ঢাকা মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২৫

আত্মহত্যা কোনো সমাধান নয় বরং জীবনের অন্তরায়


নাজিয়া আফরিন photo নাজিয়া আফরিন
প্রকাশিত: ২৫-৮-২০২১ বিকাল ৫:৩৫
সমগ্র জীবন ধরে একজন ব্যক্তি যে নীতিকথা গুলো রপ্ত করে তন্মধ্যে একটি হলো আত্মহত্যা মহাপাপ। আত্মহত্যা মহাপাপ জেনেও জীবনের এই কঠিনতম সিদ্ধান্তটি বেছে নেয় আত্মহনন কারী যার একটি প্রধান কারন আত্মহত্যাকে মহাপাপ হিসেবে আখ্যায়িত করা হলেও এর থেকে বেঁচে থাকার কৌশল রপ্ত করানোর বিষয়টিতে আমাদের সমাজ এখনো অনেক পিছিয়ে। যার ফলস্বরূপ বর্তমানে খবরের কাগজ থেকে টিভির পর্দা সবস্থলেই আত্মহত্যার খবর ভেসে বেড়াচ্ছে। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী আত্মহত্যার কারণে যেসকল লোকেদের মারা যাওয়ার খবর পাওয়া যায় তাদের মধ্যে ২.০৬% বাংলাদেশী যা ইতোমধ্যে আরো ভয়ংকরভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। 
 
করোনা পরিস্থিতিতে ভয়ংকর হয়ে উঠেছে কিছু সামাজিক সমস্যা। তন্মধ্যে আত্মহত্যা একটি। তরুণ সমাজের মাঝে এই আত্মহত্যার পথ বেছে নেওয়ার প্রবণতা বেশি। আমাদের দেশের সমাজিক প্রেক্ষাপটে পুরুষের তুলনায় নারীদের সংখ্যা আরো বেশি। এক পরিসংখ্যান মতে গত এক বছরে সারা দেশে আত্মহত্যা করেছেন ১৪ হাজার ৪৩৬ জন নারী পুরুষ। যা কিনা পূর্বের বছরের তুলনায় প্রায় ৪৪ শতাংশ বেশি। দিন দিন এই সংখ্যা আরো উল্লেখযোগ্য অনুপাতে বাড়ছে যা একটি দেশের কিংবা একটি জাতির জন্য হুমকিস্বরূপ। আত্নহননের মধ্য দিয়ে শেষ হয়ে যায় একটি সম্ভাবনাময় জীবনের, সমাপ্তি ঘটে  জীবনকে নিয়ে গড়ে উঠা রং-বেরঙের স্বপ্নের, থেমে যায় কিছু জীবন চাকার, পরিসমাপ্তি ঘটে সকল প্রত্যাশার।
 
 তরুনসমাজের আত্মহননের কারনগুলো বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে জীবন সম্পর্কে উদ্বিগ্নতা, বেকারত্ব,পারিবারিক সমস্যা,প্রেমঘটিত বিষয়সহ নানা কারনে সৃষ্টি হওয়া মানসিক অস্থিরতা ই তাদের এপথে ঠেলে দেয়। মানসিক স্থবিরতা মানসিক সুস্থতার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কিন্তু আমাদের সমাজে মানসিক স্বাস্থ্য বিকশিত করার তেমন কোনো প্রয়াস লক্ষ্য করা যায়না বললেই চলে। বরং মানসিক ভাবে ভেঙে পড়া মানুষকে নানারকম ভাবে আঘাত করা হয় , যাতে সে আরো একা হয়ে যায়,গুটিয়ে নেয় নিজেকে যার দরুন মানসিক উদ্বিগ্নতা রূপান্তরিত হয় আত্মহননের মতো ভয়াবহ পরিণতিতে। যার ফলে অচিরেই থেমে যায় কিছু না বলা কথার, কিছু অদেখা স্বপ্নের।
 
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার 'প্রিঅ্যা সোর্স ফর মিডিয়া প্রফেশনালস ২০১৭'-এ বলা হয়,  প্রতি বছর বিশ্বে ১০ লাখ মানুষ আত্মহত্যা করে। প্রতি ৪০ সেকেন্ডে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে একটি,বর্তমানে যা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, বৈশ্বিক মহামারীর এই অবস্থায় এই সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পাবে যা ইতোমধ্যে পরিলক্ষিত হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত হয়ে অকালে ঝরে পড়ছে প্রাণগুলো। এ সংকটাপন্ন অবস্থা থেকে মুক্তি লাভের জন্য সমাজের মানুষকে সচেতন হতে হবে। মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক বিভিন্ন পরামর্শ প্রচার করে মানসিক সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা। কাউন্সিলিং এর মাধ্যমে সমস্যাগুলোর সমাধান করতে হবে। মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষায় সোচ্চার হতে হবে।
 
একটি দেশের কিংবা জাতির জন্য অপার সম্ভাবনার সৃষ্টি করে তরুণসমাজ। সেই তরুণ সমাজ যদি আত্মহননের মাধ্যমে জীবনের অকাল মৃত্যু ঢেকে আনে তাহলে সেটি দেশ ও জাতির জন্য অপূরণীয় ক্ষতির সৃষ্টি করে। শুধু একটি প্রাণ নয় পারিবারিক জীবনেও নেমে আসে কালোছায়া৷ তাই অশুভ এই কালোছায়া কে দূর করার জন্য ব্যক্তিপর্যায় থেকে শুরু করে জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে সচেতনতা জরুরি। পারিবারিক ভাবে মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি সচেতন হওয়ার জন্য ব্যবস্থা নিতে হবে। অবসাদ  
দূর করার জন্য সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। সকলের প্রচেষ্টা ই পারে অবসাদগ্রস্ত মানুষদের জীবনের স্বাভাবিক গতিতে ফিরিয়ে আনতে তাহলেই গড়ে উঠবে শারীরিক ও মানসিক উভয় দিকে সমৃদ্ধ সমাজ।
 
নাজিয়া আফরিন 
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় 
ফার্মেসী বিভাগ

এমএসএম / এমএসএম

রেলের উন্নয়ন কেবল প্রকল্প নয়, দরকার র্কাযকর ব্যবস্থাপনা

অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনীতি

টেকসই উন্নয়নে প্রাথমিক শিক্ষা

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি ও বাস্তবতা

গাজায় যুদ্ধের নৃশংসতা ও আন্তর্জাতিক বিচার আদালত

বন্ধ হোক অপসাংবাদিকতা

বিভাজনের রাজনীতি দেশের জন্য হুমকি হতে পারে

প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের স্বপ্নের সৌদি আরব

শারদীয় দুর্গোৎসবে সম্প্রীতির বাংলাদেশ ভাবনা

দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করার জন্য প্রয়োজন পর্যটন গন্তব্যগুলোর সামগ্রিক উন্নয়ন এবং শক্তিশালী ব্র্যান্ডিং

গণতান্ত্রিক অধিকার ও নতুন নেতৃত্বের অন্বেষণ

দুঃখই সবচেয়ে আপন

জাতিগত নিধন বন্ধে জাতিসংঘের ব্যর্থতা