ঢাকা রবিবার, ২৪ আগস্ট, ২০২৫

দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া দরকার


তানভীর আহমেদ photo তানভীর আহমেদ
প্রকাশিত: ১৫-৮-২০২৪ দুপুর ২:৫৫

বাংলাদেশে বিগত ২৫ বছরের সকল দুর্নীতিবাজ রাজনৈতিক নেতা এবং সরকারি ও বেসরকারি পলাতক ও অভ্যন্তরীণ কর্মকর্তাদের দ্রুত খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনার জন্য একাধিক কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার। এটি একটি কঠিন এবং চ্যালেঞ্জিং প্রক্রিয়া হবে  অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের।  কিন্তু যদি নিম্নলিখিত উদ্যোগগুলি নেওয়া হয়, তবে এটি সফলভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হতে পারে বলে মনে করি:

১. বিশেষ তদন্ত কমিশন গঠন : একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ বিশেষ তদন্ত কমিশন গঠন করা যেতে পারে, যার কাজ হবে বিগত ২৫ বছরের সকল দুর্নীতির মামলা পুনঃপর্যালোচনা এবং পলাতক ও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের সনাক্ত করা। এই কমিশনের অধীনে বিশেষজ্ঞদের একটি দল থাকবে, যারা আর্থিক বিশ্লেষণ, ফৌজদারি তদন্ত এবং ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত হবে।

২. ডিজিটাল ডাটাবেজ এবং টেকনোলজি ব্যবহার: সকল দুর্নীতির মামলার তথ্য একত্রিত করে একটি কেন্দ্রীয় ডাটাবেজ তৈরি করতে হবে, যেখানে সকল দুর্নীতির অভিযোগ, তদন্তের অগ্রগতি, এবং অভিযুক্তদের নাম, সম্পত্তির হিসাব ও অন্যান্য তথ্য থাকবে। ডিজিটাল ট্র্যাকিং এবং ডেটা অ্যানালিটিক্স ব্যবহারের মাধ্যমে বিগত ২৫ বছরে সরকারি নথিপত্র, আর্থিক লেনদেন, সম্পত্তির হিসাব-নিকাশ ইত্যাদি ডিজিটালভাবে বিশ্লেষণ করা দরকার। ডেটা অ্যানালিটিক্সের মাধ্যমে সন্দেহভাজনদের খুঁজে বের করা সহজ হবে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (অও) এবং বিগ ডেটা বিশ্লেষণ ব্যবহার করে এই ডাটাবেজে থাকা তথ্যগুলো বিশ্লেষণ করা যেতে পারে, যা দুর্নীতিবাজদের দ্রুত সনাক্ত করতে সাহায্য করবে।

৩. আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং পলাতকদের প্রত্যাবর্তন: যারা পলাতক এবং বিদেশে আশ্রয় নিয়েছেন তাদের খুঁজে বের করার জন্য আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের সহযোগিতা নেওয়া যেতে পারে যেখানে অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইউনুস এর হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। পলাতকদের দেশে ফেরত আনার জন্য দ্বিপাক্ষিক এবং বহুপাক্ষিক চুক্তি এবং প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।

৪. বিশেষ ট্রাইব্যুনাল এবং দ্রুত বিচার: দুর্নীতি মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে, যেখানে দ্রুত বিচার প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে। বিচার প্রক্রিয়া প্রভাবমুক্ত রাখতে বিশেষ নজরদারি ব্যবস্থা রাখা দরকার।

৫. আর্থিক ব্যবস্থাপনা এবং সম্পদ পুনরুদ্ধার: দুর্নীতির মাধ্যমে উপার্জিত সম্পদ সনাক্ত করার জন্য আর্থিক অনুসন্ধান এবং অডিট প্রক্রিয়া শক্তিশালী করা দরকার। বিদেশে লুকানো সম্পদ ফেরত আনার জন্য বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করা যেতে পারে।

৬. জনগণের অংশগ্রহণ এবং তথ্য প্রাপ্তির স্বাধীনতা: দুর্নীতির তথ্য জানাতে জনগণকে উৎসাহিত করতে হুইসেল ব্লোয়ার প্রোটেকশন আইন কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। তথ্য অধিকার আইন আরও কার্যকর করতে হবে যাতে জনগণ সহজেই সরকারি তথ্য ও নথিপত্রে প্রবেশাধিকার পায়।

৭. রাজনৈতিক ইচ্ছা এবং নিরপেক্ষতা: দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতা নীতি গ্রহণ করতে হবে এবং এই নীতির বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত তদন্ত এবং বিচার প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে হবে। 

৮. রাজনৈতিক সংস্কার: দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদদের রাজনীতি থেকে দূরে রাখার জন্য রাজনৈতিক সংস্কার দরকার। দলীয় শৃঙ্খলা জোরদার করে এবং নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা বাড়িয়ে এই কাজটি করা যেতে পারে। এই পদক্ষেপগুলো সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা গেলে, বাংলাদেশে বিগত ২৫ বছরের দুর্নীতিবাজ রাজনৈতিক নেতা এবং সরকারি বেসরকারি কর্মকর্তাদের খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনা সম্ভব হবে।
লেখক: কলামিস্ট

এমএসএম / এমএসএম

কোচিং-এর গোলকধাঁধায়, শ্রেণিকক্ষে পাঠদানে গুরুত্ব নেই

সাংবাদিকের দল সমর্থন গণতন্ত্রের জন্য হুমকি

ইঁদুরের কৃতজ্ঞতা

নাগরিক সেবা ও প্রত্যাশার সংকট: রাষ্ট্রীয় কর্মচারী কোথায়?

টেকসই সমাজ গঠনে সাম্য একটি অপরিহার্য ভিত্তি

শুভ জন্মাষ্টমী : সত্য, সুন্দর ও সাম্য প্রতিষ্ঠায় শান্তির বার্তা

রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অপরিহার্য

জনগণের অংশগ্রহণে নির্বাচিতরাই কাশ্মীরের শাসক

স্বৈরশাসকের বিদায়, বিদ্রোহ ও পলায়ন

জনগণের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় তারেক রহমান

এপিআই ও এক্সিপিয়েন্ট উৎপাদনে বাংলাদেশের আত্মনির্ভরশীলতা: স্বাস্থ্য ও অর্থনীতির নবদিগন্ত উন্মোচন

ট্রাম্প-উরসুলার বাণিজ্য চুক্তিতে স্বস্তির হাওয়া

মানবিক সংকটের দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব