সকল অপরাধের কেন্দ্রবিন্দু ’ঘুষ’

’ঘুষ’ শব্দটি মাত্র দুটি অক্ষরের সমন্বয়ে গঠিত হলেও এর শেকড় অনেক দূর পর্যন্ত বিস্তৃত। সমাজ তথা দেশের সর্বত্র যত অনিয়ম,অপকর্ম, অসঙ্গতি, আত্মীয়করণ,দলীয়করণ, ক্ষমতা গ্রহণের প্রতিযোগীতা ও স্বজনপ্রীতি দেখা যায় তার সবকিছুর মূলেই রয়েছে এই ঘুষের গভীর সম্পর্ক। শুধুমাত্র এই ঘুষের কারনে মানুষ অনিয়মে জড়ায়। ঘুষ পাওয়ার আশায় একজন আরেকজনকে ঘুষ দেয়। ঘুষ প্রথা আছে বলেই বর্তমানে বেশিরভাগ মানুষ রাজনীতিতে জড়ায়, টাকার বিনিময়ে নিজের দল ভারী করতে লোক জড়ো করে, টাকার বিনিময়ে ভোট কিনে জনপ্রতিনিধি হওয়ার জন্য নির্বাচনে ব্যাপক প্রতিদ্বন্ধীতা দেখা যায়। মোটা টাকা ঘুষ দিয়ে চাকরি কিনে সারাজীবন ঘুষের রাজত্ব কায়েম করে। মানুষ একমাত্র ঘুষের গ্যাঁড়াকল থেকে বের হতে পারলেই এই সমাজে আর কোন অনিয়ম থাকবে বলে আমার মনে হয়না। এই নিয়ে বিস্তারিত লেখার আগে ঘুষের সাথে আরো একটু পরিচিত হওয়া যাক।
ঘুষ কি:
ঘুষ হলো কোনো সরকারি বা আইনগত দায়িত্বে নিয়োজিত কোনো কর্মকর্তা বা অন্য কোনো ব্যক্তির কর্মকে প্রভাবিত করার জন্য মূল্যবান কোনো বস্তুর প্রস্তাব, দেওয়া, গ্রহণ বা অনুরোধ করা এবং ব্যক্তিকে তাদের কর্তব্য এবং পরিচিতের পরিপন্থী কাজ করতে প্ররোচিত করা। সরকারী কার্যক্রমের ক্ষেত্রে, ঘুষ হলো দুর্নীতিগ্রস্ত অনুরোধ, গ্রহণযোগ্যতা, বা সরকারী পদক্ষেপের বিনিময়ে মূল্য হস্তান্তর।
ঘুষ হলো একটি বেআইনি বা অনৈতিক উপহার বা লবিং প্রচেষ্টা যা প্রাপকের আচরণকে প্রভাবিত করার জন্য দেওয়া হয়। এটি হতে পারে অর্থ, দ্রব্য , কর্মের অধিকার, সম্পত্তি, পছন্দ, বিশেষাধিকার, ভাতা, মূল্যের বস্তু, সুবিধা, অথবা নিছক সরকারী বা জনসাধারণের ক্ষমতায় একজন ব্যক্তির কর্ম, ভোট বা প্রভাবকে প্ররোচিত বা প্রভাবিত করার প্রতিশ্রুতি।
ঘুষের উপত্তি:
ঘুষের উৎপত্তি যেখানে বা যেভাবেই হোকনা কেন তা আজ সমাজের এক মরণব্যাধিতে রূপ নিয়েছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। এই ঘুষের সাথে পরিচয় নেই এমন লোকও বর্তমান সমাজে খুঁজে পাওয়া দুস্কর। তবে সবাই ঘুষ খায় এমনটি হলফ করে বলা যাবেনা। আবার পরোক্ষভাবে হিসেব করলে সবার পেটেই ঘুষের টাকা কম/বেশি যায়।
প্রথমে যদি নিজের থেকে শুরু করি তাহলে বলতেই পারি ঘুষ নেয়া বা দেয়া পরিবার থেকেই শুরু হয়। যা পর্যাক্রমে সমাজ তথা দেশের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছড়িয়ে পড়ে। আমাদের দেশের বাস্তবতা হলো একটা সন্তান পৃথিবীতে আসার আগে সে ঘুষের রোষানলে পড়ে। হাসপাতালে একটু অতিরিক্ত সেবা পাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট আয়া, ওয়ার্ড বয় ও নার্সকে খুশি করার নামে ঘুষ দেয়। এর ফলে যারা খুশি করার সামর্থ্য থাকেনা তরা প্রকৃত সেবা থেকে বঞ্চিত হয়। তারপর সদ্যভূমিষ্ট সেই অবুজ সন্তানের জন্মনিবন্ধন করতে ঘুষ দিতে হয়। এরপর সন্তানকে একটু ভালো স্কুলে পড়াশোনা করাতে ঘুষ দিয়ে নামিদামী স্কুলে ভর্তি করা হয়। ঘুষ কি জিনিষ যে জানলইনা অথচ তার নামে
