সোমালিয়ানদের রোজা

সোমালিয়া উত্তর–পূর্ব আফ্রিকার একটি দেশ। আফ্রিকা মহাদেশের মধ্যে সোমালিয়ারই রয়েছে সবচেয়ে বিস্তৃত সমুদ্র তটরেখা। চরম দরিদ্র ও অর্থসংকটের জাঁতাকলে বেড়ে ওঠা একটি ভাগ্যবিড়ম্বিত জনপদ এটি। শিক্ষা–সংস্কৃতিতে তারা অনেকটাই দুর্বল। সেই দারিদ্র্যপীড়িত মানুষগুলোর কাছেও রমজান আসে। তাঁরাও ইফতার করেন, তারাবিহ পড়েন ও সাহ্রিতে বাহারি খাবার উপস্থিত করতে পছন্দ করেন।
রমজানের চাঁদ দেখার জন্য উচ্ছ্বাসমুখর পরিবেশে দল বেঁধে তাঁরা খোলা স্থানে অবস্থান করেন। সে দেশের নিয়ম হলো প্রতিটি এলাকায় চাঁদ দেখতে হবে। অন্য এলাকার চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করলে হবে না। তাঁরা প্রতিদিন মাগরিবের পর উচ্চ গলায় পরদিন রোজার নিয়ত করেন এবং এটা বেশ উল্লাসের সঙ্গে করেন।
সোমালিয়ানরা দরিদ্র হলেও রোজার মাসে আভিজাত্য ধরে রাখার চেষ্টা করেন ইফতার, সাহ্রি ও তারাবিহতে। ইফতারের পর আর কোনো খাবার গ্রহণ করেন না। তাঁদের ইফতারের টেবিলে সাধারণত উটের গোশত ও দুধ দিয়ে তৈরি বিভিন্ন পদ থাকে। খেজুর, সমুচা, শরবত তো আছেই। তাঁদের একটি বিখ্যাত খাবার ওটকা। যা মূলত উটের গোশতের শুঁটকি। এটিও ইফতারের টেবিলে সাজানো থাকে।
সোমালিয়ানরা রাতের মূল খাবার গ্রহণ করেন এশা ও তারাবিহর পর। তারাবিহ পড়ে মসজিদ থেকে ফিরে এসে গ্রহণ করেন রাতের খাবার। রাতের খাবারের শীর্ষ পদ হলো আনবোলা। এটি তাঁদের ঐতিহ্যবাহী খাবার। আনবোলা রান্নায় তাঁরা অনেক সময় ব্যয় করেন। আনবোলা প্রস্তুত করতে প্রয়োজন পড়ে মাখন, চিনি ও চালের সঙ্গে মিশ্রিত মটরশুঁটি।
এরপর তা তিন থেকে পাঁচ ঘণ্টা আগুনে রাখা হয় যাতে কাঙ্ক্ষিত স্বাদ ও ঘ্রাণ আসে। উনুন থেকে নামানোর পর আবার কিছু চালের গুঁড়া, মাখন ও চিনি ছড়িয়ে দেওয়া হয়। সাহ্রিতে আনবোলাই সবার প্রথম পছন্দ। এ ছাড়া তাঁরা চাল দিয়ে নানা ধরনের খাবার প্রস্তুত করেন। চাল দিয়ে প্রস্তুত করা খামিরে মসলা ও ভেষজ মাখিয়ে তৈরি করে আরেক ধরনের খাবার। সেটাতেও কখনো আবার গোশত অথবা মাছ যোগ করেন।
এলাচি ও দুধে তৈরি জিলাতিয়া হালুয়া মিশিয়ে রুটি খাওয়াও বহু সোমালিয়ানের পছন্দ। তাঁরা নানা পদের হালুয়া তৈরি করেন। সোমালিয়ার দক্ষিণের অঞ্চলগুলোয় একসালুছুমালি খুব জনপ্রিয় খাবার। এটি তৈরি হয় বিভিন্ন ধরনের বাদাম ও তেল দিয়ে।
সোমালিয়ানদের ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে রমজান মাসজুড়ে মসজিদগুলোয় মাহফিল চলে। কোথাও হাদিসের, কোথাও কোরআনের, কোথাও মাসআলা–মাসায়েলের পাঠদান চলতে থাকে। কোনো মসজিদে তারাবিহর আগে হয়, কোনোটায় আবার তারাবিহর পড়ে হয়। সোমালিয়ানদের প্রথাগত নিয়ম, ইফতার করে কেউ আর বাড়িতে অবস্থান করেন না।
নারী-পুরুষ, ছোট-বড়, যুবক-বৃদ্ধ—সবাই তারাবিহর জন্য প্রস্তুত হয়ে যান। অধিকাংশ মসজিদে খতমে তারাবিহ হয়। ব্যক্তিগত বা পারিবারিক আয়োজন ছাড়া সুরা তারাবিহ হয় না। সোমালিয়ান সমাজের সাধারণ শিক্ষার হার কম থাকলেও কোরআনে হাফেজ আছেন ঘরে ঘরে। তাঁরাও ২৭তম তারাবিহতে কোরআন খতম করেন।
Israt / Israt

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী ৬ সেপ্টেম্বর

কোরআনে কল্যাণের পথে অগ্রগামী বলা হয়েছে যাদের

মন্দ কাজ থেকে নিজেকে বাঁচাবেন যেভাবে

কৃতজ্ঞতা প্রকাশে জীবন-জীবিকার প্রশস্ততা

কিবলা পরিবর্তনের নির্দেশ এসেছে কোরআনের যে আয়াতে

মানুষের ওপর আল্লাহর রহমত নিয়ে যা বলেছেন মসজিদুল হারামের খতিব

পবিত্র আশুরা আজ

আশুরার রোজা কবে-কয়টি রাখতে হবে

কারবালার মর্মান্তিক ইতিহাস ও শিক্ষা

পবিত্র হজ আজ, লাব্বাইক ধ্বনিতে মুখরিত আরাফা

কোরবানির পশু জবেহ করার বিধান

লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক ধ্বনিতে মুখরিত মিনা
