(পর্ব-১)
প্রয়াত জাপা নেতা খালেদুর রহমানের কোটি টাকা ও সম্পত্তি আত্মসাতের অভিযোগ
সাতক্ষীরা জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও জেলা ক্লিনিক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক খালেদুর রহমানের নগদ ৪ কোটি টাকা এবং আরো ৩ কোটি টাকা মূল্যের সম্পত্তি পালিত কন্যা নিশাত রহমান ওরফে পিংকি আত্মসাৎ করেছেন মর্মে অভিযোগ করেছেন প্রয়াত খালেদুর রহমানের সম্পত্তির উত্তরাধিকার ও ওয়ারিশগণ। খালেদুর রহমান হৃদরোগজনিত কারণে দীর্ঘদিন অসুস্থ অবস্থায় বাড়িতে ছিলেন। গত ১৩ এপ্রিল তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।
জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার রতনপুর ইউনিয়নের পীরগাজন গ্রামের প্রয়াত খালেদুর রহমানের স্বজনরা অভিযোগ করে বলেন, জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত খালিদুর রহমান খালিদ নিঃসন্তান ছিলেন। খালেদুর রহমানের স্ত্রী সাহিদা রহমান সরকারি চাকরি করতেন। তিনি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের পর এককালীন প্রাপ্ত ও পেনশনের টাকা ব্যাংকে জমা রাখেন, যার পরিমাণ প্রায় ১ কোটি টাকা। ওই টাকাও পিংকি ভুয়া ওয়ারিশ সেজে ব্যাংক থেকে তুলে নিয়েছেন। সাহিদা রহমান খালিদুর রহমানের আগেই মৃত্যুবরণ করেন।
খালেদুর রহমানের এক বোন জানান, খালেদুর রহমানের ব্যাংকে গচ্ছিত প্রায় ১ কোটি টাকা পালিত কন্যা পিংকি ভুয়া ওয়ারিশ সেজে ব্যাংক থেকে তুলে নিয়েছেন। খালেদুর রহমান হৃদরোগজনিত কারণে দীর্ঘদিন অসুস্থ অবস্থায় বাড়িতে ছিলেন। দীর্ঘদিন তাকে দেখতে গ্রাম থেকে খালেদুর রহমানের বোন, ভাতিজা, ভাগ্নে-ভাগ্নি ও স্বজনরা দেখা করতে এলে পিংকি তাদের চিকিৎসকের নিষেধ আছে বলে দেখা করতে দিতেন না। তার অসুস্থতার সুযোগ নিয়ে সাতক্ষীরা শহরের সদর হাসপাতালের পূর্ব দিকে এসপি বাংলোর পাশে দোতলা বাড়িসহ কালীগঞ্জের পীরগাজন গ্রামে ১০ কাঠা জমির ওপর নির্মিত একটি একতলা বিল্ডিং আত্মসাৎ করতে ভুয়া ওয়ারিশ সেজে অসুস্থ খালিদের কাছ থেকে লিখে নিয়েছেন নিশাত রহমান ওরফে পিংকি।
এদিকে, খালিদুর রহমান খালিদের আরেক ওয়ারিশ ভাতিজা সোলায়মান জানান, তাদের চাচা নিঃসন্তান ছিলেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি নিশাত রহমান পিংকিকে মেয়ে হিসেবে প্রতিপালন করেছেন। খালেদুর রহমানের মৃত্যুর পর উত্তরাধিকারসূত্রে তারা ওই সম্পত্তির অংশীদার হবেন। যথাক্রমে খালেদুর রহমানের ভাই ও বোনের সন্তানরা এসব নগদ অর্থ ও সম্পত্তির উত্তরাধিকার। আইনজীবীরাও তাদের জানিয়েছেন- বাংলাদেশে বিদ্যমান মুসলিম পারিবারিক আইনে বলা আছে, কারো মৃত্যু হলে যদি তার নিজের কোনো সন্তান না থাকে তবে ওই ব্যক্তির বাবা-মা, ভাই-বোন ও ভাই-বোনের সন্তানরা উক্ত সম্পত্তির অংশীদার হবেন।
এদিকে, খালেদুর রহমানের মৃত্যু সনদ ও তার গ্রামের বাড়ি রতনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান যে ওয়ারিশকাম সনদপত্র দিয়েছেন তাতে নিশাত রহমান পিংকির নাম নেই। যে কারণে পিংকি কোনোভাবেই তার সোলায়মানের চাচা ও চাচির কোটি কোটি টাকা, সম্পত্তি ও দুই বাড়ি দখল করতে পারেন না। বিষয়টি ফয়সালা না হলে তারা আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। এমনটাই দাবি সোলায়মান ও অন্যান্য চাচাতো ও ফুফাতো ভাই-বোনদের।
এ বিষয়ে নিশাত রহমান পিংকির সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি কথা বলতে রাজিন হননি।
(চলবে...)
এমএসএম / জামান