অকার্যকর সরকারী বদলী নীতিমালা!
উপমহাব্যবস্থাপক সরোয়ার হোসেন এর দুর্নীতিতে ডুবছে বিসিক!

রাহুর কবলে পড়েছে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন (বিসিক)। এই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা নানা কৌশলে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অংকের টাকা। সেই টাকায় তারা রাজধানীতে বাড়ী,গাড়ি,প্লট,ফ্ল্যাট এমন কি বড় বড় শপিং মলে শোরুম কিনে নামে-বেনামে ব্যবসা বাণিজ্যও করছেন। তাদের জীবনযাত্রা দেখলে বিস্মিত হতে হয়। তারা মন্ত্রণালয়ের কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে বছরের পর বছর একই দপ্তরে চাকুরী করে যাচ্ছেন। চেয়ারম্যান বদল হলেও তাদের বদলী হয়না।
সরকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বদলী বিষয়ে ২২ মে ১৯৮৩ সালের মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত যা ১৩ জুন ১৯৮৩ তারিখে ইডি/এস এ ১-১৩/৮৩-২৫৭(১০০)স্মারকে জারীকৃত প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ আছে সরকারি ও বিভিন্ন স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা/দপ্তর/পরিদপ্তর এবং অন্যান্য বদলীযোগ্য কর্মকর্তা যাহারা একই স্থানে/একই পদে তিন বৎসরের অধিককাল যাবত কর্মরত আছেন, তাহাদের অবিলম্বে বদলী করিতে হইবে। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীবৃন্দ অবশ্য এই আদেশের আওতাভূক্ত নহে। উল্লিখিত মন্ত্রিপরিষদ সিদ্ধান্তের কোন ব্যতিক্রম ঘটিলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে সরকারি আইন ও সরকারি বিধি অনুসারে চাকুরীচ্যুতিসহ যে কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হইবে।
১০ ফেব্রুয়ারী ১৯৮৭ তারিখের স্মারক নং-এমই (এডি-৩)-৩৮৮৪-১৩০ এর মাধ্যমে জারীকৃত প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, (ক) তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর বদলীযোগ্য পদে কর্মচারীগণকে বদলীর প্রয়োজন হইলে প্রথমে তাহাদেরকে একই কর্মস্থলের জন্য অফিসে বদলী করা যাইতে পারে। (খ) একই কর্মস্থলে অন্য অফিসে বদলীর সুবিধা না থাকিলে নিকটতম অফিসে বদলী করা যাইতে পারে। (গ) তাহাদের বেলায় বদলীর জন্য কোন নির্দিষ্ট সময় সীমা থাকিবে না। (ঘ) শুধুমাত্র প্রশাসনিক প্রয়োজনেই এই দুই শ্রেণীর কর্মচারীকে বদলী করা যাইবে। উপরোক্ত সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করিয়া তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীকে বদলী করা হইলে উহা অবশ্যই “হয়রানিমূলক” বলিয়া ধরা হইবে এবং এই সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করা “অসদাচরণের” সামিল হইবে।
সরকারী এই বিধি-বিধান বিসিক চেয়ারম্যান তথা বিসিক কর্তৃপক্ষের অজানা থাকার কথা নয়। তথাপি সরোয়ার হোসেন নামক একজন কর্মকর্তা যিনি জাতীয় স্লোগান জয় বাংলা, জাতির পিতার স্মরণে জয় বঙ্গবন্ধু লিখা খচিত ব্যানার পা দিয়ে মুড়িয়েছেন, বিসিক অফিসে লাঠি সোঠা আমদানী করেছেন। যে বিষয়টি একাধিক অনলাইন পত্রিকায় সচিত্র প্রতিবেদন আকারে প্রকাশিত হয়েছে। বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। সুকৌশলে বাদীকে ম্যানেজ করে সমঝোতা করে সাময়িক রক্ষা পেয়েছেন-সরকারী নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে তার নিজস্ব কৌশল খাটিয়ে তিনি বিসিকের লবণ সেল প্রধান হিসাবে কর্মরত আছেন ২০১৯ সাল হতে অদ্যাবধি। প্রাপ্ত তথ্য মতে সরোয়ার ছাড়াও আরও ১৬ জন সমমানের কর্মকর্তা বিসিকে কর্মরত আছেন। সরকারী বদলী নীতিমালা কেন সরোয়ার সহ কয়েকজনের বেলায় প্রয়োগ হচ্ছে না সেটাই রহস্যজনক।
অতিশয় দুরন্ধর প্রকৃতির একজন লোক মোঃ সরোয়ার হোসেন, যে কোন অসাধ্য সাধনে তার জুড়ি মেলা ভার। কোন দেবতাকে কি ফুল দিয়ে তুষ্ট করতে হয় তা তার ভালভাবেই জানা আছে। কৌশলবাজ এ কর্মকর্তা লবণ সেল প্রধান হিসেবে আয়ন-ব্যয়ন কর্মকর্তা হওয়ার সুবাদে ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ সরকারী অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন এবং যার একটি অংশ আত্মসাত করছেন, অপর অংশ বিসিক চেয়ারম্যান এবং অন্যদের পিছনে দুহাতে খরচ করছেন। যার অকাট্য প্রমাণ পাওয়া যায় যেখানে বিসিক চেয়ারম্যান, সেখানে তার সফরসংগী সরোয়ার। সরোয়ারের প্রসংশায় পঞ্চমুখ বিসিক চেয়ারম্যান।
এই সরোয়ারের প্ররোচনায় বিসিক চেয়ারম্যান সুকৌশলে বিসিকের কর্মকর্তাদের মনোবল ভেংগে দেয়ার কাজটি করে চলেছেন হরহামেশা। বাংলাদেশে লবন উৎপাদন ব্যবস্থা সম্পূর্ণরুপে প্রকৃতির উপর নির্ভর। এক্ষেত্রে বিসিক চেয়ারম্যান বা সরোয়ারের এক ফোটা লবন বেশী উৎপাদনের কোন ক্ষমতা নেই। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে পর্যাপ্ত পরিমাণ লবন উৎপাদন হবে, আবহাওয়া প্রতিকূলে থাকলে কম পরিমাণ লবন উৎপাদন হবে। এক্ষেত্রে কারো বাহবা নেয়ার মতো কোন সুযোগ নেই। তথাপি কেউ কেউ লবন উৎপাদনে সাফল্যের অংশীদার হিসাবে তাদেরকে তুলে ধরার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন-যা প্রতারণা ছাড়া আর কিছুই নয়।
এই সরোয়ার হোসেন ২০২০ সালে উপব্যবস্থাপক হতে ব্যবস্থাপক পদে পদোন্নতি নিয়েছেন নিয়ম নীতির ব্যত্যয় ঘটিয়ে। বিসিকে তার প্রথম নিয়োগ এবং যোগদান বিসিক নৈপুন্য বিকাশ কেন্দ্র, গোপালগঞ্জ শীর্ষক প্রকল্পে। প্রকল্পটি সরকারী জি,ও মূলে রাজস্বখাতে স্থানান্তরিত হয়েছে ২০১৫ সালে। প্রকল্পের জনবল রাজস্ব খাতে স্থানান্তর সংক্রান্ত সরকারী নির্দেশনা, জৈষ্ঠতা বিধিমালা এবং বিসিক সার্ভিস রুলস ১৯৮৯ এর পদোন্নতির তফশীলে বর্নিত বিধানমতে ৫ বছর পুর্তির আগেই তিনি পদোন্নতি বাগিয়ে নিয়েছেন যা সম্পূর্ণ বেআইনী। সরকারের প্রচলিত নিয়ম নীতির ব্যত্যয় ঘটিয়ে উল্লেখিত বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে মনে করছেন সচেতন সমাজ। এ ক্ষেত্রে শিল্প মন্ত্রণালয় ও সরকারের অপরাপর মন্ত্রণালয় এবং বিভাগ সমূহের পদক্ষেপ কামনা করেছেন বিসিক এর দেশ প্রেমিক কর্মকর্তা ও কর্মচারিবৃন্দ।
এসব বিষয়ে কথা বলার জন্য লবন সেলের প্রধান উপমহাব্যবস্থাপক সরোয়ার হোসেন এর সেল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি কল রিসিভ করেন নি। (চলবে)
এমএসএম / এমএসএম