কয়েকটি জায়গায় ঘুষ দেয়া হয়ে গেল। আবার এই পড়াশোনার নামে বাধ্যতামূলক প্রাইভেট টিউশনির নামে আরেক দফা ঘুষ আদায় করা হয়। অনেক কষ্টে ডিগ্রি অর্জন করার পর এবার চাকরি যুদ্ধ শুরু হলো। প্রার্থীর তুলনায় পর্যাপ্ত পদ না থাকায় সেখানে একদফা ঘুষ দিয়ে হয়ে গেল চাকরি। এখন সে বুঝতে শিখেছে তাঁর আজকের অবস্থানের জন্য কতটা কঠিন পথ পাড়ি দিয়েছে আর কি পরিমাণ অর্থ বৈধ ও অবৈধ পথে খরচ করা হয়েছে। এতদিন যে শুধু ঘুষ দিয়ে এসেছে আজ তার নেবার পালা। তাই চেয়ারে বসেই ঘুষ নেয়া শুরু করল। শুধু তাই নয় নিয়মিত প্রতিযোগীতা শুরু হয়েছে কার থেকে কে বেশি নিতে পারবে। তাহলে এবার আপনারাই বলুন ঘুষের উৎপত্তিটা কোথায় ?
কারা ঘুষ খায়/খাওয়ায় ?
সাধারণত ঘুষের প্রক্রিয়াটি দুটি পক্ষের মধ্যে হয়ে থাকে। একটি হচ্ছে দাতা আরেকটি গ্রহিতা। ক্ষেত্রবিশেষ আরো একটি পক্ষ জড়িত হয় আর সেটি হচ্ছে দালাল,মিডলম্যান বা মাধ্যম। সাধারণত ঘুষ খাওয়ার তালিকায় থাকে ক্ষমতা, শাষক গোষ্টি অথবা সরকারি যেকোন সেবাদাতা। আর সেবাগ্রতিা ও ক্ষমতার বিপরীতে থাকা লোকজন ঘুষ দিয়ে থাকে। আন্তর্জাতিক সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (টিআই) এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২১ সালে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ দুর্নীতিগ্রস্ত খাত হলো আইন- শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা। শীর্ষ তিনে থাকা অপর দুটি সংস্থা হলো পাসপোর্ট ও বিআরটিএ। এই তিন খাতে ঘুষ নেওয়া হয়েছে সবচেয়ে বেশি। জরিপের আওতার সেবা খাতগুলো হলো- আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা, পাসপোর্ট, বিআরটিএ, বিচারিক সেবা, ভূমি সেবা, শিক্ষা (সরকারি ও এমপিওভুক্ত), স্বাস্থ্য (সরকারি), কৃষি, বিদ্যুৎ, গ্যাস, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান, বিমা, কর ও শুল্ক, ব্যাংকিং, এনজিও (প্রধানত ক্ষুদ্র ও মাঝারি ঋণ), জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ সহায়তা এবং অন্যান্য (মোবাইল ব্যাংকিং, অনলাইন শপিং, ওয়াসা, নির্বাচন কমিশন, ডাক বিভাগ, সমাজসেবা অধিদপ্তর ইত্যাদি)। এছাড়াও
বেসরকারি খাতেও বর্তমানে চলে সমানতালে ঘুষের ব্যবহার। ২০২৩ সালের জন্য দুর্নীতির ধারণাসূচক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, দুর্নীতির মাত্রা বিশ্বের যেসব দেশে সবচেয়ে বেশি, তার মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান দশম। অর্থাৎ বাংলাদেশের চেয়ে বেশি দুর্নীতি কওে এমন আরো ৯টি দেশ আছে। এর আগে ২০২২ সালে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১২তম। অর্থাৎ দুর্নীতি আগের তুলনায় বেড়েছে। ধারণাসূচক অনুযায়ী, গত ১৬ বছরের মধ্যে বাংলাদেশে দুর্নীতির মাত্রা সবচেয়ে বেশি ছিল ২০২৩ সালে। টিআইয়ের প্রতিবেদন অনুসারে, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ শুধু আফগানিস্তানের চেয়ে ভালো অবস্থানে আছে। ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কাসহ অন্য দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশে দুর্নীতির হার বেশি। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভুটানের স্কোর ৬৮, ভারত ও মালদ্বীপের ৩৯, নেপালের ৩৫, শ্রীলঙ্কার ৩৪, পাকিস্তানের ২৯, বাংলাদেশের ২৪ ও আফগানিস্তানের ২০। কম দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে ৯০ পেয়ে তালিকার শীর্ষে আছে ডেনমার্ক। ৮৭ পেয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে ফিনল্যান্ড। তৃতীয় স্থানে নিউজিল্যান্ড, চতুর্থ স্থানে নরওয়ে। যেসব দেশে দুর্নীতি কম সেই তালিকার পঞ্চম স্থানে সিঙ্গাপুর। ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে যৌথভাবে সুইডেন ও সুইজারল্যান্ড। অন্যদিকে দুর্নীতির মাত্রা সবচেয়ে বেশি সোমালিয়ায়। তাদের স্কোর মাত্র ১১। দ্বিতীয় স্থানে আছে সাউথ সুদান, সিরিয়া ও ভেনেজুয়েলা। বাংলাদেশের
অবস্থান ১৮০টি দেশের মধ্যে ১৪৯তম। আগের বছর ১৪৭তম অবস্থানে ছিল বাংলাদেশ। ঘুষ লেনদেনে রাজনৈতিক ভূমিক সবচেয়ে বেশি, তবে টিআইয়ের তালিকায় না থাকলেও সমাজের বাস্তবতা বলে দিচ্ছে জাতির বিবেক খ্যাত সাংবাদিদের একটা বড় অংশ ঘুষের সাথে জড়িয়ে পড়েছে। আর এই ঘুষের কারনে তারা সঠিক সংবাদ/তথ্য প্রকাশ করতে পারছেনা।
ঘুষের প্রচলণ কেন:
আমরা সকলেই কম/বেশি অবগত আছি ঘুষ কেন দেয়া নেয়া হয়। সাধারণত ব্যক্তি সাময়ীক আর্থিক সুবিধা আদায়ের জন্য ঘুষ নিয়ে থাকেন। আর কেউ বিশেষ সুবিধা ভোগের জন্য ঘুষ দিয়ে থাকেন। আবার অনেকে বাধ্য হয়ে ঘুষ দিয়ে থাকেন। কারন যে সমাজে ঘুষ ছাড়া কিছু হয়না সেই সমাজে ঘুষ না দিলে পদে পদে হয়রানি হওয়াটাই স্বাভাবিক। ফলে উভয়ের মধ্যে ঘুষের আদান প্রদান শুরু হয়।
ঘুষের উপকারিতা ও অপকারিতা:
ঘুষের ফলে একটা শ্রেণির লোক সাময়িক কিছু অর্থ পেলেও দিনের শেষে তিনিও ক্ষতিগ্রস্থ হন। তাকেও আবার অন্য জায়গায় আরো বেশি ঘুষ দিতে হয়। ফলে বাস্তবিকপক্ষে ঘুষের কোন উপকারিতা নেই। কিন্তু অপকারিতার মাত্রা এতো বেশি যে কাগজে কলমে তা লিখে শেষ করার মতো নয়। প্রতিটি ভুক্তভোগীই জানে ঘুষের ফলে আমাদের কত বড় ক্ষতি হচ্ছে। বর্তমান সমাজে ঘুষের প্রচলণ এমন জায়গায় পৌছেছে যে ঘুষ ছাড়া এখন আর কোন কাজই হয়না। আবার ঘুষ দিলে অসম্ভভব কাজও সহজেই হয়ে যায়। শুধু বৈধ কাজ নয় অবৈধ কাজকেও বৈধতা দেয়া হয়। এর ফলে প্রকৃত যারা বৈধ সেবা গ্রহিতা তারা অধিকার বঞ্চিত হচ্ছে। নষ্ট হচ্ছে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র। বৈষম্য বাড়ছে প্রতিনিয়ত। আমাদের অবস্থান নষ্ট হচ্ছে বহির্বিশ্বেও। বাংলাদেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ঘুষ-দুর্নীতি, শ্রম পরিবেশ, স্বচ্ছতার ঘাটতিসহ বেশ কিছু বাধা দেখছে মার্কিন