ঢাকা সোমবার, ২৩ জুন, ২০২৫

নাশকতাকারী কাউকে ছাড় দেওয়া হবেনা: সিলেট এসএমপি কমিশনার জাকির খান


সিলেট ব্যুরো অফিস photo সিলেট ব্যুরো অফিস
প্রকাশিত: ২৫-৭-২০২৪ দুপুর ৪:৫৬

সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকে ঘিরে সিলেটে যে নাশকতা ও সহিংসতা হয়েছে তার সাথে শিক্ষার্থীরা জড়িত ছিলনা। ছাত্রদের সাথে মিশে তৃতীয় পক্ষ অর্থাৎ বিভিন্ন সন্ত্রাসী দল ও গোষ্ঠী এই নাশকতা চালিয়েছে। এদেরকে কোন ছাড় দেওয়া হবে না, কঠোর হস্তে তাদেরকে দমন করা হবে বলে সকালের সময়কে জানিয়েছেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) কমিশনার জাকির হোসেন খান। বর্তমান পরিস্থিতি আগের তুলনায় অনেক ভাল উল্লেখ করে তিনি বলেন, গত কয়েকদিন সারাদেশের মতো  সিলেট নগরীর বিভিন্ন এলাকায় সন্ত্রাসী গোষ্ঠী অনেক তান্ডব চালিয়েছে। তারা পাঠানটুলা পুলিশ বক্সে আগুন দিয়েছে। রেজিস্ট্রারি ও বিদ্যুৎ অফিস ভাঙচুর করেছে। এসব নাশকতায় ছাত্ররা জড়িত ছিল না। শুরুতে আন্দোলনে ছাত্ররা ছিল। কিন্তু কোমলমতি শিক্ষার্থীরা সংঘর্ষে লিপ্ত হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের করে দেওয়ার পর তারা চলে গেছে। এরপর তৃতীয়পক্ষ অর্থাৎ বিভিন্ন দলের সন্ত্রাসী ও গোষ্ঠী নাশকতা করেছে। এসব ঘটনায় ১০টি মামলা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ১২৪জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নাশকতাকারী কেউ ছাড় পাবে না, তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে। সংঘর্ষে ১০ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন জানিয়ে পুলিশ কমিশনার বলেন, সন্ত্রাসীরা পুলিশ সদস্যের উপর হামলা করেছে। পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করেছে। আহত পুলিশ সদস্যের কেউ কেউ চিকিৎসা নিয়ে বাসায় আছেন। হাসপাতালেও চিকিৎসাধীন আছেন কয়েকজন।দক্ষিণ সুরমায় পুলিশের একজন এএসআইকে যেভাবে মারধর করা হয়েছে তার মাথায় হেলমেট না থাকলে হয়তো মেরেই ফেলা হতো। তার পা ভেঙে গেছে। সংঘর্ষের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে সাংবাদিক এটিএম তুরাব নিহত হওয়া প্রসঙ্গে পুলিশ কমিশনার জাকির হোসেন খান বলেন, ‘কী কারণে কিভাবে সাংবাদিকতুুরাব নিহত হয়েছেন তার তদন্ত চলছে। পোস্টমর্টেম হয়েছে। পোস্টমর্টেম ও তদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এদিকে জঙ্গী, সন্ত্রাস ও মাদক বিরোধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন সিলেট এসএমপি পুলিশ কমিশনার মোঃ জাকির হোসেন খান, (পিপিএম)। সিলেট মহানগর এলাকার সকল জঙ্গী, সন্ত্রাস, মাদক এবং কিশোর গ্যাং সহ সব রকম অপরাধ নির্মূলে শুধু পুলিশ নয় এক্ষেত্রে মহানগরের সর্বস্থরের সাধারণ মানুষসহ স্থানীয় সাংবাদিকদের সহযোগিতা চান তিনি। এসএমপি এলাকায় যেকোনো ধরণে আইনবিরোধী অপ্রীতিকর ঘটনার সংবাদ পেলে তাৎক্ষণিক ভাবে পুলিশকে জানানোর জন্য তিনি নগরবাসীর প্রতি অনুরোধ জানান। তিনি মনে করেন সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করলে যেকোন কঠিন কাজও সহজ হয়ে যায়। তাই আমাদের সবাইকে এই বিষয়ে সচেতন হতে হবে। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সম্মিলিত প্রয়াসের উপর গুরুত্বারোপ করেন। প্রয়োজনে সিলেটের মহানগরী এলাকার আইনশৃঙ্খলার উন্নতির লক্ষে তৃণমূল পর্যায়েও তিনি যাবেন। একটি জনবান্ধব পুলিশ বাহিনী গঠন করতে যা যা প্রয়োজন তিনি তাই করে যাবেন। বিভিন্ন সময়ের চেয়ে এসএমপি এলাকার আইনশৃংখলা পরিস্তিতির উন্নতি নিয়ে তিনি বলেন, আসলে সকলের সহযোগীতায় এসএমপির ৬ টি থানার পুলিশ, মহানগর গোয়েন্ধা পুলিশ নিরোলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করে বলেন, যেখানেই মাদকের আস্তানা বা কোন খবর পাওয়া যাবে সাথে-সাথে পদক্ষেপ নিবে পুলিশ। এক্ষেত্রে স্থানীয় সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ কোন অবহেলা করলে যদি তা প্রমানিত হয় তাহলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবেনা। এছাড়া কোন এলাকায় কোন ব্যক্তির চলাফেরায় সন্দেহজনক কিছু লক্ষ্য করলে বা জঙ্গী মনে হলে সাথে সাথে পুলিশকে খবর দিবেন। সিলেট মহানগরের সব রকম অপরাধ নির্মলে এসএমপি পুলিশ নিরোলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এসএমপি পুলিশের কোন থানায় গিয়ে যদি কোন সেবা প্রত্যাশী হয়রানীর শিকার হন বা সেবা না পান, তা হলে তিনি সরাসরি উপশহরস্থ আমার অফিসে এসে নির্বিঘ্নে তার সমস্যাটি জানাতে পারেন। আমার দরজা সাধারণ মানুষের জন্য সব সময় অনমুক্ত। আমি যোগদানের পর থেকে এসএমপির পুলিশ সদস্যর বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ আসলে, সে ব্যাপারে আমার পক্ষ থেকে তদন্ত পূর্বক দ্রুত ব্যবস্থা নিতে আমি একটুও দেরি করিনা। কারণ পুলিশ হচ্ছে সাধারণ মানুষের সেবক ও বন্ধু। সাধারণ মানুষের জান-মালের নিরাপত্তার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর আমাকে এখানে পাঠিয়েছেন। তাই আমি বলবো, এসএমপি এলাকায় কোন পুলিশ সদস্য যে কোন রকম অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়ানোর আগে একটু চিন্তা করবেন। অভিযোগের প্রমান পেলে আমি কাউকে ছাড় দিবো না। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে যেকোনো অপরাধমূলক কাজের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পুলিশ দ্বিধা করবে না।
