ঢাকা রবিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

বাকৃবিতে ছাত্র ইউনিয়ন ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের কার্যালয়ে হামলার নিন্দা ও বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন


আমান উল্লাহ, বাকৃবি প্রতিনিধি photo আমান উল্লাহ, বাকৃবি প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২১-৮-২০২৪ দুপুর ১২:১৫

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) দেয়াল লিখনকে কেন্দ্র করে বাকবিতন্ডার জেরে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, বাকৃবি সংসদের কার্যালয় এবং সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের কার্যালয় ভাংচুর ও হামলা করে একদল দুষ্কৃতকারী। ন্যাক্কারজনক এই হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে যৌথভাবে সংবাদ সম্মেলন করেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, বাকৃবি সংসদ এবং সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট বাকৃবি শাখার নেতৃবৃন্দ।

মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) রাত ৯ টার দিকে ছাত্র ইউনিয়নের যে কার্যালয়ে হামলা ও ভাংচুর করা হয় সেখানেই সংবাদ সম্মেলন করেন তারা। এসময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, বাকৃবি সংসদের সভাপতি রফিকুল ইসলাম, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, বাকৃবি শাখার সভাপতি রিফা সাজিদা এবং সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, বাকৃবি শাখার সভাপতি নিশাত আঞ্জুম মিথিলাসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট বাকৃবি শাখার সভাপতি নিশাত আঞ্জুম মিথিলা বলেন, "ছাত্র জনতার ঐতিহাসিক রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে। সারাদেশের ছাত্র জনতা নতুন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ নির্মাণে সচেষ্ট রয়েছে। গণতান্ত্রিক সমাজের প্রধান শর্ত বাধাহীনভাবে নিজের মত প্রকাশের অধিকার। দেশের এরকম একটা সময়ে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র ইউনিয়নের মত একটা গণতান্ত্রিক ছাত্র সংগঠনের কার্যালয়ে হামলা ভাংচুরের ঘটনা নিন্দনীয় এবং উদ্বেগজনক। দেয়াল লিখন বা যেকোন বিষয়ে মতভিন্নতা হলে সেটা আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের সুযোগ ছিল। কিন্তু তা না করে অফিসে হামলা, ভাংচুরের ঘটনা একধরনের ফ্যাসিবাদী কর্মকান্ড। ইতিপূর্বে বাকৃবিতে সামান্য বাকবিতন্ডায় রাজনৈতিক কার্যালয় ভাংচুরের ঘটনা নজিরবিহীন। শুধু ছাত্র ইউনিয়ন নয়, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কার্যালয়েও হামলার ঘটনা ঘটেছে। এর থেকে প্রমাণিত হয় হামলাকারীরা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করতে এই হামলা করেছে।
 
তিনি আরও বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অভূতপূর্ব আন্দোলনের লক্ষ্য ছিল আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন এবং গণতন্ত্র ও মত প্রকাশের অধিকার প্রতিষ্ঠা। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি তুলেনি। বরং কিছুদিন আগে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রিয়াশীল সকল ছাত্র সংগঠনের সাথে বৈঠক করেছেন, যেখানে বর্তমান সরকারের দু'জন উপদেষ্টাও উপস্থিত ছিলেন।
আমরা মনে করি, সাধারণ ছাত্র নয়, কিছু সুবিধাবাদী দুস্কৃতিকারী কাজে জড়িত ছিল। পূর্বে ছাত্রলীগের সন্ত্রাস ও দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে তাদের কখনও কোন আন্দোলনে দেখা যায়নি। আজ সাধারণ ছাত্ররা যখন ছাত্রলীগের সন্ত্রাস-দখলদারিত্ব যেন আবার ফিরে না আসে সে চেষ্টা করছে, তখন এই সুবিধাবাদীরা আন্দোলনকারী সেজে ছাত্রলীগের মতোই ক্যাম্পাস ও হলের দখল নিতে চাইছে। তারা ইতিমধ্যে হলগুলোতে ছাত্রলীগের মত করে সিট বন্টন ও হুমকি ধামকি দেয়া শুরু করেছে। আমরা অবিলম্বে প্রশাসনকে এসব বন্ধ করার দাবি জানাচ্ছি।
 