সংস্থা অফিস অব দ্য ইউনাইটেড স্টেটস ট্রেড রিপ্রেজেনটেটিভ (ইউএসটিআর)। সংস্থাটি বলছে, কিছু আইনের যথাযথ প্রয়োগ না থাকায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। আবার কিছু আইন নিজেই বিনিয়োগে বাধার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে বিদেশি বিনিয়োগ হারানোর পাশাপাশি আমরা নানা সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। প্রতিবেদনে বাংলাদেশে বিনিয়োগের বাধাগুলোর শুরুতেই সরকারি কেনা-কাটায় দুর্নীতি ও স্বচ্ছতার ঘাটতিকে দায়ী করা হয়েছে। এতে বলা হয়, ২০০৬ সালের পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইনের আওতায় বাংলাদেশে সরকারি কেনাকাটার জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়।
আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতামূলক দরপত্রের মূলনীতি মেনে চলার কথা বললেও বাংলাদেশে দুর্নীতি খুব সাধারণ বিষয়। সরকার ইলেকট্রনিক প্রকিউরমেন্ট পোর্টাল চালু করলেও মার্কিন অংশীজনেরা উদ্বেগ জানিয়ে বলেছে, পোর্টালে মেয়াদোত্তীর্ণ কারিগরি বিষয় রয়ে গেছে। পছন্দের আবেদনকারীকে দরপত্র পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। সার্বিকভাবে সরকারি দরপত্র প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতার ঘাটতি রয়েছে। বাংলাদেশে সব জায়গায় নকল ও চুরি করা বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ বা সেবা খুব সহজেই পাওয়া যায়। প্রতিবেদনে জানানো হয়, অগ্নিনিরাপত্তা ও ভবন নিরাপত্তা, সভা-সমাবেশের অধিকারসহ শ্রম অধিকার পুরোপুরি নিশ্চিত করতে না পারায় যুক্তরাষ্ট্র ২০১৩ সালে জিএসপির আওতায় বাংলাদেশের সব ধরনের শুল্কছাড় স্থগিত করে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত জিএসপির আওতায় শুল্কমুক্ত সুবিধা পাওয়ার যোগ্য হয়নি বাংলাদেশ। এসব কারনে আন্তর্জাতিক বাজারে আমরা অনেকটা পিছিয়ে পড়ছি। শুধু তাই নয় ঘুষ দেয়া নেয়া বন্ধ হলে কমবে প্রকল্পের ব্যয়, বন্ধ হবে টাকা পাচার, বাড়বে ব্যবসা বাণিজ্য ও কর্মসংস্থান। চাকরির জন্য তখন আর ঘুষ দিতে হবেনা। অর্থ পাচার বন্ধ হলে রিজার্ব বাড়বে ফলে ডলারের বিপরীতে বাড়বে টাকার মান। কমে যাবে নিত্যপণ্যসহ যেকোন জিনিষের বাজার দর। জীবন জীবিকা অনেক সহজ হয়ে যাবে।
ঘুষ/দুর্নীতি থেকে উত্তরণের উপায়:
ঘুষ দুর্নীতিতে দেশ ছেয়ে গেলেও তার কবল থেকে বের হয়ে আসা ততটা কঠিন নয়। আমাদের দৈর্য ধরার পাশাপাশি কিছু ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। তবে এর জন্য প্রথমে জনগণ ও সরকারকে আন্তরিক হতে হবে। প্রত্যেক নাগরিক তার নিজের দায়িত্বটা সঠিকভাবে পালন করতে হবে। আর এর জন্য সাংবাদিকেরা তাদের দায়িত্ব যথাযথ পালন করলে সেটা হবে ঘুষ বন্ধের জন্য বড় সহায়ক। জনগণের পক্ষ থেকেই ঘুষ দেয়ার অভ্যাস পরিহার করতে হবে। নিজের প্রাপ্যকে যথেষ্ঠ মনে করে অতিরিক্ত কিছু পাওয়ার আশা থেকে