শিবচরে জেঁকে বসেছে শীত, বেড়েছে খেটে খাওয়া মানুষের দূর্ভোগ
দ্বিতীয় দিনের মতো দেখা নেই সূর্যের। শীত বেড়েছে আরও। সূর্যের দেখা না পাওয়া আর উত্তরের বাতাসে বাড়াচ্ছে শীতের প্রকোপ! দূর্ভোগ বেড়েছে শিবচরে জনজীবনে। শীতের তীব্রতায় উপজেলার বিভিন্ন চরাঞ্চলের মানুষের দৈনন্দিন কাজ ব্যহত হচ্ছে। গবাদি পশু নিয়ে নিয়ে বিপাকে রয়েছে স্থানীয়রা। একই সাথে বেড়েছে শীতজণিত রোগও।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁ নদী বেষ্টিত শিবচর উপজেলার ১৯ টি ইউনিয়ন ও ১ টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত এক উপজেলা। উপজেলার পদ্মানদীর তীরবর্তী রয়েছে ৪ টি ইউনিয়ন। বন্দরখোলা, মাদবরেরচর, কাঁঠালবাড়ী এবং চরজানাজাত এলাকার চরে বসবাসরত মানুষ তীব্র শীতে পড়েছে চরম বিপাকে। ওইসকল এলাকার কৃষক, জেলেরা তীব্র শীতে স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে ব্যর্থ হচ্ছে বলে জানিয়েছেন। গবাদি পশু নিয়েও রয়েছেন বিপাকে। বৃদ্ধ ও শিশুদের বেড়েছে শীত জণিত রোগের প্রকোপ। এছাড়া উপজেলার চরাঞ্চলসহ নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষের দূর্ভোগ আরও বেড়েছে।
আলাপকালে একাধিক ভ্যান চালক জানান,'শীতের তীব্রতায় ভ্যান চালানো যেমন কষ্টকর হয়ে উঠেছে, তেমনি সাধারণ যাত্রীরাও শীতের কারণে ভ্যানে চরতে চান না। শুক্রবার থেকে সূর্য উঠে নাই। তীব্র শীতে দূর্ভোগ বেড়েছে। কমেছে আয়-রোজগারও।'শিবচরের দ্বিতীয় খন্ড ইউনিয়ন এলাকার ভ্যান চালক নাসির গোমস্তা নামের এক ব্যক্তি জানান,'দুইদিন ধরে প্রচন্ড শীত পড়েছে। ঠিকমত কাজকর্ম করা যাচ্ছে না। এরকম কয়েকদিন চলতে থাকলে আয়- রোজগারও কমে যাবে।'
উপজেলার চর এলাকার একাধিক বাসিন্দা জানান,'নদীর পাড়ে বাতাস বেশি থাকায় শীতও বেশি। ফসলের ক্ষেতে কাজ করতে ভীষণ কষ্ট হচ্ছে। গরু-ছাগল নিয়ে দূর্ভোগ দেখা দিয়েছে চর এলাকায়। অনেকে শীতবস্ত্রের অভাবেও রয়েছে।'উপজেলার কুতুবপুর বাজারের দোকানি মনির বলেন,' দুদিন ধরে শীত বেড়েছে। সকাল এবং দুপুরের পর শীত আরও বাড়ে।বাজারে লোকজন কম আসে। বেঁচাকেনাও কম!'
এদিকে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে,'শীতে হাসপাতালে শীতজণিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বিশেষ করে শিশুরা ঠান্ডাজণিত রোগে আক্রান্ত বেশি হচ্ছে। প্রতিদিনই শিশুদের নিয়ে ভিড় করছেন স্বজনেরা।
শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত সেবিকা পরশমনি জানান,'গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতালে ১৮ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। এদের মধ্যে ১০ জন ডায়রিয়া। বাকী ৮ জন ঠান্ডাজণিত রোগ। এছাড়া সকাল থেকে আউটডোরে ঠান্ডাজণিত অনেক রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন।'
এদিকে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য সরকারি ভাবে দুই দফায় কমপক্ষে ৪ হাজার পিচ শীতবস্ত্রের বরাদ্দ হয়েছে বলে উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে। এছাড়া চলতি মাসে আরও বরাদ্দ হবে। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে এসকল শীতবস্ত্র বিতরণ করা হবে।'
এছাড়া শীতে বেসরকারি ভাবে, ব্যক্তি উদ্যোগেও উপজেলার বিভিন্ন স্থানে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন,'সরকারি ভাবে দুই দফায় ৪ হাজারের মতো শীতবস্ত্র এসেছে। এ মাসে আরও শীতবস্ত্র আসবে। এগুলো যথাযথ ভাবে বিতরণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।'
এমএসএম / এমএসএম