ঢাকা বুধবার, ২৭ আগস্ট, ২০২৫

পাবনায় চাঁদাবাজরা বেপরোয়া: চাঁদা না পেয়ে খুন, হামলা চলছে অহরহ


এম মাহফুজ আলম, পাবনা photo এম মাহফুজ আলম, পাবনা
প্রকাশিত: ২-৯-২০২৪ দুপুর ৩:২১

পাবনাা জেলার বিভিন্ন স্থানে দলীয় পরিচয় দিয়ে বেপরোয়াভাবে চাঁদাবাজির কারণে মানুষ অতিষ্ট হয়ে ওঠেছে। চাঁদা না পাওয়ায় হামলা, অপহরণ ও খুনের মত জঘন্য ঘটনাও ঘটছে। ঈশ্বরদীতে চাঁদা না পেয়ে একজনকে গুম করে হত্যা করা হয়েছে। একই ধরণের ঘটনায় ব্যবসায়িদেও উপর হামলা করা হয়েছে।
ঈশ্বরদীতে হত্যাকান্ডের পূর্বে পরিবারের কাছে টাকা চাওয়ার বিষয়টি এমনিভাবে বলা হয়,‘তোমার বাবা আমাদের নিকট আটকা আছে। র‌্যাব-পুলিশের সঙ্গে কথা বলে লাভ নেই। তোমার বাবার জীবিত মুখ দেখতে চাইলে ১০ লাখ টাকা দিতে হবে।’ এমন কথাবার্তার একটি অডিও ক্লিপ ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। অজ্ঞাত এক ব্যক্তি ভুক্তভোগীর ছেলে আল-আমিন হোসেনের মোবাইল ফোনে এই মুক্তিপণ দাবি করেন। অবশেষে নিখোঁজের সাত দিন পর শনিবার তার বাবা সিরাজ ফকিরের অর্ধগলিত মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পাবনার ঈশ্বরদী শহরের রহিমপুর এলাকার একটি চারতলা ভাড়া বাসার টয়লেট থেকে হাত-পা বাঁধা মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। 
নিহত সিরাজ ফকির (৬৭) উপজেলার লক্ষ্মীকুন্ডা ইউনিয়নের কৈকুন্ডা গ্রামের মৃত জলিল ফকিরের ছেলে। তিনি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পে শ্রমিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
 যে বাসা থেকে মৃতদেহটি উদ্ধার করা হয়, সেই বাড়ির মালিক শরিফুল ইসলাম বুলবুল বলেন, গত ২২ আগস্ট উপজেলার বরইচরা গ্রামের আজিবর রহমানের ছেলে শাহজাহান আলী (২৮) সস্ত্রীক চারতলার একটি ফ্ল্যাট ভাড়া  নেন। ২৭ আগস্ট ফ্ল্যাটে তালা মেরে তারা বাইরে গিয়ে আর ফেরেননি। দু’দিন ধরে ওই ফ্ল্যাট থেকে দুর্গন্ধ বের হচ্ছিল। সন্দেহ হওয়ায় পুলিশে খবর দিলে তালা ভেঙে বাথরুম থেকে হাত-পা বাঁধা অর্ধগলিত মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। 
নিহতের ছেলে আল-আমিন হোসেন বলেন, গত ২৪ আগস্ট রূপপুর প্রকল্প থেকে বাড়ি ফেরার পর আমার বাবা নিখোঁজ হন। ২৬ আগস্ট থানায় জিডি করার পর আমার েেমাবাইল ফোনে কল করে বাবার মুক্তির জন্য ১০ লাখ টাকা দাবি করেন এক ব্যক্তি। এসব কথাবার্তা রেকর্ড করে আমি ফেসবুকে দিয়েছিলাম। 
ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার গোস্বামী বলেন, পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। আশা করছি, খুব শিগগিরই রহস্য উন্মোচিত হবে।
এদিকে চাঁদা না দেয়ায় পাবনায় ব্যবসায়ীদের উপর হামলার অভিযোগ উঠেছে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। তাদের মারধরে অন্তত: ৫ জন ব্যবসায়ী আহত হয়েছেন। তার মধ্যে গুরুতর আহত ৩ জনকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
 রোববার (০১ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে ঈশ্বরদী উপজেলার মুলাডুলি আড়তে এ ঘটনা ঘটে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ব্যবসায়ীরা হলেন, উপজেলার মুলাডুলি ইউনিয়নের মুলাডুলি গ্রামের মৃত আহাম্মদ আলী  শেখের ছেলে আব্দুল হামিদ শেখ (৬৫), মুলাডুলি মধ্যপাড়া গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে মনজুরুল ইসলাম তারেক (২৩) ও একই গ্রামের লাল মিয়া ব্যাপারীর ছেলে জনি ব্যাপারী (৩২)।
আহত ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গত কয়েকদিন ধরে মুলাডুলি আড়তে গিয়ে ব্যবসায়ীদের কাছে ৫ লাখ চাঁদা দাবি করেন স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা। তাদের চাহিদা মাফিক চাঁদা না দেয়ায়  রোববার দুপুরে তারা লাঠিশোঠা, লোহার রড, জিআই পাইপ নিয়ে ব্যবসায়ীদের উপর হামলা করে মারপিট করে। এতে ৫ জন আহত হয়। তাদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহত ব্যবসায়ী আব্দুল হামিদ শেখ বলেন, ‘জেলা বিএনপির আহবায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব গ্রুপের সমর্থক রাজ্জাক, ফিরোজ, ডাবলু, হাবিব, সুজন, মাসুদসহ অন্তত ৫০ থেকে ৬০ জন এসে আমাদের আড়ত ও  দোকানপাট ভাঙচুর করে। আমরা বাধা দিতে গেলে বেধড়ক মারপিট করে।’