বেড়িয়ে আসতে হবে। সন্তুষ্টি অর্জনের ক্ষমতাকে আরো জোরদার করতে হবে। সত্য কথা বলার মতো সাহস থাকতে হবে। যেখানে অন্যায় সেখানেই প্রতিবাদ করতে হবে। প্রতিটা পরিবার থেকে ঘুষের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান গড়ে তুলতে হবে। আমাদের ভয় পেলে চলবেনা মনে রাখতে হবে ঘুষ গ্রহিতার চেয়ে আমরা দাতার সংখ্যা অনেক বেশি। ঘুষখোরদের সামাজিকভাবে বয়কট করতে হবে। সমাজ বা রাষ্ট্রের কোন দায়িত্বে ঘুষখোরদের বসানো যাবেনা। ঘুষখোরদের চিহ্নিত করে তাদের
বিরুদ্ধে জোরালো ভূমিকা রাখতে হবে। কারন ঘুষ অন্যায়ের জন্ম দেয় এবং অন্যায় দুর্নীতির দুষ্টচক্র তৈরি করে। জনগণের দাবির সাথে সরকারকেই কিছু কাজ করতে হবে, যেমন: দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) আরো শক্তিশালী করতে হবে। অন্যায়কারী যেই হোক না কেন প্রচলিত আইন অনুযায়ী তার উপযুক্ত বিচার করতে হবে। ২০১৮ সালের সরকারি চাকরি আইনে যেখানে বলা হয়েছে, ”কোনো সরকারি কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারের আগে দুদককে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে। পাশাপাশি সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত পরিচালনায় দুদকের ক্ষমতাও সীমিত করা হয়েছে” সেসব আইন বাতিল করতে হবে। সরকার চাইলে পর্যায়ক্রমে কাগুজে টাকার প্রচলণ বাতিল করে সমস্ত লেনদেন কেনাকাটা অনলাইনের মাধ্যমে করতে পারবে। সকল নাকরিককে স্মার্টকাড সুবিধায় এনে সেই কার্ডের মাধ্যমে যাবতীয় কেনাকাটার ব্যবস্থা করতে পারেন। ফলে ঘুষ দেয়া বা নেয়ার আর কোন সুযোগ থাকবেনা। চাঁদাবাজি, জুলুম, নির্যাতন থাকবেনা,তাহলে দেখবেন এই দেশ থেকে আর কোন অর্থ পাচার হবেনা। ডলারের দাম কমে যাবে। তখন মানুষ আমাদের দেশকে আদর্শ দেশ মনে করে আর বিদেশে যেতে চাইবেনা। একটা লোকও আর অভাবে থাকবেনা। অন্যের সম্পদের ওপর আর কারো লোভ থাকবেনা। ধনে ধানে পরিপূর্ণ হবে আমাদের সোনার বাংলাদেশ।
আসুন নিজেকে বদলাই, দেশকে বদলাই, ঘুষমুক্ত বাংলাদেশ বানাই।
লেখক: সিনিয়র সাংবাদিক ও সভাপতি, রেলওয়ে জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন
T.A.S / এমএসএম

অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনীতি

টেকসই উন্নয়নে প্রাথমিক শিক্ষা

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি ও বাস্তবতা

গাজায় যুদ্ধের নৃশংসতা ও আন্তর্জাতিক বিচার আদালত

বন্ধ হোক অপসাংবাদিকতা

বিভাজনের রাজনীতি দেশের জন্য হুমকি হতে পারে

প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের স্বপ্নের সৌদি আরব

শারদীয় দুর্গোৎসবে সম্প্রীতির বাংলাদেশ ভাবনা

দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করার জন্য প্রয়োজন পর্যটন গন্তব্যগুলোর সামগ্রিক উন্নয়ন এবং শক্তিশালী ব্র্যান্ডিং

গণতান্ত্রিক অধিকার ও নতুন নেতৃত্বের অন্বেষণ

দুঃখই সবচেয়ে আপন

জাতিগত নিধন বন্ধে জাতিসংঘের ব্যর্থতা
