ঢাকা রবিবার, ২৪ আগস্ট, ২০২৫

কেনাকাটায় খরচ কমানোয় দুদকের মামলা


এসএম পিন্টু photo এসএম পিন্টু
প্রকাশিত: ২৫-৯-২০২৪ দুপুর ১:২৩

সরকারি কেনাকাটায় অতিরিক্ত টাকা খরচ না করে সরকারের স্বার্থ রক্ষা করতে গিয়ে দুদকের মামলায় আসামি হয়েছেন রেলের কয়েকজন কর্মকর্তা। এই মামলায় কোনো অসদুদ্দেশ্য আছে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। ফলে এসব কাজে অভিজ্ঞ কোনো অফিসার দিয়ে বিষয়টি অধিকতর তদন্ত প্রয়োজন বলে মনে করছেন অনেকে।

জানা গেছে, বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক প্রকৌশলী ফরিদ আহমেদ, সাবেক অতিরিক্ত প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক বর্তমানে বেজার উপ-সচিব মুহাম্মদ রাশেদুল আমিন, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান যান্ত্রিক প্রকৌশলী তাপস কুমার দাস এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ট্রেড অ্যান্ড টেকনোলজির স্বত্বাধিকারী এএসএম ইকবাল মোর্শেদকে আসামি করে ১ কোটি ৩৭ লাখ ৮৭ হাজার টাকা আত্মসাতের মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আহসানুল কবীর পলাশ বাদী হয়ে মামলাটি করেন। সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-১-এর উপ-পরিচালক নাজমুচ্ছাদায়াত বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এজহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২১ সালের ২৩ মার্চ পাহাড়তলী ডিপো হতে ১৪৬ দশমিক ৯২৭ টনের কাঁচা লোহা (পিগ আয়রন) ক্রয়ের চাহিদার পরিবর্তে ৮৫ মেট্রিক টন ক্রয় করা যেতে পারে বলে ক্রয় পরিকল্পনার অনুচ্ছেদ ৫.১-এ উল্লেখ করা হয়। সে মোতাবেক প্রাক্বলিত ব্যয় নির্ধারণী কমিটি বাজার যাচাইপূর্বক প্রতি টন কাঁচা লোহার দাম ২ লাখ ৩৪ হাজার ১০০ টাকা নির্ধারণ করে। ওই মালামাল ক্রয়ের আনুমানিক সরকারি খরচ অনুমোদন দেয়া হয় ২০২২ সালের ১৫ নভেম্বর এবং প্রতিবেদন দাখিল হয় একই বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর।

সবশেষ মালামাল ক্রয়ের চুক্তিপত্র সম্পাদিত হয় ২০২৩ সালের ৮ আগস্ট। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রাক্কলন ব্যয়ের ৩১ শতাংশ কমে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে মালামাল সরবরাহের কাজ পায়। কিন্তু মালামাল সরবরাহ না করে বিল নিয়েছে বলে দুদক অনুসন্ধানে পেয়েছে। ক্রয়ের প্রাক্কলন কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী বাজারমূল্য ৩ কোটি ৪১ লাখ ৭৮ হাজার ৬০০ টাকা। টেন্ডার কমিটির সদস্যরা ঠিকাদারের সাথে পরস্পর যোগসাজশে অসদুদ্দেশ্যে লাভবান হওয়াসহ প্রতারণামূলকভাবে পিপিআর ২০০৮-এর ধারা লঙ্ঘন করে। ফলে চাহিদাকৃত ১৪৬ দশমিক ৯২৭ টনের পরিবর্তে ৮৫ টন সরবরাহ দেখিয়ে মালামাল সরবরাহ না করে সরকারের ১ কোটি ৩৭ লাখ ৮৭ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে দুদকের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।

কিন্তু মামলায় অভিযুক্তরা বলছেন ভিন্নকথা। তারা বলেন, একটি পক্ষ কোনো অসদুদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য ভুল তথ্য দিয়ে মামলাটি করিয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মালামাল ক্রয়ের চাহিদার সাথে বাজেট ও সংরক্ষণের একটা সম্পর্ক থাকে। ফলে সব সময় চাহিদা অনুযায়ী মালামাল কেনা সম্ভব হয় না। আবার অনেক সময় দেখা যায় চাহিদার কিছু কম মালামাল হলেও চলে। আবার যেসব মালামাল পরে লাগবে এমন চাহিদা থাকলে তা সময় অনুযায়ী কেনা হয়, জরুরিগুলো আগে কেনা হয়। সরকারি টাকা খরচ করে অতিরিক্ত মালামাল কিনে ফেলে রাখার কোনো যৌক্তিকতা নেই, বিধায় পরিমাণ অনুযায়ী পণ্য কেনা হয়। এসব বিবেচনা করে কেনাকাটায় চাহিদার পরিমাণ কম-বেশি হয়। এখানেও চাহিদাকৃত ১৪৬ দশমিক ৯২৭ টনের পরিবর্তে ৮৫ টন ক্রয় করা হয়েছে। আবার বাজারদর মূল্যায়নের সময় দাম একটু বেশি ছিল। কিন্তু দরপত্র আহ্বান করার সময় বাজারে দর কমে যাওয়ায় প্রাক্কলিত মূল্যের ৩১ শতাংশ কমে দরপত্র থাকায় তা গ্রহণ করা হয়। আর এই ৮৫ টন কাঁচা লোহা সরবরাহ ও ব্যবহারের সমস্ত দালিলিক প্রমাণ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আছে। এমনকি দুদককে সরবরাহও করা হয়েছে। তবুও দুদক নিজের মতো করে মনগড়া প্রতিবেদনের মাধ্যমে হয়রানি করার উদ্দেশ্যে মামলা দায়ের করেছে।