হামলায় ক্ষতিগ্রস্থ মুলাডুলি ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুস সামাদ বলেন, ’তাদের উদ্দেশ্য চাঁদাবাজি। আর চাঁদা না পেয়ে এখন আড়ত দখল করে নিতে এই হামলা করেছে। আমরা এই হামলার বিচার চাই।’
এ বিষয়ে ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছে। কয়েকজন আহত হয়েছে বলে শুনেছি। তবে অভিযোগ পাইনি। ভুক্তভোগীরা লিখিত অভিযোগ দিলে মামলা নেয়া হবে।’
এছাড়া পাবনায় বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে জেলা বাস মিনিবাস ও কোচ মালিক সমিতির কার্যালয় ভাংচুর, দখল ও অবৈধভাবে নিজেকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণার অভিযোগ উঠেছে। প্রতিকার চেয়ে পাবনা জেলা প্রশাসক ও থানা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন সমিতির সাধারণ সদস্য পরিবহন মালিকেরা। শনিবার (৩১ আগষ্ট) কেন্দ্রীয়
বাস টার্মিনালে সমিতির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এ অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে সমিতির সদস্যরা অভিযোগ করেন, ২০০৮ সালে জেলা বাস-মিনিবাস ও কোচ মালিক সমিতির সর্বশেষ নির্বাচনে মোঃ ওমর আলী সভাপতি ও কালাম আহম্মেদ সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হন। তিন বছর কমিটির মেয়াদ পূর্তির পরেও তারা তৎকালীন সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রীর প্রভাব খাটিয়ে নির্বাচন দেননি। সাধারণ সদস্যদের সমিতির হিসাব নিকাশ ও রেজিস্টার সংরক্ষণ না কওে নিজেদের মতো তহবিল লুট করেন।
আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর তারা আত্মগোপনে চলে যান। এরপর গত ৭ আগস্ট সমিতির সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদের সম্মতিতে গঠন তন্ত্রের ১৪ (ঘ) ধারা অনুযায়ী কাউছার রহমান রিন্টুকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাইদুর রহমান মানিককে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়া হয়।
গম্প্রতি, পাবনা সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রেহানুল ইসলাম বুলাল বাস মিনিবাস ও কোচ মালিক সমিতি দখলে নেয়ার ষড়যন্ত্র শুরু করেন। গত ২৬ আগস্ট তিনি কতিপয় সন্ত্রাসী সাথে নিয়ে এসে শহরের এধার কর্ণারের সমিতির কার্যালয়ের তালা ভেঙে মালিক সদস্যদের সাক্ষর করা রেজিস্ট্রার বই ও রেজুলেশন বই চুরি করে নিয়ে যান। এরপর তিনি সেলিম হোসেনকে সভাপতি ও নিজেকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করে সমিতির কার্যালয় দখল করে নিয়েছেন। সমিতির সদস্যরা আরো অভিযোগ করেন, সভাপতি সেলিম হোসেন ৮ বছর আগেই তার গাড়ীর ব্যানার ও ট্রিপ বিক্রি করে দেয়ায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সদস্যপদ হারিয়েছেন। এবং রেহানুল ইসলাম বুলাল নিজে বা তার পরিবারের কেউ কখনোই পরিবহণ ব্যবসায় যুক্ত নন, তার নামে মালিক সমিতিতে কোন গাড়ীও কখনো তালিকাভুক্ত ছিল না। এরপরেও চর দখলের মতো করে আমাদের অফিস ও কমিটি তিনি বিএনপির নাম ভাঙিয়ে দখল করেছেন। আমরা প্রশাসনকে এ বিষয়ে লিখিতভাবে জানিয়েছি। বিএনপির শীর্ষ নের্তৃত্বকেও এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। সমিতির সদস্যরা জানান, বিগত সরকারের ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে কতিপয় ব্যক্তি আমাদের জিম্মি করে রেখেছিলেন। এখন নতুন সরকারের সময়েও একই ঘটনার
পুণরাবৃত্তি আমরা চাই না। নির্বাচনের মাধ্যমে সমিতির নতুন নেতৃত নির্ধারণে আমরা সবার সহযোগিতা কামনা করি।
সংবাদ সম্মেলনে সমিতির প্রায় অর্ধশত সদস্য উপস্থিত ছিলেন। তবে, এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রেহানুল ইসলাম বুলাল। তিনি বলেন, সমিতির সর্বশেষ কমিটির মেয়াদ ২০২২ সালে শেষ হয়েছে। আমি সমিতির ২০ নম্বর সদস্য। সম্পূর্ণ নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় আমাদের কমিটি গঠিত হয়েছে যা সরকারি অনুমোদনও পেয়েছে। আগামী তিনবছরের মধ্যে কোন নির্বাচনের সুযোগ নেই। তালা ভেঙে অফিস দখলের বানোয়াট অভিযোগ না করে সকল সদস্যকে সমিতির অফিসে এসে কথা বলারও অহ্বান জানান তিনি।
এছাড়া বাসার্মিনাল, মাছ বাজারসহ বিভিন্ন স্থান দখলে মরিয়া হয়ে ওঠেছে বিএনপির কতিপয় লোকজন। এমন অভিযোগ নিত্যদিনের।
এ ব্যাপারে পুলিশের একজন উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা বলেন,“আমাদের কাছে লিখিত কোন অভিযোগ না এলে আমরা আইনী ব্যবস্থা নেব কী ভাবে?”  

