ঢাকা সোমবার, ২৫ আগস্ট, ২০২৫

বিএসএমএমইউ হাসপাতাল কেনাকাটায় নয়-ছয়


সাজেদুর রহমান photo সাজেদুর রহমান
প্রকাশিত: ২৫-৫-২০২৪ রাত ৮:৪১

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) পেডিয়াট্রিক ডেন্ট্রিস্ট্রি বিভাগে ওটি চিকিৎসায় ডেন্টাল ইউনিটের মালামাল এবং চেয়ারম্যানের কক্ষের আসবাবপত্র কেনাকাটায় ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, ২০২৪-জানুয়ারির ফেইজ-বি ফাইনাল পরীক্ষার পরীক্ষক কমিটি গঠনেও অনিয়ম হয়েছে বলে জানা গেছে। এসব অনিয়মের বিষয়ে গত ৪ এপ্রিল থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত পেডিয়াট্রিক ডেন্ট্রিস্ট্রি বিভাগের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিএসএমএমইউ’র ভাইস চ্যান্সেলরের দপ্তরে ৩টি অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই বিভাগের এক সহযোগী অধ্যাপক। পিপিআর-২০০৮ অনুসরণ না করে ক্রয় কমিটির প্রধানকে অন্ধকারে রেখে শুধুমাত্র নিজস্ব লোক দিয়ে চিকিৎসার যন্ত্রপাতি ও আসবাবপত্র কেনাকাটার কারণে বিভাগীয় চিকিৎসকদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

ভাইস চ্যান্সেলরের দপ্তরে গত ৪ এপ্রিল বিএসএমএমইউ’র পেডিয়াট্রিক ডেন্টিস্ট্রি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. এ এইচ এম জাকির হোসেন সিকদার লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, ২০১১ সালের ২৩ জুন থেকে ২০২৩ সালের ২৪ জুলাই পর্যন্ত পেডিয়াট্রিক ডেন্টিস্ট্রি বিভাগে আমি (ডা. জাকির) বিভাগীয় ক্রয় কমিটির সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করেছি। গত ২ জুলাই বিভাগের অফিস সহকারী সাহানা পারভীন ডেন্টিস্ট্রি বিভাগের চেয়ারম্যানের রুমে আসবাবপত্র ক্রয়ের জন্য আবেদন করেন। আমি ক্রয় কমিটির সদস্য সচিব। অথচ আমাকে বিষয়টি অবহিত না করে বিভাগীয় প্রধান ডা. নাজিয়া মেহনাজ দুর্নীতির উদ্দেশ্যে জিনিসপত্র ক্রয় করেন। বিষয়টি আইনি প্রক্রিয়া দেখানোর জন্য ডা. নাজিয়া মেহেনাজ ও অধ্যাপক ডা. আলী আসগর মোড়ল সম্পূর্ণ নিয়ম বহির্ভূতভাবে ২০২৩ সালের ২ জুলাই হতে ২২ জুলাই পর্যন্ত এক পাতার ভূয়া কার্যবিবরণিতে ৬টি ধাপে কার্যাদেশ প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ১৬ জুলাই কার্যাদেশ প্রদান করেন! সর্বোপরি ৩১ জুলাই আসবাবপত্রগুলো বুঝে নেন।

উল্লেখ্য, স্মারক নং-বিএসএমএমইউ/২০২৩/১০০২১, তারিখ-২৫ জুলাই ২০১৩ ইং অনুযায়ী একটি নতুন আদেশে তাকে (ডা. নাজিয়া) বিভাগীয় কমিটির সদস্য সচিব করা হয়। অথচ ২ জুলাই তারিখ থেকেই তিনি (ডা. নাজিয়া) নিজেই নিজেকে ক্রয় কমিটির সদস্য সচিব দেখিয়ে সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন। যা সম্পূর্ণ অবৈধ ও নিয়মবহিঃর্ভূত। ক্রয় কার্যক্রমের কোথাও আমাকে সম্পৃক্ত না করেও তিনি আসবাবপত্রের বিল প্রদান করেন। পিপিআর-২০০৮ অনুসরণ না করে এভাবে আসবাবপত্র ক্রয়ে বিভাগীয় চিকিৎসকদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