সিলেটের চোরাচালান বিষয়ে কমিশনার জাকির হোসেন খান স্পষ্ট বলেন, এসএমপি এলাকায় কোন সীমান্ত নেই তবুও ‘চোরাই পণ্য ঠেকাতে মহানগর এলাকায় নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে ছয়টি থানা ও এসএমপি গোয়েন্দা পুলিশ। চোরাই পণ্য জব্দ করার সময় ধৃতদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা দায়ের করা হচ্ছে এবং পরবর্তী সময়ে চার্জশিভুক্ত আসামিও করা হয় তাদের মূলহোতাদের। এ ছাড়া তাদের জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে অন্য কারবারিদেরও আইনের আওতায় নিয়ে আসার চেষ্টা করছে পুলিশ। প্রায় প্রতিদিনিই এসএমপি এলাকায় চোরাচালানের গাড়ি আটক করছে পুলিশ। তবে অবৈধ চিনি পেয়ে কোন পুলিশ ছেড়ে দিলে তাকে কেনো ছাড় দেওয়া হবে না। চিনির বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান জিরো টলারেন্স। যদি আদালত থেকে প্রকৃত কোন নিলামগ্রহীতা নিলামে অংশ নিয়ে পন্য কিনে থাকেন, সে ক্ষেত্রে বহনকালে নিলামের বৈধ কাগজপত্র সাথে রাখতে হবে। যাতে কোন রকম হয়রানীর স্বীকার না হন সেই ব্যবসায়ী, সে বিষয়ে খেয়াল রাখতেও নির্দেশনা রয়েছে। এসএমপি পুলিশ সাধারণ মানুষের সেবার জন্য সব সময় প্রস্তুত রয়েছে।
মোঃ জাকির হোসেন খান, পিপিএম, ১৯৭১ সালে দক্ষিণ বঙ্গের বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ থানার বাদলপাড়া গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ২০তম বিসিএস এর মাধ্যমে ২০০১ সালের ৩১ই মে এএসপি হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশে যোগদান করেন। এর পূর্বে তিনি ১৯৯৮ সালে ১৭তম বিসিএস এ সমবায় ক্যাডার এ যোগদান এর মাধ্যমে তার কর্মজীবন শুরু করেন। বাংলাদেশে পুলিশ একাডেমী, সারদায় মৌলিক প্রশিক্ষণ গ্রহণের মধ্য দিয়ে তিনি বাংলাদেশ পুলিশে তাঁর কর্ম-জীবন শুরু করেন। মৌলিক প্রশিক্ষণ শেষে তিনি এএসপি হিসেবে পুলিশ সুপারের কার্যালয় শরীয়তপুর জেলা ও ভোলা জেলায় দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৬ সালে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে পদোন্নতি প্রাপ্ত হয়ে সাতক্ষীরা জেলা, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন, যশোর জেলায় দায়িত্ব পালন করেন। যশোর জেলায় কর্মরত থাকাকালে ২০১২ সালে পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি লাভ করেন। নেত্রকোনা জেলা, নীলফামারী জেলা এবং ফরিদপুর জেলায় পুলিশ সুপারের দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে ডিএমপি, ঢাকায় উপ-পুলিশ কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। 
তিনি ২০১৯ সালে এ্যাডিশনাল ডিআইজি পদে পদোন্নতি লাভ করেন এবং চট্টগ্রাম রেঞ্জে এ্যাডিশনাল ডিআইজি হিসেবে আগস্ট ২০২২ খ্রিঃ পর্যন্ত এবং পরবর্তীতে যুগ্ম পুলিশ কমিশনার হিসেবে ডিএমপি, ঢাকায় দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ২০২৩ সালে ডিআইজি হিসেবে পদোন্নতি সূত্রে শিল্পাঞ্চল পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স, ঢাকায় পদায়িত হন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে সমাজ বিজ্ঞানে সম্মান এবং এমএসএস ডিগ্রী অর্জন করেন। বাংলাদেশ পুলিশের মেধাবী এ কর্মকর্তা ডিআর কংঘতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ করে তার গুরুত্বর্পূণ অবদানের জন্য জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা পদকে ভূষিত হন। এছাড়া তিনি দেশে ও দেশের বাইরে বিভিন্ন সভা/সেমিনার/ওয়ার্কশপ ও একাধিক প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করে পুলিশের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। এর মধ্যে অন্যতম ২০১০ সালে মালয়েশিয়া’তে বেসিক কমার্শিয়াল ক্রাইম ইনভেষ্টিগেশন প্রশিক্ষণ কোর্সে অংশগ্রহণ। তিনি সরকারি কাজে দক্ষিণ কোরিয়া এবং তুরস্ক ভ্রমণ করেন। দীর্ঘ ২২ বছরের চাকুরী জীবনে বিভিন্ন সাহসিকতাপূর্ণ কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি ০১ বার আইজিপি ব্যাজ এবং ০১ বার প্রেসিডেন্ট পুলিশ মেডেল (পিপিএম) পদকে ভূষিত হন। 
শিল্পাঞ্চল পুলিশ হতে বদলি সূত্রে তিনি ২০২৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশে কমিশনার হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করে আজবদি নিরোলস ভাবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।

