ঢাকা রবিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

বাকৃবির হলে ছাত্রলীগের ৭ লাখ টাকার সিট বাণিজ্যের অভিযোগ


আমান উল্লাহ, বাকৃবি প্রতিনিধি photo আমান উল্লাহ, বাকৃবি প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২০-৮-২০২৪ বিকাল ৬:৩০

বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে ছাত্রলীগের সিট বাণিজ্য নতুন কিছু নয়। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ও (বাকৃবি) এর ব্যতিক্রম ছিলো না। এখানেও রীতিমতো হতো সিট বাণিজ্য।  ভয়ে কেউ কিছু বলতেন না। ক্ষমতাসীন ছাত্রলীগের কাছে এক রকম জিম্মি হয়েই থাকতে হতো তাদের। স্বৈরাচারী সরকার পতনের পর এখন মুখ খুলেছেন তারা। কাকে কতো টাকা দিয়ে হলে উঠেছেন নাম উল্লেখ করে লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন ফজলুল হক হলে থাকা বেশ কিছু শিক্ষার্থী।

জানা যায়, হলের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের আয়ের প্রধান দুটি উৎস হলো-ডাইনিং এবং সিট বাণিজ্য। মূলত অন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যারা মাস্টার্স করতে আসে তাদের থেকেই নেওয়া হয় টাকা, দেওয়া হয় সিট। অনেক সময় হলের নেতাদের মধ্যে সমন্বয় না থাকলে দুইবারও টাকা দিয়ে হলে থাকতে হয়েছে। শুধু বাইরের বিশ্ববিদ্যালয় নয়, বাকৃবির শিক্ষার্থীরা পরে হলে উঠতে চাইলে, তাদের থেকেও নেওয়া হয়েছে টাকা। ১০ হাজার থেকে শুরু করে ১৮হাজার টাকাও একজনের থেকে নেওয়া হয়েছে। যারা লিখিতভাবে বিষয়গুলো নিয়ে মুখ খুলেছেন তাদের সকলের টাকা হিসেব করে দেখা যায় মোট ৭ লাখ ৮ হাজার টাকার সিট বাণিজ্য শুধু ফজলুল হক হলেই হয়েছে গত বছরে। সবার তথ্য পেলে টাকার অংক আরও বড় হতো। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় এখন অফিসিয়ালি না খুলে দেওয়ায় শিক্ষার্থীরা সবাই হলে নেই।

লিখিত অভিযোগে সিট বাণিজ্যে জড়িতদের নাম উল্লেখ করেন ভুক্তভোগী শিক্ষর্থীরা। অভিযুক্তরা হলেন,  বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি না পাওয়া শিক্ষার্থী শেখ মেহেদী রুমি জয়, স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী এ এইচ এম হেলালুজ্জামান (ডন),  মো. রাকিবুল ইসলাম রাকিব, খান মোহাম্মদ হাসনাইন কবির, আরিফুল ইসলাম সাগর এবং মো. মজনু রানা। 

২০১৯-২০ ব‌র্ষের শিক্ষার্থী মো মহব্বত আলী জানান, প্রথ‌মে আ‌মি হ‌লে উ‌ঠে‌ছিলাম কিন্তু গেস্ট রু‌মের অত‌্যাচা‌রের কার‌ণে হল থে‌কে চ‌লে যায়। তারপর হ‌লের উঠার চেষ্টা কর‌লে ছাত্রলী‌গের নেতাকর্মীরা আমা‌কে বাধা দেয়। হ‌লের প্রাধ‌্যক্ষের সা‌থে যোগা‌যোগ কর‌লে টাকা ছড়া হ‌লে তোল‌তে অপরাগত জানান। এরপর ফজলুল হক হ‌লের ছাত্রলীগ নেতা হেলাল এবং রা‌কিব‌কে মোটা অ‌ঙ্কের টাকা দি‌য়ে হ‌লে উ‌ঠি। আমার সা‌থে যারা উ‌ঠে‌ছে তারা ১০-১২ হাজার টাকা দি‌য়ে উ‌ঠে‌ছে। আ‌মি এ বিশ্ব‌বিদ‌্যাল‌য়ের একজন ছাত্র, কেন আমা‌কে টাকা দি‌য়ে উঠ‌তে হ‌বে ? আ‌মি এর বিচার চাই।

২০১৭-১৮ ব‌র্ষের শিক্ষার্থী আ‌কিবুল ইসলাম জানান, আ‌মি প্রথ‌মে হ‌লে উঠ‌লেও ছাত্রলী‌গের অত‌্যাচা‌রের কার‌ণে বা‌হি‌রে ৪ বছর থা‌কি। তারপর যখন আ‌র্থিক দুরবস্থার কার‌ণে হ‌লে উঠার চেষ্টা কর‌লেও ছাত্রলী‌গের‌ নেতাকর্মীরা আমা‌কে হ‌লে উঠ‌তে দেয় নি। এরপর আ‌মি এইচ এম হেলাল উ‌দ্দিন কে ৮ হাজার ৫শ টাকা দি‌য়ে হ‌লে উ‌ঠি। আ‌মি একজন আবা‌সিক হ‌লের‌ ছাত্র হ‌য়ে কেন টাকা দি‌তে হ‌বে? আ‌মি এর বিচার চাই। পরবর্তী কেউ যেন এ ধর‌নের সি‌স্টে‌মের শিকার না হয়, তার নিশ্চয়তা চাই।

তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. আল-আমিন বলেন, প্রথম বর্ষে শুরুতে হলে উঠলে ছাত্রলীগের বিভিন্ন কর্মকান্ডে হল ছেড়ে দিয়ে ২ বছরের জন্য বাইরে ছিলাম। কিন্তু আমার বাবা একজন গার্মেন্টস কর্মী তার পক্ষে হলের বাইরে থাকতে যে খরচ তা বহন করা সম্ভব হচ্ছিল না। এই প্রেক্ষিতে আমি বাকৃবি ফজলুল হক হলের ছাত্রলীগ নেতা এ. এইচ. এম হেলালুজ্জামান ডন ও রাকিবুল ইসলাম আমার কাছ থেকে সর্বমোট ১২ হাজার টাকা নিয়ে আমাকে হলে সিট দেন। পরিপূর্ণ আবাসিক হল হওয়া সত্ত্বেও আমাকে টাকা দিয়ে হলে উঠতে হয়েছে যা অত্যন্ত লজ্জার ও নেক্কারজনক। 

ভেটেরিনারি অনুষদের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রায়হান হৃদয় বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর হলে উঠলে ছাত্রলীগের প্রেশারের কারণে আমি ওই হল ত্যাগ করি। পরবর্তী প্রায় ২ বছরের মতো আমি হলের বাইরে ছিলাম। এভাবে হলের বাইরে আমার অনেক কষ্ট ও অতিরিক্ত ব্যয় হচ্ছিল যা আমার পরিবারের পক্ষে বহন করা সম্ভব হচ্ছিল না। তাই আমি আমার বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ করে ফজলুল হক হলে উঠার চেষ্টা করি। ফজলুল হক হলের ছাত্রলীগ নেতা এ. এইচ. এম হেলালুজ্জামান ডন ও রাকিবুল ইসলাম আমার থেকে টাকা নিয়ে আমাকে হলে উঠায়। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে আমার অনেক বন্ধুদের থেকে টাকা নিয়ে তাদের হলে তোলা হয়। আমি ও আমর বন্ধুদের থেকে ১০ হাজার বা তার বেশি টাকা নিয়ে হলে তোলা হয়। আমার মতো ভুক্তভোগী যাতে আর কেউ না হয় তাই আমি প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

অভিযোগের বিষয়ে এএইচএম হেলালুজ্জামান বলেন, হলে যে সিট বাণিজ্যের বিষয়টি ছিলো এটি সকলেরই জানা। এ বিষয়টি অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই। তবে আমরা যারা হলের ছাত্রলীগ কর্মী ছিলাম তারা কেবল বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদের মাধ্যম ছিলাম। সিট বাণিজ্যের এই টাকা আমরা কেউই নিতাম না। আমরা কেবল মাধ্যম ছিলাম।

অভিযুক্ত আরিফুল ইসলাম সাগর বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ মিথ্যা। এসব অভিযোগ কারা দিচ্ছেন সে সম্পর্কে আমার কোনো ধারণা নাই। হলের সিটের জন্য টাকা নেওয়ার ব্যাপারে আমি অবগত নই। সিট বানিজ্যের সাথে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নাই। হয়ত ছাত্রলীগ পদধারী হওয়ার কারণে আমার নামে এসকল অভিযোগ দিচ্ছেন তারা।

সিট বাণিজ্যের অভিযোগের বিষয়ে রাকিবুল ইসলাম বলেন, এগুলো মিথ্যা অভিযোগ। সিট বাণিজ্যের সাথে আমি কখনই যুক্ত ছিলাম না। আমি হলের একদম সিনিয়র প্রতিনিধি ছিলাম। সেকারণেই হয়ত কেউ মনের ক্ষোভ থেকে আমার নামটি দিয়েছেন।

অভিযুক্ত বাকিদের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা সম্ভব হয় নি ।

এমএসএম / এমএসএম

পবিপ্রবির নতুন উদ্যোগে নারী শিক্ষার্থীদের জন্য স্থায়ী নামাজ রুম

ডিআইইউতে আন্তর্জাতিক সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন সম্পন্ন

গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তিপূর্ণ ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ভিপি মৃদুল, জিএস রায়হান

আইএফপিআরআই ও সার্ক কৃষি কেন্দ্রের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর

ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি'তে শুরু হয়েছে আন্তর্জাতিক সম্মেলন BIM 2025

চাকসু নির্বাচনে ব্যালট নম্বর প্রকাশ, আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু

গঠনতন্ত্রে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের সংযোজন করে ইকসু'র দাবি

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রক্টর ও ছাত্র-উপদেষ্টার পুনঃনিয়োগ

পাস্ট ডিবেটিং সোসাইটির নতুন সভাপতি রউফ, সম্পাদক তন্নি

বিশ্বসেরা ২ শতাংশ গবেষকের তালিকায় পবিপ্রবির ৩ শিক্ষার্থী

রাবিতে শাটডাউন প্রত্যাহার, ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন জাতীয়তাবাদী শিক্ষকদের

পিছানো হল চাকসু নির্বাচন

রাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো চলছে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’