মধুপুর উপজেলা নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগে নির্বাচনী ফলাফল বাতিল করে পুনঃনির্বাচনের দাবি
৮ মে অনুষ্ঠিত প্রথম ধাপের টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সাবেক কৃষিমন্ত্রীর সর্বোচ্চ প্রভাবে সুক্ষ কারচুপি অনিয়ম করে ফল পরিবর্তন করা হয়েছে। নির্বাচনোত্তর সহিংসতায় মধুপুরের বিভিন্ন স্থানে কর্মি ভোটারগণ নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। দোকান পুকুরের মাছ লুটপাট, ক্ষেতের ফসল লুট, অটোভ্যান ছিনতাই, মেরে হাত পা ভেঙ্গে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এসব হচ্ছে টাঙ্গাইল -১ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য সাবেক কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাকের মদদে। এমন অভিযোগ করেছেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রতিদ্বন্দী প্রার্থী ছরোয়ার আলম খান আবু।
শনিবার দুপুরে নিজ বাস ভবনের নিচ তলার নির্বাচন পরিচালনার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এমন অভিযোগ করেছেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে ছরোয়ার আলম খান আবুর পাশে সাবেক মেয়র উপজেলা আ’লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাসুদ পারভেজ, উপ প্রচার সম্পাদক মোহসীনুল কবির, সদস্য আব্দুল বাছেদ, ব্যবসায়ী নেতা মীর জহির উদ্দির বাবর, খন্দকার মনিরুল ইসলাম লাবু, সাবেক ছাত্র নেতা মেহেদী হাসান রনি, আমিনুল ইসলাম বাবলু উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে ছরোয়ার আলম খান অভিযোগ করেন, নির্বাচনের ফলাফললে সাবেক মন্ত্রী ড.মো. আব্দুর রাজ্জাক সর্বোচ্চ প্রভাব খাটিয়েছেন। তার পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে নগ্নভাবে প্রশাসন যন্ত্রকে ব্যবহার করেছেন। যাবতীয় ত্রুটি বিচ্যুতি এবং অনিয়মের অভিযোগে এই অবৈধ ফলাফল প্রত্যাখান করে নির্বাচনী ফলাফল বাতিলসহ পুনঃনির্বাচনের দাবি করেছেন।
দোয়াত কলমের প্রতিদ্বন্দী প্রার্থী ছরোয়ার আলম খান আবু বলেন, নির্বাচনের পরের দিন উপজেলা আ’লীগ কার্যালয়ের সামনে ড. আব্দুর রাজ্জাকের বক্তব্যের পর মধুপুরে আনারসের কর্মীরা আমার কর্মী, নিরীহ ভোটার ও জন সাধারণের উপর সন্ত্রাসী হামলা শুরু করেছে। আকাশী গ্রামের মা-ছেলেকে প্রহার, মির্জাবাড়ি ইউনিয়নে লেংড়া বাজারে আব্দুল হালিমের ছেলে আজমীর ও কুড়াগাছা ইউনিয়নে শরীফের হাত-পা ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। মির্জাবাড়ি বাজার থেকে অফিসের আসবাবপত্র লুট, কয়েকটি দোকান বন্ধ করে দেয়া এবং শামীম ‘স’ মিলের শামিমকে না পেয়ে তার ছোট ভাই মুকুলকে মারধর করা হয়েছে। মহিষমারা নেদুর বাজার, আশ্রায় কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দেওয়া হচ্ছে, কুড়ালিয়া ইউনিয়নে ধলপুরে আসাদুল এবং আজগরের মাথায় আঘাত করে মাথা ফাটিয়ে ফেলেছে। আলোকদিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মমিনকে নির্মম ভাবে প্রহার করা হয়েছে। গোলাবাড়ি ইউনিয়নে শ্রীরাম বাড়িতে অটোরিক্সা হাইজাক এবং আল-আমীনের বাড়িতে আক্রমন করে ভাংচুর করা হয়েছে। মাঝিরার মহির প্রহারে আহত হয়েছে। গোলাবাড়ি এন্টারপ্রাইজ এর মালিক রিপনের দোকান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং ইমাম মিলিটারিকে মারধর করা হয়েছে। মধুপুর পৌর শহরের বিশ্বনাথ ঘোষের এপেক্সের শো রুম থেকে জুতা, কানন মিষ্টি ঘর থেকে২০/২৫ হাজার টাকার মিষ্টি লুট করার কথা জানান তিনি। শহরের কানন কাবাব ঘর থেকে ১৫/২০ হাজার টাকার খাবার বিনা বিলে খেয়ে চলে গেছে। অরণখোলা ইউনিয়নে মজি মেম্বারের কলা বাগান কেটে ফেলা হয়েছে। বেরিবাইদ ইউনিয়নের জলছত্র স্পোর্টিং ক্লাবে ভাংচুর তালা মেরেছে, গোলাবাড়ি ইউনিয়নের মজনুর পুকুর থেকে মাছ তুলে নিয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় এক কর্মীর ভাই শাহিনকে মধুপুর আসার পথে শহীদ স্মৃতি মোড়ে মারধর করা হয়েছে।
ছরোয়ার আলম খান আবু জানান, নির্বাচনোত্তর ঘটনা ২০০১-২০০৫ সালের জামাত-বিএনপির নৈরাজ্যকেও হার মানিয়েছে। আবু খান নিরীহ জনমানুষের শান্তি এবং নিরাপত্তার জন্য আশু আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে সংশ্লিষ্ট সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ ও কর্মী,ভোটার জনগণের পাশে দাড়ানোর আহবান এবং ঘটনার সাথে জড়িত সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন।
এমএসএম / এমএসএম