এমএসএম / এমএসএম

ত্রিশালে ট্রেনে কাটা পড়ে একজনের মৃত্যু

মেহেরপুরে কাব কার্নিভাল ২০২৫ এর উদ্বোধন

বারইয়ারহাটে আন্ডারপাস অথবা ফ্লাইওভার নির্মাণের দাবিতে ব্যবসায়ীদের মানববন্ধন

বাঘায় বিশেষ অভিযানে সাজাপ্রাপ্ত আসামিসহ আটক ৫

সিংগাইরে শ্রেষ্ঠ ওসি তৌফিক আজম, ওয়ারেন্ট তামিলে এএসআই জলিল পুরস্কৃত

চুয়াডাঙ্গায় কেরুজ পুকুরে বিদ্যুতায়িত জিআই তারে কৃষকের মৃত্যু

পঙ্কিল রাজনীতি বিশ্ববিদ্যালয় চত্ত্বরে আনবেন না: শিক্ষা উপদেষ্টা

কুতুবদিয়ায় তিন দিনে ৬ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত

রাজশাহীতে দিনব্যাপী সুজুকি বাইকার্স ডে অনুষ্ঠিত

চিতলমারীতে কাব কার্নিভাল-২০২৫ এর শুভ উদ্বোধন

সিংড়া পৌরসভার ৩০ কোটি ৮৬ লাখ টাকার বাজেট ঘোষণা

শান্তিগঞ্জে 'পার্টনার কংগ্রেস' অনুষ্ঠিত

দোহারে পুলিশের বিরুদ্ধে যুবকের কাছ থেকে টাকা আদায়ের অভিযোগ