আমরা আরও বলতে চাই যে, ছাত্র ইউনিয়ন ও ছাত্র ফ্রন্টের নেতাকর্মীরা ছাত্রলীগের সন্ত্রাস দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক লড়াই করেছে। সর্বশেষ কোটা সংস্কার ও হাসিনা পতনের এক দফা আন্দোলনের সময় ক্যাম্পাসের প্রত্যেকটি কর্মসূচী বাস্তবায়নে ছাত্র ইউনিয়ন এবং সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের কর্মীরা ভূমিকা রেখেছে যা আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী প্রত্যেকে জানেন। বন্ধ ক্যাম্পাসে গত ৩রা ও ৪ঠা আগস্ট হাসিনা পতনের এক দফা আন্দোলনের সময় ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক তারেক আবদুল্লাহ বিন আনোয়ার ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের দ্বারা মারধরের শিকার হয়েছেন। অথচ, দুঃখের বিষয় আজ তাদের অফিস ভাংচুর করা হয়েছে। ফেসবুকে হুমকি দেয়া হচ্ছে যে, এই সংগঠনগুলোর অস্তিত্ব থাকতে দেওয়া হবে না। এই হুমকিদাতারা কোন সাধারণ ছাত্র নন। সাধারণ নাম নিয়ে কারা, কী উদ্দেশ্যে আজ প্রকৃত আন্দোলনকারীদের উপর হামলা করছে, প্রশাসনকে তা খতিয়ে দেখার অনুরোধ জানাই। সাধারণ শিক্ষার্থীদেরও ভেবে দেখতে অনুরোধ করব, বিশ্ববিদ্যালয়ের বেতন ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে, ছাত্রদের নিরাপত্তা, স্টেশন চালুসহ বিভিন্ন দাবিতে যে সংগঠনগুলো সবসময় সরব থাকে আজ তাদের অফিসে এই হামলা কি গণতান্ত্রিক কর্মকান্ড হলো ? এত রক্ত ঝরানো আন্দোলন তাহলে কিসের জন্য ? কেউ একটা ডাক দিয়ে কিছু লোক জড়ো করে কি একটা সংগঠনের অফিস ভেঙে তছনছ করে দিতে পারে? এই নৈরাজ্য ও জবরদস্তির জন্য কি আবু সাঈদ প্রাণ দিল ? আজ তাদের আন্দোলনের উত্তরাধিকার দাবি করে, তাদের নাম নিয়েই এই দুস্কৃতিকারীরা হামলা করলো এর চেয়ে বেদনার কিছু হয় না। এই ঘৃণ্য হামলার সাথে যুক্তদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় দাবি জানাচ্ছি। সেই সাথে প্রশাসনিক তত্ত্বাবধানে সিট বন্টন, ডাইনিং চালু, বাকসু নির্বাচন ও অবিলম্বে ক্যাম্পাসে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করার দাবি জানাই।

বাকৃবি সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি রিফা সাজিদা বলেন, আমরা বলতে চাই যে, যেকোন ঘটনা ঘটুক না কেন, আমরা মনে করি কোন একটি মতপার্থক্য আমাদের মধ্যে থাকতে পারে। কিন্তু সেটা নিয়ে কথা বলা যায়, আলোচনা হতে পারে। সেটা নিয়ে কখনোই একটি সংগঠনের অফিসে এ ধরনের হামলা এটা কোনভাবেই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া হতে পারে না। আমরা বলবো যে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নামে একদল দুষ্কৃতিকারী উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে এ হামলা করেছে।