ভাইস চ্যান্সেলরের দপ্তরে গত ১৩ নভেম্বর দাখিল করা অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ২০১১ সালের ২৩ জুন থেকে ২০২৩ সালের ২৪ জুলাই পর্যন্ত পেডিয়াট্রিক ডেন্টিস্ট্রি বিভাগে আমি (ডা. জাকির) বিভাগীয় ক্রয় কমিটির সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করেছি। গত ১ জুলাই বিভাগের সিনিয়র স্টাফ নার্স জোহরা খাতুন বিভাগীয় চাহিদানুযায়ী একটি ডেন্টাল ইউনিট ক্রয়ের জন্য আবেদন করেন। আমাকে বিষয়টি অবহিত না করে বিভাগীয় প্রধান ডা. নাজিয়া মেহনাজ সম্পূর্ণ দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির উদ্দেশ্যে পিপিআর-২০০৮ অনুসরন না করে তার দেবর আক্তার হোসাইনের প্রতিষ্ঠান এমএমএম ট্রেড ইন্টারন্যাশনালয়ের মাধ্যমে উক্ত মেশিন স্থাপন করেন। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে ও আইনি প্রক্রিয়া দেখানোর জন্য ডা. নাজিয়া মেহেনাজ ও অধ্যাপক ডা. আলী আসগর মোড়ল সম্পূর্ণ নিয়ম বহির্ভূতভাবে গত ১ জুলাই থেকে ২৪ জুলাই পর্যন্ত ১ পাতার কার্যবিবরনিতে ৬টি ধাপে কার্যাদেশ প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন এবং ২৭ জুলাই কার্যাদেশ প্রদান করেন। এই সকল প্রক্রিয়ায় কমিটির অন্য কোন সদস্যকে অন্তর্ভূক্ত করা হয়নি। ক্রয় কার্যক্রমের কোথাও আমাকে সম্পৃক্ত না করেও তিনি বিল প্রদানের জন্য বিলের কপিতে স্বাক্ষরের জন্য আমার কাছে পাঠান। আমি বিশ্বাস করি এই ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিলে স্বাক্ষর করা আপনার নেতৃত্বের প্রতি অসম্মান করার শামিল। তাই এই রকম অনিয়ম করে আপন দেবরকে দিয়ে কার্যসম্পাদন করার অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়টি আপনার সদয় অবগতি ও পরবর্তী ব্যবস্থার জন্য বিনীত অনুরোধ করা হল।

বিএসএমএমইউ’র উপাচার্যের দপ্তরে দাখিলকৃত অভিযোগে বলা হয়, বিএসএমএমইউ’র ডেন্টাল অনুষদের অন্তর্গত পেডিয়াট্রিক ডেন্টিস্ট্রি বিভাগে রেসিডেন্সি প্রোগাম, জানুয়ারি-২০২৪ এর ফেইজ-বি ফাইনাল পরীক্ষার পরীক্ষক নিয়োগে অনিয়ম করা হয়েছে। উল্লেখ্য গত ১৮ সেপ্টেম্বর বিভাগীয় চেয়ারম্যান কর্তৃক ডীনের দপ্তরে পরীক্ষকগণের তালিকা পাঠানো হয়। তালিকায় পেডিয়াট্রিক ডেন্টিস্ট্রি বিভাগে যোগ্য শিক্ষক থাকা সত্ত্বেও বর্তমান চেয়ারম্যান ড. নাজিয়া মেহনাজ নিজেই সভাপতি ও সদস্য সচিব দুইটি পদেই স্বাক্ষর করেন এবং সদস্য হিসাবে সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. কামাল আবদুল্লাহ স্বাক্ষর করেন। অথচ ডা. মো. কামাল আবদুল্লাহ এই বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী অধ্যাপক হিসাবে যোগদান করেছেন গত ১৭ অক্টোবর; অর্থাৎ যোগদানের এক মাস আগেই তিনি বিভাগীয় পরীক্ষক কমিটির সদস্য হিসাবে স্বাক্ষর করেছেন! যা অসম্ভব। এমতাবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী বিভাগীয় পরীক্ষক কমিটি পূর্ণগঠন করে পরীক্ষক নিয়োগের জন্য উপাচার্যের হস্তক্ষেপ কামনা করেন ডেন্টিস্ট্রি বিভাগের এক সহযোগী অধ্যাপক।

