গ্রাফিতি আলপনায় ছেয়ে গেছে চবি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ক্যাম্পাসের জিরো পয়েন্ট, কাটা পাহাড়ের রাস্তা এবং বিভিন্ন অনুষদ ও আবাসিক হলগুলোর দেয়ালে দেয়ালে শিল্পকর্ম আঁকছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আলপনা, গ্রাফিতি,প্রতিবাদী বিভিন্ন স্লোগান আর কবিতার লাইনে ভিন্ন এক রূপ ধারন করেছে রূপের রানী খ্যাত পাহাড়ি এ ক্যাম্পাস।
নতুন আবহে নিজের বিদ্যাপীঠকে সাজাতে স্বেচ্ছায় অংশ নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। কাজটিতে অংশ নেওয়া বেশির ভাগ শিক্ষার্থীরই নেই কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতা। তবুও আবেগ আর ভালোবাসার মিশেলে প্রিয় এই ক্যাম্পাসকে নান্দনিকতায় ফুটিয়ে তুলতে প্রচেষ্টার কমতি ছিল না তাদের।
রঙতুলির মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলছেন প্রতিবাদ, সাম্য, ভ্রাতৃত্ব ও দেশপ্রেম।শিক্ষার্থীদের এ কার্যক্রমের মাধ্যমে বোঝানো হচ্ছে এই বাংলাদেশ সবার। কোনো স্বৈরাচারের ঠাঁই নেই এ দেশে। ছাত্র সমাজ একতাবদ্ধ হয়েছে সব অনিয়মের বিরুদ্ধে।
শুক্রবার (১৬ আগস্ট) সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ছাত্রলীগ,ছাত্রদলসহ অন্যান্য ছাত্র সংগঠনগুলোর লেখা রাজনৈতিক স্লোগান, দেওয়াল লিখন মুছে ফেলা হয়েছে। এসবের স্থান দখল করে নিয়েছে বিপ্লব উত্তর বাংলাদেশ গঠনের প্রত্যাশা আর আকাঙ্ক্ষার বহুমূখী চিত্র। সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবি, ক্যাম্পাসে কোনো প্রকার ছাত্র রাজনীতি থাকবে না।
চবির চারুকলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী তানজিনা ইয়াসমিন প্রমি বলেন,আমরা কয়েকদিন ধরেই গ্রাফিতির কাজ করছি। ক্যাম্পাসের রাস্তায়, দেয়ালে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান, আন্দোলনের ভাষা, স্বাধীনভাবে লিখছি। ৫ আগস্টের আগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন নিয়ে কোন ধরনের স্লোগান লিখা হয়নি। তখন স্বাধীনভাবে কোন শিক্ষার্থী মুক্ত চিন্তা করতে পারেনি। কয়েকজন মেয়ে শিক্ষার্থী রাস্তায় লিখা লিখেছিল আন্দোলন নিয়ে সেই লিখাগুলো প্রশাসন থেকে মুছে ফেলা হয়েছিল।আমরা এখন স্বাধীনতা ফিরে পেয়েছি। আমরা চেষ্টা করছি সবাইকে যুক্ত করতে। যেন সবাই একতাবদ্ধ হয়ে থাকতে পারি। এই একতাবদ্ধতা তৈরী হবে কাজের মাধ্যমে। আমরা গ্রাফিতির কাজ করার পরিকল্পনা করেছি অনেক আগে থেকেই। বৃষ্টির কারণে একটু দেরী হয়ে গেছে। আজকে আমরা অনেক সাড়া পেয়েছি শিক্ষার্থীদের। প্রায় ২০০ জনের বেশি শিক্ষার্থী এসেছে গ্রাফিতির কাজের জন্য। এই বিষয়টা আমাদের অনেক ভালো লেগেছে যে সবাই আমাদের সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছে। কারো মনে কোন ধরনের নেগেটিভ চিন্তা ভাবনা নেই।
তিনি আরও বলেন, রাস্তায়,দেয়ালে অনেক রাজনৈতিক দলের বিভিন্ন স্লোগান লিখা ছিল। আমাদের মূল উদ্দেশ্য হলো সেগুলো মুছে দিয়ে আন্দোলনের স্লোগান গুলো লিখা। আমাদের কাজ করার মতো মানুষ কম তাই একটু দেরী হচ্ছে। চবিতে যে পরিমান শিক্ষার্থী সবাই একসাথে সাড়া দিলে একদিনে ক্যাম্পাসকে রাঙিয়ে তোলা যেতো। আলপনা আঁকা ছাড়া রাজনৈতিক চিহ্ন গুলো মুছে দেওয়া সম্ভব হতো না। তাই আগে আলপনা আঁকা হয়েছে। মানুষ বাড়িতে বসে বসে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়াচ্ছে। প্রকৃত পক্ষে ক্যাম্পাসে আমরা গ্রাফিতি করছি কেউ বাধা দেয়নি। সবাই এসে সংবর্ধনা দিচ্ছে। সাহস যোগাচ্ছে। আমাদেরকে শিক্ষক- শিক্ষার্থীরা এসে খাবার দিয়ে গেছে। এগুলো আমাদেরকে কাজ করার জন্য অনেক অনুপ্রেরণা দিয়েছে।
আলপনা আঁকার এই আয়োজনের উদ্যোক্তা এবং চারুকলা বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মেহেদী আলম সজিব জানান, ছাত্র রাজনীতি মুক্ত ক্যাম্পাস গড়ার প্রত্যয়েই আমাদের এই আলপনার আঁকার মূল উদ্দেশ্য। জিরো পয়েন্টে আমরা " ছাত্র রাজনীতি মুক্ত ক্যাম্পাসে আপনাকে স্বাগতম " শিরোনামে একটি বড় গ্রাফিতি আঁকবো। প্রায় সকল ডিপার্টমেন্টের সম্মীলিত ফান্ডে আমরা কাজ করেছি। শেষ দিনের আলপনার জন্য একটা পেইন্টিং কোম্পানি আমাদের সাহায্য করেছে। এটি আমাদের ক্যাম্পাসের সবচেয়ে বড় আলপনা হতে যাচ্ছে। যেটি কাটা পাহাড় হয়ে শহীদ মিনার পর্যন্ত যাবে। এর বাইরে যেসব দেয়াল খালি আছে সেগুলোতে বিপ্লব ও রাষ্ট্র সংস্কারে বিভিন্ন স্লোগানে গ্রাফিতি আঁকবো।
শাহজালাল হলের দেয়ালে ক্যালিওগ্রাফি আঁকা নিয়ে সৈয়ব আহমেদ সিয়াম বলেন, "পরাধীনতার শেকল ছিঁড়ে আমরা চব্বিশে স্বাধীনতার নতুন সূর্য পেয়েছি। সত্য আর সুন্দরের কথা বলতে আমাদের আর বাধা নেই। আমরা বাংলা, ইংরেজি, আরবি সব ভাষায় গ্রাফিতি করার অধিকার রাখি। স্বাধীনতা আর অধিকারের স্লোগানে স্লোগানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়ালগুলো ভরিয়ে দিয়েছি আমরা। তারপর, 'চবিয়ান দ্বীনি পরিবার'
প্ল্যাটফর্ম থেকে আমরা ভাবলাম, বাংলা আর ইংরেজির মতো আরবিতেও কিছু ক্যালিওগ্রাফি থাকুক এই ক্যাম্পাসে। যেই ভাবা, সেই কাজ। আমরা শাহজালাল হলের দেয়াল রাঙিয়ে দিলাম আরবি ক্যালিওগ্রাফির রঙে। অনেকেই ছবি তুলে পোস্ট করছেন এখন। এই তো স্বাধীনতা। সবাই বলতে পারছে, আঁকতে পারছে।"
ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুর রহমান বলেন, "ক্যাম্পাসে বিপ্লবের চিহ্ন রাখতে অনেক গ্রাফিতি করেছি আমরা। চারুকলার ভাইবোনেরা সুন্দর সব আলপনা করেছেন। তো এই ক্যাম্পাসে তো আরবি, ইসলামিক স্টাডিজ, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি এসব ডিপার্টমেন্টও আছে। চব্বিশে তারুণ্যের এই বিজয়ে সবার অংশগ্রহণ রয়েছে। সবার চিহ্নই ফুটে উঠুক ক্যাম্পাসে। এই আশা নিয়ে শাহজালাল হলের দেয়ালে আমরা আরবি ক্যালিওগ্রাফি করেছি।
এমএসএম / এমএসএম

জবি ঊষার সভাপতি নাইম, সম্পাদক লিশা

মৎস বীজ কেন্দ্র অধিগ্রহণ দাবিকে আমি মুগ্ধর দাবি হিসেবে গ্রহণ করছিঃ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার

পরীক্ষার ফি কমানোর দাবিতে বার কাউন্সিলে স্মারকলিপি প্রদান

ধর্ষণের সর্বোচ্চ বিচার দাবিতে মধ্যরাতে মহাসড়ক অবরোধ জাবি শিক্ষার্থীদের

তিতুমীর কলেজস্থ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ছাত্র কল্যাণ পরিষদের নতুন কমিটি ঘোষণা

নিষিদ্ধ 'হিযবুত তাহেরীর' সাথে সম্পৃক্ততার অভিযোগে কুবির দুই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা

শিশু ধর্ষণের প্রতিবাদে জবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

থিসিস লেখায় দক্ষতা বাড়াতে খুবির রিসার্চ সোসাইটির প্রশিক্ষণ

খুবির শহীদ মীর মুগ্ধ তোরণের উদ্ধোধন আগামী রবিবার

নিজ বিভাগ থেকে সভাপতি নিয়োগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের অবস্থান, প্রশাসনের আশ্বাসে কর্মসূচি প্রতাহার

বার কাউন্সিলের ফি কমানোর দাবিতে জবিতে মানববন্ধন

সাবেক ছাত্রদল ও সাংবাদিক নেতা সুজার শেল্টারে হত্যা মামলার আসামীর ক্যাম্পাসে প্রবেশ