এমএসএম / এমএসএম

লোহাগড়া বাজারে সরকারি সড়ক গিলে খাচ্ছে তিনতলা ভবন

জয়ের ঘ্রাণ পাচ্ছেন শেখ সাদী ?

যমুনা ব্যাংকের ঢাকা উত্তর ও ময়মনসিংহ অঞ্চলের ম্যানেজারস’ মিটিং অনুষ্ঠিত

মিরসরাইয়ে মহাসড়ক সংলগ্ন অবৈধ বাউন্ডারি ওয়াল গুঁড়িয়ে দিল উপজেলা প্রশাসন

চিলমারীতে যৌথ অভিযানে, অনলাইন জুয়ার সরঞ্জামসহ দুই যুবক আটক

পারিবারিক দ্বন্দ্বে আহত হয়েও ‘জুলাই যোদ্ধা’ গেজেটে নাম পেলেন বাঘার জাহিদ

মহেশখালীতে শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা, ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ড

কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে মানববন্ধন ও গণস্বাক্ষর অনুষ্ঠিত

তাড়াশে আগুনে বসত ঘর পুড়ে ছাই, ১০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি

সুবর্ণচরে বিশিষ্ট সমাজসেবক আকবর হোসেনকে সংবর্ধনা

কোটালীপাড়ায় পুকুরে ডুবে প্রতিবন্ধী যুবকের মৃত্যু

ধামরাইয়ে পোশাক কারখানা বন্ধের প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ করে শ্রমিকদের বিক্ষোভ

মির্জাগঞ্জে মাসিক আইন শৃঙ্খলা বিষয়ক সভা অনুষ্ঠিত