অভিযোগ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করে বিএসএমএমইউ’র পেডিয়াট্রিক ডেন্ট্রিস্ট্রি বিভাগের চেয়ারম্যান ডা. নাজিয়া মেহনাজ বলেন, এসব অভিযোগের বিষয়ে আমি অবগত নই। যদি কেউ এগুলো করে থাকে তবে পদোন্নতি বঞ্চিত হয়ে প্রফেশনাল জেলাসি থেকে করেছে বলে আমার বদ্ধমূল ধারণা। কারণ, নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে বিএসএমএমইউ’তে কেনাকাটার কোনও সুযোগ নেই। বিভাগের চেয়ারম্যান হিসেবে সব নিয়ম মেনেই ডেন্ট্রিস্ট্রি বিভাগে ওটি চিকিৎসায় ডেন্টাল ইউনিটের মালামাল এবং চেয়ারম্যানের কক্ষের আসবাবপত্র কেনাকাটা করেছি। যা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অবগত আছেন। কোনও একটি পক্ষ উদ্দেশ্যমূলকভাবে এ ধরণের প্রপাগান্ডা ছড়াচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি।

বিষয়টি নিয়ে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডাঃ দীন মোঃ নুরুল হকের সঙ্গে সরাসরি ও  মুঠোফোনে একাধিকবার কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি। যদিও ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডাঃ দীন মোঃ নুরুল হকের পিএস (১) মোঃ আমিনুল ইসলাম পলাশ সকালের সময়কে বলেন, বিষয়টি নিয়ে ভাইস চ্যান্সেলর স্যারের বরাবর অভিযোগ এসেছে। স্যার প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।

এমএসএম / এমএসএম

গণপূর্তের ইএম কারখানা বিভাগে নির্বাহী প্রকৌশলী মো: ইউসুফের দুর্নীতির রাজত্ব

দুর্নীতিতে পিছিয়ে নেই এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলীগন

‘এনবিআর’এ স্বৈরাচার সরকারের পালিয়ে থাকা চক্রের চক্রান্ত

প্রাণ ধ্বংসকারী কোম্পানি প্রাণ

বিসিএসআইআরের ৬ কোটি টাকার যন্ত্রপাতি কেনায় ভাগ বাটোয়ারা

কোতোয়ালীতে অপহৃত ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার

রেজিস্ট্রি অফিসের প্রভাবশালী নকলনবিশের কাণ্ডঃ মন্ত্রীদের প্রভাবে চাঁদাবাজি ও নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ

বিসিক এর নীরিক্ষা কর্মকর্তা সাবধান আলী হতে সাবধান!

কেরানীগঞ্জ উপজেলার রাজাবাড়ী রোডে অবৈধ এলপিজি বটলিং প্লান্ট এর সন্ধান

গডফাদার মুরাদ জং-এর বোন পরিচয়ে দলিল দাতা-গ্রহীতাদের জিম্মি করার অভিযোগ

গাজীপুরের কাশিমপুরে সরকারি খাস জমি ভূমিদস্যুদের দখলে

বগুড়ায় সাবেক অফিস সহকারীর বিরুদ্ধে 'ফ্যাসিস্ট সিন্ডিকেটের' মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের আইন যেন শুধু খাতা কলমে