা পায়।

কাজ করছেন বিলুপ্ত প্রায় লাল কদম নিয়ে। কদমের টি-শার্ট, কামিজ, শাড়িও বেশ জনপ্রিয়তা পায়। বর্তমানে তাঁর প্রতিষ্ঠানের সিগনেচার পণ্য শাড়ি। মমতাজ সুলতানা তাঁর উদ্যোগ সম্পর্কে দৈনিক সকালের সময়কে বলেন, মূলত স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসি এবং স্বপ্ন দেখাতেও ভালোবাসি। আমি বিশ্বাস করি প্রতিটি মানুষের মনে কোনো না কোনো বিষয়ে দক্ষতা আছে। মানুষ যে কাজটা করতে ভালোবাসে, যে কাজে তার দক্ষতা আছে সেই বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী হয়ে লেগে থাকলে সফলতা আসবেই। এজন্য অদম্য ইচ্ছে শক্তি ও প্রচুর ধৈর্য্য দরকার।


মমতাজ সুলতানা বলেন, কোভিডের সময়টা বেশ ধৈর্যের পরীক্ষা দিতে হয়। তখন নারীদের নিয়ে কাজ করা একটি অনলাইন প্লাটফম উই’য়ে সংযুক্ত হই এক আপুর মাধ্যমে ২০২০ সালের জুলাইয়ে। এরপর উদ্যোক্তা জীবনের পথচলাটা অনেক সহজ হয়। গ্রুপটা যেন আমার নিজের একটি পরিবার। বিভিন্ন ধরনের ট্রেনিং করে নিজের স্কিল ডেভলপমেন্ট এর মাধ্যমে নিজের উদ্যোগকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। বাঁধা হয়েছে আমার অসুস্থতা। ২০২০ এ ধরা পড়ে পাকস্থলীতে টিউমার, ফ্যাটিলিভার। ঐ বছরই এন্ডোসকপির মাধ্যমে কেটে ফেলা হয় ৫ টি টিউমার। এখন পর্যন্ত ৫ বার এন্ডোসকপি করা হয়। তবে, আমাকে থামিয়ে রাখা সম্ভব হয়নি। বরং হাতে হয়তো সময় কম! এইভেবে কাজে আরোও সময় দেই বেশি।

বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সেম্পল পাঠাই। সেখান থেকে সিলেক্ট হয় ডাকও পাই। তারা ভীষণ পছন্দ করেন আমার ডিজাইন ও কাজের স্মুথনেস বা ফিনিশিং। উন্নতমানের রং ও কেমিক্যাল ব্যবহার করি। কাপড় ভেদে রঙ তৈরি করি আমি নিজেই। তাই প্রতিটি মসলিন শাড়িই হয় লাইট ওয়েটের। কাস্টমাররা কাজের ডিজাইন ফিনিশিংয়ের প্রশংসা করেন বেশি। তাই রিপিট ক্রেতা পাই অনেক। মূলত, রঙতুলির আঁচড়ে দেশকে, দেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে পোশাকে তুলে ধরার চেষ্টা করে Tajnurhir। বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত আমাদের কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের তীরে সাগরলতা ফুলকে নিয়ে সমুদ্র থিমের শাড়ি আঁকি এবং প্রথম শাড়িটাই কানাডার নোভা আপুকে ক্রেতা হিসেবে পাই। এভাবে বিভিন্ন দিবসকে কেন্দ্র করে,ঐতিহ্যবাহী স্থানগুলোকে আকার মাধ্যমে পোশাকে দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও তুলে ধরার চেষ্টা করে Tajnurhir। 

দেশের ভেতর ও দেশের বাইরে আমাদের প্রচুর  চাহিদা সম্পন্ন মার্কেট ভ্যালু রয়েছে। আমি নিজেই ডিজাইন তৈরি করি এবং নিজেই আঁকি। Tajnurhir এর প্রতিটি পণ্যই তার নিজস্ব ক্রিয়েশন। রিসেন্ট হোমডেকোর প্রোডাক্ট নিয়েও কাজ করছি। এরমধ্যে, ক্যানভাস,ওয়াল হ্যাঙ্গিং মিরর ওয়ার্ক আয়না, শো-পিস সংযুক্ত করেছি। আমাদের পেজটা পুরোটাই অনলাইন কেন্দ্রিক। ইচ্ছে আছে ভবিষ্যতে একটি শো-রুম দেয়ার। 


সফলতা নিয়ে মমতাজ বলেন, ৩ বছরের এই উদ্যোক্তা জীবনের অক্লান্ত পরিশ্রমে উপার্জিত আয়ে মায়ের সেই সুপ্ত স্বপ্ন, মা'কে হজে পাঠাতে পেরেছি। অপেক্ষায় আছি বাবার শেষ ইচ্ছে টা বাস্তবায়িত করার।


মমতাজ সুলতানা বছরে আয় করছেন প্রায় ৬ লাখ টাকা। তাঁর মায়ের নাম মৃত রোকেয়া সুলতানা ও বাবা মৃত মাহবুবার রহমান। হিউম্যান এন্ড রিসোর্স এর উপর এমবিএ করছেন। তাঁর স্বামীর নাম নূর-ই আলম তিনি পেশায় একজন বিসিএস ক্যাডার সরকারী কর্মকর্তা। আদরের একমাত্র ছেলের নাম মুন্তাসির আলম মাহির দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়াশোনা করছে। বর্তমানে বসবাস করছেন ঢাকার উত্তরায়।

 

Sunny / Sunny

অপরাজিতায় কবিতার শাড়ি 

ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতকে শক্তিশালী করতে এসএমই ফাউন্ডেশন ও অক্সফ্যাম একসাথে কাজ করবে

ঈদ ফ্যাশন ফিক্সেশন এর উদ্বোধন

ভর্তার স্বাদ ও সাতকাহন 

মাসরুমের গুরুত্ব ও মাশরুমের উৎপাদন কৌশল শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালা

আমার মমতাময়ী মা 

শেষ হলো আইডিয়া পিচিং কম্পিটিশন ক্রিয়েভেঞ্চার ৩.০

ছোট উদ্যোক্তা থেকে বড় উদ্যোক্তা হওয়ার প্লার্টফর্ম সম্পূর্ণা বাংলাদেশ

টিকটকে যে নারীরা অনুপ্রেরণা যোগায়

চল্লিশেই সফল ব্যবসায়ী- নিয়াজ মোর্শেদ এলিট

ইপি-উদ্যোক্তা প্ল্যাটফর্ম এর বিভিন্ন জেলায় পুষ্পস্তাবক অর্পণ - 

সম্পূর্ণার দ্বিতীয় চেইন শপের উদ্বোধন

অপরাজিতার পোশাকে কথা, কবিতা ও বর্ণমালার আয়োজন