বাংলাদেশ ছাত্রইউনিয়ন বাকৃবি সংসদের সভাপতি রফিকুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীরা মনে করছে আমরা ইসলামিক কর্মকান্ড পরিচালনা করতে দিচ্ছি না, কিন্তু বাস্তবে আমরা ইসলামিক কর্মকান্ড পরিচালনা করার বিরুদ্ধে না। উদ্বুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনায় না বসে যারা আজকে আমাদের কার্যালয়ে হামলা, ভাংচুর এবং লুটপাট করেছে তাদের দ্রুত বিচার করে শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে মারুফ বিল্লাহ বলেন, আমরা কোনো সময় ভাংচুরের পক্ষে না। ছাত্র ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা বলতে পারবে না হামলার ঘটনায় আমি জড়িত ছিলাম। ছাত্রইউনিয়ন সাধারণ শিক্ষার্থীদের যে গ্রাফিতি অঙ্কনে বাধা দিচ্ছিলো সেটি মীমাংসার জন্য গিয়েছলাম। সাধারণ শিক্ষার্থীরা ইসলামিক ক্যালিগ্রাফি করার জন্য গতকাল দেয়াল পরিষ্কার করে রং দিয়েছিলো। এর আগের দিন দেয়াল অন্য কেউ ব্যবহার করবে না এটি নিশ্চিত হয়ে জুনিয়র শিক্ষার্থীরা প্রথম বারের মতো ক্যালিগ্রাফি আকার সিদ্ধান্ত নেয়। আজ সকাল থেকে দেয়ালে রং করার পর দুপুরে ছাত্রইউনিয়নের নেতাকর্মীরা বাধা দিলে মীমাংসার জন্য শিক্ষার্থীরা আমাকে ডাকে। সেখানে যাওয়ার পর নেতাকর্মীরা আমাকে বলে যে এই জায়গাটি তাদের বুকিং দেওয়া । পরে আমি তাদের জানাই এটি কারোর বুকিং দেওয়া ছিলো না। আমি বলছিলাম এখানে অঙ্কন করছে তারা সবাই সাধারণ শিক্ষার্থী। আপনি যদি এদের সাথে যোগ দিতে চান তাহলে আপনাদের স্বাগতম। তারপর ছাত্র ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন ধরণের কথা বলতে থাকে। আমরা তাদেরকে বলছি আমরা দেয়ালের অর্ধেক জায়গা ব্যবহার করি, বাকি অর্ধেক জায়গা আপনারা নেন।  কিন্তু তারা সেটি না মেনে দেয়ালে অঙ্কন করতে বাধা দেয়। আমি পরে হলের শিক্ষার্থীদের ডাকলে বিভিন্ন হল থেকে যারা রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাস গঠনের আন্দোলন করছে তারা ছুটে চলে আসে। এসময় ছাত্র ইউনিয়ন হুমকি দিলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে ছাত্রইউনিয়নের অফিস ভাংচুর করে। আমরা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করি। সাধারণ শিক্ষার্থীদের হাতে কোনো অস্ত্র ছিলো না। ছাত্রইউনিয়নের নেতাকর্মীরা মিথ্যাচার করছে। শিক্ষার্থীরা ছাত্রফ্রন্টের কার্যালয়ে হামলা করতে গেলে আমাদের বাধার কারণে হামলা করতে পারেনি।

T.A.S / T.A.S

পবিপ্রবির নতুন উদ্যোগে নারী শিক্ষার্থীদের জন্য স্থায়ী নামাজ রুম

ডিআইইউতে আন্তর্জাতিক সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন সম্পন্ন

গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তিপূর্ণ ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ভিপি মৃদুল, জিএস রায়হান

আইএফপিআরআই ও সার্ক কৃষি কেন্দ্রের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর

ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি'তে শুরু হয়েছে আন্তর্জাতিক সম্মেলন BIM 2025

চাকসু নির্বাচনে ব্যালট নম্বর প্রকাশ, আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু

গঠনতন্ত্রে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের সংযোজন করে ইকসু'র দাবি

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রক্টর ও ছাত্র-উপদেষ্টার পুনঃনিয়োগ

পাস্ট ডিবেটিং সোসাইটির নতুন সভাপতি রউফ, সম্পাদক তন্নি

বিশ্বসেরা ২ শতাংশ গবেষকের তালিকায় পবিপ্রবির ৩ শিক্ষার্থী

রাবিতে শাটডাউন প্রত্যাহার, ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন জাতীয়তাবাদী শিক্ষকদের

পিছানো হল চাকসু নির্বাচন

রাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো চলছে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’