অপর একটি সূত্র জানায়, মামলায় বলা হয়েছে- মালামাল সরবরাহ না করে টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। যদি সরবারাহ না করে আত্মসাৎ করা হয়, সেক্ষেত্রে দরপত্র আহ্বান ও মূল্যায়নের সঙ্গে জড়িত কমিটির সদস্যদের কোনো দায় থাকতে পারে না। যারা মালামাল গ্রহণ করেছে, এটা তাদের দায়। কিন্তু দরপত্র আহ্বানকারী ও প্রাক্কলণ ব্যয় নির্ধারণ কমিটির সদস্যরা মামলার আসামি হলেও মালামাল পরিদর্শন, পরীক্ষণ ও গ্রহণের সঙ্গে জড়িতদের মামলায় আসামি করা হয়নি। প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রকসহ মূল্যায়ন কমিটির সদস্যরা মালামাল গ্রহণ ও মূল্য পরিশোধের সঙ্গে জড়িত নন। ফলে এখানে মালামাল গ্রহণ, পরীক্ষণ ও বণ্টনের সঙ্গে জড়িত দপ্তরগুলো মূলত দায়ী হওয়ার কথা।

জানা গেছে, প্রধান সরঞ্জজাম নিয়ন্ত্রক, পাহাড়তলী দপ্তর হতে ৮৫ মেট্রিক টন পিগ আয়রন ক্রয়ের জন্য ইজিপি দরপত্র আহ্বান করা হয়। দরপত্র মূল্যায়ন শেষে সর্বনিম্ন দরদাতা মেসার্স ট্রেড অ্যান্ড টেকনোলজির সাথে চুক্তিপত্র সম্পাদন করা হয়। সরবরাহকারী মালামালগুলো জেলা সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক পরিদর্শন দপ্তরে সরবরাহ করেন। পরিদর্শন দপ্তর মালামালগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর গ্রহণ করে গ্রহণপত্র জারি করে। উক্ত গ্রহণপত্রের ভিত্তিতে হিসাব বিভাগ হতে বিল পরিশোধ করা হয়। এরপর মালামালগুলো পরিদর্শন দপ্তর হতে জেলা সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক, ডিপো, পাহাড়তলী ও জেলা সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক সৈয়দপুরে প্রেরণ করা হয়।

প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রকসহ মূল্যায়ন কমিটির সদস্যবৃন্দ দরপত্র আহ্বান ও মূল্যায়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন। মালামাল গ্রহণ ও মূল্য পরিশোধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। মালামাল গ্রহণ করা হয় জেলা সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক পরিদর্শন দপ্তরে। সেখানে মালামাল গ্রহণসংক্রান্ত যাবতীয় ডকুমেন্ট আছে। সেখানে সঠিকভাবে অনুসন্ধান করা হলে মালামাল গ্রহণের প্রমাণ পাওয়া যেত। কিন্তু তা না করেই মামলা দায়ের হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।

সংশ্লিষ্টরা জানান, মালামাল সরবরাহ না করে টাকা আত্মসাতের ইচ্ছা থাকলে টেন্ডারে মূল্য আরো বেশি দেখিয়ে এবং মালামালের পরিমাণ আরো বেশি দেখিয়ে আত্মসাৎ করা যেত। শুধুমাত্র কাজের দায়বদ্ধতা ও সরকারের স্বার্থ রক্ষার জন্য খরচ কমানো হয়েছে। আর এ কাজের জন্যই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কেউ মামলাটি করিয়েছে।

এমএসএম / জামান

মহেশখালীতে রাতে অপহরণের পর সকালে মিলল যুবকের লাশ

আবার রোহিঙ্গা ঢলের ঝুঁকিতে বাংলাদেশ

তানোরে চাষাবাদে গরুর বদলে বাড়ছে ঘোড়া দিয়ে মই চাষ

উল্লাপাড়ায় কষ্টি পাথরের মূর্তি পাচারকারী দুই জন গ্রেফতার

বরগুনায় তিন সংসদীয় আসন পুনর্বহালের দাবিতে মানববন্ধন

রাজশাহী-১ আসনে শরিফ উদ্দিনের বিরোধিতা না বিএনপির বিরোধিতা

টেকনাফে মুক্তিপণে ফিরেছে অপহৃত ব্যবসায়ী

কোচিং-এর গোলকধাঁধায়, শ্রেণিকক্ষে পাঠদানে গুরুত্ব নেই

হাসিনা বাংলাদেশকে গুম-খুন আর লুটের রাজ্যে পরিণত করেছিল: আব্দুল খালেক

দাউদকান্দির ধারিবন গ্রামে একমাত্র রাস্তাটি বন্ধ, পানিবন্দি কয়েকটি পরিবার

ভূরুঙ্গামারীতে ব্র্যাকের স্বপ্ন সারথি দলের জীবন দক্ষতা বিষয়ক ২৫তম সেশন অনুষ্ঠিত

রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের শিকার ডা:কে এম বাবর সংবাদ সম্মেলনে স্ত্রীর অভিযোগ

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে পানিবন্দি ২ হাজার পরিবারকে যুবদলের ত্রাণ সহায়তা