গণপূর্তের ইএম কারখানা বিভাগে নির্বাহী প্রকৌশলী মো: ইউসুফের দুর্নীতির রাজত্ব

দুর্নীতিতে পিছিয়ে নেই এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলীগন

‘এনবিআর’এ স্বৈরাচার সরকারের পালিয়ে থাকা চক্রের চক্রান্ত

প্রাণ ধ্বংসকারী কোম্পানি প্রাণ

বিসিএসআইআরের ৬ কোটি টাকার যন্ত্রপাতি কেনায় ভাগ বাটোয়ারা

কোতোয়ালীতে অপহৃত ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার

রেজিস্ট্রি অফিসের প্রভাবশালী নকলনবিশের কাণ্ডঃ মন্ত্রীদের প্রভাবে চাঁদাবাজি ও নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ

বিসিক এর নীরিক্ষা কর্মকর্তা সাবধান আলী হতে সাবধান!

কেরানীগঞ্জ উপজেলার রাজাবাড়ী রোডে অবৈধ এলপিজি বটলিং প্লান্ট এর সন্ধান

গডফাদার মুরাদ জং-এর বোন পরিচয়ে দলিল দাতা-গ্রহীতাদের জিম্মি করার অভিযোগ

গাজীপুরের কাশিমপুরে সরকারি খাস জমি ভূমিদস্যুদের দখলে

বগুড়ায় সাবেক অফিস সহকারীর বিরুদ্ধে 'ফ্যাসিস্ট সিন্ডিকেটের' মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ
